পদ্ম আমারই সাথে থাকে
শয়নে নয়, নয় স্বপনে
কখনো সখনো থাকে সে,
বুঝতে অসুবিধা হল বুঝি !
ধরা যাক -- একটি মেয়ে
আমাকে বলে বোকা-হাঁদা
কোনদিন ভালোবাসেনি আমায়,
তবুও আমাকে সঙ্গ দেয়
যখন কিছু নেবার থাকে।
পদ্ম যদি হয় ফুল --
ইচ্ছে করলেই ছেঁড়া যায়
হাতের নাগালে মেলেও তাকে
কিন্তু কয়েক ঘন্টার জন্যে
তারপর জীবন যায় শুকিয়ে !
ওরা দুজনেই ধরা দেয়
অনিয়মে তির্যক গতি রেখায়।


একদিন মোড়ল ডাকল আমাকে
বলল – ‘‘তোর গিন্নী মায়ের
বাত্সরিক দিন আগামী কাল,
সংসার জরাজীর্ণ রমনীর অভাবে
তাই ঘরটাকে গুছিয়ে দিয়ে
কপালে চন্দন গলায় মালা
মোটকথা তার ভজনার জন্য
পদ্মকে আনতে পারবি কাল,
পাঁচশত টাকা দেব তাকে
নিজে হাতে সেবা করবো
এমন সাধ্য কই আমার !’’


কথা রাখতে রাজী হলাম
পরদিন পদ্ম মোড়ল বাগিচায়
এল আমারই হাত ধরে।
দুঃখ্য ভোলার জন্য নেশা
মদ আনলো আমাকে দিয়ে,
আমি বললাম, কত সময় লাগবে ?
মোড়ল বলল, তাড়া আছে নাকি !
- আছে বৈকি ঢের কাজ পড়ে
  ধান কাটা, বাঁধা, ঝাড়া ...
- বেশ বেশ কাজ শেষে
  নিয়ে যেও হাত ধরে।’
কাজ সেরে যখন এলাম
চোখ দুটি পুড়ে গেল
ছিন্নভিন্ন পদ্মের পাপড়ি,
মাথার রক্ত গেল চড়ে
কাস্তে দিয়ে দিলাম কোপ
মরল না তবু  মোড়ল,
মরতে দিল না পদ্ম !


আমি এখন জেলখানায় থাকি
লোকে বলে খুব বোকা বলে
পদ্মই আমাকে ধরিয়ে দিয়েছে,
সে  থাকে মোড়লের সাথে।
অনেকদিন পর একটা খাম এল
জেলখানায়, আমারি নাম লেখা --
খুলে দেখি তাতে একটা ফুল
ফুলতো নয়, কাগজের ফুল  !