কবিতার পাতায় লেখার মজাই হলো খুব অল্প পরিশ্রম ও সময়ে ছোট ছোট বিয়য়ে কাব্যিকতা ফুটিয়ে তুলে একটা পূর্ণাঙ্গ কবিতা লেখা যায়। আর সাইটে পোস্ট দিলে কবি বন্ধুরা অল্প সময় খরচ করেই তা পড়তে পারেন, বেশ উৎসাহব্যাঞ্জক মন্তব্যও দিয়ে থাকেন। তাতে লেখক আরো লেখার প্রেরণা বোধ করেন। এমনটা অন্য কোন বিষয়ে লেখার মধ্যে খুব কমই পাওয়া যায়।


অন্যান্য সাইটে বা অন্য ধরণের আলোচনা নিবন্ধ লেখা যেমন শ্রমসাধ্য (সেগুলো লিখতে সময় লাগে, পড়তেও সময় কাড়ে) তেমনি সেগুলো পড়ে অনেকেরই বেশ উপকার হলেও খুব কম লোকই লেখককে উৎসাহ দিয়ে থাকেন। অন্যান্য সাইটে ও লেখায় কি দেখতে পাই? পড়াটা যত পাঠকই পড়ুন না কেন বিতর্ক বা গঠনমূলক মন্তব্য ছাড়া খুব একটা উৎসাহব্যঞ্জক মন্তব্য দেন না। আমার মনে হয়; কবিতার আসরের পাঠকরা এ-বিষয়ে বেশ উদার।


কোন কবিবন্ধুকে অবশ্য ক্ষোভ প্রকাশ করতেও দেখি; কবিরা নাকি অন্য কবিকে স্বীকৃতি দিতে কার্পণ্য করেন! তাঁরা নাকি ঈর্ষাকাতরতায় ভোগেন। আমার কাছে কিন্তু তা মনে হয় না। প্রত্যেক লেখিয়েরই একটা আলাদা স্বত্বা আছে, নিজস্ব দর্শন আছে, আছে লেখার একটা নিজস্ব স্টাইলও। একজন চাইলেই নিজের দর্শন উপেক্ষা করে আর একজনের মত লিখতে পারবেন না। কখনো কারো মনে হতে পারে – লেখাটা আমি হলে হয়তো অন্যভাবে লিখতাম, হয়তো আরো ভাল করতে পারতাম ইত্যাদি। তেমনটা হলে দেখাই যাক না – ওই থিমটি নিয়ে আমি কেমনতরো কাব্য রচনা করতে পারি? থিমটা না-হয় ওই কবির কাছে ধারই করলাম? তাতে ক্ষতি কী যদি, তার লেখার উপরে হাত না দিই! বড়জোর তার কাছে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে পারি।


কোন কোন থিম কারো মধ্যে আপনিই জন্ম নেয়, কোনটা আবার সমসাময়িক ঘটনা ও প্রকাশনার সূত্র থেকেই আসে। তাতে দোষের কিছু নেই। যেমন; এমন কোন কবি পাওয়া যাবে না; জীবনে যে প্রেম বিরহ বা দেশপ্রেম নিয়ে কবিতা না লিখেছেন। সেখানে তো বলা যাবে না কেবল অমুক কবিই তা লিখতে পারেন বা লিখেছেন? যে কোন লেখকের থিম ভাব কল্পনা লেখার প্লট প্রকাশভঙ্গি ইত্যাদি সম্পূর্ণ আলাদা ও তাঁর স্বকীয়তায় সমুজ্জ্বল। এই স্বাতন্ত্রতাই লেখকের বিশেষত্বঃ। আমাদের প্রত্যেকেরই একে সম্মান জানানো উচিৎ।


তাই সবার প্রতি আহ্বান; আসুন সাহিত্যে আমরা বেশি বেশি ভাল বিষয়ের চর্চা করি। সমাজকে আরো সচেতন ও সুন্দর করি, সাহিত্যের ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করি। একে অপরের লেখা নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা, প্রয়োজনীয় সংশোধনীর নির্দেশনা ও উৎসাহব্যঞ্জক মন্তব্য দান করি।


সবাইকে শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ।