তুমি চেয়েছো তোমায় আমি নতুন নামে ডাকি।
কি নাম দেবো তোমার বলত- ‘৬০ দশকের
নামে যদি ডাকি, তাহলে- চম্পা, চামেলী, বেলী।
’৭০ এর দশকের নামে যদি ডাকি, তাহলে-
রুবি, মানে রুবি রা্‌য়, মনে পড়ে রুবি রায় কবিতায়
তোমাকে, একদিন কত করে ডেকেছি”,
অথবা ছবি, কবিতা কিংবা মিতা ইত্যাদি ইত্যাদি।


এমন করে অনেক দশক পেরিয়ে গেলেও তোমাকে
ডাকাডাকি করতে যে নামেই ডাকি না কেন, তুমি
কি বদলে যেতে পারবে তোমার পরিচিত আলগা
ভালবাসা আর ইচ্ছে করে দুঃখ পাওয়ার আড়ালে
আমাকে কষ্টে ভাসাতে যে সময় সে সময়কে ফেরাতে।
তুমি কি পারবে আমার হারানো হলুদীয়া বসন্তত-  
ভালবাসার আঁচলে ভরে মুখরতায় ফিরিয়ে দিতে!


তবুও তোমাকে ভালবাসি। কেননা এত হারানোর
কষ্টের মাঝেও যখন দেখি তুমি আজও একটা সবুজ
মন কি করে যেন বুকের মধ্যে পোষ মানিয়েছ, যে
তোমাকে তোমার অপারগতার বেহিসেবি খন্ড জীবনকে
এড়িয়ে যাওয়ার মন্ত্র শিখিয়েছে অনেক তাচ্ছিল্যতা
আর নির্বোধ অহংকারের কথার ভীড়ে।


তাছাড়া সকল কবি লেখকদেরই তো অন্ততঃ একজন
ভালবাসার মানুষ থাকেই তার কবিতা আর উপন্যাসের
পাতায়। এই যেমন ধরো শরতচন্দ্রের -চন্দ্রমুখী,
রবি ঠাকুরের -লাবন্য, নজরুলের মাহবুবা অথবা
হুমায়ুন আহম্মেদের -রাবেয়া। তাই আজ তোমার
নাম দিলাম “কথা”। এই কথা নাম ধরেই তোমাকে
ডাকতে চাই। কেননা যখন তুমি কথা বলনা বলনা
করে কথা বলতে শিখলে তখন থেকেই তোমার কথায়  
পাল্টাতে থাকে জীবনের তরলি ভাবনারা এমন ভাবে
সেখানে প্রতিদিনঃ


- তুমি যখন চোখে চোখ রেখে কথা বল, তখন সমস্ত  
প্রকৃতি যেন নিঃশ্চুপ হয়ে দোল খায় তোমার মেঘলা
এলো চুলের ডগায়,
- তুমি যখন ওষ্ঠ স্পর্শ করে কথা বল, তখন তোমার
সমস্ত কথারা হয়ে যায় পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কবিতার ভাষা।
- তুমি যখন হৃদয়হীন কথা বল, তখন সকল ঘৃণারা এসে
নির্লজ্জ্ব থুথু চাটে শুষ্ক জিহ্বায়!
- তুমি যখন বুকে মুখ গুঁজে কথা বল, তখন পূর্ণিমা
আকাশের সমস্ত জোছনারা লুট হয়ে যায় পলে পলে,
- তুমি যখন হাতে হাত রেখে কথা বল, তখন অবারিত
স্বাধীনতা এসে সাহসী করে আলোর প্রেরণায় সম্মুখে পা
বাড়াতে। আর
- তুমি যখন কথা বল না, তখন মৃত্যু এসে উঁকি দেয়
ভালবাসার বাতায়নে সমস্ত স্বপ্নকে উপেক্ষা করে।