হঠাৎ খানিক দূরে ঘাসবনের ওপারে,
ছোট্ট পুষ্করিণীতে নোয়ানো আমড়া গাছে,
মাছরাঙ্গা পাখীটা ভুস করে মাথা নাড়ে,
ঈশান কোণে তখনো ইন্দ্রায়ুধর ছটা-
বুকের লুকানো ইচ্ছা কি যেন বলতে চায় তাকে
সে ছিল দারিয়ে হাল্কা নীল রং এর শাড়ীতে,
কলজের বক্ষ ভেদের ইতস্তত আক্রমণে,
ভেঙ্গে যায় বাঁধার প্রাচীরখানি-
শুধাই মৃদুস্বরে - একটা বন্ধু হবে কি তুমি?


যে ছিল আমার স্বপন-চারিণী,
যাকে খুঁজেছি শৈশবের পুতুল খেলার ঘরে,
কৈশোরের উন্মাদনায়,যৌবনের উপবনে,
জাগ্রত হ'লো আমার সমস্ত মনটা-
মনের রাজনন্দিনী আজ বাস্তবের রাস্তায়-
নিষ্পলকে চেয়ে রইলাম কিছুক্ষণ।


হঠাৎ ঘাসবনের মাছরাঙ্গা নড়ে উঠলো,
সম্বিৎ ফিরলে দেখি আমার ইন্দুনিভাননা-
লজ্জায় তার লাল মুখখানি - দুহাতে ঢেকে
মুখ লুকল সন্ধ্যার বুকে।
মনের ইকেবানায় যে ছিল জহরাবৃত,
তাকে পেলাম মনের মানসে,
আলাপ করলেম শুরু।  


এরপর কত কাল,কত যুগ হাত ধরে হেঁটেছি
গ্রামের মেঠো পথে ভরা বকুল আর শিউলির গন্ধে-
শুক্লা পঞ্চমীতে হাতে হাত রেখে
শুধাই কে বেশী সুন্দর -
আমার না আকাশের ঐ চাঁদটা?
মুচকি হেসে বলল আলতো-স্বরে-
যা হ্যাংলা কোথাকার।
বুকের উপর নীল আচল রেখে,
উষ্ণ চুম্বনের উষ্ণতায় ভরিয়ে দিয়ে বলল-
আমি শুধুই তোমার জোছনা-
তোমার আলোকে আলোকিত হই।


কামনা-বাসনার অসীম আসক্তিতে,
একটু উষ্ণতার জন্যে
বে-আব্রু করি তার বুকের বসন,
শুধুই পাই মাংসের গন্ধ।
দুটি হৃদয় মিলিত হয় ফল্গুধারার মতো।
নিঃশ্বাস আর বিশ্বাসে খুঁজে পাই একে অপরকে
হৃদয় আঙিনায় আসে চির-বসন্ত।


সেই আমার আমির গহনে-
সে ছিল, আছে, থাকবে চির পিপাসিত
নির্বাপিত প্রদীপের মূর্ছনায়-
সন্ধ্যা পূজার আরতিতে-
শয়নে, স্বপনে, চির-নিদ্রায়।