বিজ্ঞপ্তি মারফত জানতে পারলাম - ভার্চুয়াল আসরের পাশাপাশি এখন থেকে সশরীরে কবিদের উপস্থিতিতেই নিয়মিত বাস্তব আসরের ব্যবস্থা হচ্ছে। কবিদের জন্যে এটা এক সুখবর! বাংলা-কবিতা আসরের এই যুগান্তরী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। মাননীয় এডমিন প্যানেলের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। আশা করি এ থেকে আমরা নবিশ লেখিয়েরা কাব্যচর্চার সাবলীল ভুবনে আরো একধাপ এগিয়ে যাবার সুযোগ পাবো। আপাতত উদ্যোগটি ঢাকা কেন্দ্রিক হলেও আশা করি, অচিরেই তা নানান আঞ্চলিক দ্রষ্টব্যে অনুষ্ঠিত হবার সুযোগ তৈরি হবে।


একজন শখের কবি হিসাবে আমার কাছে এরচেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে? ছাত্রজীবন থেকে লুকিয়ে-চুরিয়ে কবিতা লিখলেও কোন পাঠক দূরে থাক কাউকে পড়ে শুনিয়ে লেখার তৃপ্তিটুকুও নিতে পারতাম না। অথচ এই আসরে কবিতা লিখে কবির স্বীকৃতি পাচ্ছি, প্রেরণা পাচ্ছি। এখান থেকে কবিতার ধারা-ধরণ বিন্যাস ও বানানসহ অনেক কিছুই শিখতে পারছি। এই আসরের কল্যাণে আজ শুধু পাঠকই নয়, শত শত কবিতার কবিও সেজেছি! তাই, নমস্য বাংলা-কবিতা, নমস্য প্রিয় এডমিন প্যানেলকে।


মনে পড়ে; কালে-ভদ্রে কবিতা লিখলেও কবিতার কোন পাঠক পাইনি। ভাল মন্দ যা-ই লিখি আমার কবিত্বের কোন স্বীকৃতি ছিল না, প্রেরণা তো নয়ই। অথচ কবিত্বের প্রকাশের জন্যে পাঠক এবং প্রেরণাই হল গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক। 'কবিতা লিখি' একথা কেউ শুনলে বা জানতে পারলে বাহবা তো নয়ই তাদের কথায় ও আচরণে যেন প্রচ্ছন্ন বিদ্রুপের আভাসই পেতাম বেশি। তাই, একজাতীয় লজ্জাবোধ ঘিরে থাকতো। সততই লজ্জার ভীতি ছিল - আমার কবিত্ব নিয়ে কেউ যদি ব্যঙ্গ করে!


বাংলা কবিতা আসরে কবিতা লিখতে পেরে আজ আমার সে জড়তা নেই। দুএকজন পাঠকই নয় বরং শত শত পাঠক ও গুণী কবির বাহবা এবং স্বীকৃতি পাচ্ছি। শুধু যে পাঠক পেয়েছি তা-ই নয়, আমাদেরই লেখা কবিতা নিয়ে গুণী কবিবর্গ আলোচনা পাতায় ভাল-মন্দ ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে নিয়মিত নিবন্ধও লিখছেন। যে-কারোর জন্যেই তা এক পরম প্রাপ্তি।


আশার কথা, এতদিন যা ছিল কেবলই ভার্চুয়াল - এখন থেকে তা-ই হতে চলেছে বাস্তব। এই মহতি উদ্যোগের ফলে যে কেউ চাইলেই আমরা কবিত্ব বোধশূন্য দুএকজন আনাড়ি পাঠক নয় বরং কবিতার সমঝদার পাঠক তথা অনেক বোদ্ধা কবির সান্নিধ্য, সাহচার্য ও নির্দেশনা পেয়ে আমাদের জ্ঞান ও লেখনীকে আরো শানিত করতে পারব।


সবচেয়ে বড় কথা, এরফলে হয়তো আমিও একদিন আসর কবি বা আসর সভাপতির সম্মানিত অভিধা পেয়ে কবিদের সুধীসমাজে নিজেকে মেলে ধরতে পারব। এর মাধ্যমে আমার সৃষ্টির বিভা-জৌলুসকে প্রকাশ করার সুযোগও পেতে পারি। এতে আমার কবিত্ব শক্তির সুপ্ত প্রতিভার অবিশ্বাস্য সুযোগ অবারিত হবে, সন্দেহ নেই।


আরো আছে; শুনেছি বাংলা-কবিতা সহসাই প্রকাশনায় আসছে! তাহলে, চাই কি - এই আন্তঃকবি সংযোগের কল্যাণে একে অপরের সাথে মিলে খুব সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য উপায়ে আমাদের কবিতা প্রকাশ করার সুযোগও পেতে পারি। সুতরাং এজাতীয় আসরে যত বেশি যোগদান করব তত বেশি নতুন নতুন কবি সংযোগ ঘটবে। আর ততই বেশি উপকৃত হব।


অতএব, এমন নিয়মিত আসরের অমূল্য সুযোগকে নিজেদের কাজে লাগাতে নিশ্চয়ই তৎপর থাকব। ধন্যবাদ বাংলা-কবিতাকে, ধন্যবাদ আসর বন্ধুদেরকে।