প্রথম পাল্লা


জল থই থই সাদা বিলপুকুরের মাঠ
          চাষীদের মেলা, ধান রোপনের ধূম!
সোনার আশায় কাজ শুরু কোন্ সে ভোরে,
                ঘরের চোখে লেগে আছে ঘুম।
আমার ষাটোর্দ্ধ বাবা ধানচারা পোঁতে খপ খপ
কি সুন্দর! সারি সারি রোয়া ধানগাছগুলি হাসে
ওদের আনন্দের মাসে, সেজেছে নতুন সবুজ বেশে!
বাবার কি নিখুঁত বুনন!
ফিতাহীন হাতের অভিজ্ঞ মাপন!
ঈষৎ হেলানো ধানগাছ গুলো অনন্য হস্তাক্ষর
ভোঁতা আঙ্গুলে, শক্ত মাটিতে পুঁতে দেওয়া গাছ
কচি পাতাদের সে কি খিল খিল হাসি
ওদের নাচন দেখতে বড়ই ভালোবাসি।
ভালবাসা দিয়ে ছুঁয়ে যায় বাবার হাত
ওদের হাসি দিয়ে, ভাবি, ভরাব অনুর্বর রাত!
বিলপুকুরের মাঠ ধানপাতাদের সাথে
সারাদিন ধরে আনন্দে হুল্লোড়ে করছে মাত!


                দ্বিতীয় পাল্লা


সাধ হয় আমিও বাবার মতন সারি সারি শব্দ বসাই
সতেজ সবুজ শব্দে হাসি ফোটাই পেনের ডগায়।
সাদা পাতা নিয়ে ঠায় বসে আছি আমি
নিকষ কালো রাতে
সরু নিব দিয়ে চাষের চেষ্টা করি
কি আশ্চর্য! সরু নিব পিছু হঠে
ভোঁতা আঙ্গুলের গতি ও নিখুঁত বুননের পাল্লা ভারী
রাতের বেলায় তারাদের আলো মেখে ধানের সারি!


কলমের ডোগাটা বাগিয়ে ভাবি,
কাব্যের সাদা পাতাটা দেব ভরিয়ে
সবুজ কালির কলম দিয়ে
শান্তির বাগান সমাজকে দেব গড়িয়ে।
দেখি, সহসা আমার কলমের গতিরোধ
অহংকার ধুয়ে সব শোধবোধ।


            তৃতীয় পাল্লা


বাবা আমাকে শিখিয়ে দাওনা,
ছোটবেলায় যেমনটা শ্লেটের ওপর শেখাতে?
না না!  সে তো কালো জমিতে সাদা অক্ষর!
বাবা! সাদা পাতার উপর কিভাবে
ফোটাতে হয়সারি সারি সবুজ হস্তাক্ষর?


           চতুর্থ পাল্লা


আমার ছোট্ট ঘরের বেঢপরকমের বড়
চার পাল্লার জানলা খুলে দেখি
সেরেস আর মিউজ হাসতে হাসতে
গ্রামের গলিপথে এগিয়ে চলেছে।
আমি ঠায় চেয়ে আছি ...