কবিতার গায়ে এবার আমি হরেক মৌসুমের  
জামা পরাব। তারপর তার মসৃণ ছতর
ঢাকার ফাঁকে ফাঁকে তার বলিষ্ঠ পদযুগলে
পরাব সহিষ্ণুতার জুতো স্যান্ডেল । কখনও
পায়ে পায়েল পরাব অথবা নূপুর পরিয়ে ছন্দ,
সুর আর তালের মূদ্রায় সারাবি নাচ ঘরের  
বাইরে উন্মুক্ত মঞ্চে তাকে রাজনিতি শেখাব।


তার কপালে টিপ, ঠোঁটে লিপিস্টিক, চোখে  
কাজল পরিয়ে এমন বহুরূপী রুপসী করে তুলব
যাতে কবিকে না ভাল বাসলেও যেন কবিতাকে
এবার সকলেই ভাল বাসতে শেখে। নইলে যৌবনা
কবিতা কেমন যেন পান্তা খাওয়া গরীব চাষীর  
ঘরে কন্যদায়গ্রস্থ পিতার মত কাঁধে বোঝা হয়ে
যাচ্ছে দিনের পর দিন। পিতা মরছে ধুকে!  


কবিতাকে তাই এবার গলায় গজমতির হার  
আর কর্নে তৃতীয়া তিথির চৈতি চাঁদের দুল  
পরিয়ে এমন ভাবে সাজাব যেন তার পানি
গ্রহনের আশায় কিশোর, কিশোরী, যুবক,
যুবতী, জোয়ান, বৃদ্ধ সব বয়সের নারী-পুরুষ
হন্যে হোয়ে হুমড়িরি খেয়ে পড়ে তার উপর
তাকে এক নজর দেখার জন্য, তাকে একটু
স্পর্শ করে উষ্ম অনুভবে শিহরিত হওয়ার জন্য।  


অথবা এই অধুনা সাজুগুজুর জন্য কবিতাকে  
এবার একটু হলেও তাকে দুর্মুখোরা চিনে নেয়  
তাকে কাছে পাওয়ার উন্মাদনায় বিভোর হতে।
অপরাজনীতির সংস্কৃতিতে আদি সংস্কৃতিকে বিকিয়ে
কাঁচা টাকার গন্ধ যেন ভূলে না যায় কবিতা যে
মায়ের মুখের বুলি, ভালবাসা, সংগ্রাম আর
আত্মসুদ্ধির গান। তা না হলে কবিতা যে বড্ড  
অচ্ছুত হয়ে পড়ছে এ সমাজে- ফ্যাসন, প্যাশন,
রাজনীতি, ফেসবুক আর জি-বাংলার রুঢ় সংস্কৃতিতে।


তাই কবিতাকে এবার জামা পরানোর সাথে সাথে  
উন্মুক্ত মঞ্চের র্যা ম্পেও টিপ, কাজল, লিপিস্টিক
ভ্যানিটি ব্যাগ আর জুতো স্যান্ডেল পরিয়ে এমন
ভঙ্গীতে দাঁড় করাব, যেন রকমারী হাজার ক্যামেরার
ফ্ল্যাসের বন্যায় কবি ও কবিতাকে নিয়ে বোদ্ধা
সাংবাদিকের কঞ্জুস কলম হয় উন্মুক্ত। কবিতা যেন
সকলের ভালবাসার সম্পদ হিসেবে প্রতিদিনের ভাবনায়
হয় আন্দোলিত, যেন পাঠক সমাজে, পাবলিক মঞ্চে,
সংসদের বৈঠকে তমুল ঝড় ওঠে কবি ও কবিতার
প্রকৃত ভালবাসা, প্রেম, পরিচয় আর আসন নিয়ে। যেন
সকলেই ভালবাসে কবি এবং কবিতাকে আজীবন।