ওই দূরে যে বাড়িটা দেখা যাচ্ছে
দু'টি দোতলা বাড়ির মাঝখানে অবস্থিত
একচালা টিনের এককামরা ঘর
ওখানেই থাকি আমি,
আর আমার সাথে টিকটিকি -
কুনোব্যাঙ, আরশোলা, ইঁদুর, বিছে এরাও
কোনো অসুবিধা নেই থাকার
আমার খাবারের অভাব হলেও
ওদের কোনো অভাব রাখিনা,
ওরাও আমার দেখভাল করে
পচা-বাসি খাবার খেয়ে
ঘরোয়া পরিবেশ সুস্থ রাখে।


দুপাশে উঁচু বাড়ি দুটির জানালা বন্ধই থাকে
কখনো সখনো হয়তো খোলে
শেষ কবে খোলা দেখেছিলাম মনে নেই
এখানে দশ বছর কেটে গেল,
একা মানুষ নিজের মত থাকি
অথচ আমার বাড়ির দু'পাশে
ময়লার পাহাড় জমে স্তূপাকৃত,
সব বুঝেও বলতে গেলে অনর্থ বাঁধে
তাই চুপচাপ থাকি আর
সকাল-বিকাল টিউশনি করি
পেটের দায় মিটে যায়
শুধু রাতের বেলায় রান্নাবান্না
অসুখ বিসুখের তাড়নাও নেই,
রাতের বেলায় ঝগড়া শুনি, গানও শুনি
পাশের দুই বাড়ি থেকে
এভাবেই কেটে যায় সময়।


এই পথে, বলা ভালো এই গলি পথে
লোকজনের চলাচলও কম,
কিন্তু হঠাৎ হৈচৈ কিসের!
পাশের বাড়ির ডাক্তারবাবুর স্ত্রী
মারা গেলেন আজই সকালে
শুনলাম তিনি তিনদিন জ্বরে ভুগছিলেন
তাই অনেক লোকের পদধূলি পড়ল,
অপরদিকের বাড়ির রূপা বৌদি
বাড়ি ছেড়ে চলে গেলেন আজই
অন্য সুরের খোঁজে
সেকারণে বিনয়বাবু বড় ভেঙে পড়েছেন,
আমি এখন বিভূতিভূষণ পড়ছি
বাইরে লোকজনদের চিত্কার শুনে
দরজা খুলে দেখি -
সবাই এখন নাকে কাপড় দিয়ে
আমায় ডেকে বললে -
আপনি বড়ো অদ্ভুত মানুষতো!