একটি চিঠির জন্যে, অভাগা মা চেয়ে আছে পথ-পানে-
খোকা, আমার বুকের মানিক; হৃদয়ের অমোঘ টানে।
গিয়াছে কবে, আসি-আসি করে আসেনি কোন চিঠি
আকুলি-বিকুলি মনটা তার আধো-ঘুমে চমকে উঠি।
তবে কি খোকা আমার গিয়াছে ভুলি?
না-কি, অজানা শঙ্কায় দুর্ভাবনা মনে তুলি।
বালাই-ষাট! খোকা আমার নিশ্চয় আছে ভাল-
এইতো দুদিন পরেই আসবে, ঘরটি করবে আলো।
ডাক পিয়নটারও যে কি হয়েছে? এ পথে আসেনা আর
ভোর বিহানে উঠি, বাসি মুখেই ছুটে যাব; খবর নেব তার।
নিশ্চয় বড় কোন ব্যামো হয়েছে; না হয় শ্বশুর বাড়ী
অথবা, চাকুরী ছেড়ে সে বিদেশে দিয়েছে পাড়ি।
এমনি কত জল্পনা-কল্পনায় প্রতিক্ষণ কাটাতো মা’য়
দিবা-নিশি খেয়ে না খেয়ে করতো শুধু হায়-হায়।


আর এখন, বিজ্ঞান মানুষের মমতা নিয়েছে কাড়ি।
চিঠি লেখে না কেউ; ফেরার তাড়া নেই আপন বাড়ি।
দূরদেশে বসি দূর-দৃশ্যে দেখি আপন জনের কত ছবি
শুধু কথাই নয়, অবয়ব সহ পর্দায় ভেসে উঠে সবি।
তার পরও কি আপন হয়েছি; ভালবাসা পেয়েছি আরও বেশি?
মমতায় জড়ানো মায়ের মুখটিতে, তোমরা কি দেখেছ হাসি?
বিজ্ঞান যত টেনে এনেছে কাছে; আমরা ছুটেছি দূরে-
ভালবাসা শুধু ছলনা দিয়ে বেঁধে নিয়েছে বাহুডোরে।
কৃত্রিম রসায়ন মাখা ভালবাসা, পচন করিলেও সাময়িক রোধ
কাগজে লেখা চিঠির মমতার মতো, করিবে কি জাগ্রত বোধ?
চাইনা, চাইনা আমি এমন ভালবাসা, তোমরা যতই চাও-
চিঠি পড়া সেই পুরনো ভালবাসা, আমায় এনে দাও।