আরে তুমি?


স্বভাবতই আমার অকালে বয়সের ছাপ পড়া
অস্বাভাবিক মুখমণ্ডল কিঞ্চিৎ বিকৃত হয়ে,
ঠোঁটের দু’পাশ ছেদন দাঁতগুলোকে চেপে ধরে,
সৃষ্টি করলো তথাকথিত মুচকি হাসি।


তার প্রশ্নের উত্তরে আমার মস্তিষ্ক নিজের
শব্দভান্ডারে একটিমাত্র শব্দ খুঁজে পেল।
ফুসফুসের ধাক্কায় আলজিহ্বা ভেদ করে
উচ্চারিত হলো, সম্মতিসূচক শব্দ, ‘হ্যাঁ’।


তার নেত্রযুগল প্রদীপ্ত চন্দ্রালোর আশীর্বাদপুষ্ট
তিমির জলাধারের মতন জ্বলজ্বল করে উঠলো।


কেমন আছো?
এইতো।
কি করো এখন?
কম্পিউটার অপারেটর।
পড়াশুনা?
এইতো, ফার্স্ট ইয়ার কমপ্লিট করলাম।
মানে?
বলা যাবেনা, কাহিনী আছে।
তুমি অনেক বদলে গেছো...


হঠাৎ বায়ুতরঙ্গে ভেসে আসা আহ্বানে শেষ হলো প্রশ্নোত্তর পর্ব।
পাশের বস্ত্রালয় থেকে আসছে আহ্বান, দেখতো এটা পছন্দ হয়?


এক্সকিউজ মি, একটু দাঁড়াও, আমি আসছি।
সে চলে গেল।


তার অঙ্গভঙ্গি আর চলে যাওয়ার ব্যাকুলতায় বুঝলাম
আহ্বানকারী মধ্যবয়স্ক ভদ্রলোকটি তার জীবনসঙ্গী।
আর দাঁড়িয়ে থাকতে ইচ্ছে হলোনা আমার।
দু’হাঁটুর নিচটা কেমন থরথর করে কেঁপে উঠলো।
প্রতিটা অঙ্গ মস্তিষ্ককে জানান দিল, তারা অপরিপূর্ণ-ব্যর্থ।
আমি রিক্সাযোগে সোজা ঘরে ফিরে এলাম।


এই ন’বছরে আমাদের দেহ-পোশাক-অভ্যাস-চলন সহ
আরো অনেক কিছুর অপরিকল্পিত-স্বতস্ফূর্ত পরিবর্তন হয়েছে।
তবে, আমাদের উভয়ের একটি অভ্যাস বদলায়নি এখনো।
তার চলে যাওয়ার অভ্যাস। আর, আমার ফিরে আসার।