একটি চিঠির জন্যে, সতী-সাধ্বী চেয়ে আছে পথে-
প্রাণপতি গিয়েছে বিদেশ, কেমন জানি করে মনোরথে।
ডাকপিয়নের ভাঙা সাইকেলের টুংটাং শব্দের অপেক্ষায়;
মাস চলে যায়, চিঠি আসেনি, কখন আসে সেই আশায়।
কহে সতী, ‘‘তবে কি আমায় ভুলে গিয়াছে পতি?
না-কি, অন্য কারও আশায় তার হয়েছে দুর্গতি।
মিছে ভাবনা, স্বামী আমারে ভালবাসে খুব-
হয়তো কাজের চাপে ভুলেই গেছে, মূর্খ বেকুব।
আসুক আবার, না-হয় চিঠি লিখে দেবো খুব কড়া করে
অথবা পিয়নকে আচ্ছা মতো দেবো শাসিয়ে রুক্ষ স্বরে।
সেই গত মাসে এসে ছিল ভাঁজ করা খামের চিঠি-
পেয়ে আনন্দে নেচেছি, নিয়েছি সান্ত্বনার চাবিকাঠি।
কাছে পাওয়ার অনুভূতিতে, আবেগে কেঁদেছি সেদিন;
নয়ন জলে ভেজানো পাতাতে ওষ্ঠ-চুম্বনে করেছি রঙিন।’’


আর এখন, চিঠি কেও লিখেনা, দিন হয়েছে বদল
আলপনা আঁকা রঙিন কাগজে লিখা, হয়েছে বিরল।
সময়ে-অসময়ে রাতবিরেতে মোবাইল খানা হাতে নিয়া
প্রিয় জনের কথা ও ছবিতে সে ডিজিটাল মিলায় হিয়া।
এত কাছে এসে স্বপ্নের মতো ছোঁয়া দিয়ে যায় গায়-
তবু সেই হারানো আবেগ, বলো- সেকি ফিরে পায়?
বিজ্ঞান দিয়েছে আরাম-আয়েস; কিন্তু দেয়নি শান্তি-সুখ;
অনেক পাওয়ার হাতছানি দিয়ে সে ফিরায়ে নিয়েছে মুখ।