মায়ের গন্ধ গায়ে লেগে থাকে
ঠিক যেন জন্মদাগের মতো।
বহুদিন হলো জুজুবুড়ির ভয়াল চোখ
আর দানবের   দুঃস্বপ্ন দেখে
ভয় পেয়ে জেগে উঠি না
মায়ের  কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ে কেঁদে উঠি না
সেই দিন গত হয়েছে ,  যখন বকুনি খেয়ে
মুখ ফুলিয়ে একবেলা উপোস দিয়েছি অভিমানে।
শহুরে ক্লান্তিতে এখন যেন বুজে আসে চোখ
মায়াঅরণ্যে ধূলোবালি ছাড়া দেখি না কিছুই,
এই ধূসর কাঁচপোকার দিনগুলো
যেন মা 'কে ডেকে আনতে চায় -
মা 'কে সজোরে জড়িয়ে ধরে
সময়জ্ঞান ভুলে একনাগাড়ে কিছুক্ষণ
নির্ভার মনে কাঁদতে চায়।
মায়ের উদাসীন সিঁথি দিয়ে যেন চলে গেছে
বহুদূরের স্মৃতি আর মরুদ্যানের পথ।
সেই স্মৃতিময় সন্ধ্যার সপ্তর্ষি
এখন আমার হেঁটে যাওয়া একলা এলোপথ,
আমি ভাবি রোজ দুঃখ আর ধারাপাতের দিনে
মা 'কে দেবো আমার ফুলবাগান সব।
ও মা! তুমি কোথায় যেন সরে আছ
বৃষ্টিদিনের অস্বচ্ছ জানালার মতো।
তুমি আমার কাছে চলে এসো মা!
এই তো চলে আসছে শীতকাল
সুঁই সুতো নিয়ে তুমি   বসবে না?
পুরোনো শাড়ি দিয়ে বানানো নকশিকাঁথা
আমার গায়ে জড়াবে না তুমি?
বহুদিনের পর উদ্বেগে যেমন কন্ঠ ভাসে
'অনেক যেন শুকিয়ে গেছিস '
আর বলবে না আমায় মা?
মা! সামনে যে অজস্র ছুটির দিন আমার
বুকের আগলে আমায় জড়িয়ে রাখো
তুমিই তো শিখিয়েছো আমায়
মায়াময় স্নেহের অখন্ড অবসর।