পলক রহমান-এর কবিতাwww.bangla-kobita.com ওয়েবসাইটে পলক রহমান-এর প্রকাশিত কবিতাসমূহ।uuid:2782cc4c-711d-4403-b8f7-50c47540831c;id=12092024-03-28T23:56:01Zhttps://www.bangla-kobita.com/palok/mathar-kira/মাথার কিরা 2021-10-29T01:35:08-04:002023-08-29T14:13:37-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>মরণ কালেও সোনাবন্ধু জানি আমার <br />দুই চোখের পাতা থাকবে খোলা পড়ে,<br />বুঁজবে সে চোখ, বুঁজবে সেদিন জানি<br />দাফন কালে তোমায় একটু দেখার পরে।</p>
<br /><p>ভালোবেসে বন্ধু তুমি কোথায় ছিলে<br />একবারও নাওনি খবর অভাগিনীর,<br />তবুও আমি তোমার আশায় ছিলাম<br />দুই নয়নে বাঁধ মানেনি নোনা পানির।</p>
<br /><p>পিরীতি করা কি জানতামরে সোনাবন্ধু<br />জানতাম না ভালোবাসাডা কারে কয়,<br />বুকে জড়াইয়া তুমিই প্রথম কইছিলা<br />পিরীতি সেইডাই দেহে যখন যন্ত্রণা হয়।</p>
<br /><p>মনে এত যন্ত্রণা তবু কেন্ যে লাগে ভালো<br />বুকের মইধ্যে শব্দ করে হাওয়ার হাপর,<br />ভুলতে চাইলেও যায় না ভোলা তোমারে<br />দিনে রাইতে মনের মইধ্যে লাগে ফাঁপড়।</p>
<br /><p>তাবিজ তোমড়া কতই পরলাম এই গলে<br />বাজুর হাতে বাঁধলাম বশের জরিবুটি,<br />তবু তুমি এ জীবনে হইলা না বন্ধু আমার<br />কতই খুলে রাখলাম পথে মাথার ঝুটি।</p>
<br /><p>চলেই যদি যাইবা বন্ধু বাড়াইলা কেন মায়া<br />নাকছাবিতে বাড়াইলা কেন্ মুখের বাহার,<br />নাকের ফুটায় গুঁজি বাঁশের চিকন কাঠি<br />তাও কি ফুটা থাকবে তাতে পরতে অলঙকার?</p>
<br /><p>একলা থাকার কষ্টগুলার দিনগুলি খন্ডাইতে <br />পারো যদি সোনা বন্ধু আমার আইস ফিরা,<br />জীবন কালে না হইলেও মরণ কালে আইস<br />মাথার কিরা লাগে বন্ধু, আমার মাথার কিরা। </p>
<br /><p>২৯ অক্টোবর, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/prem-zacchey-sorey/প্রেম যাচ্ছে সরে2021-08-15T20:15:39-04:002023-06-25T18:59:08-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>একটা বৃত্তের মধ্যে বিন্ধু থাকতেই হয়<br />নইলে ছোট থেকে অসীম বৃত্ত যায় না আঁকা,<br />একটা রাতের গভীরে দিন থাকতে হয়<br />নইলে ঠাস করে থেমে যেত সময়ের চাকা।</p>
<br /><p>নদীকে সাগরে মিশতে একটা পথ লাগে<br />নইলে জলের স্রোত কি দেখা যেত বদ্ধ বিলে?<br />মেঘ থেকে বৃষ্টি হতে একটা আকাশ লাগে<br />নইলে শত সাগরেও মেঘ হত না পৃত্থির কোলে।</p>
<br /><p>ফুল থেকে ফল হতে সূর্যের কিরণ লাগে<br />নইলে সুফলা বনানী কি হয় বরফ আচ্ছাদনে?<br />পর্বত চূড়া নয় সবুজ পেতে পাহাড় লাগে<br />তেমনি ফুল ফোটে না শুধু ভোমরের গুঞ্জরন।</p>
<br /><p>আমি ক্ষুদ্র একটা বিন্দু হয়ে বাঁচতে চাই<br />অথচ অসীম আমাকে টানে বৃত্তের বাইরে,<br />আমার ভেতরে নদীর সাথে ভাসতে চাই<br />অথচ মেঘের আকাশ অন্ধকারে রাখে ঘিরে। </p>
<br /><p>আমি প্রকান্ড সূর্য চাই না, চাই শুধু আলো<br />সবুজ বনানীও চাই না, চাই একটা বিশ্বস্ত বুক,<br />পাহাড়ের চূড়াসম বিপুল ঐশ্বর্য চাই না আমি<br />চাই প্রদত্ত কারো প্রেম নিস্কন্টক বেঁচে থাকুক।</p>
<br /><p>অথচ আমি অবহেলায় ভাসছি জীবন স্রোতে <br />কেউ বুঝে না সেথায় প্রেম কেন যে কেঁদে মরে,<br />মান-অভিমানটুকু প্রেমের বৃত্তে ঘুরে বিন্দু ছুঁতে <br />শেষে দেখি প্রেম আমায় ছেড়ে দূরে যাচ্ছে সরে।</p>
<br /><p>১৬ আগষ্ট, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/tara-vhora-akash/তারা ভরা আকাশ2021-08-10T18:44:42-04:002023-06-25T18:59:29-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>একটা অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু কতটুকু ক্ষতি করে কোন মানব পরিবারে? আমি পাখি কিংবা পশু পরিবারের কথা বলছি না। ভিডিওতে হলেও তো দেখি পশু পরিবারে হরিণের পাল থেকে কত অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে একটি হরিণ মৃত্যু বরণ করে বাঘের থাবায়। তাতে হরিণ পরিবারের কতটুকু ক্ষতি হয় কে জানে!</p>
<br /><p>আচ্ছা তারাদের মত চাঁদ কিংবা সূর্য যদি খসে পড়ত আকাশ থেকে। যদি অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু হত তাদের খসে পড়া তারার মত, তাহলে কি হত? আকাশ ভরা অগনিত তারা। তাই একটা বা দুইটা বা ততধিক তারা প্রতিদিন খসে পড়লে বা মৃত্যু হলেও তেমন যায় আসে না আকাশের ঐ হরিণ পালের মতই।</p>
<br /><p>অথচ যদি খসে পড়ত চাঁদ কিংবা সূর্য তাহলে সৌর পরিবারের ক্ষতি হত। ক্ষতিই শুধু নয় হয়ত মৃত্যু হত গোটা পরিবারের। সাথে এই পৃথিবীটারও সকল সবুজ, সকল সাগর, প্রকান্ড আকাশ, মেঘ, বৃষ্টি আর শিশিরের মৃত্যু হত। মৃত্যু হত কত শত পাহাড়ি ঝর্ণা, সরোবর, নদী, নদী পাড়ে, পাহাড়ে কিংবা সমতলের জনপদ।</p>
<br /><p>ঠিক তেমনি একটা মানব পরিবারে কারও অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু হলে সে পরিবারেও নেমে আসে মৃত্যু অন্ধকার। তবে সে মৃত্যু চাঁদ কিংবা সূর্যের মত ভয়ঙ্কর নয়। এ যেন ঠিক তারাদের মত। এ কারনেই বোধ করি মানুষ মরে গেলে তারার দেশে তারা হয়ে জ্বলে থাকে অনন্তকাল।</p>
<br /><p>তাই দুঃখ করো না। মানব পরিবারেও কারও কাঙ্ক্ষিত বা অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু স্বাভাবিক। তা<br />নাহলে যে মানব পরিবারের অস্তিত্ব হত হুমকির সম্মুখীন, থেমে যেত ক্রম অগ্রহসরমান মানব পরিবার, থেমে যেত কান্না, শোক। থেমে যেত আবিস্কার, উন্নয়ন, সভ্যতা। চোখের তারায় নামত রাজ্যের আঁধার। তারার আকাশ হত শূন্য! </p>
<br /><p>১১ আগষ্ট, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/bondhu/বন্ধু2021-08-01T13:57:22-04:002023-06-25T18:50:27-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>সবাই এমন একটা বন্ধু চায় যে তার চোখের জলের ভাষা বুঝবে, যে চোখে চোখ রেখে উজ্জ্বল দৃষ্টিতে খুঁজবে আগামী স্বপ্নের খোলামেলা প্রান্তরে একটা ঝাকড়া বটবৃক্ষ হবে বলে। যার ছায়ায় শীতল হবে দগ্ধ প্রান, বুকের বোতামহীন অঞ্চল ভরে উঠবে শংকাহীন মৃদুমন্দ বাতাসে। </p>
<br /><p>সবাই এমন একটা বন্ধু চায় যার হাতে হাত নয়, বরং কাঁধের উপরে হাত রেখে নিমগ্ন হারিয়ে যাওয়া যায় সাগরের বেলা ভূমি ধরে লাল কাকড়ার রাজ্যে। ঝাউ বনতলে ঝরে পড়া শুকনো ঝিরি পাতার বালু বিছানায় শুয়ে থাকা যায় প্রভাতের সূর্য দেখবে বলে শাখার ফাঁক গলে। </p>
<br /><p>সবাই এমন একটা বন্ধু চায় যে বিকেলের পার্কে বেঞ্চে বসে বাতাম খাওয়ার খোসা গুলো নিজের কাছায় গুছিয়ে রাখে, যার যত্ন থাকে বৃষ্টির ছাতাটার প্রায় সবটুকুই বাঁচাক তার চুল ভর্তি মাথা বৃষ্টির জল থেকে। যেন অকাংখিত সর্দী-কাশিতে না ভুগে বন্ধুটি।</p>
<br /><p>সবাই এমন একটা তুই বন্ধু চায় যার কাছে অবলীয়ায় বলতে পারে তার ঋতুস্রাবের কষ্টের কথা, বলতে পারে কাউকে বলতে না পারা তার মনের সকল গোপন কথা, বলতে পারে গতরাতে নাইটিতেও কেন ঘুম ধরেনি মেঝেতে গড়াগড়ি দিয়ে বালিশহীন রাত্রিতে।</p>
<br /><p>অথচ আমি বন্ধু চাই এমন যে স্নেহ মায়ায় ভরিয়ে দিতে হবে কখনও মায়ের মত, অনুশাসনে সঠিক পথ দেখাতে হবে কখনও আস্থাবান বাবার মত, বুকে জড়িয়ে আদর করার মত কখনও হবে বড় বোনের মত, হাতটা ধরে সামনে এগিয়ে যেতে হবে বড় ভাইয়ের মত। অবুঝ হয়ে নিস্পাপ হাসিটুকু ঝরাতে কখনও হবে ছোট্ট শিশুটির মত। আর সকল ভুলগুলো উপেক্ষা করে কর্তা বা কর্তৃ না হয়ে হবে একান্ত বন্ধু চিরকাল।</p>
<br /><p>০১ আগষ্ট, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/eeshorbad/ঈশ্বরবাদ2021-07-27T23:55:24-04:002023-06-25T18:50:40-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>বয়স বেড়ে গেলে চুল দাড়ি পাকে<br />দাঁত নড়ে, পড়ে, চোখে লাগে চশমা, <br />দুই পা থেকে লাঠিতে হয় তিন পা<br />মেয়েকে বলি আমার কি দোষ মা?</p>
<br /><p>এ তো মানব জীবন চক্রের ফের<br />তুইও ছোট কালে হাঁটতি চার পায়ে,<br />কখন যে বড় হলি মনে নেই ও সব<br />এখন ঢুঁ বেড়াস এ গাঁয়ে ও গাঁয়ে।</p>
<br /><p>বাবা তোর বৃদ্ধ হয়েছে এ কথা সত্য<br />তুইও বড় হ'লি পারিনা নিতে কোলে,<br />এ যে কত বড় বুকে চাপা গূঢ় কষ্ট <br />মা হলে কখনও জানবি বয়স কালে। </p>
<br /><p>বুড়োকালে স্বাস্থ্য বলতে হাসপাতাল <br />ডাক্তার নার্স আর গাদা গাদা ওষুধ, <br />রকমারি পরিক্ষা নিরিক্ষার ফল ছাড়া<br />ডাক্তারী আজ অকেজো এ বড় অদ্ভুত।</p>
<br /><p>দেখি এখন পেট হয়েছে ডিস্পেনসারী<br />হাসপাতালের সিকবেড হয়েছে বিছানা,<br />দিনে রাতে সব খাবারই পথ্য এখন<br />যা খেতে চাই সবটাই যেন খেতে মানা।</p>
<br /><p>বৃদ্ধকাল ভর করা নানান ওষুধ পথ্যে<br />এ কেমন জীবন চক্র দিলে হে বিধাতা?<br />কপাল কুঁচকানো চামড়ায় পড়েছে ভাঁজ <br />নিজের কাছে নিজেই এখন প্রেতাত্মা! </p>
<br /><p>মেয়েকে বলিঃ মারে এইত আর ক'টা দিন<br />ডাক্তার হাসপাতাল সকলকে দেবো ছুটি,<br />মেয়ে অপলক তাকিয়ে থাকে কান্না চোখে<br />দৌড়ে গিয়ে বাইরে জড়ায় ঘরের খুঁটি।</p>
<br /><p>মেয়ে কাঁদে আমি কাঁদি, কাঁদে বিধাতাও<br />খন্ডাবে কে জীবনচক্র এযে অমোঘ বিধান,<br />চন্দ্র সূর্য তারা দিন রাত্রিও কত সুশৃঙ্খল <br />শিশু-বৃদ্ধ, জন্ম-মৃত্যুই যেন এক স্রস্টার প্রমান।</p>
<br /><p>২৭ জুলাই, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/nij-grihe-porobashi/নিজগৃহে পরবাসী2021-07-27T06:57:37-04:002023-06-25T18:51:29-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>মুক্তিযুদ্ধ শেষে তো ফিরে এসেছিলে হে জাতির পিতা শেখ মুজিব। সংগ্রাম আগেও করেছ, বেঁচে থাকতে করেছ নাওয়া কাওয়া ভুলে দিনরাত, পরেও করেছ নিঃস্বার্থ। দ্রোহের সংগ্রাম, স্বাধিকার আদায়ের সংগ্রাম। বার বারই ফিরে এসেছিলে। কিন্তু এমন কি হল যে সামান্য সংগ্রাম, অস্তিত্ব আদায়ের মিছিলে গিয়ে আর ফিরে আসে না তোমার ছেলেরা। </p>
<br /><p>গুম! কি যেন এক গুমের ভয়ে ঘুম নেই চোখে কত বাবা-মায়ের। কেন গুমের অভিশাপে থাকবে সমাজ? সত্য কথা, উচিৎ কথা, ন্যায্য কথা, গ্রাহ্য কথা, হক কথা তো বলেছেন রবীন্দ্রনাথ, সুভাষ চন্দ্র, আর বলেছেন দ্রোহের কবি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, ভাসানী, তুমি নিজেও হে জাতির পিতা। নজরুল ইসলাম তো চিন্হিতই ছিলেন বিদ্রোহী বলে। কই বিজাতীয় বৃটিশরাও তো তাদের গুম করেনি!</p>
<br /><p>ক্রসফায়ার! কি যেন এক ক্রসফায়ারের আতংকে এখন ঘুমের সাথে আহারও হয়েছে বন্ধ। কেন বিচারের কোটে কাঠগড়ায় দাঁড়াবে না আসামী। হোক সে চিহ্নিত খুনি, দাগী সন্ত্রাসী! হাতের পাঁচ আংগুল তো সমান হয় না। বিচারহীন সক্রেটিস থেকে ক্রস ফায়ারে তো ক্ষুদিরামকেও মৃত্যু আলিঙ্গন করতে হয়নি। ক্রসফায়ার হয়নি দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ বিরোধী জঘন্য রাজাকারদের খুলিতে বা বক্ষে।</p>
<br /><p>এ কেমন স্বাধীন দেশে রেখে গেলে জাতির পিতা? আজ সত্য কথা বললে গুম হতে হয়, ক্রস ফায়ারে বিচারহীন খুন হতে হয়। চুরি করলে জবাবদিহিতা নাই, মিথ্যা বললে সংসদে তালির রোল পড়ে, বিরোধী দল কাগজে লিখা থাকে ফোরামের মঞ্চে গায় সাম্যগীতি। আর সাম্যবাদীরা মাথায় টুপি দিয়ে খোঁজে মসজিদ, কপালে চন্দন দিয়ে খোঁজে মন্দির। বিলাসিতায় খুঁজে পাশ্চাত্যের আভিজাত্য!</p>
<br /><p>এ কেমন আধুনিক জাতি চেয়েছিলে জাতির পিতা? সুশৃংখল না হয়ে শৃংখলা ভঙ্গেই এখনও যেন গর্ব করে শিক্ষিত, অশিক্ষিত, শ্রমিক, মুটে মজুর। গনতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মতন্ত্র বলে গগন বিদারী আওয়াজ তুললেও সকলেই খুঁজে ছায়া রাজতন্ত্রের মছনদ! খুঁজে বিদেশী আবাস, বেদাশী অনুশাসন, হতে চায় নিজগৃহে পরবাসী! </p>
<br /><p>এ কেমন স্বাধীনতা চেয়েছিলে জাতির পিতা? তোমাকে আজ পন্য করে ফায়দা লুটতে চায় লুটেরা, রাজনীতিবিদ নয় আমজনতার কথা ভাবে আমলারা। পথে, ঘাটে, মাঠে, ফুটপাতে, দেয়াল চিকায়, সস্তা পন্যের মোড়কে অবলীলায় বিক্রি হয়ে যাও তুমি। মুখ বুঁজে কাঁদি, গুম হওয়ার ভয়ে কাঁদি, ক্রসফায়ারের তাক করা অস্ত্র নলের ভাবনায় কাঁদি, মিটিং, মিছিল, সংগ্রাম আর বিদ্রোহ করা ভুলে গেছি বলে আজ নিভৃতে বসে কাঁদি। এ কেমন স্বাধীন দেশ জন্ম দিয়ে গেলে পিতা!</p>
<br /><p>২০ জুলাই, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/eilliney-dhay-pakhi/ইল্লীনে ধায় পাখি2021-07-22T08:27:58-04:002023-06-25T18:50:40-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>বাতাসের বদ্ধ খাঁচায় খিলটা আঁটা<br />তবু বাতাস নিত্য হচ্ছে ভিতর বাহির,<br />এ কেমন যোগ বিয়োগ আর গুন ভাগ<br />কম না পড়া বাতাস কভু হয়না জাহির।</p>
<br /><p>দেখা যায় না সে বাতাস শুধু অনুভবে<br />বুকের ছাতি হাপর হয়ে করে উঠা নামা,<br />কামার আমি তপ্ত বাতাস আমায় ছাড়ে<br />কঙ্গাল আচ্ছাদিত শিক্ত চামড়ার জামা।</p>
<br /><p>সেই বদ্ধ খাঁচায় বসত করে সবুজ পাখি<br />সময় মত আঁটা খিলের কপাট দেয় খুলে,<br />বাতাসের গায়ে মেলে পাখা গন্তব্য ইল্লীন<br />কপাল গুনে হলে দেখা হবে নবীর স্কুলে।</p>
<br /><p>পাপ পূণ্য বুঝি না আমি বক্ষে ধরি কাবা<br />যার ঊর্ধ্বমূখি বরাবরে যে চন্দ্র সূর্য হাঁটে,<br />সেই তোয়াফে শামিল করো মুক্ত বাতাসে<br />ক্ষমিও প্রভু চন্দ্র সূর্য যাওয়ার আগে পাটে।</p>
<br /><p>১৯ জুলাই, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/debudar-prem/দেবু'দার প্রেম2021-07-19T16:57:07-04:002023-06-25T18:50:34-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>দেবু'দা-<br />তুমি আমার কিশোর বেলার <br />গল্পের সাথী। তখন কী গল্প হত তা<br />বেশ মনে পড়ছে। না- একেবারেই না-<br />গোপাল ভাঁড়ের গল্প নয়। বরং গোপালের<br />বোনের কথা, তাকে ভালো লাগার গল্প,<br />তার সাথে প্রেম করার গল্প, প্রেমে পড়ার গল্প। তুমি প্রচন্ড ভালোবাসতে সন্ধ্যাকে।</p>
<br /><p>ইন্টার মিডিয়েট প্রথম বর্ষ। প্রেম করা আর <br />প্রেমে পড়ার যেন উত্তেজিত বয়স। বিকেলে<br />দিনাজপুর রাজবাড়ির ইট ভাঙা রঙ যেন<br />রঙধনুর রঙ হয়ে মনের আকাশে দোল খেত।<br />সেখানে সন্ধ্যা যখন সন্ধ্যা বেলায় মিলিয়ে যেত<br />তোমার চোখে দেখতাম হেমন্তের শিশির।<br />কি করে এত ভালোবাসা যায় কাউকে।</p>
<br /><p>দেবু'দা-<br />তোমার এ ভালোবাসা ছিল এক তরফা।<br />কতদিন বলেছি- মনের বাতায়ন খুলে<br />এক পশলা রোদ্দুর গায়ে মেখে তুমি<br />আরও উষ্ম হও, প্রেমের পৃষ্ঠায় লিখা 'আমি<br />তোমাকে ভালোবাসি' বল সে কথা নির্দ্বিধায়। <br />অথচ তামাম গ্রীষ্মের তাপদাহ তোমার<br />গলকন্ঠে এসে জমত। তুমি শুকনো কন্ঠ<br />নিয়ে ফিরে আসতে। প্রেম তাই চিরকালই<br />ছিল একতরফা। কি ভয়ংকর। তোমার<br />চোখের দিকে তাকাতেও কষ্ট হত।</p>
<br /><p>তাহলে কি হবে এ প্রেমের পরিনতি,<br />কি ভাবে বাঁচাব তোমার শিক্ষা জীবন,<br />তোমার ভবিষ্যৎ? </p>
<br /><p>সন্ধ্যা দেখতে যেন ডানাকাটা পরীর মত ছিল।<br />মাইরি বলছি দেবু 'দা। তুমি কেন? যে কেউ<br />তার প্রেমে পড়বেই পড়বে। আমারও ইচ্ছে<br />হয়েছিল। কিন্তু সব সর্বনাশটা তুমি আগেই<br />করে ফেলেছ। নিজে তো নিজেই প্রেমের বলি<br />হচ্ছ আবার আমাদেরকেও করেছ বঞ্চিত। <br />কতবার বলেছি তোমার হয়ে সন্ধ্যাকে নাহয়<br />আমিই তোমার প্রেমের কথা বলি।</p>
<br /><p>কি যেন একটা ভয় কাজ করত। সেটা আমার<br />ভুল ধারণা। আসলে দেবু'দা তুমি ছিলে স্বার্থপর।<br />ভাবতে কথা বলতে গিয়ে যদি সে আমার প্রেমে পড়ে যায়?</p>
<br /><p>সেকি হয়? আবার হয়ও শুনেছি। আকাশ <br />হোকনা একটা, চাঁদ হোকনা একটা। কিন্তু <br />চন্দ্রমুখীর চাঁদের মতই যে অনেক ভক্ত।<br />কার আকাশে সে অস্ত যাবে কে জানে। সে<br />তো ভালোবাসে চাঁড়াল থেকে চন্ডী। তাই<br />এ নিয়ে তোমার বিরাগ ভাজন হতে চাইনি<br />আর কোনদিন।</p>
<br /><p>তুমি ক্লাসরুমে ঘুমিয়ে পড়েছ কতদিন। <br />পাশে থেকে চিমটি দিয়ে তোমাকে জাগিয়ে<br />রাখতাম। সারারাত কি ছবি আঁকতে সেই<br />প্রেয়সীকে নিয়ে, কি কবিতা লিখতে তার<br />চুলের ডগায় যে বাতাস খেলত, পায়ে পায়ে<br />হেঁটে যাওয়ার ছন্দে যে পায়েল ঘায়েল হত,<br />উন্নত বক্ষে যে ওড়না হাওয়ায় ভাসত, <br />চোখের কাজলে যে মেঘ থমকে দাঁড়াত <br />তাকে নিয়ে।</p>
<br /><p>দেবু'দা<br />এখন তুমি কোথায় আছো? বড় হতে হতে<br />আমরা কেমন করে যেন চারিদিকে ছড়িয়ে<br />ছিটিয়ে পড়লাম। শুনেছি সন্ধ্যা বিয়ে করে<br />চলে গেছে ওপারে। যাওয়ার আগের দিন তোমাকে বলে গেছিল- তুমি ভিতু, স্বার্থপর, <br />তোমার ভেতরে প্রেম আছে কিন্তু তার প্রকাশ<br />এতটুকু নান্দনিক নয়, এ যেন মোমের ভেতরে<br />আটকে থাকা সুতোর আলো। কি হবে সে<br />প্রেম যে প্রেম আলো ছড়াতে জানে না,<br />কথা বলতে জানে না, যে প্রেম ছুঁয়ে দেখতে জানে না!</p>
<br /><p>এর পর তোমার সাথে অনেক যুগ পরে একবার<br />দেখা হয়েছিল পারবতীপুর রেল জংশনের <br />প্লাটফর্মে। খোঁচা খোঁচা দাড়ি, জটা চুল, পরনে<br />চেঁড়া ময়লা টিশার্ট, ট্রাউজার, পায়ে সুতলী দিয়ে জীর্ণসংস্কার করা খুবলে খাওয়া চামড়ার স্যান্ডেল 'সু। বিধ্বস্থ লাগছিল। সিগারেট ধরেছ যে অনেক বছর তা তোমার গোঁফের হলুদ রঙ দেখেই বুঝেছিলাম। আমায় চিনতে পেরে তুমি এড়িয়ে গেছ মানুষের ভিড়ে।</p>
<br /><p>দেবু'দা-<br />কি হল এমন অপেক্ষা করে? অপেক্ষা গুলো তো দীর্ঘই হয়। ধৈর্যহারা হতে হতে নিজের ভেতরে জন্ম নেয় মনুষ্যত্বহীন প্রতিজ্ঞা, চোখের তারায় নামে তপ্ত সূর্যের ছটা, ভাবনারা হয় একমূখী ভোতা, হাসি মিলিয়ে যায় কষ্টকে আলিংগন <br />করে, আর রাত হয় নির্ঘুম কুকুরী নিঃশ্বাসের।</p>
<br /><p>তবুও দুর্বল প্রতিক্ষা!<br />এখনও ভাবি তুমি সব কিছু ভুলে, দাড়ি গোঁফ কামিয়ে, চুলে কদম ছাঁট দিয়ে, পরনে অক্সফোর্ড সু'য়ের চমকানির সাথে ট্রাউজারে শার্ট টাগ-ইন <br />করে দাঁড়াচ্ছ কবিদের সভার মঞ্চে। পান্ডুলিপি নিয়ে মগ্ন তোমার শেষ কবিতা আবৃত্তি নিয়ে। যেখানে বনলতা সেনের মত নয় বরং সন্ধ্যা'র মত রমনী এসে আজীবন শান্তিতে ভাসাবে বলে তোমার কাব্যিক মন।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/prem-chironton/প্রেম চিরন্তন 2021-07-18T03:35:42-04:002023-06-25T18:59:06-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>অভিযোগ করার কি আছে বল<br />কার কাছেই বা করব নালিশ,<br />উপরআলা উপরে বসে দেখছে সব<br />নীচেও দুই স্কন্ধে সে রেখেছে পুলিশ!</p>
<br /><p>কোন এক কালে ছিল অনেক আবেগ<br />ভালোবেসে দেখলাম কত মানুষ,<br />সুসময়ে থাকে তারা নিত্য আশেপাশে<br />দঃসময়ে সবাই উড়ায় ফানুস।</p>
<br /><p>তাইত এখন মিষ্টি কথা লাগে বড় তিতা<br />হৃদয় দুয়ার আঁটা রাখি শক্ত খিলে,<br />থুথু দিয়ে যায় কি ভেজা শুকনো চিড়া?<br />কানটা খুঁজি আগেই নিল কিনা চিলে।</p>
<br /><p>তবুও ভালোবাসার কাঙ্গাল হয়ে ফিরি<br />অপেক্ষাতে থাকি প্রেমের জন্য,<br />কষ্ট পেয়ো না সন্দেহ নিয়ে হৃদয় কোনে<br />এখনও প্রেমে সবুজ আমি নই বন্য।</p>
<br /><p>পারো যদি ক্ষমা করো সেটাই বড় ধর্ম<br />যা যুগের কিতাবে লিখা স্বর্ণাক্ষরে,<br />জেনো তোমার প্রেমে ধন্য রব আজীবন<br />জানি কেউ মনে রাখে না স্বার্থপরে।</p>
<br /><p>১৬ জুলাই, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/souda/সওদা2021-07-16T12:10:22-04:002023-06-25T18:59:27-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>তৃপ্তি অতৃপ্তি নিয়ে জীবন বেশ চলছিল।<br />তবু সবকিছু এসে কেমন থমকে গেছে<br />সম্মুখে দেখি পুলসিরাত,<br />আলো দেখবে বলে জরায়ুর মুখ খুঁজে।<br />যদিও ভালোই ছিল মানব শিশুরা গর্ভে <br />পরম যত্নে তিনশত দশ রাত।</p>
<br /><p>মহামারী কারবারি সেটাও তারই দোকান।<br />ক্রেতা হয়ে মানুষ তুমি কি কিনলে সে হাটে<br />বিশ্ব চরাচর আজ নগ্ন ফোরাত,<br />মৃত্যু প্রহর গুনতে গুনতে মৃত্যুর সাথে বাস।<br />নিজেই মরে গেছো নাকি আছো বেঁচে তবু<br />কার জন্য চাইবে মাগফেরাত।</p>
<br /><p>তারারা করে কানাকানি চন্দ্র-সূর্য ঝলকায়।<br />আরশে আসীন হয়ে কি ভাবছেন বিধাতা<br />সে তো খুঁজে না অজুহাত,<br />মৃত্যু একবারই হয় তবু চাই সওদায় মৃত্যু। <br />সেইই তো ছিল আসমানী আদেশ নিশেধ<br />অথচ সুজোগ করছি বেহাত।</p>
<br /><p>১৫ জুলাই, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/asobei-fire-sob-anondo/আসবেই ফিরে সব আনন্দ2021-07-11T12:51:00-04:002023-06-25T18:50:20-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>আর কাটছে না বন্দী দিন<br />বেড়েছে অনেক দেনা অনেক ঋণ<br />কার কাছে পাতব কত হাত<br />ঘরে নেই ভাত<br />কাটছে না তাই করোনা অভিশপ্ত রাত, <br />যতই বলি সরকার যাক নিপাত।</p>
<br /><p>পৃথিবী জুড়েই চলছে যে মহামারী <br />তার সাথে করতে চৌকস বাহাদুরী<br />পারছে যেখানে বিশ্ব মড়ল<br />সেখানে আমাদের মত গাড়ল<br />যদি ভেবে নিই আমরা জয় করব করোনা<br />যেখানে উপেক্ষিত স্রস্টার করুনা<br />উপেক্ষিত নিয়ম মাফিক দূরত্ব আর মাস্ক<br />তার চেয়ে সরকার নিপাত করার টাস্ক<br />নিয়ে কথা না বলে বরং নিজেরা হোই সতর্ক<br />সাটডাউন, লগডাউন নিয়ে তর্ক-বিতর্ক- <br />ছেড়ে ভাবি আর যেন না বাড়ে ঋণের বোঝা,<br />সাপ হয়ে দংশনে নিজেই হোচ্ছি নিজের ওঝা।</p>
<br /><p>এ কেমন অভিশাপ কেমন শৃঙ্খলা <br />অনাহারের ভয়ংকর জ্বালা সারাবেলা<br />তবুও মৃত্যু মুখে মানছিনা কোন শাসন <br />পথে ঘাটে মাস্ক ছাড়া সকলেই দিচ্ছি ভাষণ<br />হায়রে ভাষণের দেশ!<br />করোনায় শৃঙ্খলা না মেনে নিজেরাই হবি শেষ।</p>
<br /><p>তবু মানবি না করোনা একটা মহামারী অসুখ<br />মনে থাকবে কেন তোর সুখ<br />ভুলে গেছিস ভাত দিবে সে যে দিয়েছে মুখ<br />ঋণের বোঝা নিয়ে যতই দিন আসুক<br />শৃঙ্খলা যে স্রস্টাও করে পছন্দ<br />তাই বাঁচার জন্য শহর নগর থাকনা বন্ধ<br />হয়ত এমন করেই সম্মুখে দাঁড়িয়ে সুদিন<br />শোধ হবে সকল দেনা, সকল ঋণ<br />সানকিতে ছড়াবে ইলিশ মাছের গন্ধ,<br />আসবেই সুদিন, আসবেই ফিরে সব আনন্দ।</p>
<br /><p>০৭ জুলাই, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/asha-zawai-jeebon/আসা যাওয়াই জীবন2021-07-07T13:48:21-04:002023-06-25T18:50:18-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>জীবন নিয়ে বলিহারি অনেক কথা বলি আমরা। এর অনেক সংগত কারনও আছে। আসলে শুধু জীবন নয় প্রকৃতির দিকে তাকালেও তাই দেখি। <br />সাগরের যে ঢেউ এই মাত্র পুরোনো পাড় ধুয়ে দিয়ে গেল সেই ঢেউ কি আর একই ভাবে ফিরে আসে?<br />যে তারাটা গতরাতে খসে পড়ল সে কি আর ফিরে আসে?<br />নদীর যে জল সম্মুখে বয়ে গেল সে কি আর ফিরে আসবে?<br />বসন্তের যে মাতাল হাওয়ায় ফুল ঝরে পড়ল, পাতা ঝরে গেল সেই একই বাতাস কি আর ফিরে আসে আসে? আসে না। আসে না মানে একই ভাবে আর ফিরে না!</p>
<br /><p>আসে যা তা নতুন করে নতুন আঙ্গিকে নতুন আসরে নতুন তরঙ্গ নিয়ে আবার ফিরে আসে। ফিরে আসে তা মানুষের মনে, মননে, শরীরে, চোখের দৃষ্টিতে, কানের কুহরে। নিঃসাড় হলে তো কিছুই আর ফিরে আসে না সেটাই প্রকৃত বাস্তবতা। যেমন রাত ফিরে আসে, চাঁদ ফিরে আসে, দিন ফিরে আসে, সূর্য ফিরে আসে। অথবা যে নীলসাগর ট্রেনটি স্টেশন ছেড়ে আজ চলে গেল সেও ফিরে আসে। মাঝে মাঝে মনে হয় মানুষ ছাড়া অন্য কোন প্রাণী কি বুঝে এই ফিরে আসার দৃশ্য, দর্শন, তরঙ্গ বা সৌন্দর্য? </p>
<br /><p>আসা যাওয়া নিয়ে প্রকৃতির সাথে এমন অনেকের কত কথা, বন্ধুত্ব, প্রেম, মান অভিমান মনে পড়ছে আজ। আমাদের সকলেরই কোন না কোন ভাবে সকাল বিকেল রাত্রি এক আড্ডার হাট ছিল, যাকে বলি "চাঁদের হাট"। কিন্তু কালবোশেখী ঝড়ের চেয়েও ভয়ংকর কি এক মহামারী করোনা সে চাঁদের আকাশকে করল আঁধার কালো। ভেঙে দিল সে চাঁদের হাট। আমাদের সেই আড্ডা, সেই বন্ধুত্বকে দূরে সরাতে সরাতে করে দিল পর। কবে যে এ থেকে মুক্তি পাব, কবে যে ফিরে পাব সেই হাট, সে আড্ডা, কে জানে?</p>
<br /><p>করোনা উত্তর আমরা যেন চাঁদের হাটে আবার একত্রে বসে জোছনার পেয়ালায় চুমুক দিয়ে উল্লাসে মেতে উঠতে পারি, আবার যেন সাগর বেলায় নতুন নতুন ঢেউয়ের জলে পা ভেজাতে পারি, আবার রাতের আকাশে তারার সাথে বলতে পারি প্রেয়সী সংলাপ, আহ্লাদী হতে পারি পলি মাটিতে ফসল ভরার গানে বয়ে চলা শান্ত নদীটির সাথে, প্রেমের শিহরণে ভাসতে পারি বাতাসে গন্ধে মাতাল করা বসন্তের সাথে- যতদিন বেঁচে থাকব। সে স্বপ্নটুকু নিয়েই মনকে এখনও লগডাউনে রেখেছি বন্দী, যদিও এ বন্দীদশা জীবন যেন অন্ধকার কারাগারের চেয়েও ভয়ংকর, এ বন্দীদশা জীবন যেন " কন্ডেম সেল" এ আটকা পড়া খুনি কয়েদীর চেয়েও যন্ত্রণার! অথচ খুনি করোনা অবাধে বিচরণ করছে সারা পৃথিবী!</p>
<br /><p>০৭ জুলাই, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/birohe-amar-srabon-kade/বিরহে আমার শ্রাবণ কাঁদে2021-07-04T14:16:30-04:002023-06-25T18:50:23-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>সারারাত বৃষ্টি হল, থেমে থেমে, এক নাগাড়ে। কখনও ঝরঝর, কখনও ঝমঝম, কখনও ঝিরিঝিরি। আমি আধো ঘুম জড়ানো চোখে বেশ টের পাচ্ছিলাম। টের পাচ্ছিলাম মেঘের শব্দহীন ঝরা বৃষ্টির তন্ময় নিবিড়তা। কিন্তু এর পরও তোমার বিরহ ভাবনারাই ছিল যেন বেশী মুখোর।</p>
<br /><p>বিভিন্ন মৌসুমের প্রতিটি রাতেরই একটা আলাদা রুপ আছে। হোক সে তারার আলোয় শুধুই ছায়াচ্ছন্ন, হোক সে মেঘে ঢাকা শুধুই অন্ধকার, হোক সে জ্যোৎস্নার আলোয় অন্ধকার ভাঙা শুধুই শীতল অথবা শ্রাবণের বৃষ্টি ধারায় শুধুই তন্ময়তার ঘোরে নিবিড়। গভীর অনুভবে তবুও রাতের একটা অপরুপ রুপ আছে।</p>
<br /><p>রাতের আকাশে তারারা হাঁটে, চাঁদ হাঁটে, মেঘ হাঁটে, সময় হেঁটে হেঁটে ভোরের আলো ফোটায়। অথচ শ্রাবণের রাতের আকাশে কখনও কখনও এক নাগাড়ে বৃষ্টিরা ঝরে পড়ে। তাইত বিরহী চোখেও বৃষ্টিরা ঝরে, কান্নারা ঝরে, আলোরা ঝরে কিন্তু হাঁটে না। ঘনকালো অন্ধকার হয়ে আসে বিরহী চোখ তখন কোন পরবাসে আপন জনের কথা ভেবে।</p>
<br /><p>এমন তো নয় যে এ বৃষ্টির শব্দ কেবল শ্রাবনেই সারা রাত ধরে থেমে থেমে কখনও এক নাগাড় আসে কানের পর্দায় অথবা তোলপাড় করে বুকের ভেতর আমার। এখন মেঘ, বিদ্যুতের ঝলকানি, মেঘের গর্জন, এ শ্রাবণ বৃষ্টির জলধারার শব্দ, কান্না আমার বুকের ভেতর প্রতিনিয়ত কি এক রিহার্সাল করে। এ যেন এমন তোমার বিরহে আমার বৃষ্টি মুখোর শ্রাবণ শুধুই কাঁদে।</p>
<br /><p>০২ জুলাই, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/manob-jonom/মানব জনম2021-06-19T17:37:14-04:002023-06-25T18:51:23-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>আমরা কেউই মৃত্যুর মুখোমুখি হতে চাই না,<br />যদিও জানি সে মৃত্যু আমাকে করবে পাকড়াও,<br />বয়স লুকিয়ে নিজেকে জোয়ান ভেবে যতই আঁকড়াও,<br />সময় হলে তুমি নও, সে মৃত্যুই সম্পন্ন করবে সব কান্ডকারখানা।</p>
<br /><p>কি হবে তখন সোনার দেহ থাকবে পড়ে মাটির নীচে অনন্তকাল, <br />সেখানে কে থাকবে, কি থাকবে নির্জন বড্ড একা একা,<br />তুমি না থাকলেও কেউ একজন থকবে প্রতিদিন করবে দেখা,<br />কেমন হবে তার স্বভাব, কে জানে ভালোবাসবে না ঘৃণা করবে সন্ধ্যা-সকাল।</p>
<br /><p>এমন ভাবনায় মাঝে মাঝে বড্ড কষ্ট হয় এমন মানব জন্ম নিয়ে,<br />কি জানি ভালো হত হয়ত পাখি হয়ে, নাহয় জন্ম নিতাম হয়ে বৃক্ষ,<br />হয়ত কেউ ভাববে আশরাফুল মাখলুকাত হয়েও আমি বড়ই মূর্খ্য,<br />পরকালে কত কি অপেক্ষায় আছে যা কেবল জন্ম নিয়েছি বলে মানুষ হয়ে।</p>
<br /><p>তবুও চেয়ে থাকি আগামী দিনের পথে কখন বাজবে শেষ ঘন্টা,<br />কখন সন্ধ্যাবাতির আলো ঠেলে দূরদীগন্তে ধ্বনিত হবে আযান,<br />আমি নীরবে প্রভু তোমার নাম নিয়ে বক্ষে ধরি ন্যায়ের মিজান,<br />পাখি, বৃক্ষ হতে চেয়েছি ঠিকই তবু তুমিই জানো কি ভাবে তোমাকে খুঁজে মনটা।</p>
<br /><p>১৯ জুন, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/osustho-janalay-vhalobasha/অসুস্থ জানালায় ভালোবাসা2021-06-17T10:43:16-04:002023-06-25T18:51:47-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>অসুস্থতায় জানালাও কেমন পর হয়ে যায়। তবুও দূরের প্রকৃতি দেখব বলে ধীর পায়ে সে অসুস্থ জানালার শার্শীতে এসে দাঁড়াই। চেয়ে থাকি প্রকৃতির দিকে। সে তার মত করেই সকাল আনছে, বৃষ্টি ঝরাচ্ছে, দুপুরকে উপড় করে কখনও রোদ নামাচ্ছে, সন্ধ্যার আহবানে একটু রক্তিম শান্ত হচ্ছে। </p>
<br /><p>জানালায় দাঁড়িয়ে দেখি এক টুকরো রোদ গুমড়োমুখী মেঘ সরে যেতেই কেমন ফিক্ হেসে উঠে। আসলে রোদ হাসে -না সূর্য হাসে, প্রকৃতি হাসে -আনা আলো হাসে বুঝার চেষ্টার চেয়ে হাসিটাই খুব ভালো লাগে। মনে হয় তুমি জানালার ওপারেই দাঁড়িয়ে হাসছ। অথচ তুমি কাছে নেই। কোভিডে কাছে থাকতে যে নেই! মেনে নিয়েছি।</p>
<br /><p>তবে গুমড়োমুখী মেঘটাকে খুব মনে পড়ছে। ও একটু সরে না গেলে কি এমন ফিক্ করে প্রকৃতির হাসিটা অসুস্থ জানালা থেকেও দেখা যেতো? তবে এখন আর এক ভাবনায় তোমাকে আবিস্কার করা হল। তোমার গুমড়োমুখী মুখ দেখলেই খারাপ লাগত। অথচ এখন মনে হচ্ছে কখনও কখনও তোমার গুমড়োমুখী মুখও যে কত সুন্দর তা জেনে গেছি।</p>
<br /><p>১৪ জুন, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/time-line-e-okatto-preme-vhalobasa/টাইম লাইনের অকাট্য প্রেমে ভালোবাসা2021-06-15T08:03:03-04:002023-06-25T18:59:33-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>লাওহে- মাহফুজের কাছাকাছি কোন আকাশের ঘোরেই যেন ছিলাম আমি। কি এক ঐস্বর্গীক শীতলতায় আমার দৃষ্টি ফিরল কোটি কোটি বছর বয়ে চলা টাইম লাইনের ঘন্টার কাঁটার দিকে। আমি নিজেকে আবিস্কার করলাম সুদূর সমুদ্রের কোন এক উপকূলে পর্যটনের জানালায় ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছি আর একটা মেঘাচ্ছন্ন সন্ধ্যা দেখছি। বুকের ভেতরে তোমাকে নিয়ে তখন গভীর সমুদ্রের জানা কি অজানা গভীর স্রোত বয়ে চলেছে।</p>
<br /><p>তর সইছে না। তাই সেকেন্ড আর মিনিটের কাঁটাকে উপেক্ষা করেই ঘন্টার আস্রয় নেয়া। ভালো হত যদি টাইম লাইনে কোন বছরের কাঁটা থাকত। এমন করে সন্ধ্যা দেখার সুজোগতো কতই হয়েছে। কিন্তু আকাশে গভীর করে জমে ওঠা কালো পুয়োতী মেঘের দুধের বোঁটা থেকে যখন ঝরল বৃষ্টি, দেখি সে বৃষ্টির রঙ কালো নয়, কি অমীয় ঝাপটায় জড়িয়ে যাচ্ছিল আমার সন্ধ্যার স্বচ্ছ বৃষ্টি স্নাত আকাশ যেন তুমি জড়িয়ে আছো আমার সকল অস্তিত্ব।</p>
<br /><p>ঝুম বৃষ্টি ছেড়ে আমি একটি বারও ফিরে যেতে চাইনি সে হাত ছেড়ে পর্যটনের কামনার বেডে। শুধু চেয়েছি তুমি শক্ত করে, আরও বেশী শক্ত করে আমাকে ধরো। কেউ যেন আর আমায় তোমার থেকে বিচ্ছিন্ন করতে না পারে এক মুহুর্তও। যদি কেউ করে করুক সেই লাওহে- মাহফুজের মালিক। তবুও তার কাছে আজীবন চাইব সব জীবনেই এই এক হয়েই যেন থাকা হয় তোমাকে সংগে করে টাইম লাইনের অকাট্য ফ্রেমে অনাগত দিনেও।</p>
<br /><p>৫ জুন, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/thak-dure-kodachit/ থাক দূরে কদাচিৎ 2021-06-13T19:58:26-04:002023-06-25T18:59:33-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>ভাইরাস থেকে এবার যদি বেঁচে যাই <br />সাধ্যি নেই কারও আমাকে রুখে,<br />এক চোখের পলকের জন্যও না, <br />মরা নদী হয়ে শুয়ে থাকব তোমার বুকে।</p>
<br /><p>তোমার চোখের তারায় দৃষ্টি নয় শুধু -<br />ভালোবাসার পেছন থেকে উঁকি দেয় শাসন,<br />সেও আমাকে আটকাতে পারবে না<br />তোমার আঁচল তলেই পাতব আমার আসন।</p>
<br /><p>লোকের দুষ্ট কথায় পাড়ার তেমাথায় তখন<br />চায়ের স্টল ঘিরে থাকবে কত্তোনা গুঞ্জন,<br />প্রকৃত বন্ধু চেনা যাবে তখন তোমার নেশায় <br />ঘুর ঘুর করে বাগিয়েছে কারা মনোরঞ্জন। </p>
<br /><p>কিচ্ছু পরিচিত আপনজনেরা থাকবেই<br />যারা তিল কে তাল বানাবে নইলে গল্প জমে?<br />সে নিয়ে গোপনে চোখের জলে সাগর ধরেছি<br />পবিত্র হতেও সুজোগ দেয়নি আবে যমযমে।</p>
<br /><p>এবার আর শুনব না কিছু কাজের বায়না<br />কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকেই মৃত্যুর আগেও,<br />তাই বলে কি শুধু কোজাগরী চাঁদ করব আশা<br />এখন সব মাসের চাঁদই চাই এমন কি মাঘেও।</p>
<br /><p>এবার আমি ফিরবই শুধু তোমাকে পেতে<br />সামনে পেছনে কে আছে কি আছে অনিশ্চিত! <br />ওরা ওদের কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে থাক তাতে<br />ন্যানো সেকেন্ডও নয় আর থাক দূরে কদাচিৎ। </p>
<br /><p>৩০ মে, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/pora-gas-paka-amer-korcha/পড়া গাছ পাকা আমের কড়চা2021-06-10T10:50:56-04:002023-06-25T18:55:21-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>সেদিন ফ্ল্যাট বাড়িতে ফ্রীজ থেকে গড়িয়ে পড়া পাকা আমের শব্দে হারিয়ে গেলাম কিশোর বেলার গ্রামের বাড়িতে। চালে পাকা আম পড়ার শব্দ, গাছের তলায় ধুপ করে আম পড়ার শব্দ আজও এত পরিচিত, এত নস্টালজিক তা যেন মুহুর্তে কানের পর্দায় দ্রীম দ্রীম করে বাড়ি খেলো। যা বলে শেষ করা যাবে না। কান খাড়া করেই রাখলাম আরও কিছুক্ষন। আরও একটা দুইটা আম গড়িয়ে পড়ে কি না তা শোনার জন্য। কিন্তু অন্য শব্দের ভীড়ে আম পড়ার শব্দ তখন বন্ধ।</p>
<br /><p>বাড়ির সদস্যরা বুয়াকে এক হাত নিতে ব্যস্ত। আমি বললাম থাক না কি এমন ক্ষতি হল। কিন্তু এত দাম দিয়ে কেনা আম নষ্ট হল কিনা সে শোকেই ব্যস্ত বাড়ির সকলে। অথচ আমার কাছে ওই একটা আম নষ্ট হয়ার চেয়েও আম পড়ার শব্দ শুনতে পাওয়ার জন্য যে কত মূল্যবান শৈশব অতীত খেলা করে যাচ্ছিল তা বুঝাই কি করে। সেই চেনা শব্দটুকু যেন না হারায়। আম ফ্রীজ থেকে পড়ুক, আরও দুই চার টা পড়ুক , প্রতিদিন পড়ুক। ওরা ঝগড়াটা বন্ধ করুক নৈলে আম পড়ার শব্দের রেশটুকুও যে কেড়ে নিচ্ছে ওরা। কাজের বুয়ার সাথে এতক্ষনের ঝগড়ায় মৃত্যু হতে থাকল আমার ভেতরে ভেতর উন্মুখ হয়ে উঠা স্মৃতির শব্দ রেশ আর হারিয়ে যেতে লাগল মা'র আঁচল তলের স্মৃতি। </p>
<br /><p>ইচ্ছে হচ্ছিল বুয়াকে বলি প্রতিদিন আমি বাসায় থাকলে বুয়া যেন ইচ্ছে করেই একটা দুইটা আম- ফ্রীজ থেকে টাইলসের মেঝেতে ফেলে দেয়। কেউ বললে বলবে স্যারে পাকা আম মেঝেতে ফেলে দিতে কইছে। যাতে করে আমার বুকের ভেতরে আমবাড়িতে আমার শৈশব দোল খেয়ে যায়, আমি যেন আর একটু বেঁচে থাকি সে শব্দের মাঝে। আমি গোপন চোক্ষে গ্রামের বাড়িটি দেখে হারিয়ে যাই সেই পরিবেশে একটু চাংগা থাকতে, আর একটু করোনা, রোগ, শোক, ভুলবুঝাবুঝির সংঘাতের কথা ভুলে থাকতে পারি বাবা-মা'র কবরটাকে বুকে চেপে ধরে থাকতে পারি।</p>
<br /><p>মনে আছে লাল সিঁদুরে পাকা আম নিয়ে একটা দিনের কথা। মাকে বললামঃ তুমিও একটু খাওনা মা। তোমাকে ছাড়া এত সুন্দর আমটা খেতে মন চাইছে না। মা বলেঃ পাগল ছেলে আমার! তাই বলে কাছে টেনে নিয়ে মিছেমিছি জিহবায় শব্দ করে খেয়ে বলে নে খেয়েছি এবার খা বাবা। মায়ের দিকে কিছুটা সময় তাকিয়ে থেকে বুঝতে চেষ্টা করতাম, মা- তুমি এমন কেন এত ভালোবাসো কেন অথচ কারও কাছে কেন তোমার অভিযোগ বা বায়না থাকে না। ভাবতে ভাবতে ছুট দিতাম আম হাতে বাহির পানে।</p>
<br /><p>আমের মৌসুম বলে এখন আর মৌসুমও নেই, প্রতিক্ষা নেই। আবেদন নেই। সারা বছর কত কিছিমের আমের হাট বসে, শপিং মল, সুপার মার্কেট, কাঁচা পাকা বাজার কত বড় বড় আম বিতান, আমের আড়ত। ল্যাংড়া, ক্ষিরসাপাত, গোপালভোগ, ফজলি, আশ্বিনা, বোম্বাই, অগ্নি, অমৃত ভোগ, আলফাজ বোম্বাই, আতাউল আতা, আরিয়াজল, আরাজনমা, আলম শাহী, গিলা, গোলাপবাস, আনারস, ইলশাপেটি, কলাচিনি, কাঁচামিঠা, কালিয়া, কৃষ্ণচূড়া, টিক্কাফারাশ, টিয়াকাঠি, কালাপাহাড়ী, কালিভোগ, চোষা, আম্রপালি ইত্যাদি।<br /> <br />আনমনের কোন আম মেলার দোকানের সামনে ধীর পায়ে এসে তবুও দাঁড়াই। কিছু বাতলে দেয়া আম কিনি খাই ভালো লাগেনা। নিজের চয়েসের আম আরও কিনি। কিন্তু মনে হয় হরেক রকম নামের আমের মধ্যে ঐ একটা লাল সিঁদুরে গোপাল ভোগ আম ছাড়া আর কোন আমই চিনি না। গাছের নীচে কুড়ে পাওয়া আমের সেই মিষ্টির স্বাদ আর কোন দিন কোন আমে পাওয়া হল না। বড়ই আফসোস!</p>
<br /><p>বগুড়া সি এম এইচ<br />২ জুন, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/charpotro/ছাড়পত্র 2021-06-05T10:17:37-04:002023-06-25T18:50:31-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>অভাবকে বলেছি সে যেন তোমাকে দিনে রাতে চোখের জল ফেলা থেকে বিরত রাখে, সে তোমার নয়, সে যতটুকু তার সবটুকু শুুুধুই আমার, আর কারও নয় তা শুধুই আমার,<br />কষ্টকে বলেছি সে যেন তোমাকে সারাটাক্ষন আনন্দের কথা বলে কানে কানে ফাঁকে ফাঁকে। জীবনে এত কষ্ট পেলে আর কাউকে কি কষ্ট থাকে দেবার।</p>
<br /><p>আমার ভালবাসাকে বলেছি এবার সে? না- আমি? কে কতকখানি বেশী ভালোবাসি আজীবন তোমাকে নিঃস্বার্থ ভালোবাসায় সব কিছুর বিনিময়ে,<br />ভালোবাসারা নিরুত্তুর ছিল, বলেছে সে এ কথা বলতে পারবে না। ভালোবাসা দিয়ে গেছে চিরকাল কিন্তু ভাবেনি কাউকে কখনও ভালোবেসেছে কি না মন দিয়ে।</p>
<br /><p>আমি বলেছি অন্ততঃ একটা উপকার করো, ভালোবাসার কাজল চোখে জল দেখলে কষ্ট হয় বড়ো। চোখের জলের রঙ কেমন, জানিনা। কোন রঙে কি কষ্ট থাকে ভড়ং হতে,<br />চাই তুমি আনন্দের রংটুকূ দাও সময়ে অসময়ে যাতে করে কষ্টের জল না আসে তোমার চোখে তাতে অন্তত কাছে বসে ছুঁয়ে না দেখার কষ্টটা যাবে প্রতি অসুস্থ রাতে।</p>
<br /><p>এবার গোধূলিকে বলেছি তোমাকে নিয়ে দীগন্ত ছুঁয়ে অজানায় হারিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে গুলো ন্যুয়ে ন্যুয়ে এখনও ভেতরে ভেতরে হয়ে আছে তারুন্যের উচ্ছলতায় গাঢ় সবুজ,<br />কত হাজার বছরের স্বপ্ন লালন করেছি বুকে, তোমাকে যেন একটিবার খুঁজে পাই। তোমাকে সাথে করে ছুটব সেখানে যেখানে ডাকে যে মায়া তোমার এতই অবুঝ। </p>
<br /><p>তোমাকে কিচ্ছু করতে হবে না। শুধু আমার মুখের দিকে চেয়ে ঠোঁটে ইষৎ হাসির বলয় এঁকে সানকিতে পারলে কেবল দেবে এক মুঠো বিন্নি ধানের খই, <br />যে মাদুরে বসে এক ধ্যানে সকাল সন্ধ্যা রাত্রি মাড়িয়ে তোমার অজানা পথে পথে ঘুরেছি মাদুরে সানকির সাথে এক মুঠো আখের রস, ঝিরি পানির মোটকা আর দিও কলা পাতা দই। </p>
<br /><p>তোমাকে ছেড়ে আসতে কখনই মন চাইবে না, মাথার বেণি খুলে পারলে বেঁধে রেখো জোর করে তরু লতার ফাঁকে তৈরি করা তল্লা বাঁশে বেঁধেছ যে কুঠির,<br />ওর মাচানেই কাটিয়ে দিতে পারব সারাট জীবন, কেননা আমরা প্রাকৃত হতে চাই নিয়ে প্রকৃতির ভূবন। যেখানে প্রতিদিন ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায় অকৃত্রিম ভালোবাসার শিশির।</p>
<br /><p>জঞ্জালের শহরকে বলেছি খবরদার সে যেন, নেটের নেশায় তোমাকে না আটকিয়ে ফেলে এহেন চারিপাশের কত নেশাড়ু আকর্ষণ খুন থেকে খনা,<br />কেননা চাই না তোমার কোমলমতি মন হোক খান খান, আর ঘুম হারা চোখে ঘুমের পিল খেয়ে হারতে বসো না, জানতে চাই না বেশী যদি হয় তো শুধুই হোক নিজেদেরকে জানা।</p>
<br /><p>সেই হবে অনেক করে বেঁচে থাকা তোমার সাথে জনম জনমে। তা নাহলে কি হবে বেঁচে থাকতে চেয়ে এত ত্যাগ স্বীকার করে হাজারও স্বপ্নের জীবনের এত মূল্য ছাড়ে,<br />শেষ বয়সে শুধু একটি শক্ত সামর্থ হাতই দরকার, আমি সেটাই চাই। তোমার হাত শক্ত করে ধরতে। তা নাহলে শেখালে কেন বল শেখালে কেন স্বার্থহীন ভালোবাসা কিসে এত বাড়ে?</p>
<br /><p>বগুড়া CMH<br />০৪ জুন, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/vhasao-provu-lubaney/ভাসাও প্রভু লুবানে2021-05-19T03:36:20-04:002023-06-25T18:59:49-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>🍂 ঈদে ফিলিস্তিনিদের এই দুঃসময়ে তাদের বেঁচে থাকা ও মৃত্যুর স্মরণে তথা স্রস্টার কাছে সারা জাহানের নিরাপত্তা চেয়ে আমার এ সামান্য নিবেদনঃ<br />🌙🌙🌙🌙🌙🌙🌙🌙</p>
<br /><p>ভাসাও প্রভু লুবানে<br />- পলক রহমান। </p>
<br /><p>জ্বলছে ফিলিস্তিন <br />জীবন করছে অধীন <br />অদৃশ্য এক ক্ষুদ্র ভাইরাস করোনা,<br />চাই তোমার রহমত<br />সকল ধাতের নেয়ামত<br />হে প্রভু ভিক্ষা চাই তোমার করুণা।</p>
<br /><p>সিয়াম পালন শেষে <br />চাঁদ উঠবে হেসে<br />আমরা কি আর হাসতে পারি প্রভু?<br />তোমার দয়া ছাড়া<br />আমরা ছন্দ হারা<br />জীবনপ্রদীপ হয়েছে আজ নিভু নিভু।</p>
<br /><p>পাইনা ফিরে ঊমিদ<br />কেন এ এমন ঈদ<br />দিলে প্রভু মুসলিম বুনিয়াদ ভূবনে?<br />চাইনা নতুন পোষাক <br />চাই রহমতে ভাসাক<br />ফিলিস্তিন থেকে বিশ্ব তোমার লুবানে।</p>
<br /><p>১৩ মে, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/oor-jonno-brishti-chai/ওর জন্য বৃষ্টি চাই2021-05-18T02:37:14-04:002023-06-25T18:51:40-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>প্রকৃতির সাথে অদৃশ্য বোঝাপড়ায় অবশেষে উঠোন জুড়ে অপেক্ষার বৃষ্টি এলো আজ রাতে। ঘুম আসছে না। বারান্দায় দাঁড়াতে চেয়েও ইচ্ছে করেনি। একা কার উপর অভিমান করব?</p>
<br /><p>তবুও বৃষ্টির জন্য এতটা অপেক্ষা ছিল কেন? বৃষ্টিরই বা দরকার কেন? বৃষ্টি না এলে কি কান্না ভুলে যায় মানুষ! ঠিক জানি না। জানি না বৃষ্টি কার জন্য কতখানি কাঁদাতে শেখায় অথবা হাসাতে!</p>
<br /><p>তবে আমার চোখ জুড়ে ছিল বৃষ্টিহীন মরুর হাহাকার। আমি কান্না ভুলে কেবল করোনাময় পৃথিবীর মধ্যে কারও জন্য অপেক্ষা আর আতংকের দিন গুনছিলাম। এখনও সে ধারাপাত গুনছি।</p>
<br /><p>কেননা প্রতিদিন ভাবি আজ আবার কোন পরিচিত আপন জনকে হারালাম কিনা। নৃশংস করোনা মৃত্যুর মিছিলে কার খবর শুনব আজ?<br />এখন মৃত্যুতে কান্না আসে না, কান্না ভুলে গেছে চোখ। কিন্তু আতংকে ওর কান্না তো থামছে না।</p>
<br /><p>এখনও বৃষ্টি হচ্ছে বাইরে। আরও হোক। এই রাতে বিগত মৃত আপনজন আর ভালোবাসার মানুষ গুলোর কথা ভেবে আজ খুব করে কাঁদব সারা রাত। আর বৃষ্টিকে বলব, পবিত্রতায় ধুয়ে মুছে করোনামুক্ত করো তুমি এ ধরনী। আমি যেন ওর জন্য বেঁচে যাই এ যাত্রায়। </p>
<br /><p>রাত্রি ০২টা।<br />০৪ মে, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/ontim-shopoth/অন্তিম শপথ2021-04-22T23:38:20-04:002023-06-25T18:51:40-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>তবুও কি ভরে এ দগ্ধ মন<br />যদি না পায় মনের মত মানুষ,<br />হৃদয়ে জ্বলে যন্ত্রনার আগুন<br />জ্বালায় ধিকি ধিকি উষ্ম তুষ!</p>
<br /><p>যে কথা বলতে চেয়ে বার বার<br />হৃদয় হয়েছিল উত্তাল উন্মুখ,<br />সে উন্মুখতা কি আর আছে<br />সময়েই লুকিয়েছে তার মুখ।</p>
<br /><p>দুয়ার খোলা রাতে জেগেছি কত<br />মশারীবিহীন উলোটপালোট বেডে,<br />সকালের রোদ গায়ে পড়ে এসে<br />জাগায় শেষে হারমোনিয়াম রিডে।</p>
<br /><p>শেষ জীবনে এই বিদায় কালে<br />কত স্মৃতিকথা বাজে এই বুকে,<br />বলি বলি করেও হয়না তা বলা<br />ভেতরেই যেন মরে ধুকে ধুকে।</p>
<br /><p>থাক পড়ে থাক শিয়রে কবিতার বই<br />অথবা যে কবিতা লেখা হল না শেষ,<br />তবু অন্যায়ের কাছে মাথা নত না হোক<br />শোবার খাটও যদি হয় খাটিয়া বিশেষ।</p>
<br /><p>২৩ এপ্রিল, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/akkheper-ghuri/আক্ষেপের ঘুড়ি2021-04-19T17:53:51-04:002023-06-26T21:24:07-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>যার জন্য করি চুরি<br />সেইই বলে চোর,<br />কাটছে না তাই ঘোর।<br />এখন কি ভোর<br />নাকি মধ্যদুপুর, <br />বুকের মধ্যে আলগা প্রেমের পুকুর<br />ভরবে সে কোন প্রেমের রসে<br />শ্রাবণ আশায় ছিলাম বসে।<br />বসন্ত কখন হয়েছে তাই বিমুখ, <br />হায়রে প্রেমের সুখ!<br />দরজায় শক্ত খিল আঁটা,<br />বুকের মধ্যে পুড়ছে ভাঁটা।<br />কলঙ্গতে কি যায় আসে চাঁদের,<br />ইঁদুর নাকি করছে ক্ষতি বাঁধের।<br />বানের জলের প্রবল স্রোতে<br />সংসার ভাসে এখন বাঁধের পথে<br />পথহারা তাই জীবনও আজ বোহাইমেন,<br />আমার জন্য আজ নেই কোন বনলতাসেন।<br />তাই যাযাবর হয়ে ভাবছি পথের মোড়ে,<br />আমাকেই নাহয় চুরি করুক কোন চোরে।<br />আমি আর করব না মন চুরি<br />অজানা আকাশে হব এবার সুতো ছঁড়া ঘুড়ি।</p>
<br /><p>১৯ এপ্রিল, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/ami-dukkhito/আমি দুঃখিত!2021-04-15T10:25:23-04:002023-06-25T18:50:14-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>আমি ভাবনার কাছে কেমন ভাড়াটিয়া হয়ে যাচ্ছি। জোছনার চৌকাঠ পেরিয়ে লজ্জাবতী আঁধারের খোঁজে কি কেউ বের হয় জোনাকীর প্রজ্জ্বলিত জরায়ু দেখবে বলে!</p>
<br /><p>তবে পেঁচার আধো বুঁজা চোখ গলে সন্ধ্যাটা ঠিকই ধরেছিল শয়ন কক্ষের খোলা বারান্দায়।<br />জোছনারাও যে পালিয়ে বেড়ায় আকাশের গায়ে আড়াল হতে সেটা মনে ছিল। তবে সময় মত মনে পড়েনি।</p>
<br /><p>আমি ভাবনার কাছে কেমন ভাড়াটিয়া হয়ে যাচ্ছি ইদানিং। মেঘের গায়ে দগদগে কাদা লেগেছিল। তবুও এঁটেল বর্ষায় বর্ষাতি জুতো না পরে মাথার উপরে ছিল ষষ্ঠভূজ সামিয়ানা।</p>
<br /><p>গাধামীর জন্য হোক অথবা লেবাসী মশকরাতেই হোক মেঘেরা তালি দিয়েছিল বহুক্ষন। আকাশ ছেঁড়া বিদ্যুতের আলোয় চালাকেরা পথ দেখে। আর আমি তখন দেখছিলাম চোখের মধ্যে ভূতড়ে এক অন্ধকার।</p>
<br /><p>আমি ভাবনার কাছে কেমন ভাড়াটিয়া হয়ে যাচ্ছি ইদানিং। তাই ভাবনারা বড্ড এলোমেলো। <br />প্রেয়সী প্রেমিকা বউ হয়ে ঘরে ঢুকলে নাকি ভালোবাসারা জানালা দিয়ে পালায়। দরজা থাকতে জানালা কেন? <br />"বড় প্রেম শুধু কাছেই টানে না দূরেও ঠেলিয়া দেয়"। প্রেম তো প্রেমই। বড় প্রেম আর ছোট প্রেম মাপার যন্ত্র কোথা পাই ? </p>
<br /><p>" সবই স্রস্টার ইচ্ছে" ভেবে রেল গাড়ি আসতে দেখেও রেল লাইনের উপরে দাঁড়িয়ে রইলাম ঠায়! তবে তখনও কি আমাকে বাঁচানো স্রষ্টার দায় !! </p>
<br /><p>কি যে হয়েছে আমার, কিছুই বুঝি না। আমি তাই ভাবনার কাছে কেমন জানি ভাড়াটিয়া হয়ে যাচ্ছি ইদানিং। আমি দুঃখিত!</p>
<br /><p>১৩ এপ্রিল, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/ami-kintu-shabek/আমি কিন্তু সাবেক2021-04-13T07:04:02-04:002023-06-25T18:50:16-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>প্রজন্মের ধোঁয়া যতই তুলো<br />যতই বলো তুমি বড্ড আধুনিক,<br />বাস্তবতায় শিকেয়তোলা আবেগ,<br />বুঝি তা কতটুকু, আমি কিন্তু সাবেক।</p>
<br /><p>সাদা মানুষ, কালো মানুষ পৃথক করে<br />বৈষম্যতায় উপেক্ষিত ভালোবাসা,<br />ধর্মের নামে অধর্মতে হারাচ্ছ বিবেক,<br />আমি ধর্মান্ধ নই, আমি কিন্তু সাবেক।</p>
<br /><p>সেবার নামে আজ করছ লুটপাট <br />দলের কাছে দলই এখন জিম্মি, <br />শ্যাম ধরে ছেড়েছ সাঁই আলেক,<br />ইসলামিয়াত বক্ষে আমি কিন্তু সাবেক।</p>
<br /><p>স্বাধীনতা আর স্বেচ্ছচারীতা কি?<br />তফাৎ না বুঝেই স্বাধীনতার বাড়াবাড়ি,<br />বিকৃত মনে মস্তিষ্ক আজ আধেক,<br />মুক্তিযুদ্ধ করেছি আমি কিন্তু সাবেক।</p>
<br /><p>নেতা হারিয়ে প্রজন্ম আজ নেতা শূণ্য <br />এগুচ্ছে জাতি কোন পথে কে জানে!<br />তবুও আশায় থাকি কাটবে কালো মেঘ,<br />হতাশা কি জানি না আমি কিন্তু সাবেক।</p>
<br /><p>১২ এপ্রিল, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/ekti-nodir-ovab/একটি নদীর অভাব2021-04-12T08:53:40-04:002023-06-27T00:57:08-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>খুব ইচ্ছে করে নদীর সাথে কথা বলি। কিন্তু সোনাসম আমার গ্রামের মাটি বুকে ধরে জড়াজড়ি করে প্রবাহ জলধারার কলতানে কোন নদী আমাকে কাছে ডাকে না। তাই এ কষ্টটা আমাকে ভেতরে ভেতরে খুব আহত করে। সরাসরি বলিঃ আমার গ্রামে কোন নদী নেই, তাই খুব খারাপ লাগে।</p>
<br /><p>নদী নেই তাতে কি? আর সবই তো আছে। বাড়ির ভিটায় ঐ যে জোড়া তাল গাছ, বাঁশঝাড়, আম-জাম কাঁঠাল গাছ, কদম কামরাঙ্গার গাছ সে সব এখনও আছে। যে চাপ কলের হাতলে ঝুলে পানির জন্য একসময় চেষ্টা করতাম সেটার চিহ্ন এখনও বর্তমান। ঝুল পাড়া দরজার চৌকাঠ, পুকুরের ঘাট তাদের দেখলেও ভাল লাগে। কিন্তু এর পরও আত্মাসম একটি নদীর অভাব যায় না আমার ভাবনা থেকে।</p>
<br /><p>নদীকে কেন যে এত আপন মনে হয়! একটি নদী যেন আমার প্রাননাথ, আমার প্রেয়সী, প্রেমিকা, আমার উভয় পাড়ের আরাধ্য জলভূমি। আর তার বুকের জল যেন আমার আত্মা, সেখানে নানান রঙের পাল তোলা নৌকা, পসরার ডিঙ্গি, মাঝির গুন টানা সুর, মাছের আধারে জেলেদের আহ্লাদী মুখ যেন আমার সমস্ত পৃথিবী। </p>
<br /><p>ভাবি নদী না থাকলেও আমার অবর্তমানে ভিটেমাটির চারিপাশ ছায়া ঢাকা পড়ে থাকলেও সমস্ত গাছগুছালি, কলের পাড়, পুকুরের ঘাট হয়ত আমার কথা বলে। তাই ভিটাতে পা পড়লেই কেমন জীবন্ত লাগে ওদের সংগে গলাগলি করে পড়ে থাকা পরিবেশ। এর পরও একটি নদীর সাথে কথা হয় না বলে একটা দুঃখ সারা জীবন পুষেই গেলাম। কেন যে আমার গ্রামটিতে কোন নদী নেই!</p>
<br /><p>১২ এপ্রিল, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/prothom-brishti/প্রথম বৃষ্টি 2021-04-06T17:38:41-04:002023-06-25T18:59:12-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>কবি, কিন্তু চাষি তো আমিও। যে চাষা কাঁধে জোয়াল নিয়ে বলদ জোড়ার সাথে কথা বলার ফাঁকে নিজের সাথে অনেক কথা বলছে তার সাথে তফাত এই যে সে শস্য চাষ করে আর আমি করি শব্দ চাষ।</p>
<br /><p>কত অপেক্ষায় প্রথম বৃষ্টি ঝরল মধ্য বসন্তে। তার ফোটায় শরীর ভেজাতে কত কাব্য কথার জন্ম হল, অকবিরাও আবেগে ভাসল, নতুন কিছু কবিরও জন্ম হল এক পশলা।</p>
<br /><p>ব্যাস তাতেই হয়ত উত্তেজনা প্রশমিত হল। কিন্তু তফাত চাষার মনে। কত শত ভাবনা আয়ত পাথার আর শস্য ক্ষেত ঘিরে। ভেজার বাসনা নয় বরং ভেজানোর। </p>
<br /><p>শিলা বৃষ্টির শিল হাতে নিয়ে আমি যখন আইস্ক্রিমের স্মৃতি নিয়ে মত্ত তখন চাষা ভাবছে আমের গুটি গুলো ঠিক আছে তো? বৃষ্টি যতটুকু হল তাতে ক্ষেতে দুদিন সেঁচ না দিলে বেশ কিছু বিদ্যুৎ অথবা ডিজেল খরচটা বাঁচবে।</p>
<br /><p>কবি, কিন্তু চাষিও তো আমি। আমার শস্যক্ষেতে আমি দেশ প্রকৃতি প্রেম মানুষ ধর্ম কত কি চাষ করি আর চাষা - বলদ জোড়া সাথে করে তার ভাবনায় নিভৃতে বিড়বিড় করে ভাবে কি করে মানুষকে বাঁচানো যাবে! তাইতঃ</p>
<br /><p>আমি শব্দের কথা ভাবি, সে শস্যের কথা ভাবে<br />আমি পাতার কথা ভাবি, সে পোকার কথা ভাবে<br />আমি বৃষ্টির কথা ভাবি সে সৃষ্টির কথা ভাবে<br />আমি কষ্টের কথা ভাবি, সে নষ্টের কথা ভাবে<br />আমি কবিতার কথা ভাবি, সে কুঁড়ির কথা ভাবে</p>
<br /><p>তাই এবার প্রথম বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছে হয়নি।</p>
<br /><p>বাসে, ঢাকার পথে<br />১৪ মার্চ, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/kostota-kee-jana-holo-na/কষ্টটা কি জানা হল না2021-04-05T08:34:13-04:002023-06-25T18:51:15-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>কষ্টটা কি জানা হল না<br />- পলক রহমান।</p>
<br /><p>কেন জানি ঝড় দেখতে বড্ড ইচ্ছে হল আজ। ঝড় বইতে শুরু করলে মনে হল প্রচন্ড ঝড় হোক এখন। একটা আকাশ ভাঙা ঝড় দেখি। তাই জানালা খুলে সাথেই দাঁড়ালাম। তবে দৃষ্টি কেমন আনমনা। মনে একটা ঝড় আগে থেকেই বইছিল বলেই হয়ত এমন।</p>
<br /><p>ভালবাসলে অনেক কিছুই সংক্রমক হয়। তাইত তুমি কাঁদলে কান্না আসে, তুমি হাসলে হাসতে ইচ্ছে করে। তোমার মন খারাপ হলে অকারণে মনটাও খারাপ হয়ে যায়। হতে পারে গত রাতে তোমার মনে যে কষ্টের ঝড় বয়ে গেছে সে জন্যই হয়ত আজ ঝড় দেখতে ইচ্ছে হচ্ছিল।</p>
<br /><p>জানি, আজ প্রকৃতিতে যে ঝড় বইছে তোমার মনে যে কষ্টের ঝড় তার সাথে এর তুলনা করাই বৃথা। যতই বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ুক, গাছের ডালপালা ভাংগুক কিংবা ঘরের চাল, কিন্তু মন ভাঙা ঝড় যে কি উপড়িয়ে নেয় বা ভেঙে দেয় তা কেবল ইশ্বর জানে আর জানে ভুক্তভোগী।</p>
<br /><p>তবু সংক্রমন থেকেই এখন যেমন কবিতাকে ভালোবাসি, গান ভালোবাসি, চাঁদনী রাত ভালোবাসি, আদায় রঙ চা ভালোবাসি, রাত জাগতে ভালোবাসি তেমনি আজ ঝড়কেও ভালোবাসতে ইচ্ছে হচ্ছিল। তোমার মনে কষ্টের ঝড় বইছে শুনে। কিন্তু কষ্টটা কি জানা হল না।</p>
<br /><p>০৪ এপ্রিল, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/guest-roomer-golpo/ গেষ্টরুমের গল্প 2021-04-04T12:26:53-04:002023-06-25T18:50:50-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>কবিতা দিবসের কবিতা...</p>
<br /><p>গেষ্টরুমের গল্প<br />- পলক রহমান।</p>
<br /><p>গেষ্টরুমটা এতোদিন ফাঁকাই পড়ে ছিল তোমাার। তুমিও হয়ত কোনদিন ভাবোনি সত্যি সত্যিই একদিন এভাবেই বার্ধক্যে জটিল অসুস্থতা নিয়ে অবস্থান নেবো আমি সেখানে।</p>
<br /><p>অথচ এর চেয়েও বেশী কিছু হতেই পারত আমাদের। এক জীবনে ওড়নার হাওয়ায় দোলানো কত স্বপ্ন ছিল তোমার যা অনায়াসে আমাকে ভাসিয়ে নিত রোমিও-জুলিয়েটের দেশে। কিন্তু কোকিলের দেশ আমাকে কুহুতানেই রেখেছিল বন্দী।</p>
<br /><p> অসুস্থতা মানেই তো সাথে কিছু প্রয়োজনীয় ব্যাগ, কিছু ডাক্তারী প্রেসক্রিপশনের ফাইল, এক্সরে প্লেট, আর কিছু মেডিকেল সরঞ্জাম। তবুও ভাগ্য ভালো যে এখনও হুইল চেয়ার লাগে না, শুধু চশমার পাওয়ারটা ঠিক থাকলেই চলে।</p>
<br /><p>শিয়রের টেবিলটায় তোমার হেলানো ফটো এলবাম, ফুলদানি, ছোট টেবিল ঘড়ি আর ক্রিস্টাল কাঁচের ঘোড়ার অবস্থান ছিল। সে গুলো এখন নেই। সেখানে জায়গা করে নিয়েছে ঔষধের টোপলা, সিরাপের বোতল, গ্লাস, চামচ, পানির বোতল কেমন অসুখ অসুখ লাগছে তোমার গেষ্টরুম।</p>
<br /><p>ক্রিস্টালের ঘোড়াটা দেখে মনে পড়ে গেল তোমার ভাবনায় পৌরুষত্বের প্রতি মেয়েদের ভালো লাগার কথা। বলতে- </p>
<br /><p>তুমিঃ মেয়েরা বরাবরই ছেলেদের ব্যক্তিত্ব ও পৌরুষত্বের প্রতি দুর্বল এবং শ্রদ্ধাশীল</p>
<br /><p>আমিঃ ছেলেরা মেয়েদের নারীত্ব ও মায়াময় মমত্বকে ভালোবাসে বেশী</p>
<br /><p>তুমিঃ তাহলে তোমার রুমে কোথাও নারী নয় প্রজাপতির ক্রিস্টাল কেন শোভা পায়?</p>
<br /><p>আমিঃ যে কোন নারী মূর্তি খুব অপছন্দের আমার। আর আবক্ষ হলে তো অস্থির থাকি আমি</p>
<br /><p>তুমিঃ তাহলে নারীর প্রতি ভালোবাসায় তোমার ভাবনা কেমন বিতর্কিত হয়ে গেল না?</p>
<br /><p>আমিঃ ভীষণ চুপ!</p>
<br /><p>নিরুত্তর ছিলাম সেদিন। এরপর আর দেখা হয়নি তোমার সাথে। আসলে তুমিই হয়ত আর কোনদিন দেখা করতে চাওনি।</p>
<br /><p>অথচ ভাগ্য আমাদেরকে আজ মুখোমুখি করেছে এমন এক সময় যখন তুমি একা আমিও একা, মাঝে দূরুত্বের দেয়াল প্রায় অদৃশ্য, তবু ইচ্ছে করলেও কেমোথেরাপি পারবে না সে দূরত্ব টুকু ঘুঁচাতে আর। শুধু রেখে যাবে গেষ্টরুমের কিছু স্মৃতি। </p>
<br /><p>১৭ মার্চ, ২০২১।<br />Poems of the World Poetry Day ...</p>
<br /><p>The story of the guestroom<br />- Palok Rahman.</p>
<br /><p>Your guest room has been empty for so long. You may never have thought that one day I would take a stand with a complex illness in old age.</p>
<br /><p>But we could have been more than that. .How many dreams did you have in one life that fluttered in the air of the veil that would easily take me to the land of Romeo and Juliet. But the land of the cuckoo kept me captive in Kuhutan.</p>
<br /><p>Illness means carrying some necessary bags, some medical prescription files, X-ray plates, and some medical equipment. Still, luckily the wheelchair is not required to work, only the power of the glasses works if this is okay.</p>
<br /><p>Shear's table housed your reclining photo album, vase, small table clock, and crystal glass horse. They are not there now. Medicine baskets, syrup bottles, glasses, spoons, water bottles have taken place in your guest room beside the side table of my bed.</p>
<br /><p>Seeing the Crystal Horse reminded me of the idea once you said that girls should like masculinity. To say-</p>
<br /><p>You: Girls have always been weak and respectful of boys' personalities and masculinity</p>
<br /><p>Me: Boys love girls' femininity and enchanted love</p>
<br /><p>You: Then why are there crystals of butterflies in your room, not women?</p>
<br /><p>Me: I dislike any female idol very much. And if I am busty, then I am restless</p>
<br /><p>You: So how did your thoughts on love for women not become controversial?</p>
<br /><p>Me: Very quiet!</p>
<br /><p>I was unresponsive that day. I haven't seen you since. In fact, you may never want to meet again.</p>
<br /><p>But fate has confronted us today at a time when you and I are alone, sometimes the walls of distance are almost invisible, but even if you want to, you will not be able to get chemotherapy to cover that distance. Only some memories of the guest room will be left.</p>
<br /><p>March 16, 2021 .</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/odrisso-songsar/অদৃশ্য সংসার 2021-04-03T11:15:38-04:002023-06-25T18:51:34-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>অদৃশ্য সংসার<br />- পলক রহমান। </p>
<br /><p>এ কেমন ঘর বাঁধা?<br />সিঁড়ি আছে, দরজা আছে, আছে জানালা,<br />খোলা আকাশ আছে, চাঁদ তারা সূর্য আছে<br />মানুষ আছে, মন আছে, শুধু সেফটিপিন খোলা।</p>
<br /><p>এ কেমন ঘর বাঁধা?<br />বিল্ডিং আছে, রোড নাম্বার আছে, আছে ব্লক,<br />খোলা মাঠ আছে, পার্ক আছে, আছে মসজিদ<br />কাঁচা বাজার আছে, চুলা আছে, বন্ধ তবু ক্লক।</p>
<br /><p>এ কেমন ঘর বাঁধা?<br />একে অপরকে চেনে তবু অতি দূরের মানুষ যেন,<br />কে যায় কার কাছে অথবা কার কাছে কে আসে<br />সম্পর্ক গভীর তবু মাঝখানে পর্দাটা আটকানো।</p>
<br /><p>এ কেমন ঘর বাঁধা?<br />কত সুখ-দুঃখ আছে, স্বপ্ন আছে, আছে মৃত্যু ভয়,<br />ঘরে আঁধার বন্ধ, আলোর সাথে বন্ধ রয় বাতাস<br />তবু ঘর বাঁধার স্বপ্নে সম্পর্কের হয়নি সে পরিচয়।</p>
<br /><p>০৩ এপ্রিল, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/probeshadhikar/প্রবেশাধিকার2021-03-30T05:58:01-04:002023-06-25T18:59:10-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>প্রবেশাধিকার <br />- পলক রহমান।</p>
<br /><p>প্রত্যাখ্যান করতে চাইনি অথবা প্রত্যাখ্যাতও হতে চাইনি কোনদিন। এ মোটেও কোন অনধিকারচর্চা ছিল না আমার।তোমার মনের খিড়কি খুলেভেতরে প্রবেশ করে বসেই ছিলাম আমি উন্মুক্ত নদীর জল গড়ানোর মতই তোমার জলসিঁড়ি মন পাব বলে।</p>
<br /><p>বালুকণার অনধিকার চর্চা হলেও ঝিনুকের পেটে রঙিন মুক্তোর জন্ম হয় তাতেই। ঝিনুকের বুকে সে বালুকণা হয়ত প্রত্যাখ্যাত ছিল অথবা প্রত্যাখ্যানের আড়ালে যে আদরের লালায় অন্তরীণ সময়ে তাকে তৃপ্ত করেছিল আদরে তাতেই ছিল প্রত্যাশিত বাহারী মুক্তোর স্বপ্ন।</p>
<br /><p>প্রত্যাখ্যাত হতে চায়নি, অথবা সাত আসমান তাকে প্রত্যাখ্যান করুক হয়ত তাও চায়নি। তবুও তো তারা খসে পড়ে আকাশে। তরপত কোথায় যাবে সেই তারা? পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে কি হয়না তার অনধিকার প্রবেশ? তবুও তারা ঝরে, সে জানে পৃথিবীর বুকই যে তার বিদুরিত প্রেমের মোনালিসা ক্যানভাস।</p>
<br /><p>তুমি চাইলে আমি জলসিঁড়ি নদীটি হতে পারতাম, তুমি চাইলে আমি সে নদীর জলে কপাট লাগানো ঝিনুক হতে পারতাম, তুমি চাইলে আমি সপ্তম আসমানের খসে পড়া তারাটিও হতে পারতাম। আমি তোমাকে প্রত্যাখ্যান করিনি অথবা প্রত্যাখ্যাতও হতে চাইনি। ভালোবাসার মানুষের কি প্রবেশাধিকার লাগে!</p>
<br /><p>২৬ মার্চ, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/oviman/অভিমান2021-03-29T14:45:26-04:002023-06-25T18:51:49-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>অভিমান<br />- পলক রহমান।</p>
<br /><p>আমাকে আর ছোঁয়ার চেষ্টা করো না। আমাকে আর ছোঁয়াও যাবে না। আমি এখন সাগর বেলায় বালুতে গড়া এক ভঙ্গুর অবয়ব মাত্র। অথচ একদিন বিশাল ঢেউয়ের আঘাতে আমাকে জড়িয়ে হারিয়ে যাওয়ার চেয়েও বালুতেই ছিল তোমার বালাই। তাই তুমি কেবল পা ডোবাতে চাইতে সাগর জলে।</p>
<br /><p>আমাকে আর নাম ধরে ডেকো না। আমাকে ডাকলেও আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমি এখন তোমার সীমানা থেকে দূরে বহুদূরে। মধ্যবর্তী কোন পাহাড় নেই, পাহাড়ের প্রতিধ্বনিও নেই। যে নাম ধরে তুমি ডাকতে সে নাম এখন ফসিলের কোটরে এক অচেনা হুতাশন। </p>
<br /><p>আমার ছায়াটিও মাড়াতে চেয়ো না। আমার ছায়াও আর কোনদিন খুঁজে পাবে না। আমার আকাশ থেকে ভালোবাসার যে সূর্য একদিন আলো ছড়াতো সে সূর্যও আজ নির্বাসনে। তারাদের আলোয় তো কোন ছায়া ফেলে না। ভেবে নিতে পারো তারাদের রাজ্যেই এখন আমার বসবাস।</p>
<br /><p>২৭ মার্চ, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/shuvo-jonmodin-hey-pita/শুভ জন্মদিন হে পিতা2021-03-22T05:50:22-04:002023-06-25T18:59:27-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>শুভ জন্মদিন হে পিতা<br />- পলক রহমান।</p>
<br /><p>উত্তাল মার্চ কেন বলি <br />কেন ’৭১ এর মার্চ হল এত ঊর্মিলায় উত্তাল,<br />কিসের জন্য ছিল এত প্রতিক্ষা<br />স্বদেশ শ্লোগানে মুখরিত, সর্বত্র এত হরতাল।</p>
<br /><p>সমুদ্রের উঁচু তরঙ্গের মতই<br />জন সমুদ্রে সেদিন দুলছিল রেস কোর্স ময়দান,<br />স্বাধীনতার জন্য একটি আদেশ পেতে<br />বাঙালি জাতি সেদিন তৈরি ছিল হতে শহীদান।</p>
<br /><p>মঞ্চ তখনও ফাঁকা পড়ে আছে<br />কাঠের শিঁড়ি বেয়ে কে দাঁড়াবে জনসমুদ্র মাঝে,<br />দূরে থেকে সে নায়ককে না দেখলেও<br />কন্ঠ শুনতে 'কল-রেডী' মাইকে কানটি পেতেছে।</p>
<br /><p>অবশেষে দূর থেকে আবছায়া দেখা<br />এক কালপুরুষ দৃপ্ত পদে হেঁটে দাঁড়ালেন মঞ্চে,<br />আদেশ শোনার অপেক্ষায় উৎকর্ণ <br />আর কেউ না, স্বয়ং শেখ মুজিব যেন হোন সে।</p>
<br /><p>"তোমাদের যা কিছু আছে,<br />তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে,"<br />সে আদেশ পেয়ে ঢেউ যেন আঁছড়ে পড়ল<br />দেশের প্রতিটি আনাচে-কানাচে দৃঢ় কলরবে।</p>
<br /><p>"এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম <br />এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম" প্রিয় ধ্বনি, <br />জাতিকে স্বাধীন করতে এমন উচ্চারণ <br />শেখ মুজিব ছাড়া আর কে দিতে পারে তা শুনি!</p>
<br /><p>এমনই এক উত্তাল মার্চের জনসমুদ্রে<br />বঙ্গবন্ধু যে প্রিয় নেতা দেখিয়েছিলেন মুক্তির পথ,<br />সেই নেতা এ বাঙালি জাতির পিতা<br />তাঁর জন্মদিনে শুভেচ্ছা ডালিতে হোক মহরত।</p>
<br /><p>১৭ মার্চ, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/vhalobasa-az-niktite/ভালোবাসা আজ নিক্তিতে 2021-03-14T04:29:09-04:002023-06-25T18:59:45-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>কতটুকু শিশির চুম্ দিয়ে গেলে<br />আমের মুকুল পুষ্ট হয় ফলে,<br />কতটুকু রাত ঘুম দিয়ে গেলে<br />শিউলি ঝরে পড়ে গাছ তলে।</p>
<br /><p>ফাগুন কতটুকু সময় দিলে<br />চৈত্রের দাহতেও ভাসে বসন্ত,<br />পৌষের বাতাস কতটুকু ঝড়ো হলে<br />মাঘের কুয়াসা বৃষ্টি হয় পয়মন্ত। </p>
<br /><p>কতটুকু তাপ সূর্য দিতে পারলে<br />চাঁদ ফিরে আসে অমাবস্যা শেষে, <br />কতটুকু টান কর্য করলে পূর্ণিমা <br />জোয়ার ভাটায় সাগর উঠে ফুঁসে।</p>
<br /><p>বর্ষায় কতটুকু জল পেলে<br />সবুজের দেখা পায় মরুভূমি, <br />আর কতটুকু ভালোবাসা দিলে<br />ভালোবাস আমাকে বলতে তুমি।</p>
<br /><p>১১ মার্চ, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/charukolay-tomakey-dekhi/চারু কলায় তোমাকে দেখি2021-03-12T05:26:26-05:002023-06-25T18:50:31-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>চারুকলার বিদ্যে আমার নেই। তবুও মেঘহীন আকাশে পূর্ণিমা চাঁদকে যখন দেখি, সে দেখার চেয়ে গাছের ফাঁক গলে দেখা একটি চাঁদকে বেশী ভালো লাগে।</p>
<br /><p>তুমি তখন দৃষ্টি সীমায় একটি গাছ হয়ে যাও। সে গাছের ডাল, পাতা এবং হাওয়ায় দোলানো একটি রাত হয়ে যাও। নীরবে নিভৃতে কথা বলি তখন গাছের সাথে, চাঁদের সাথে, রাতের সাথে বহুক্ষণ।</p>
<br /><p>তুমি কাছে না থাকলে এমনটিই হয়। চোখের সামনে যা দেখি তাকে দেখে তুমি ভেবে সব কিছুকেই ভালো লাগে। মনেই হয় না কোনদিন কোন কিছু নিয়ে খারাপ লাগা ছিল তোমার আমার মধ্যে ভুল বুঝাবুঝিতে।</p>
<br /><p>আমি চিত্রকর হয়ে তোমাকে নিয়ে তখন মনের ক্যানভাসে ফুজিয়ামার সকাল আঁকি, পুনর্ভবা নদী তীরের বিকেল আঁকি, মদিনার রঙ ঝরা সন্ধ্যা আঁকি। আর রাত ফুরায় আমাজনের গহীন জঙ্গলে তোমাকে এঁকে এঁকে যেখানে চোখের সামনে এসে একটি গাছ হয়ে দাঁড়াও তুমি চাঁদের মুখোমুখি।</p>
<br /><p>১০ মার্চ, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/chobol-bisher-jha-jha/ছোবল বিষের ঝাঁ ঝাঁ 2021-03-11T15:43:21-05:002023-06-25T18:50:31-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>অনেক জীবনের মাঝেও একটা অদেখা<br />জীবন থাকে। এ যেন একই মূদ্রার এ পিঠ ও পিঠ। যখন তার সন্ধান মেলে তখন মনে হয় ছকে আঁটা এই জীবনে কত কিছুই তো করলাম। সাংসারিক, সামাজিক, দাপ্তরিক কত কর্ম সাধন। তার মাঝেই কত স্বপ্ন, কত পরিকল্পনা, কত রুঢ় বাস্তবতা, কত রঙ্গ,সব যেন অন্তসার ভাবনাহীন এক ধাঁ ধাঁ। </p>
<br /><p>সমুদ্র ভেজা চোখে সকাল বিকেল রাত্রি দেখলাম, প্রেম ভালোবাসা ঘৃণা দেখলাম,<br />বাতাস মাখতে মাখতে উদোম শরীরে আকাশ জড়ালাম, কাদামাখা হাট থেকে শপিং মলের পিচ্ছিল মেঝে মাড়ালাম। অথচ জীবনের মধ্যে আর এক জীবন ছিল আড়ালেই। যখন পেলাম তার সন্ধান দেখি বিগত সব কেমন খাঁ খাঁ।</p>
<br /><p>এ জীবনে প্রেয়সীর আড়ালেও থাকে আর এক প্রেয়সী, প্রকৃতি চাঁদ সূর্যের আড়ালে থাকে আর এক চাঁদ সূর্যের প্রকৃতি। ছেঁড়া স্বপ্নের আড়ালে থাকে পয়মন্ত স্বপ্ন, সুখের আড়ালে থাকে বৃত্তিহীন নিগূঢ় কষ্ট। সে জীবনের সন্ধান নিই না বলেই তাকে পাওয়া হয়ে ওঠে না। অথচ ভুলেই যাই যে বাহ্যিক শীতলতার লোল ওষ্ঠেও থাকে ছোবল বিষের ঝাঁ ঝাঁ। </p>
<br /><p>০৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/prohelika/প্রহেলিকা 2021-03-07T08:15:27-05:002023-06-25T18:59:10-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>দেখছি আকাশ খান খান হয়ে যাচ্ছে<br />তবু তার আড়ালেই হাসছে যেন চাঁদ,<br />দেখি তারারাও ঝরে ঝরে পড়ছে<br />দিনের আলোতে দেখছি অন্ধকার রাত।</p>
<br /><p>পায়ের তলে মাটি ফাঁক হয়ে যাচ্ছে<br />তবু আমি দাঁড়িয়ে আছি যেন ঠাঁয়,<br />বনভূমি আগুনে পুড়ে পুড়ে যাচ্ছে<br />সবুজ তবু হাতছানিতে ডাকছে আমায়।</p>
<br /><p>সাগরগুলো জল শুণ্য হয়ে যাচ্ছে আজ<br />তবুও দূরে দেখছি জাহাজের মাস্তূল,<br />একি জীবনের মরুপ্রান্তে কৃষ্ণ প্রহেলিকা<br />নাকি ঘোর সত্য, নাকি এক চরম ভুল।</p>
<br /><p>পরিবর্তন মানেই তো শেষ থেকে শুরু<br />ধ্বংসস্তূপ থেকে উঠে দাঁড়ানো অঙ্গুর,<br />শেষ সম্বলটুকু নিয়ে ডাকছে যে হাত<br />মহিরুহু হয়ে উপেক্ষা করুক সব ভঙ্গুর।</p>
<br /><p>০৬ মার্চ, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/ekta-kichu-lagei/একটা কিছু লাগেই2021-02-27T11:33:16-05:002023-06-25T18:50:43-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>একটা আঁধার লাগে,<br />নইলে আলোর প্রকাশ কি হয়<br />আলোর মধ্যেই কেবল,<br />একটা আকাশ লাগে<br />নইলে মেঘে মেঘেই কি হয়<br />ঝুম নৈসর্গিক বাদল।</p>
<br /><p>একটা পথ লাগে,<br />নইলে স্বপ্ন দেখলেই কি হয়<br />স্বপ্নগুলো পেতে চায় রুপ,<br />একটা ভিটে-মাটি লাগে<br />নইলে ঠিকানাহীন জীবন<br />যেন অস্তিত্বের মুখে আঁটা কুলুপ।</p>
<br /><p>একটা সঙ্গী লাগে,<br />নইলে সঙ্গহীন জীবন কি হয়<br />কবিতার মত সুন্দর,<br />একটা বিশ্বাস লাগে,<br />নইলে প্রেম যতই হোক গভীর<br />কষ্টরাই ভরবে অন্তর।</p>
<br /><p>একটা কাল ম লাগে,<br />নইলে কল্পনা কি করে পাবে<br />পাতায় ভরা আক্ষর,<br />একটা মনন লাগে,<br />নইলে ভাবনারা কি করে রাখবে<br />অজানা জ্ঞানের স্বাক্ষর।</p>
<br /><p>একটা মৃত্যুও লাগে,<br />নইলে জীবনের অস্তত্ব কি হয়<br />কেবল বেঁচে থাকার মধ্যে,<br />একটা স্রষ্টাও লাগে,<br />নইলে কার ধ্যানে থাকব<br />মৃত্যু যখন সকল পদে।</p>
<br /><p>২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/adhunik-keccha/আধুনিক কেচ্চা2021-02-19T11:46:05-05:002023-06-25T18:50:11-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>গাড়ি ছাড়া<br />নেই সেই রেলগাড়ি<br />বাষ্পশকট চলে<br />ঝক্ ঝক্ ঝক্ ঝক্,<br />আধুনিক দাদুরা<br />নানুরা ভুলে গেছে<br />নাতকুড়দের সাথে<br />বক্ বক্ বক্ বক্।</p>
<br /><p>পরিদের গল্প<br />নেই রাজ-রানিদের কেচ্চা<br />ইউটুবে কাহিনীর<br />নেট দেয় চক্কর চক্কর,<br />দাদুরা নানুরা<br />শুয়ে থাকে দিনরাত <br />ভুঁড়িটার ভারীতে<br />খাট হয় লক্করঝক্কর।</p>
<br /><p>আমিও তাই আজ<br />জানি না কেচ্চা<br />নেট পেলে মোবাইলে<br />গেইম খেলি হরদম,<br />খেলাধূলা করব যে<br />আশেপাশে মাঠ নেই<br />নিজ ঘরে জানালাটা<br />খুলে দিয়ে নিই দম।</p>
<br /><p>কবে যে মাঠ পাব<br />দাদু নানু পাব সেই<br />পুঁথি পাঠ কেচ্চাতে<br />হুঁকা টেনে করে খক্ খক্,<br />বিদ্যুৎ বাতি জ্বলে<br />আঁধার গেছে চলে<br />ভূতেরা পালিয়ে গেছে<br />করে না ভয়ে বুক ধক্ ধক্।</p>
<br /><p>১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২১</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/jeebon/জীবন2021-02-15T13:19:24-05:002023-06-25T18:50:56-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>আমি পথ নই তবু পথিক হয়ে খুঁজি তোমার ঠিকানা,<br />আমি পক্ষি নই তবু অসীম শুন্যে ভাসি মেলিয়ে দিয়ে ভাবনার ডানা।</p>
<br /><p>আমি গৃহ নই তবু গেরস্থ হয়ে সাজাই স্বপ্নের সংসার,<br />আমি গ্রহণ নই তবু চাঁদের আলোয় ঢাকা পড়ে<br />আমার পৌরুষ অহংকার।</p>
<br /><p>আমি আদি নই তবু আধুনিকতায় খুঁজে পাইনা<br />আমার অস্তিত্ব,<br />আমি আদিত্য নই তবু মানুষ হয়ে দেখি আমার মাঝে আমি বিভক্ত।</p>
<br /><p>১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/dighir-jol/দিঘির জল2021-02-09T11:18:10-05:002023-06-25T18:50:34-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>মাছের লেজের দোলায় অথবা মাছরাঙার শিকারী পাখার ঝাপটায় দিঘির জলে ঢেউ খেলে যায়। গাছের ছায়ারা, মুক্ত আকাশ, কখনও সূর্য অথবা মেঘ সে জলের গভীরে কেঁপে কেঁপে উঠে। আমি চেয়ে থাকি বহুক্ষন। কি যে খুঁজি ঘাটের পাটাতনে বসে অপলক দৃষ্টিতে ওই দিধির জলে নিজেও বুঝি না।</p>
<br /><p>তবে সবুজ শ্যাওলার সাথে ভাসে শীতের হাওয়ায় ঝরে পড়া গাছের পাতারা। দেখি জলে এলোমেলো হাওয়ায় শ্যাওলাদল একত্র হয়, কখনও ভাংগে, কখনও এ পাড় থেকে ও পাড়ের কোল ঘেঁষে পড়ে থাকে। নিজেকে ঐ ঝরে পড়া পাতাদের সাথে একটি পাতা ভাবতে ইচ্ছে করে।</p>
<br /><p>কেন এমন ইচ্ছে হয়? তোমার মুখ কি দেখা যায়, তোমার চোখের জল কি টের পাই, তোমার দোলা, খোলা হাওয়ায় তোমার আদর কি ভেসে বেড়ায়, তোমার নগ্ন পা জোড়া কি জলের ঘাটে টের পাই? আমি ভাবি ঝরা সেই পাতা যদি জলের ঢেউয়ে ভেসে ভেসে তোমার জল ছবির ছায়ায় গিয়ে ঠেকত, তাহলে কি আদরে আলিঙ্গণ করতে তুমি?</p>
<br /><p>জানি শীত ফিরে গিয়ে বর্ষা আবার ফিরে ফিরে আসবে। শাখায় গজাবে নতুন পাতা, অলক্ষ্যেই বড় হবে কদম গাছের ডাল, নিম গাছের কান্ড। পাতারা ভাসতে ভাসতে ডুবেও যাবে একদিন। কিন্তু ভালোবাসার চোখের জলে কি ডুববে তোমার জলজ কল্পনার ছবি, ডুববে কি- না পাওয়ার কষ্ট মেঘ, ডুববে কি দূরে থাকা বিরহী ক্ষন? বরং দিঘির জলে চোখ পড়লেই তুমি যে না ডুবে ভেসেই বেড়াও আমার দৃষ্টি সীমায়।</p>
<br /><p>০৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/rokto-boli-ba-prem/রক্ত বলি বা প্রেম2021-02-06T07:17:00-05:002023-06-27T01:25:42-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>না এই যে বলি আপনজন<br />তা কি কেবলই রক্তের বাঁধন?<br />তা কি কেবলই ঔরসজাত ঔদার্য <br />কিংবা দশ মাস দশ দিন গর্ভে ধারণ?</p>
<br /><p>যারা ভালোবেসে কাছে এলো<br />যাদেরক হৃদয় দিয়ে বাসলাম ভালো,<br />আপনার চেয়ে তারা কি হয় না আপন<br />তাহলে অন্তরে প্রেম কে শেখালো?</p>
<br /><p>কখনও স্বার্থের জন্য নিজ রক্তজন<br />দেখি কি করে পর হয়, হয় চিরশত্রু, <br />ভালোবাসা তো তখন দূরের কথা<br />নাম শুনলেও কুঁচকে ওঠে জোড়া ভ্রু।</p>
<br /><p>তাহলে আপনজন বলব কাকে? <br />ভালোবাসার মানুষটি কি আপন নয়!<br />না থাকুক রক্তের বাঁধন তার সাথে<br />প্রেমের বাঁধন রক্তের চেয়েও দামী হয়।</p>
<br /><p>তাই কে কখন আপন হয় জীবনের বাঁকে<br />বা পর হয়ে যায় কে কখন নিজের ভুলে,<br />আপন আপন করে যতই আগলাতে চাই<br />রক্ত বলি বা প্রেম, সময়েই থাকে তা ঝুলে।</p>
<br /><p>০৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/shodesher-calender/স্বদেশের ক্যালেন্ডার2021-02-04T07:56:12-05:002023-06-25T18:59:21-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>কেমন আছো আমাার প্রিয় স্বদেশ?<br />কেমন চলছে তোমার দিনকাল?</p>
<br /><p>তুমি তো জানো, ’৭১ এর আগেই আমার জন্ম। আরও যদি বলি<br />পূর্বপাকিস্তানের শাসন আমলে ঠিক ’৬০ এর দশকের<br />গোঁড়াতেই আমায় নিয়ে মায়ের ছিল প্রসব বেদনা।<br />তখন ‘৫২’র ভাষা আন্দোলন কতটুকু থিতিয়ে এসেছিল<br />জানি না। তবে তার রেশ ধরেই জন্ম নিয়েছিল বাংগালীদের<br />বুকের মধ্যে আর এক নতুন দেশ, আর এক নতুন পতাকা, বাংলা ভাষার ন্যায্য অধিকার আদায়<br />আর স্বাধীনতার স্বপ্নে মৌলিক গনতন্ত্রের চর্চা। </p>
<br /><p>কেমন আছো আমার প্রিয় স্বদেশ?<br />মনে কি পড়ে তোমার সে সব বিগত দিনের ঘটনা? </p>
<br /><p>আজ ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান আর ভারতের যুদ্ধের কথা খুব<br />মনে পড়ছে। শিশুর চোখ দিয়ে দেখা হয়েছিল যতটুকু ঠিক<br />ততটুকু। ব্ল্যাক আউট! আলোর ব্যাবহার নিষিদ্ধ। মনে আছে<br />আমার প্রয়াত পিতা কিভাবে ক্রসকান্ট্রি পাথারের আল পথ ধরে<br />আমদেরকে সংগে করে সতর্কাবস্থায় হাঁটছিলেন। নিকষ কালো আঁধার রাতে ম্যচের কাঠি<br />ক্ষনে ক্ষনে জ্বালিয়ে আমাদের নিরাপদ স্থানে নেয়ার জন্য<br />দেখাচ্ছিলেন বেঁচে থাকার পথ। দিয়েশলাইয়ের কাঠির আগুনে<br />বাবার হাতের আংগুল কতটুকু পুড়ে গিয়েছিল আজ তা আর মনে নেই।<br />কখনও জানাও হয়নি সে আগুনের মতই বাবার বুকের মধ্যে দেশের স্বাধীনতা নিয়ে<br />জ্বলছিল কতটুকু দ্রোহের আগুন।<br />মাটির টানে, আগামির টানে শুধু উর্ধশ্বাসে ছুটে যাওয়া ছিল নিরাপদ আস্তানায় প্রানে বাঁচতে হবে বলে।</p>
<br /><p>কেমন আছো আমার প্রিয় স্বদেশ?<br />কেমন চলছে তোমার স্বশস্ত্র ভাবনার দিনকাল?</p>
<br /><p>সেইই ছিল আমার কোন স্বশস্ত্র যুদ্ধকে কাছে থেকে দেখা। ভয়কে নিরস্ত্র হাতে ধরে দেখা,<br />জীবনকে সাথে করে চেনা, দেশকে বুকে ধারণ করে ভালোবাসা।<br />অথচ যে আশা নিয়ে এই যে ত্যাগ তা ১৯৬৫ থেকে ১৯৭০ এই পাঁচ<br />বছরেই পালটে গেল। বরং বাংগালীদের পাল্টাতে হল বাধ্য হয়েই। পাকিরা মুখে<br />ভাই ভাই বললেও কোনদিন ভাইয়ের মর্যাদা দেয়নি। উন্নয়নের কথা<br />বলে কেড়েছে মুখের গ্রাস, ভাষার কথা বলে “মা” বলে ডাকার বক্ষে<br />সেঁধিয়েছে তপ্ত বুলেট, ধর্মের কথা বলে গীতাঞ্জলীর পাতায় এঁকেছে<br />বাংলা জননীর নগ্ন শরীর। “ আমার সোনার বাংলা আমি তোমায়<br />ভালোবাসি”। “আমি বিদ্রোহী রণক্লান্ত, আমি সেইদিন হব শান্ত”।<br />“এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের<br />স্বাধীনতার সংগ্রাম”। এমন কত পবিত্র সংগ্রাম আর দ্রোহের বানীকে গলা টিপে রুদ্ধ করতে চেয়েছে।</p>
<br /><p>কেমন আছো আমার প্রিয় স্বদেশ?<br />কেমন চলছে তোমার স্বাধীনতা উত্তর দিনকাল?</p>
<br /><p>সেই থেকে হল যুদ্ধ, হল দেশ ভাগাভাগি, বিজয়ী বেশে পেলাম<br />স্বাধীনতা, পেলাম দেশ, পেলাম পতাকা, পেলাম হাজার বছরের<br />শ্রেষ্ঠ বাঙালী, পেলাম জাতির পিতা। অথচ মুহুর্তে পিতৃহারা হয়ে<br />পড়লাম, দুঃখি জননী ছেড়ে গেল বাংলা, কিন্তু দুঃখকে হারাতে<br />পারল কই? তাই মা আমার আজও কাঁদে, কাঁদে বাবার শোকে, কাঁদে সন্তানহারা শোকে, কাঁদে চোখের সামনে স্বধীনতার অর্ধনমিত<br />পতাকা দেখে, কাঁদে পদ্মায় পানিহীন ধুঁ ধুঁ বালির চর দেখে, পাহাড় কাটার মাটি<br />দেখে, কাঁদে ধর্ষিত মেয়ের লাশ কোলে করে, কাঁদে ঘুঁষকে ন্যায্য কাজের অনৈতিক স্বীকৃত পুরস্কার হতে দেখে, কাঁদে জাতির পিতার আবক্ষ অবয়ব<br />ভূলুন্ঠিত হতে দেখে। শুধু কান্না কান্না আর কান্না। আজও সে কান্না<br />থামে না, কে এসে থামাবে সে কান্না! কেউ কি নেই? কেউ কি তৈরি নয়, কোন কালপুরুষ কি নেয়নি জন্ম?</p>
<br /><p>কেমন আছো আমার প্রিয় স্বদেশ?<br />কেমন চলছে তোমার মধ্যম উন্নয়নের দিনকাল?</p>
<br /><p>পদ্মার চরের বুক চিরে জন্ম নিয়েছে কংক্রিটের সড়ক, রেল সড়ক, রুপোলী ইলিশ মাছেরা মিছিল করে দেখতে আসে বর্ষার জলে উন্নয়নের সে ছোঁয়া, কষ্ট বুকে ডলফিনের দল তবুও জল থেকে মুখ বের করে দেখে মধ্য আয়ের দেশ হয়েছে তার স্বদেশ, গাংচিলেরা বাতাসে গানের রেশ রেখে যেতে যেতে বলে মোহনায় ফিরে যাব তবু উভয় পাড়ে গড়ে উঠুক আধুনিক আওয়ামী শহর। তলাহীন ঝুড়ির তলায় যেন বেনিয়ারাই এখন দুই হাত পেতে থাকে ভিকেরীর মত কখন কাঁড়িকাঁড়ি ঝরবে সবুজাভ ডলার,<br />কখন তারাই সেই ছেঁড়া ঝোলা নিয়ে বলবে " আমার আল্লাহ নবীজীর নাম", হরিণ একটা বান্ধা ছিল গাছেরই তলায়।" সে হরিণ তো "সোনার হরিণ" নয়। একেবারে সুন্দর বনের হরিণ। সেই সুন্দরবন যেন এক হয়ে যায় পদ্মাকে পায়ে পায়ে জড়িয়ে। রয়েল বেংগল টাইগারের হুংকারে কেঁপে কেঁপে ওঠে বিশ্ব চরাচর, পৃথিবী অবাক- এ কেমন বাংগালী - বাংলার জয়গান আজিকে যেন এক অনন্য বিশ্ময়।</p>
<br /><p>০৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২১।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/vhalobashar-kanna/ভালবাসার কান্না 2021-01-11T11:00:10-05:002023-06-25T18:59:47-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>মেঘের আকাশ কাঁদলে তাকে বলে বৃষ্টি, বোবা পাহাড় কাঁদলে তাকে বলে ঝর্ণা। বড্ড পুরোনো কথায় আজও এ অনুভূতি প্রকৃতি ভাবেই মাখামাখি। তারপরও কি প্রকৃতির এমন অনিবার্য খেয়া্লী প্রকাশ কোন দিন পুরোনো হয়? নাকি হতে পারে। নাকি -এমন পুরোনো কথায় আর অনুভবে উন্নাসিক ভাসতে হয় নাকি ভাসা যায়। ঠিক তেমনি ভালবাসা অথবা ভালবাসাবাসি সেও তো অনেক পুরোনো শব্দ, অতি পুরোনো অনুভূতি। তারপরও ভালবাসি (I love you)- এ কথা যখন বলি অথবা এ কথা কেউ বললে যখন শুনি তখন কি ফুরায় এর আবেদন, ফুরায় এর শ্রুতি মধুরতা, ফুরায় কি এর আকর্ষণ, মাদকতা... ফুরায় না। বরং শুনতে শুনতে আরও অনেক স্বপ্ন এসে ভীড় করে ভালবাসার মনে। হোক সে স্বপ্ন মিথ্যা, হোক সে স্বপ্ন অনেক বড় কিংবা অতি ক্ষুদ্র। হোক সে স্বপ্ন অতি অবাস্তব, হোক সে স্বপ্ন শুধু একটা স্বপ্নই। তবুও ভালবাসাবাসিতে একটা স্বপ্ন লাগে। অর্থাত একটা অবলম্বন লাগে। যেমন মোমের ভেতর আলো থাকে বটে তবে সে আ্লোর প্রকাশের জন্য সাথে একটা সলতে লাগে। কয়লার ভেতরে আগুন থাকে বটে তবে সে আগুন জ্বালাতে একটা স্ফুলিঙ্গ লাগে। </p>
<br /><p>তাই ভালবাসতেও একটা স্বপ্ন লাগেই লাগে। আর সে স্বপ্ন ভীড় করে থাকে চোখের পাতায়, মনের গভীরে অথবা বুকের মাঝখানে। আর কেমন যেন চঞ্চল করে রাখে অনুক্ষন সকাল সন্ধ্যা। অন্যভাবে বললে বলতে হয় এ যেন স্বপ্নের ভেতর ডুবে থাকা। অথচ ভালবাসাবাসির মানুষগুলো কেউ হয়ত জানেও না এ স্বপ্নের সম্ভাবনায় ভবিষ্যত কি পরিনতির দিকে হাঁটছে। কিন্তু পরিনতির কথা ভেবে তো আর ভালবাসাবাসি হয় না। তাইত কেউ কেউ বলে ভালবাসতে মিথ্যে করে হলেও স্বপ্ন দেখতে হয়। তা না হলে ভালবাসা মরে যায়। ভালবাসার শরীরে এবং গোঁড়ায় জল ঢালতে হয়, তা না হলে ভালবাসা মরে যায়। সে জলই হয়ত চোখের জল, ভালবাসার গায়েও আদর সোহাগ মাখাতে হয়, সে আদর সোহাগ মানেই হয়ত কাছে আসা, ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখা। নাহলে ভালবাসার শরীরে জড়তা ভর করে। পথ চলা হোঁচট খায়। জোরে আঘাত পেলে ব্যাথা হয়, জখম হলে রক্ত ঝরে। এ ব্যাথা, এ রক্তক্ষরণ বুকের মধ্যে হয়। কেউ দেখে না, কাউকে দেখানও যায় না। এমনকি ভালবাসার মানুষকেও না। এ চরম কষ্টের। </p>
<br /><p>তাই সে ভালবাসাও কাঁদে, কখনও কখনও কাঁদে! কেন কাঁদে, কি ভাবে কাঁদে? কার জন্য সে কাঁদে, কতক্ষন কাঁদে? কাঁদলে কি ভালবাসার চোখে জল ঝরে, নাকি সে রাতে নিভৃতে কাঁদে আর দিনে ঘুরে বেড়ায়? লোক চোক্ষুর সামনে করে অভিনয় আর রাতের বিছানায় থাকে নির্ঘুম। কান্না শিক্ত চোখে কি আর ঘুম হয়। তবে ভালবাসার ভাল লাগা এই যে, তার সে কান্না কেউ দেখে না। আসলে এ কান্না কাউকে দেখানও যায় না। এ কান্না একান্ত নিজের। আর যতটুকু দেখানো যায় ততটুকুতে বুঝানও যায় না যে এ কান্নার সাথে ভালবাসার মানুষটির কান্নাও প্রয়োজন। তা না হলে ভালবাসার গোঁড়ায় একলা জল ঢাললে তো আর ভালবাসা বাঁচবে না। হয়ত বেঁচেও যেতে পারে। কিন্তু সেখানে স্বপ্ন হবে নিজের, ভালবাসাবাসির জন্য নয়। সেখানে স্বপ্ন হবে স্বার্থের ভালবাসার মানুষকে জড়িয়ে সুন্দর স্বপ্নের জন্য নয়। যদি ভালবাসার কান্না কেউ দেখত, তাহলে কি হত? তার জন্য কারও মন পুড়ত, কেউ তাকে ভালবেসে বুকে জড়াত, কেউ তাকে শান্তনা দিতে গল্প শোনাত অনেক সুখের গল্প। কারও কি এত সময় আছে? সকলেই শুধু ভালবাসা চায়। নিজের ভালবাসার গল্প বলে, কিন্তু ভালবাসার যে কান্না সে কান্নার গল্প কেউ শুনতে চায় না। তাই ভাবি আকাশ আর বোবা পাহাড়ের কান্নার মত ভালবাসার কান্নার কি নাম দেবো?</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/shagoto-kuri-ekush/স্বাগত কুড়ি -একুশ2021-01-02T07:47:29-05:002023-06-25T18:59:20-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>এই মন আজ কি যেন লিখতে চায় <br />ভাবনায় আসে আবার যায় তা হারিয়ে,<br />প্রথম কিছুর অনেক আবেদন থাকে<br />জানি না প্রথমটি হয় কি শেষ না মাড়িয়ে!</p>
<br /><p>এই যে প্রথম দেখা, প্রথম প্রেম<br />সূর্য ডোবা প্রতিক্ষিত প্রথম অভিসার,<br />কত প্রথম শুরু, প্রথম সলজ্জ চুম্বন<br />প্রথম আদর নেয়া প্রেমময় কবিতার।</p>
<br /><p>শেষ নিয়ে কেউ কি ভাবে শেষটায়<br />শেষের মধ্যে যেন বেদনা থাকে বিরহের,<br />তাই বাঁচার মধ্যে মৃত্যুকে মনে পড়ে <br />এ যেন রাত্রির গল্প কেবল রিক্ত নিরিহের।</p>
<br /><p>অথচ আজ সূর্য ডোবা বছরের শেষ দিন<br />সূর্য উঠা শেষ দিন বলা হল কই?<br />নতুন সূর্য যেন থাকে নতুনের অপেক্ষায়<br />পুরাতনের অনুশোচনায় আমরা কি রই?</p>
<br /><p>পুরাতন গত হয় বলেই তো আসে নতুন<br />কিছু শেষ হলেই তো শুরু হয় প্রথম,<br />আজ বছরের শেষ দিন ৩১শে ডিসেম্বর<br />শেষ কবিতায় ধরেছি সাহসের কলম।</p>
<br /><p>এমন একটা কিছু লিখবে বলেই মন আজ<br />সারা দিন ছিল কি না শেষ নিয়ে অস্থির,<br />শেষ হোক কুড়িরা আসুক কুড়ি-একুশ<br />আগামী স্বপ্নময় দিন ভালোলাগা স্বস্তির। </p>
<br /><p>৩১ ডিসেম্বর, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/modern-song/আধুনিক গান 2020-12-21T10:07:58-05:002023-06-25T18:51:25-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>আধুনিক গান<br />কথাঃ পলক রহমান</p>
<br /><p>আমি আকাশকে বলে দিয়েছি<br />আমার চোখের জল শুকিয়ে গেলে<br />সে যেন শিশির হয়ে ঝরে।<br />আমি রাতকে বলে দিয়েছি<br />আমার চোখের জল লুকিয়ে কি হবে<br />সুখ যদি আমায় পর করে ।।</p>
<br /><p>ভোরের সূর্য আগামি স্বপ্নের হাত ধরে চলবেই,<br />রাতের আকাশে চাঁদ ভালোবাসার কথা বলবেই। <br />তবু দিনকে বলে দিয়েছি<br />কষ্টরা হারায় যেন আলোর পথ ধরে।।</p>
<br /><p>পাহাড় যতই ঘুমাক আকাশে হেলান দিয়ে,<br />মৌসুমী মন তবু বাতাসের আলাপনে যায় হারিয়ে। </p>
<br /><p>ঝরনার জল নদীর পথ ধরে সাগরের সাথে মিলবেই,<br />জোয়ার ভাটার টানে মিলনের সব গান সে গাইবেই। <br />তবু সাগরকে বলে দিয়েছি<br />নোনা জলে যেন চোখ দুটি আর না ভরে।। </p>
<br /><p>২১ ডিসেম্বর, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/prokito-prem/প্রকৃত প্রেম2020-12-10T09:37:17-05:002023-06-25T18:59:12-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>শংকা আর সন্দেহ নয়,<br />ভালোবাসায় বিশ্বাস আর সম্মানের মুক্ত আঙিনায় <br />বুনতে হয় পূর্ণিমার অনেক চাঁদ, মিটিমিটি করা<br />ইশারায় কাছে ডাকা মায়াবী তারাদের, আর প্রভাতী <br />সূর্যের কাছে জেনে নিতে হয় আগামীকালের শপথ।</p>
<br /><p>অনুকম্পা বা দয়া নয়,<br />ভালোবাসায় মায়া আর মমতার রাজ্য জুড়ে অকৃপন<br />বিলিয়ে দিতে হয় শিমুল পলাশের লাল, ঘাস ফুলের সাথে<br />দোলে যাওয়া কৃষ্ণচূড়া পাপড়িদের জন্য আফসোস, <br />আর ফুলের বনে ডানা ভেঙে পড়ে থাকা প্রজাপতির<br />জন্য চোখ ভরা কান্না।</p>
<br /><p>কথা আর যুক্তি নয়,<br />ভালোবাসায় মৌনতার পর্বতমালা জুড়ে সৃষ্টি করতে হয়<br />গোপী রাগিনীর প্রতিধবনি, চোখের আকাশ জুড়ে <br />নীলকাব্যের ভাষায় জাগিয়ে রাখতে হয় কামনার কাঁপন,<br />পাথর ঘর্ষণে উষ্ণতা স্ফূলিঙ্গের আড়ালেও বইয়ে দিতে হয়<br />তৃষ্ণা নিবারণের স্বচ্ছ জল। </p>
<br /><p>শর্ত আর হাত ধরা নয়,<br />ভালোবাসায় একত্রে অথৈ সাগরে ডুবে মরতে মরতে <br />বলতে হয় যেন পরজন্মেও তোমার সাথে আমার দেখা হয়, <br />এ সাগর যেমন জানে তেমনি ঐ আকাশ বাতাস, তরু লতা<br />সকলেই যেন শর্তহীন স্বাক্ষী হয় এ ভালোবার কাঠগড়ায় <br />এমন নিঃস্বার্থ প্রেম হোক প্রকৃত প্রেমের আয়না। </p>
<br /><p>১০ ডিসেম্বর, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/bukey-betha/বুকে ব্যাথা2020-12-08T04:27:34-05:002023-06-26T14:22:07-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>বুকে ব্যাথাটা কিসে হয় এখনও বুঝতে পারি না।<br />ব্যাথাটা অমাবশ্যা না পূর্ণিমায় বাড়ে তাও বুঝি না।<br />শুধু বুঝি তার সাথে আজকাল মনের ব্যাথাটার<br />একটা সখ্যতা। আমি অস্থির হোই। তাই সময়ও<br />হয় অস্থির।</p>
<br /><p>কত কাজ অসমাপ্ত আজও। এই যে তোমার কাছে<br />যাব যাব করে কতটা শীত বসন্ত চলে গেল, কত রাত<br />চোখে এসে বসতে চেয়েও ফিরে গেল চোখে জলের<br />মায়া দেখে। কতগুলো স্বপ্ন নিজেরাই আর স্বপ্ন হয়ে<br />আসবে না বলে বিদায় নিল।</p>
<br /><p>কথা ছিল হাতে হাত রেখে শীতের শস্য ক্ষেত মাড়াব, <br />শিশির জলে পা ভেজাব উদোম পাথারের দীগন্ত ছুঁতে।<br />তারপর বিল জলের টং ঘরে শুয়ে ডাহুক ডাহুকীর<br />সাথে, বক, পানকৌড়ি আর পরিযায়ী বালিহাসেদের<br />সাথে মাছেদের গল্প করব।</p>
<br /><p>আমি তেষ্টা পেলে তুমি আদর খাওয়াবে, আমি ঘুম <br />পেলে তুমি আঁচলে জড়াবে, আমি বুকের ব্যাথায়<br />অস্থির হলে তুমি বুকে জড়াবে। তারপর রাত হলে<br />এবার রাতকে বলবে আমার চোখে যেন এসে বসে,<br />স্বপ্নদের বলবে বাসর হতে।</p>
<br /><p>এবারও শীত এলো, বুকের ব্যাথাটা আছে বলেই<br />তোমার কথা খুব মনে পড়ছে। বুকের ব্যাথাটা যে <br />কিসে বাড়ে আজও তা জানা হল না। অথচ তুমি<br />কাছে থাকলে ঠিক ভুলে যাই ব্যাথার কথা, নাকি এ<br />বুকের ব্যাথাটা তোমার জন্য। </p>
<br /><p>০৭ ডিসেম্বর, ২০২০।</p>
<br /><p>০৭ ডিসেম্বর, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/andolon/আন্দোলন2020-11-18T09:30:21-05:002023-06-25T18:50:16-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>কি যেন একটা সুক্ষ্ম বলয় আছে আমার দেশে এই বাংলাদেশে,<br />তাইত কোন ধবংসাত্মক কিছু হবে হবে করেও তা হয় না শেষে।<br />এই যে এত অনিয়ম, এত দুর্নীতি, এত খুন, এত ধর্ষণ, এত অবিচার <br />চলছে সব ঠিকঠাক গদি পোক্ত করতে শক্ত করে ধরেছে মাজার।</p>
<br /><p>ধর্ম গেল ধর্ম গেল কিছু হুজুরেরা করে চিৎকার , করে আন্দোলন,<br />রাতের আঁধারে নারীর সাথে কালো টাকার গন্ধে চরিত্র হয় স্খলন।<br />নারী ভাবছি- নামাজ পড়ছি, ঘুষ খাচ্ছি- রোজা রাখছি ধর্মটা স্পস্ট,<br />এমন ধর্মীয় কালচারে এখনও মানছি না স্রস্টা পাচ্ছে কতটুকু কষ্ট। </p>
<br /><p>করোনা এলো তখন সকলেই ভাবল এ এক স্রস্টার কঠিন গজব,<br />এবার বুঝি চরিত্র শুধরাবে অথচ আরও অবনতি হল, কি আজব!<br />যেন আযান দিয়েই ক্যাসিনোর চক্রে আরও গতি পেলো দুর্নীতি,<br />মদের গেলাস খাচ্ছে গড়াগড়ি, দুর্নীতিতে সাংসদ হায়রে রাজনীতি!</p>
<br /><p>বাংলাদেশকে তবু কি যেন এক বলয় হেফাজতে রাখে, করে ভক্তি, <br />তাইত বলি এ দেশ সরকার যন্ত্র নয়, চালায় গায়েবি কোন এক শক্তি।<br />নইলে এত নদী ভাঙনত, বন্যা এত মূল্য ঊর্ধগতি তবু নেই চিৎকার<br />হাজতেও হাজতি নয় নিরাপদ, কিছু পুলিশের কিসে হবে সতকার! </p>
<br /><p>আমজনতার নাকি পিঠই নেই যে শেষে তা ঠেকবে গিয়ে দেয়ালে,<br />পিঠে কুলো বেঁধে, কানে দিয়েছে তুলো, কে কি করছে নেই খেয়ালে। <br />প্রকৃত কবিদের আড়ালে ব্যাঙের ছাতার মত জন্মেছে কত শত কবি,<br />সমাজ চেতনায় তাদের ভূমিকা নেই , নেই সত্য বাণী প্রচারে আরবী! </p>
<br /><p>ব্যাঙাচিকবি সস্তা কবিতা লিখে বা চুরিতে থাকছে লাইকের নেশায়, <br />এ অনাকাংখিতরা কি ধান্দায় যেন জুটেছে কবিতা লেখার পেশায়। <br />তাদের ভিড়ে আজ এই প্রতিবাদী প্রগতিশীল কবিরাও গেছে চুপশে <br />সকলের ধান্দা দেখে নিজের ইজ্জত বাঁচাতে কিছুই বলে না চুপ সে। </p>
<br /><p>প্রকৃত কবিরা দেশ বিনির্মানে জেল খেটেছে, উপাধি করেছে বর্জন,<br />নিজেদের সৃজনশীলতায় রাষ্ট্রের কাছ থেকে সম্মান করেছে অর্জন। <br />সে কাতারে ছিল সমাজসেবী, ছিল রাজনীতিবিদ, শিক্ষানবিশ জনতা,<br />অথচ আজ রাষ্ট্রই যেন বন্দি কোন অদৃশ্য অপশক্তির কাছে অযথা। <br /> <br />তাহলে উন্নয়নের কাতারে শামিল হচ্ছে দেশ কি করে দিনে দিনে?<br />টানছে ভারত, টানছে আমেরিকা, টানছে সৌদি, দেখি টানছে চীনে।<br />তাহলে কি এই অদৃশ্য সুক্ষ্ম বলয় মহান স্রস্টারই এক অশেষ রহমত?<br />করজোরে বলি অন্যায় নয়, দায়বদ্ধতায় হোক ন্যায়ের সাথে সহমত।</p>
<br /><p>১৮ নভেম্বর, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/kafoner-poket-nei/কাফনের পকেট নেই2020-11-16T10:38:56-05:002023-06-25T18:51:05-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>কি আর করা, জীবন তো এমনই হয় <br />মানুষ আসে কেঁদে কেঁদে, যায় কাঁদিয়ে। <br />সাগরের মত জীবনেও জোয়ার আসে<br />ভাটার সাথে আলগা কষ্ট নেয় ভাসিয়ে।</p>
<br /><p>‘যৌবন’ নামে যে গাছে ছিল মৌতাতি রস <br />সেও এসেছিল সারা শরীর জুড়ে আর মনে, <br />যৌবন পেরিয়ে বার্ধক্য এলো যেদিন থেকে<br />মধু নেই তবু মৌমাছি মন থাকে গুঞ্জরণে। </p>
<br /><p>প্রকৃত প্রেম নিভৃতেই আসে এক জীবনে<br />অথচ ব্যার্থতার সরব কষ্টে কাঁদায় অনুক্ষন,<br />শিয়রের জানালা গলে হুতুম পেঁচার কান্না<br />অশুভ বললেও থাকে রাত্রির আয়োজন। </p>
<br /><p>পথ তৈরিই হয় কোন ঠিকানা থাকবে বলে<br />তাই পথের ধারে বসে কভু কাঁদতে মানা,<br />পায়ে ধাপ থাকতে কি হবে থমকে দাঁড়িয়ে? <br />বরং খুঁজলেই পাওয়া যাবে জীবনের ঠিকানা। </p>
<br /><p>মাথা থাকলে সময়ে তাতে ব্যাথাও থাকবে<br />তাই বলে কি মাথা কেটে ফেলা সমাধান?<br />নাকি প্রকৃত এলাজ হবে সময়ের ব্যাবধানে<br />মাথা ব্যাথা হবে উপশম রোধিবে তিরোধান।</p>
<br /><p>তাই কোন মৃত্যুতে কান্না নয় ভাবো নিজেকে <br />যেতে হবেই তোমাকেও পৃথিবীর মায়া ছেড়ে,<br />রইবে পড়ে পেছনে সকল প্রেম ধন-সম্পদ<br />কাফনের পকেট নেই তাতে নেবে কিছু পুরে! </p>
<br /><p>১৬ নভেম্বর। ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/ar-kadtey-chai-na/আর কাঁদতে চাই না2020-11-15T10:36:18-05:002023-06-25T18:50:18-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>বসন্ত এসে দাঁড়িয়ে ছিল, অপেক্ষায় ছিল তারা দিনের পর দিন, <br />আমার কোজাগরী আঙ্গিনায় ফুটেছিল এক থালা চাঁদ <br />আমাকে নিয়ে জোসনায় ভাসবে বলে। <br />স্বপ্নের বিলিকাটা রাতে খেতিপাথার ঘেঁষা ভালোবাসারা কত <br />আদুরে কথায় ছিল মত্ত, শুধু আমার অপেক্ষা। </p>
<br /><p>অথচ খিড়কির ওপারেই ধর্ষীত নারীর আর্তনাদ, <br />খেতিপাথারের ওপারেই হত্যাকারীদের খবিশ উল্লাস আর <br />সীমান্তে কাঁটা তারে মানবতার স্বাধীনতাকে কাতরাতে দেখে <br />দু’চোখ এসেছিল বুকফাটা কান্না। <br />এখন আর কাঁদতে চাই না। কি হবে কন্না করে?</p>
<br /><p>মুদির দোকানে কি আর বসন্ত কিনতে পাওয়া যায়? <br />কাঁচা বাজার, মাছের বাজার সেখানে বসন্ত কোথায়? <br />এখন গ্রীষ্মের উত্তাপ। ফলের বাগান শূণ্য, শস্যের বাগান শূণ্য! <br />শরত এসে রাত জাগিয়ে রাখে আরাধনায় রত গেরস্থকে। <br />সম্পদের ভান্ডারে সঁধেল চোর আজ ডাকাতের থেকেও ভয়ংকর। <br />ছুরি নয় রীতিমত অস্ত্র উঁচিয়ে ধরে। তখন কাঁদি না, একটুও কাঁদি না, <br />আর কাঁদতেও চাই না। কি হবে কেঁদে যেখানে ভাগ্যবিধাতাই <br />আজ আহত হয়ে মাটিতে পড়ে গোঁঙায়। </p>
<br /><p>আমি চাষা, আমি কৃষক। আমি ওতো কিছু বুঝি না। <br />কিসের দোহাই দিয়ে কারা মূল্য বৃদ্ধি করল পন্যের, <br />কেন করল জানি না। বর্ষায় বৃষ্টি হবে, বন্যায় ফসল তলাবে, <br />এ তো স্বাভাবিক! আমার তো বড্ড খারাপ লাগে সকল <br />আহারি মানুষের কষ্টের কথা ভেবে। মূল্য বৃদ্ধিতে আমি <br />এতটুকু খুশি নই। আমি রাতারাতি ধনবান হতে চাই না। <br />আমি চাই আমার উৎপাদন খরচের সাথে ন্যায্য মূল্যটুকু। <br />তার পর আবার চাষ, আবার উৎপাদন, আবার ভালোবাসা।</p>
<br /><p>আর কাঁদতে চাই না, কাঁদাতেও চাই না। <br />উন্নয়নের জন্য ভেকু মেশিন গিলছে আমার খেতিপাথার। <br />কোজাগরি জোসনারা হচ্ছে অট্টালিকার পাষাণ দেহে আড়াল, <br />মন্ত্রী- এম পি’র ছেলে মেয়েরা চলাফেরা করে সাথে নিয়ে <br />হাফ ডজন বডিগার্ড। ওরা বসন্ত বুঝে না, <br />ওরা কোজাগরি পুর্ণিমা বুঝে না। ওরা ভেকু মেশিন চেনে, <br />ওরা বুল ডোজার চেনে, ওরা অস্ত্র চেনে, খুনের রক্ত যে লাল- <br />জবা ফুলের মত, গন্ধ নেই, ধর্ষণের মূল্য যে কয়েক লক্ষ টাকা মাত্র, <br />না হয় অজ্ঞাত স্থানে বেওয়ারিশ লাশ সে সব বুঝে। <br />তাই কাঁদতে ইচ্ছে হয় না!</p>
<br /><p>শুধু কাঁদতে ইচ্ছে হয় যখন কবিতা এসে কাঁদে। <br />একটা বসন্ত এসে অপেক্ষায় থাকে। <br />এক থালা চাঁদ এসে টানাটানি করে খেতিপাথারে আলু, পেঁয়াজ,<br /> রসুন, আদা, লাউ আর লাল শাকের আয়ত আঙ্গিনায়, <br />তাদের মধ্যে ডুবে যেতে যেতে আঁধার রাতের কথা বলতে। <br />কেননা দিনের আলো আর জোসনার আলোয় তবুও তো <br />খুনের রঙ হয় পানশে, খুনিরা থাকে নেকাবে, লালসার নষ্ট ধর্ষকেরা <br />থাকে নেকাব। কবিতার জন্ম হয়, প্রেমের জন্ম হয়, <br />মায়ারা এসে চোখের জলে ভাসতে থাকে কোজাগরী থালা মাথায়। </p>
<br /><p>১৫ নভেম্বর, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/pronoy-bondhon/প্রনয় বন্ধন2020-11-12T10:43:10-05:002023-06-26T04:29:50-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>ঘরোয়া আঙ্গিনা ছেড়ে এ পালকি মন<br />সদর খিড়কি মেলে দেখে নীল আকাশ,<br />পায়েল বাঁধা পায়ে শিশিরদৃষ্টি ধরে রাখে <br />ভাবে নারীত্বের গলায় কেন এত ফাঁশ? </p>
<br /><p>শুভ্র মন শুভ্র বসন শুভ্র বকের পালক<br />নবান্ন বিকেলে উড়ে আসে শুভ্র হেমন্ত,<br />বিরহ কি এতই অশরীরী অসহ্য কালো<br />ছাড়াছাড়ি কত পাহাড় প্রতিধ্বনি অনন্ত!</p>
<br /><p>কথা ছিল তারকাঁটা বন্ধন মানব না আর<br />প্রেম কি সুমারির কোন দৃশ্য জনস্রোত?<br />খোয়াড়ী ভাবনার অনুশাসনে ক্লান্ত মন<br />তবু উপেক্ষা করতে চায় বসন্ত অবরোধ। </p>
<br /><p>সকাল সন্ধ্যা শিক্ত দুটি মনের কত চাওয়া <br />কত বেলাভূমি স্বপ্ন পায়ে জড়ায় শৈবাল,<br />প্রনয় কি শুধুই বন্ধন পরিনয় সব শেষে<br />আত্মার অভিসার কি খুঁজে বৃষ্টি বৈকাল? </p>
<br /><p>১২ অক্টোবর, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/dub/ডুব2020-10-28T06:46:04-04:002023-06-25T18:50:36-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>এমন বিরহ কাটবে কত কে জানে!<br />অসীমে তোর ছোঁয়া কোন আহ্বানে। </p>
<br /><p>তোর আমার এই যে বিরহ দিবারাতি <br />এ যে আরও কাছে আসার গভীর আকুতি। </p>
<br /><p>আরও গভীরে নিমজ্জিত আঁকড়ে থাকা ডুব,<br />তোকে ভালবাসি সোনা, ভালবাসিরে খুব। </p>
<br /><p>১২ মে , ২০১৭</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/teliphonic/টেলিফোনিক2020-10-25T02:33:49-04:002023-06-25T18:59:33-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>-পলক রহমান। </p>
<br /><p>ফোনের অপর প্রান্তে কথা থাকে না। <br />কথা কি ফুরানোর বিষয়? <br />বাক শক্তি না হারালে কথা হয়, কথারা কথা হতে চায়। <br />হোক সে কথা তিতা কিংবা মিঠা।</p>
<br /><p>কিন্তু যখন কথা থাকে না, ফোন কাটে না, <br />আর্দ্র নাক টানার শব্দ ভাসে কানে <br />তখন বুঝতে কষ্ট হয় না ওপর প্রান্তে যে অশ্রু বৃষ্টিতে <br />ভিজছে কপোল তা ভালোবাসার। </p>
<br /><p>কান্না হাসির ভাষায় মুখে কথা না থাকলেও অনেক কথা, <br />যেখানে হাজার প্রেম, হাজার দুঃখ মুহুর্তে এসে জমা হয়। <br />আর ফোনে দৃষ্টি নিবদ্ধ অপেক্ষায় উৎকর্ণ হয় স্নায়ু <br />পুনঃ একটা রিং টোনের আশায়। </p>
<br /><p>তখন আবেগ উথোলায়, এবার অনেক কথা হবে। <br />রাতে ঘুম হয়নি, আজ প্রাতঃঘুমে কতক্ষন স্বপ্নে কেটেছে <br />এক সাথে, বুকের ব্যাথাটা বেড়েছে, গ্যাসের ব্যাথা। <br />আর অনেক কথার ফাঁকে বলা একটি কথাঃ <br />সব কিছুর ঊর্ধে- আসলেই বড্ড ভালোবাসিরে তোকে। </p>
<br /><p>২৫ অক্টোবর, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/nodi-khonon/স্মৃতিসৌধ কবিতা- নদী খনন2020-10-24T07:58:34-04:002023-06-25T18:51:31-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>- থ<br /> মেরে<br /> গেলাম।<br /> আমরা কি<br /> বেঁচে থাকতে<br /> আর দেখব না,<br /> ভুলেই যাব সেই<br /> বাঙলা মায়ের রুপ?<br /> আলুর কেজি ৫০ টাকা<br /> কোনপাপে এ কপালে লেখা<br /> এমন করে গোলা ভরা ধান<br /> পুকুর ভরা মাছ, গোয়াল খান্ <br /> গরু উধাও হল কার অভিশাপে<br /> কোন বর্গী এসে খেলছে তাসের ত্রূপ!<br /> আদি থেকেই বন্যায় ভাসে ক্ষেত খামারি<br /> বন্যার দোষ, নদীর দোষ দিই বা কি করে,<br /> উজান বাঁধে বালু এসে ভরছে নদীর তল, <br /> নদী খনন, নদী শাসন কত বিদ্যা কারিগরি<br /> জেনেও কেন নদী দিয়ে নামে না বর্ষা বৃষ্টির জল।<br /> ভোট নয়, টেন্ডার নয়, নয় গদির জন্যও ক্রন্দন<br />সময় থাকতে আন্দোলন হোক একটাই-নদী খনন।<br /> <br />২৪ অক্টোবর, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/chora-ovizog/ছড়া- অভিযোগ 2020-10-20T10:26:42-04:002023-06-25T18:50:33-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>ঘুঘু বেজায় রাগ করেছে<br />বগাবগির কান্ডে,<br />কাঠবিড়ালি যখন এসে<br />ঘুঘুর কাছে কান্দে।</p>
<br /><p>কদম গাছে কাঠবিড়ালি<br />থাকে গাছের গর্তে,<br />বলেছে বগা বাস করতে<br />থাকতে হবে এক শর্তে।</p>
<br /><p>নইলে সে লম্বা ঠোঁটে<br />গর্তে ঢুকে দেবে ঠোকর,<br />পারবে না পালাতে কোথাও<br />নেই কোন আর অন্য ফোঁকর।</p>
<br /><p>শর্ত হল প্রতিদিন তাদের <br />দিতে হবে দুইটি পুঁটি মাছ,<br />কাঠবিড়ালি বল : হল লেঠা<br />থাকি আমি গাছ থেকে গাছ।</p>
<br /><p>মাছ পাব কোথায় আমি<br />ফল যদি চাও দিতে পারি,<br />মৌসুমী ফল অনেক আছে<br />পেয়ারা আম জাম শুপারি।</p>
<br /><p>তবুও বগার মন গলে না<br />বগির সাথে করে পরামর্শ,<br />বগিও বলে তাড়াও তাকে<br />শেষ না হতেই এই বর্ষ। </p>
<br /><p>এই না শুনে কাঠবিড়ালি<br />ঘুঘুর কাছে করে নালিশ,<br />ঘুঘু বলে ঠিক আছে ভাই<br />আগামী হপ্তায় হবে শালিশ।</p>
<br /><p>ঘুঘু একটু গম্ভীর স্বরে<br />ডেকে বলে: শোন বগাবগি,<br />আমি কি আর মিছামিছি<br />তোমাদের উপর রাগি।</p>
<br /><p>বগাবগি বুঝতে পারে<br />করেছে তারা অন্যায়,<br />কোনই যুক্তি নাই তাদের<br />ঘুঘুকে এবার মানায়। </p>
<br /><p>সপ্তাহ ফিরে না আসতেই<br />বগাবগি যুক্তি করে,<br />কদম গাছের মায়া ছেড়ে<br />অন্য কোথাও গেল উড়ে। </p>
<br /><p>১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/agun-o-anngina/আগুন ও আংগিনা2020-10-14T03:24:45-04:002023-06-25T18:50:13-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>আগুনের পকেটে বাস তোমার, <br />নাকি পকেটে আগুন তোমার!<br />যেটাই হোক আগুন নিয়েই খেলছ তুমি, <br />ঘুমাচ্ছ তুমি, ভালবাসার আংগিনায় হাঁটছ তুমি।<br />দ্রোহের মাঠে হাঁপাচ্ছ তুমি! </p>
<br /><p>আগুন কি শুধু সময় মত <br />তোমার বিরহ জ্বালায় জ্বালবে প্রতিপক্ষকে, <br />আগুন কি কখনও আপন হয়? <br />সে তো যতক্ষন জ্বলবে <br />ততক্ষন সব কিছুকেই করবে গ্রাস, <br />করবে ছারখার, এমন কি তোমাকেও দেবে না ছাড়। </p>
<br /><p>সেই পকেটের আগুন যখন <br />নাগাল পাবে মনের আগুনের তখনই <br />আগ্নেয়গিরির ফুটন্ত উপছানো আগুনের মত <br />গলে গলে যাবে পোষা আগুনে <br />হৃদয়ের কোমলতা আর <br />মেহেদী ভালবাসাকে অংগার করে। </p>
<br /><p>তাই আগুন নয়, বাস কর ভালবাসার সাথে<br />আগুন নয়, বাস কর ভাল ভাবনার সাথে<br />আগুন নয়, বাস কর মমত্বের সাথে<br />আগুন নয়, বাস কর মানবতার সাথে<br />আগুন নয়, বাস কর সৃষ্টির সাথে<br />আগুন নয়, বাস কর স্রস্টার সাথে...</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/bachtey-chai-hajar-bochor/বাঁচতে চাই হাজার বছর2020-10-13T10:12:38-04:002023-06-25T18:50:20-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>সলতে প্রদীপটা তখনও আধো খোলা জানালার পাশে <br />এলোমেলো হাওয়ায় বিক্ষিপ্ত দুলোনীতে তবুও জ্বলছিল,<br />অতৃপ্ত জীবন যেমন- কেন সে অতৃপ্ত ? মেলে না অংক<br />ভেতরে পুড়ে পুড়ে যায় কেউ দেখে না কি ভাবে পুড়ছিল।</p>
<br /><p>দেহের ভেতরে প্রানটুকু থাকলেই কি তাকে জীবন বলে<br />মুখে ভালোবাসি বললেই তাকে কি ভালোবাসা বলা যায়? <br />ছোট বড় কঠিন পাথরে পাথর ঘষলেও তো আগুন জ্বলে<br />তাই বলে কি আগুন লেখা থাকে ছোট বড় পাথর গায় ?</p>
<br /><p>চোখ তো সব সময় ভেসে থাকে ভাসা ভাসা নোনা জলে <br />তবুও চোখে আগুন লাগে যখন মন পুড়ে দুঃখের জ্বালায়,<br />যতই চেষ্টা করি অতিরিক্ত জলেও নেভে না সে আগুন<br />সচল বাতাস না থাকুক, তাতে সে আগুনের কি এসে যায় ? </p>
<br /><p>এই আলো আগুনের খেলাতে আগুনেই থাকে যে আলো<br />তবু আলোর প্রকাশটা আগুন ছাড়াই কেন যে পেতে চাই?<br />রাত্রি আছে বলেই আঁধার কেটে দেখা পাই মুখরতার দিন<br />এত তীব্রতা তবু সূর্যকে নয় চাঁদকেই বেশী ভালোবেসে যাই।</p>
<br /><p>বাইরে ঝড় থেমে গেলেও অদূরে তবু থামে না মনের ঝড় <br />জীবন মৃত্যুর সাথে প্রদীপের সখ্যতা সলতের সাথে তেল,<br />নদীর মত সুখ দুঃখ নিয়ে তবুও বাঁচতে চাই হাজার বছর <br />যেমন উত্তাপেও শুষ্ক মরুভূমি বাঁচে, - না থাক জল অঢেল।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/smoronio/স্মরণীয়2020-10-12T05:59:42-04:002023-06-25T18:59:27-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>মূর্খ কি আর গাছে ধরে<br />নাকি জন্মে পাতালে?<br />জ্ঞানি তো হয় না কেউ<br />যতই বলুক মাতালে।</p>
<br /><p>ছুঁচোর নাকি গন্ধ যায় না<br />যতই মাখুক আতর,<br />কাক কি আর হয় ময়ূর<br />পাল্টাক যতই গতর।</p>
<br /><p>কুকুর কি কামড়ায় বুকে?<br />কামড়ায় পায়ে পায়ে,<br />কুঁজোর কি আর সাধ্য আছে<br />চিত হয় মাটির গায়ে?</p>
<br /><p>চৌকি কি আর চৌকিদার হয়<br />দুই পায়ে করলে খাড়া,<br />বিড়াল কি আর ব্যাঘ্র হবে<br />যতই গোঁফ খাক নাড়া।</p>
<br /><p>বকধার্মিক কি আর হবে বক<br />যতই লাগাক শুভ্র পাখা,<br />গীবত করা জেনা তুল্য, তাই<br />মনটা চাই পরিস্কার রাখা।</p>
<br /><p>বেশরম কিছু মানুষ আছে<br />গায়ে পড়ে করে বিবাদ,<br />লাজ শরমের ধার ধারে না<br />বেজন্মার নোংড়া স্বাদ!</p>
<br /><p>১২ অক্টোবর, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/jeeboner-patthorup/জীবনের পাঠ্যরুপ2020-10-10T08:47:29-04:002023-06-25T18:50:56-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>চুপকথা সেতো নয় চুপ<br />কত অতল কথা থাকে মনের গভীরে,<br />রুপকথার গল্পে দিয়ে ডুব<br />শাহাজাদী হোতে কত খুঁজলাম প্রানভ্রমরে।</p>
<br /><p>ধুপসন্ধ্যায় জ্বালিয়ে গন্ধ ধুপ<br />রুপসজ্জায় তোমাকে পেতে হলাম পূজারী,<br />সন্ধ্যা প্রদীপ হারালে সে রুপ<br />আঁধারে যৌবনা মন হোয়েছিল উজাড়ী।</p>
<br /><p>খুব করে তবু হঠাৎ টুপ টুপ<br />বৃষ্টি যখন ভরে ছিল মনের শুকনো মাঠ,<br />তবু ভরেনি ভালবাসার কূপ<br />তোমার জন্যই প্রতিক্ষাতে জীবনের সব পাঠ।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/naktupi/নাকটুপি2020-10-07T09:59:10-04:002023-06-25T18:51:29-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>মানবতার শরীরে চোরাকাঁটাও বিঁধেনি <br />অথচ অবলিলায় বিবেককে করেছি কফিন, <br />সেই কফিনে লোহার শেষ পেরেকে যেন <br />হাতুড়ি ঠুকে বন্ধ বিবেকে হয়েছি স্বাধীন। </p>
<br /><p>হায়রে আমার স্বাধীনতা কত যে অভাগা <br />তোমাকে বুঝিনা তাই কাঁধে স্বেচ্ছাচারীর ভূত, <br />বুঝিনা ইজ্জত খুঁজি না নিজ বংশ পরিচয় <br />ভাবি না আমরা কোন বাংলা মায়ের পূত।</p>
<br /><p>যতই আন্দোলন ফলাই পথ থেকে রাজপথে<br />যতই করি আহাজারির গলা ফাটা চিৎকার, <br />বিবেক যে বন্দি আজ পিরামিডিক কফিনে<br />নারীর সম্ভ্রম রক্ষায় চাই শক্ত কোন প্রতিকার।</p>
<br /><p>এখন বিবেকহীন পুরুষ সব লেপটে আছে<br />মুখোশ নয় নাকটুপি পরেও আঁটছে বুদ্ধি কুট, <br />আশচর্য হব না যদি শুনি ঠিক আগামীকাল<br />পুরুষ নয় নারীও করছে পুরুষের সম্ভ্রম লুট। </p>
<br /><p>করোনার মত অভিশাপে মাথায় টুপি নেই<br />অথচ নিজেকে বাঁচাতে পরছি আজ নাকটুপি,<br />স্রস্টা এতো গজব দিয়ে শুধালো বিবেক কোথায়? <br />হায়রে মানুষ বিপদ ফুরালেই হয়ে যাই বহুরুপি!</p>
<br /><p>নাক্টুপিও তোদের ধরাতে পারল না আজ <br />এতটুকু নরক কিংবা জাহান্নামের ভীতি,<br />স্রস্টা কি নিজেই ক্রস ফায়ারে শায়িত কফিনে<br />তাহলে সারাবে কে আজ সমাজের এই ভীমরতি? </p>
<br /><p>করোনা গজবে বিবেক এখনও জাগ্রত হল কই? <br />যেন আরও হয়েছি বিবেকহীন বিকৃত নরপশু, <br />নাকটুপির আড়ালে একি অমানবিক খেলা<br />মায়ের সামনেই ধর্ষিত হচ্ছে আজ মানব শিশু! </p>
<br /><p>তাই পিরামিডিক কফিন থেকে আগে বের করো, <br />টেনে বের করতেই হবে অসাড় বিবেককে,<br />তার পর বাল্য শিক্ষায় তাকে শিশুর মননে গেঁথে<br />আজীবন জাগ্রত রাখতে হবে সে বিদ্যাপতিকে।</p>
<br /><p>যারা বখে গেছে ,কঞ্চি হয়েও বাঁশ থেকে আজ লম্বা<br />তাদের অপরাধে বিচারের হাত হোক খাটো,<br />বিলম্বিত আহাজারি নয়, প্রকাশ্যে ফাঁশি চাই তাদের<br />বুড়ো বাঁশ যেহেতু হয় না পাকিয়ে আঁটো। </p>
<br /><p>নাকটুপির স্রস্টা- তুমি ক্রস ফায়ারে মরতে পারো না<br />তুমি অবিনশ্বর, তুমিই বিপদে রক্ষার কান্ডারী,<br />রক্ষা কর প্রভু সম্ভ্রম জারজ ধর্ষণকারীর যৌনাঙ্গ থেকে<br />মানব জাতি আজ অসহায় তোমার করুণা ভিখারী।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/dhormo/ধর্ম2020-10-06T07:21:32-04:002023-06-27T14:34:44-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>কখনও মনে হয় ভালোবাসি উপনিষদ<br />না হয় ভালোবাসি কুরআন,<br />অলক্ষ্যে বসে মুচকি হাসে ইবলিশ<br />আফসোস্ করেন আল্লাহ ভগবান।</p>
<br /><p>কখনও মনে হয় এই যে চন্দ্র সূর্য পৃথিবী<br />এদের নেই কোন প্রকৃত মালিক,<br />যেই ভাবি আমি তো একা একা আসিনি<br />আমার জন্মটাও নয় অসার উলীক!</p>
<br /><p>কখনও মনে হয় ভালোবাসি পূজা অর্চনা<br />না হয় পাঁচ ওয়াক্তের নামাজ,<br />অমনি ভাবি আমি কত বড় সৌভাগ্যবান<br />জন্মেই পেয়েছি এক নির্দিষ্ট সমাজ। </p>
<br /><p>কখনও মনে হয় নিরাকার ইন্দ্রিয় অনুভূতি<br />তাই আকারের দেবতাই ভালো,<br />যখন দেখি সে দেবতাই পদাঘাতে বিসর্জিত <br />তখন অন্তরে জাগে জ্ঞানের আলো।</p>
<br /><p>ইচ্ছে করে ভালোবাসি গয়া কাশি বৃন্দাবন<br />না হয় ভালোবাসি মক্কা মদিনা,<br />দেখি আমি আদতেই পৃথিবীর আহ্নিকতায় <br />ঘুরছি কাবায় দিন রাত কিছু বুঝি না।</p>
<br /><p>ইচ্ছে করে শুদ্ধ গঙ্গার জলে পাপমুক্ত হোই<br />পবিত্র হোই জমজমের বরকতে,<br />দেখি মানুষ তো আমি একজনই বড্ড একা<br />গঙ্গা গঙ্গাই জমজম পবিত্র নিজেতে। </p>
<br /><p>উপনিষদ ত্রিপিটক বাইবেল কিংবা কুরআন <br />সবটাই বলে মানবতার পবিত্র কথা,<br />মনে তো হবে কত কিছুই ইচ্ছেটাও হবে বেশ <br />ধর্ম যার যার কর্ম যেন না হয় বৃথা।</p>
<br /><p>০৬ অক্টোবর, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/ebar-birohi-hobo/এবার বিরহী হবো2020-10-05T09:05:12-04:002023-06-27T18:29:57-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>এবার বিদ্রোহী নয় বিরহী হব। একটা বিরহী চাঁদ হতে খুব ইচ্ছে হয় এখন। দেখি প্রেমিক প্রেমিকেরা দূরাকাশের ঐ বিরহী চাঁদকে খুব ভালোবাসে। তাকে অপলক চোখে চেয়ে চেয়ে দেখে। দেখে মানে কি? রীতি মত খুঁজে বেড়ায় রাতের অন্ধকার ঘিরে ধরলে চারিপাশ। তারপর কত কাব্য লিখে, গান গায়, প্রিয়ার মুখের সাথে তুলনায় কখনও চাঁদের সাথে কথা বলে, মান করে, হাসে, কাঁদে, আর ভালোবাসে কেবল ভালোবাসাবাসি।</p>
<br /><p>বিদ্রোহীদেরকে কেউ কেউ লক্ষে অলক্ষে ভালোবাসলেও সকলেই ভালোবাসে না। বিদ্রোহী মানেই তো গলা উঁচিয়ে উচিত কথা বলা, অন্যায়ের প্রতিবাদ করা, একই মনের লোক খুঁজে বেড়ানো। নয়ত নীরবে হলেও কলমের ভাষায় কথা বলা। তাতেও ভয়, গ্রেফতারের ভয়, প্রান নাশের ভয়, সম্মুখে পা বাড়ালেই পা হারানোর ভয়। তখন চলার পথ হয়ে যায় ঠিকানা বিহীন। আর সব চাইতে বেশী ভয় হয় তোমার। তখন আমি খুঁজে বেড়াই আমাকে তুমি কি হিসেবে দেখলে বেশী খুশি হতে? </p>
<br /><p>এবার কৃষ্ণ নয় কৃষ্ণকলি রাত হব। একটা নয় বরং অনেকগুলি বিরহী রাত, যারা গোপীহীন আমার শিয়রে অপেক্ষা করবে আমার সাথে মিশবে বলে। অবশ্য তখন প্রেমে পড়া ভালোবাসার মানুষটি আমার প্রেমের পাগলামোতে আমায় ছ্যাঁকা দিয়ে চলে গেছে এমন হলে খুব ভাল হয়। ঘরের আলো যাবে নিভে, দরজায় দেয়া থাকবে খিল। শুধু খিল খোলা থাকবে বিরহী মনের জানালার। খিল খোলা থাকবে দু’চোখের পাতার। কান্নারা গড়িয়ে গড়িয়ে ভেজাবে বুকের জমিন। সে জলে জন্ম নেবে বেদনার চারা। দেখব তাতে কার ভুলের কতগুলো ফুল অথবা কাঁটা জন্ম নিল!</p>
<br /><p>ভিরু প্রেমিককে কেউ ভালোবাসে না। ভিরুতার যন্ত্রনা কেন বুকে তার খোঁজও কেউ করে না। তখন ভালোবাসা- মনের আকাশে উদিত সুখ তারা নয়, কেবল খুঁজে বেড়ায় পায়ের নীচে অস্তিত্বের জমিন। তাই তো ভাবি ভালোবাসা নিঃস্বার্থ হয় কি করে? যারা বলে ভালোবাসা নিঃস্বার্থ- তারা মিথ্যুক, তারা বিরিহী রাত চেনে না, তারা দু’চোখে কান্নার ভাষা বুঝে না, তাদের বুকে জন্মও নেয় না বেদনার চারা গাছ। বরং ভিরু মনের তারাই, ভিরুতা সে সব প্রেমিক প্রেমিকারই গপোন লব্ধ ক্লিষ্ট্তায়!</p>
<br /><p>এবার পাহাড় নয় ঝর্ণা হব। কেননা একটা স্রোতশ্বিনী বিরহী নদী হতে খুব ইচ্ছে করে। পাহাড় কেমন দূরদেশে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকে। কাছে আসে না। অথচ নদী, কত মাঠ, প্রান্তর, জনপদ পেরিয়ে কাছে আসে। তার বিরহী জল সে নিজেই বয়ে নিয়ে বেড়ায়। সে জলে নৌকা চলে, লঞ্চ চলে, স্টীমার চলে, কত মানুষ তার আপন জনের কাছে ছুটে যায়, কতজন বিরহী নদীর ঘাটে উদাস চেয়ে থাকে তার প্রিয় জনের জন্য। আমারও ইচ্ছে করে তুমি আমার জন্য অপেক্ষা করো ঘাটে বসে আমার অপেক্ষায়। যেন এক সাথেই পার হোই নদী। যেমন করে সকলেই চায় তাদের জীবন নদীর ঠকানা। </p>
<br /><p>০৫ অক্টোবর, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/ovishap/অভিশাপ2020-09-30T08:13:17-04:002023-06-25T18:51:49-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>ক্লান্ত হলে ঝিঁঝিঁ ডাকা, ভাব্বে তখন তুমি তো একা <br /> চাঁদও হয়ত পশ্চিমেতে থাকবে ঢলে, <br />থাকবে না দু’চোখে ঘু্ম, দুঃশ্চিন্তার পড়বে যে ধুম <br /> আনন্দ সব পড়বে দুঃখের তলে।</p>
<br /><p>হয়ত একটা রাতের পাখি, ক্ষনে ক্ষনে উঠবে ডাকি <br /> মনের মধ্যে তোলপাড় করবে কূজন, <br />আমায় সেদিন বুঝবে, খিড়কি খুলে অন্ধকারে খুঁজবে <br /> আমি তখন অনেক দূরে লক্ষ যোজন।</p>
<br /><p>চাঁদের আলো হবে নিভু, আমায় তখন খুঁজবে তবু<br /> দূরাকাশে একটি দুটি জ্বলবে রাতের তারা,<br />পুব আকাশে ফুটবে আলো, ভাব্বে কিছু মন্দ ভালো<br /> হতাশ হোয়ে হয়ত তখন হবে আত্মহারা।</p>
<br /><p>সুখে থাকা নিজের কাছে, সুখ ধরে না গন্ধম গাছে<br /> বাণী দিয়ে কথার কথায় যায় না খোঁজা সুখ,<br />আমার লেখায় যে বাস্তবতা, গল্প হোক কিংবা কবিতা <br /> আবেগ দিয়ে খুঁজিনি তাতে সুখের মধ্যে দুখ!</p>
<br /><p>বর্ষায় জলে ভরবেই নদী, অধিক জল থাকেও যদি<br /> চন্দ্র গ্রহণেও না থাক তাতে জোয়ার ভাটা,<br />বৃষ্টি ধারার অনেক জলে, শাখায় বাসা ভিজবে বলে<br /> ছাড়ে কি বাসা পাখি পড়বে বলে ঠাঠা ?</p>
<br /><p>প্রেমে কি সুখটাই কেবল, যন্ত্রনার তাতে নেই ছোবল? <br /> এমন ভালোবাসার জন্যে মরে কি লাভ! <br />ভালোবাসায় থাকে না কোন লক্ষ্য, পক্ষ কিংবা প্রতিপক্ষ <br /> সে আপন গুনেই মেটায় সকল অভাব। </p>
<br /><p>তাইত বলি ভালোবেসে, অংকই যদি কর বসে বসে <br /> তাহলে তুমি আমায় বেসো না ভালো,<br />না হয় আমি হলাম একা, থাক না ভালে দুঃখের লেখা <br /> ভাব্ব না মিথ্যে প্রেমে কে আমায় কাঁদালো।</p>
<br /><p>৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/adhunik-gondho/আধুনিক গন্ধ2020-09-28T10:14:23-04:002023-06-25T18:50:11-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>আজ হঠাৎ দেশীয় রেল কামরার গন্ধ এসে ভাসছে নাকে। কেউ কি এমন গন্ধ পায়!<br />কি জানি এই যে এতটা বছর সময়ের সাথে জীবনও গড়িয়ে গেল<br />রেল গাড়ির চাকার মত সে কারনেই কিনা!<br />তবে খুব পরিচিত গন্ধ। বুঝাতে পারব না অনুভবের এই চিত্র। <br />চাকা গড়াতে লাইন লাগে, সড়ক লাগে, নিয়ম লাগে<br />ঠিক যেমন রেলগাড়ি তেমনই। </p>
<br /><p>জীবনের চাকা কেমন, জীবনের সড়ক কেমন এখনও জানা হল না। <br />আর না জানাতেই যেন প্রচুর অনিয়ম হল সারা জীবনভর ।<br />তাইত অনেকের মতই আজ আফসোস্ হচ্ছে।<br />কৃতকর্মের কড়চায় কড়া নাড়াতেই দেখি আমিও যে জীবনের মানে<br />এখনও খুঁজে পেলাম না। সড়ক ভুল, সঠিক গন্তব্য পেলাম না তাই। <br />তাহলে জীবনের মানে খুঁজতে যাওয়া কি ভুল!</p>
<br /><p>আজ বৃষ্টি পড়ছে। খিঁচুড়ির গন্ধও পাচ্ছি। খুব মিস করছি তোমাকে। <br />রেল কামরার গন্ধের সাথে তোমার হাতে রান্না করা<br />সর্ষেবাঁটা ইলিশের গুন্ধও যেন নাকে এসে ভাসছে আজ। সাথে টমেটো<br />পেঁয়াজ দেয়া মোটা করে ডিম ভাজির গন্ধ। <br />অসময়ের বৃষ্টি তাই বড্ড নস্টালজিক। শুধু প্রিয়জনদের<br />কাছে পেতে ইচ্ছে হয়।</p>
<br /><p>তোমায় ছেড়ে সেই যে চলে আসা পরবাসে। তার পর কতটা বছর<br />শুধু খিল খোলা দরজার সাথে সখ্যতা, কপাট খোলা<br />জানালার সাথে সখ্যতা, ঘরের সিলিং, চার দেয়াল, আর<br />বিছানাটুকুর সাথে সখ্যতা। এখানেও গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত, বসন্ত আসে।<br />কাশফুল দেখি না, নদীর বালু চিক্চিক্ করা চর দেখি না।<br />তাই শরত, হেমন্তের সাথে হাবুডুবু খাওয়া হয় না কাশফুলের<br />হাওয়ায় ভেসে সাদা মেঘেদের দেশে।</p>
<br /><p>এখানেও রেলে চড়ি। কিন্তু তোমার কাছে ছুটে যাওয়া রেল কামরার<br />গন্ধ পাইনা এখানে। বড্ড অপরিচিত, আধুনিক। দেশীয় রেল কামরার গন্ধ পাই না এখানে।<br />এখানে চড়ি টিউব রেলে। আপন মনে হয় না। মনে হয় না তোমার <br />কাছে ছুটে যাওয়া সেই রেল স্টেশন, প্রতিক্ষা, গার্ডের বাঁশি,<br />সবুজ ঝান্ডা, রেলের কুলিদের ছুটাছুটি আরও কত কি।<br />সব কেমন আধুনিক গন্ধ। মনের গন্ধ নাকে এসে আধুনিক হলেও<br />মননের গন্ধ কি আর পুরাতন হয়?</p>
<br /><p>২৮ , সেপ্টেম্বর, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/jadughor-mon/যাদুঘর মন2020-09-23T05:34:49-04:002023-06-25T18:50:52-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>যাদুঘর মন নিয়ে কিশোর আঙিনায় এখন খুঁজে বেড়াই<br />ছোটকালে দেখা কিছু মুরুব্বীদের আশির্বাদের হাত,<br />খুব ইচ্ছে করে দোকানী ভাবনায় দাঁড়াই স্মৃতির বাজারে<br />যেখানে তাদের অহংকার কোলাহলে কাটত দিনরাত।</p>
<br /><p>জুবুথুবু দাড়ি-গোঁফের আড়ালে খুঁজে পাই কাউকে<br />ছোট বেলার মতই সালাম দিয়ে দাঁড়াই গিয়ে পাশে,<br />অবাক হয়ে দেখি, তাঁরা সেই আগের মতই এখনও<br />আমায় বুকে টেনে নিয়ে স্নেহের চোখের জলে ভাসে।</p>
<br /><p>শুনি কেউ দূরারোগ্য ব্যাধিতে দেহ করেছেন ত্যাগ<br />তখন সবে এরশাদের উপজেলায় এলো বিদ্যুত,<br />কত স্বপ্ন ছিল হারিকেন কুপির শিখা নিভিয়ে দেখবে<br />গ্রাম কত আধুনিক হয়ে যাচ্ছে দূর করে আঁধারীযমদূত।</p>
<br /><p>মৃত্যুতে ভারাক্রান্ত হয় মন পুরোনো মুখ মনে পড়ে যায়<br />ভাবি, কেন যে মানুষ মারা যায় ভালোবাসা নিয়ে বুকে,<br />তখন গাছ হতে বড্ড ইচ্ছে হয় পুরোনো বটগাছ দেখে<br />শত বছর ধরে বেঁচে আছে সবুজে, মরছে না ধুকে ধুকে।<br /> <br />তবুও খুঁজি মুরুব্বীদের কেমন ভেতর থেকে আসে টান<br />তাঁদের আড্ডায় কি বলতেন বাবা জানতে বড্ড ইচ্ছে হয়,<br />কিছু কথা সময় করে কোনদিন হয়ত বলা হয়নি আমাকে<br />বটগাছ হতে চেয়ে হচ্ছি কবি, এ নিয়ে ছিল কিনা সংশয়।</p>
<br /><p>এত বছর তবুও মনে হয় না নিজেই হয়েছি আজ মুরুব্বী<br />আমাকে নিয়েও কি এমন যাদুঘর মন নিয়ে কেউ খুঁজবে?<br />ইন্টারনেট হয়ে ক্লাউড হয়ে মেঘে মেঘে ভেসে বেড়াতে<br />আমিও যে কারও স্মরণে থাকতে চাই সে কথা কি বুঝবে?<br /> <br />১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/purnima-rat/পূর্ণিমা রাত2020-09-22T03:32:17-04:002023-06-25T18:59:14-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>অনেক সাধ ছিল তোমার আমায় সাথে করে <br />বিলজোসনায় কাটাবে একটি রাত,<br />পাশে বসে জোসনার বৃষ্টি গায়ে মাখতে মাখতে <br />আমার হাতে রাখবে তোমার হাত। </p>
<br /><p>দিন ক্ষন ঠিক করতে কতদিন কত চান্দ্র মাসে<br />ঘেটেছ নিয়ে কত হরেকরকম পুঞ্জিকা,<br />ভেবেছ মন্দ হয় না বাজে যদি বাঁশি সেই রাতে<br />আমায় শ্রীকৃষ্ণ বানিয়ে তুমি হবে রাধিকা। </p>
<br /><p>সেই থেকে কত ভরা পূর্ণিমার চাঁদ উদয় হয়ে <br />আবার ঢলে ঢলে গেল পশ্চিমে,<br />পথ চেয়ে তবু বসে থাকি আমি বিলের পাড়ে <br />জানি না হারালে কি কোন নিঃসীমে? </p>
<br /><p>ভরা পূর্ণিমার চাঁদ নেমে আসে বিলের জলে<br />কত কথা বলি তোমায় নিয়ে তার সাথে,<br />হাত দিয়ে ছুঁয়ে দিই কখনও ভেঙে যায় চাঁদ<br />ভাঙে মন সেই সাথে এ ভেতরটা কাঁদে। </p>
<br /><p>পূরণ হবে কি এ সাধ, ভরা পূর্ণিমার চাঁদ দেখা<br />মিলিয়ে নিতে তোমার ঐ চাঁদ মুখ এক সাথে,<br />তুমিই শখ করে তুমিই আবারে হারালে কোথায়<br />যদি একবার এসে দেখা দিতে কোন পূর্ণিমা রাতে।<br /> <br />২১ সেপ্টেম্বর, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/bibaho-bicched/বিবাহ বিচ্ছেদ2020-09-21T07:33:34-04:002023-06-25T18:50:21-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>গভীর ভালোবাসার প্রকাশটা কখনই পায় না প্রকৃত রুপ <br />তাই উভয়ই উভয়ের কাছে থাকে প্রনয় বিহারে বেশ আনাড়ি, <br />একত্রে অনেক যুগ কাটিয়েও তবু আফসোসের হয় না মরণ<br />তাই ভেতরে ভেতরে সাগরসম প্রেম হয়ে উঠে দগ্ধ পাহাড়ি। </p>
<br /><p>তবুও তার বন্য প্রকাশটা মাথা চাড়া না দিয়ে থাকে ভেতরে<br />এ কারনেই মানুষ সভ্য জীব, এ কারনেই প্রেম থাকে টিকে,<br />অথচ কষ্ট নিয়ে যারা চায় না বাঁচতে তারা চায় ছাড়াছাড়ি<br />একদিন একাকিত্বের কষ্ট মেনে যুগোল পরিচয় দেয় বিকে।</p>
<br /><p>কোনটাকে বলব কতটুকু হল ভালো পশ্চাতমুখো সমাজে<br />যে সমাজ খারাপের জন্য এখনও দায় চাপায় নারীর কাঁধে,<br />খতিয়ে দেখে না কেউ কি দোষ ছিল ভদ্রমুখি পুরুষের যত্নে <br />কেন এ নারী এত কষ্ট হবে জেনেও ছাড়াছাড়ির ঘর বাঁধে।</p>
<br /><p>সুন্দর স্বপ্ন দেখা এমন অনেক নারীরা আজ অসহায় হল<br />কেবল গভীর ভালোবাসার প্রকাশটায় ছিল না প্রনয় ক্রিড়া,<br />হায়রে সমাজ এতেই সে হল আজ বিবাহ ক্লিষ্ট রিক্ত নারী<br />অবিবাহিত পুরুষ তার জন্য যেন পুনঃ সম্পর্কে এক পিড়া ।</p>
<br /><p>এ কেমন নিয়ম, এ কেমন আচার আচরণ এই সমাজে ?<br />ভাঙতে হবে এমন অনুশাসনে পশ্চাতমুখিতার বেড়াজাল,<br />তাতে সবাই সামিল হোক, এ সমাজ, মা-বাবা নারী-পুরুষ <br />অনাকাংখিত সংস্কার ভেঙে, আসুক সুন্দর আগামীকাল। </p>
<br /><p>২১ সেপ্টেম্বর, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/fele-asha-gramer-barite-ekdin/ফেলে আসা গ্রামের বাড়িতে একদিন 2020-09-20T07:19:58-04:002023-06-27T12:23:47-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>এ অবধি বেঁচে থেকে কত সকাল তো দেখছি। তবে কখনও ভাবিনি আজকের সকাল দেখাটা একটু অন্য রকম মনে হবে। কত বছর পরে এলাম গ্রামের বাড়ি। মনে হল এই তো বিগত কৈশোরে দেখা সেই চেনা সককাল দেখছি যেন। গাছে গাছে দোয়েল, বক, ডাহুক, ঘুঘুর ডাক শোনা যাচ্ছে। দূরে মেঘের ফাঁকে সকালের সূর্য ঊঁকি দিয়ে আবার মিলিয়ে গেল ঝিরি ঝিরি নারিকেল পাতার আড়ালে। সেই চেনা সূর্য, এ সূর্য যেন গ্রামের, এ সূর্য যেন নারকেলি পাতার সূর্য। </p>
<br /><p>হঠাত এখন বৃষ্টি এল। নাড়ি পোঁতা ভিটেয় অনেক বছর পরে আজ আকাশে মেঘ বৃষ্টির খেলায় জাম গাছ, আম গাছ, কদম, জলপাই, জামরুল আর কামরাঙা গাছের শরীর ভিজে যেতে দেখছি। ছোট কালের কথা মনে পড়ে গেল। পেটে জামের বিচি চলে গেছে, কোন এক মুরুব্বি যেন বলেছিল এবার আর রক্ষে নেই! পেটে জাম গাছ জন্ম নেবে। তারপরে মাথা ফুঁড়ে উঠবে আকাশে। সে কথা মনে পড়ে আজ খুব হাসি পাচ্ছিল। মনে হল যেন এইত সেদিনের কথা। কিন্তু আজও জামগাছটা আর জন্ম নিল না। বরং দেহের মধ্যে জন্ম নিল কিছু মরণ অসুখ। যা অলক্ষ্যে অজান্তে ভেতরে ভেতরে বড় হচ্ছে দিনের পর দিন। </p>
<br /><p>বৃষ্টি হচ্ছে, বৃষ্টি পড়ছে টিনের চালে। টুপ্ টুপ্, ঝম্ ঝম্। টাপুর টুপুর। সেই চেনা শব্দ। বৃষ্টি হচ্ছে ডুমুর গাছের পাতায়। পাতারা কেমন মাথা দুলিয়ে উঠছে, তারা যেন দোল খাচ্ছে, সেই চেনা দোলনা। বৃষ্টি হচ্ছে তাল গাছ ছুঁয়ে শ্যাওলা পুকুরে, পুকুর ঘাটে।, বৃষ্টি হচ্ছে জানালার কার্নিশ ঝুলে। বৃষ্টি যেন হচ্ছে সারা মনের জমিন জুড়ে। কেমন অনেক চেনা সে বৃষ্টি, অনেক চেনা সে বৃষ্টি পড়ার শব্দ। </p>
<br /><p>আম গাছের ডালে বৃষ্টিতে ভিজে একটা কাক ডাকছিল। কা কা কা করে এমন ভাবে ডাকছিল- কানের মধ্যে সে ডাকের ঝনঝনানীতে যেন তালি লাগার জোগাড় হল কানে। তবুও ভালো লাগছিল। আহা এ যেন সেই ছোট বেলায় কাকের বাসা ভাঙার আয়োজন নিয়ে কাকের সাথে ঝগড়া করার কথা মনে করিয়ে দিল। কাকের সেই রাগ, সেই গলা চিরে ডাক। শহুরে জীবনে এমন করে কাকের ডাক কতদিন শুনি না।<br />ভীষণ কর্কশ সে ডাক তবুও ভালো লাগছিল !</p>
<br /><p>সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে মনে হল আহা এ তো সেই শরতের বৃষ্টি ভেজা সন্ধ্যা। এখন আকাশে মেঘের গুড়ু গুড়ু শব্দে চমকানো বিদ্যুৎ চারিপাশ। খোলা জানালা দিয়ে ঝলকানো আলোর প্রবেশ। আধো ভয় শিহরিত বুকে সে আলোয় চোখ জুড়ায়। কি যেন আগামী বার্তা দিতে চায় অকাল বৃষ্টি। শরতে দূর্গা পূজার কথা মনে করিয়ে দিল। কালিবাড়িতে সান্ধ্যকালীন শাখ ঢাকের আওয়াজ। আজ মহালয়া, রাত্রির শেষ প্রহরে চন্ডী পাঠের সুর ভাসা ক্ষন অপেক্ষায় যেন। প্রসাদ খাওয়ার কথা মনে পড়তেই তার গন্ধ ভেসে এলো নাকে। আতব চালের সাথে দুধ কলা চটকানো প্রসাদের সেই চেনা গন্ধ। </p>
<br /><p>দূর মিনারে মুয়াজ্জ্বীনের আজানের ধবণিতে চমকে উঠি। ভাবি আজও কি মিনারে উঠে মুয়াজ্জ্বীন আযান দেয় ‘আল্লাহু আকবর’। সেই সন্ধ্যা আযানের শব্দ, সেই সন্ধ্যা পূজার ঘন্টা, সেই মেঘ গুড় গুড় শব্দ সব মিলে মিশে একাকার হয়ে যায় আমার সত্তার মধ্যে। যেখানে আজও অজান্তে আর বড্ড অযত্নেও হারিয়ে যাওয়া একটা কৈশোর মন শেঁকড় গজিয়ে আছে বাবার ভিটেয়। অথচ সে মন এখনও হারিয়ে যায়নি শহুরে বিচিত্র জীবন মেলায়। বরং সে মন আদি অস্তিত্বের কাছে ফিরে গেলে আজও জীবন্ত হয়ে ওঠে ফেলে আসা সকল অতীতকে নিয়ে, আর মনে হয় এইত সেদিনের কথা। </p>
<br /><p>১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/ebar-bisram-dorkar/এবার বিশ্রাম দরকার2020-09-10T11:07:03-04:002023-06-25T18:50:40-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>বৈকালিক বুড়ো রোদ ভাবনার শিহরণ উপেক্ষা করে অযাচিত <br />বৈদ্যিক সময় এসে হাজির হয় জীবনের মুক্ত আঙিনায়। <br />আমি তখন ট্রেডমিলে দাঁড়িয়ে। <br />হাঁটার পরে ভাবি এবার ইটিটিটা বোধহয় পার করে দিলাম। <br />স্থেটেস্কোপে ডাক্তারী কান তখনও খুঁজছে অসংলগ্ন হাটবিট।</p>
<br /><p>ভাবি আর কি পাব ফেলে আসা যৌবন? নিজেই নিজের কাছে<br />প্রশ্ন করিঃ এ আবার কেমন ভাবনা! যৌবন হারিয়ে গেলে কি<br />আর ফিরে আসে! না আসুক, তবু স্বপ্নরাই তো ধরে রাখে যৌবন। <br />এ জন্যই কি স্বপ্ন এত মধুর হয়, এ কারনেই কি দু’চোখ ভরে <br />স্বপ্ন দেখার কথা বলে স্বপ্নবাজ। </p>
<br /><p>স্বপ্ন দেখতে ট্রেডমিলে চড়তে হয় না, স্বপ্ন দেখতে অনেক সম্পদের<br />মালিক হতে হয় না, স্বপ্ন দেখতে ফুল শয্যায় ঘুমাতে হয় না, স্বপ্ন<br />দেখতে সোনার চামুচ মুখেও জন্ম নিতে হয় না। স্বপ্ন দেখতে লাগে<br />স্বার্থহীন বন্ধুর ভালোবাসা, প্রেম, স্বপ্ন দেখতে লাগে কষ্ট উপেক্ষিত<br />বৈদ্যিক সময়, কষ্টের ভেতর দিয়ে দেখা সোনালী রোদ। যার উষ্মতায়<br />গলে গলে যায় দারিদ্র ভাবনার পোড়া মোম।</p>
<br /><p>আজকাল চোখের মধ্যে সাদা এপ্রোন দেখি,<br />অথচ স্বপ্নের মধ্যে দেখি গোলাপ ফুল।<br />আজকাল শরীরে জ্বরের উত্তাপ টের পাই,<br />অথচ স্বপ্নের ভেতরে দেখি পাক্ রাসূল।<br />আজকাল হাওয়ায় পাপের অস্তিত্ব টের পাই,<br />অথচ স্বপ্নে দেখি হেঁটে বেড়াচ্ছি জান্নাতুল।<br />আজকাল তোমাকে হারানোর ভয়ে থাকি অনুক্ষন, <br />অথচ স্বপ্নের ভেতরে দেখি গন্ধে ভাসছে এলো চূল। </p>
<br /><p>তাই ভাবি এবার ট্রেডমিলে চড়লে কি পার পেয়ে যাব হার্টের কাছে?<br />নাকি স্বপ্নরাও হার মানবে বাস্তবতার সাক্ষাতে। পা সরবে না, স্বপ্নরা<br />থমকে দাঁড়াবে, ভেতরে তবুও স্বপ্ন দেখার সাধ। বৈকালিক সময় পার <br />হয়ে সন্ধ্যা গড়াবে, সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত্রি নামবে। এপ্রোনধারীরা <br />হয়ত তখন ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে বলবেঃ স্যার শুয়ে পড়েন তো। <br />এবার বিশ্রাম দরকার। </p>
<br /><p>১০ সেপ্টেম্বর, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/boddo-valo-lok-chilo/বড্ড ভালো লোক ছিল2020-09-09T12:23:00-04:002023-06-25T18:50:25-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>মৃত ব্যাক্তিও কথা বলে।<br />কথা বলে তাঁর ছেড়ে যাওয়া পরিচ্ছদ, আংটি, চোখের চশমা<br />কখনও খসড়া খাতায় ছেঁড়া ছেঁড়া লেখা, কলমের আঁচর,<br />যত্নে অথবা অযত্নে লেখা ডায়েরী, নোট বই, খাতা<br />আর সব কিছুই কথা বলে। যদিও আমরা ভুলে যাই মৃত <br />ব্যক্তিটিকে। শুধু বছরান্তে কবরে গিয়ে এক তোড়া ফুল,<br />মিছকীনদের কিছু খাবারের প্যাকেট। তাওবা কত শতাংশ <br />লোকের ভাগ্যে জোটে? সেটাও একদিন কালের বিবর্তনে <br />হারিয়ে যায়। সব আবেগীয় সৃষ্টাচার হয় রোহিত। </p>
<br /><p>সেদিন এক মৃতু ব্যক্তির ছেড়ে যাওয়া পড়ার ঘরে বসে<br />অনেক কথা ভাবছিলাম। সম্মুখে আশে পাশে যেদিকেই তাকাই <br />দেখি শেলফের তাকে থাকে থাকে কত ইংরেজি বাংলা <br />মোটা চিকন বই সাজানো। <br />কোনোটার মলাট ছিঁড়ে গেছে, কোনটা পুরাতন, <br />কোনটা নতুন, কোনটা বান্ডেলের থেকে মুক্তিই পায়নি এখনও। <br />কোনটা মোড়োকে সাজানো। আর হয়ত সময় হয়ে ওঠেনি<br />সে সব বই খুলে দেখার। তবুও বই যেন তাকিয়ে থাকে অপেক্ষায়! </p>
<br /><p>আমি বইয়ের দিকে চোখ রাখতে রাখতে কথা বলছিলাম <br />মৃত ব্যাক্তিটির সাথে। কেমন কষ্ট হোচ্ছিল বুকের মধ্যে। <br />বইয়ের ধরণ দেখলে বুঝা যায় ভদ্রলোক কোন ঘরণার <br />গবেষোণা পছন্দ করতেন। তিনি কেমন আবেগের , <br />কেমন ভাবনার, কেমন ভয়ংকর, কেমন প্রেমিক, <br />কেমন চালাক, কেমন ধূর্ত, কেমন রাগি অথবা <br />কতটুকু স্নেহ পরায়ন আর কঠিন কিংবা নরম মনের মানুষ ছিল। <br />বইয়ের দিকে চোখ রেখে এমন অনেক কিছু মনে পড়ছিল । </p>
<br /><p>ইতস্ততঃ একটা নোট বই হাতে তুলে নিই। তাতে কিছু অক্ষর,<br />কিছু শব্দ, কিছু লাইন লিখা ছিল বিভিন্ন পাতায়। অর্থ খুঁজিঃ</p>
<br /><p>-স। এমন স দিয়ে কি সত্যের খোঁজে সাহসী হতে চেয়েছিল?<br />নিশ্চই তাতে হয়ত স্বার্থপরতা ছিল না বিন্দু মাত্র। তেমন <br />হলে কি এত কবিতা গল্পের বই শোভা পায় কোন পড়ার ঘরে? <br />ভাবি তাহলে কি কোন সলতে জীবন নিয়ে ছিল সকাল বিকাল <br />ভয়ংকর হতাসা! </p>
<br /><p>-ভ। ভ মানেই তো এমন নয় যে ভালোবাসাই শুধু হবে। কি <br />ভয়ে কাটত জীবন? ভয়ংকর সে যন্ত্রণা! হয়ত কখনও কাউকে <br />ভালোবেসে বলতেই পারেনি পরকীয়ার সামাজিক অনুশাসনে।<br />হায়রে সমাজ, বিবাহিতদের যেন আর কাউকে ভালোবাসার <br />কোন ধিকারই নেই! সে যেন সংসারের গন্ডিতে বাঁধা <br />কোন এক ছাপোষা কলুর জীব! </p>
<br /><p>-একদিন মাকে... কি লিখতে চেয়েছিল মাকে নিয়ে? মাকে কে না <br />ভালোবাসে। তার পরও মায়ের সাথে মান অভিমান করে মাকে<br />কষ্ট দেয়নি কোন দিনও এমন ইনসান পাওয়া একেবারেই কঠিন!<br />আমারও মনে পড়ে মাকে নিয়ে মনমালিন্যের কথা। এখন কত<br />কাঁদি, কত কষ্ট পাই আর নিজের প্রতি নিজেকে ঘৃণা করি। তাতে <br />কি আর মা ফিরে আসবে? তাই মষ্ট আর লাঘব হওয়ার নয়,<br />আফসোস্! বেঁচে থাকতে মাকে কেন আরও ভালোবাসতে পারিনি? </p>
<br /><p>-দেশ, বাংলাদেশ। জানা হয়নি ভদ্রলোক মুক্তি যোদ্ধা ছিল কিনা।<br />আর মুক্তি যোদ্ধা না হলেই বা কি? দেশকে ভালোবাসার <br />অধিকার যেন মুক্তি যোদ্ধাদের, আর কারও নয়। দেশ, মুক্তি যুদ্ধ,<br />স্বাধীনতা, পতাকা যেন আর এস দাগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।<br />আর কেউ জানবে না। তাহলে নতুন প্রজন্মের দেশ প্রেম কোথা<br />থেকে জন্ম নেবে, কোথা থেকে শিখবে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার<br />জন্য রক্ত দান! </p>
<br /><p>-আমি তাই সেই মৃ ব্যক্তির জন্য নীরবে কিছুক্ষন বসে ভাবি, ভাবি<br />তাঁর বিদেহী আত্মার কথা, ভাবি তাঁর ফেলে যাওয়া কর্ম, স্বপ্ন, চাওয়া,<br />পাওয়া নাপাওয়া আর সুখ দুঃখের কথা। আর এমন ভাবনা হয় <br />এ জন্যই যে আমিও একদিন গত হব। আমার জন্য “ইন্নালিল্লাহিওয়া<br />ইন্নাইলাইহি রাজেউন” পড়ার মতও কেউ থাকবে কিনা। জানি না <br />আমার মৃত্যুতে ক’জন ফেলবে চোখের জল। অথবা আমার ব্যাবহৃত<br />পরিচ্ছদ, চশমা, বই, খতা, ডায়েরী নিয়ে ভাববে। ভাবলেও তারা কতজন <br />যারা আমার দোষ গুলোকে বড় করে না দেখে আমার গুনের জন্য<br />স্রস্টার কাছে বলবেঃ বড্ড ভালো লোক ছিল। <br /> </p>
<br /><p>০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/poth-cheye-thaki/পথ চেয়ে থাকি2020-09-05T11:27:08-04:002023-06-25T18:59:04-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>নিজের মত আকাশ থেকে যায় কি পাড়া<br />মেঘ বালিকার খন্ড মেঘের আকাশ, <br />ইচ্ছে হলেই কি আর রোদ মাখা যায় গায়ে<br />মেঘে ঢাকা সূর্য যদি না হয় প্রকাশ।</p>
<br /><p>যতই ভাবি সন্ধ্যাকাশে নীড়ে ফেরা পাখির মত<br />উড়ে গিয়ে পাব বুঝি আপন ঘর,<br />ডানা ভাঙা পাখির মত ঘর না পেয়ে দিশেহারা <br />কাঁদছি আজও বৃষ্টি হয়ে ঝরঝর।</p>
<br /><p>চাইলেই কি আর চাঁদকে এনে জোছনায় ভরা<br />চাঁদনী রাতে স্নান করা যায় বারোমাস? <br />অমাবশ্যার মতই কত গল্প থাকে কান্না থাকে<br />আলেয়ার পিছে জীবন হচ্ছে সর্বনাশ।</p>
<br /><p>ইচ্ছে তো হয় ছোট বেলার দিন গুলোয় হারাতে <br />সেই এক্কা-দুক্কা খেলা আর কানামাছি,<br />বাবার আঙুল ধরে ঘুরতে ঈদ পাবনের মেলায়<br />আঁচার খেতে মাকে ধরে কাঁদি মিছামিছি।</p>
<br /><p>মন অনেক করে চাইলেও কি আর ফেরা যায় <br />তাইত স্বপ্নরা থাকে নির্জীব পাশ ফিরে,<br />এ পাশে আমি একা যতই জাগি বিনিদ্রিত রাত্রি<br />তবু ইচ্ছেকরা কষ্টরা থাকে সময় ঘিরে। <br /> <br />০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/hridoy-jure-paowa/হৃদয় জুড়ে পাওয়া2020-09-03T06:34:13-04:002023-06-27T12:55:40-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>সময় মত অনেক চাওয়ার একটু কিছু পাওয়া <br />হয় যদি সে হৃদয় দিয়ে পাওয়া, <br />অসময়ে অনেক বেশী পাওয়ার চেয়েও সে যে<br />অমূল্য ধন হয়নি সময় ধাওয়া। </p>
<br /><p>স্বপ্ন দেখে ঘুমিয়ে থাকার চেয়ে অনেক ভালো <br />স্বপ্নহীনা অনুভূত একটি দিনের সুখ,<br />সারা জীবন কাছে পেয়েও কি লাভ হবে বল<br />বানে ভাঙা পাড়ের মত ভাঙে যদি বুক। </p>
<br /><p>অনেক কথা বলার চেয়ে কথা হারা ঠোঁট যদি <br />ভালোবাসার জন্য হয় একটি কথা,<br />তাতেই যেন মুখ না খোলার একটি মানেই ভাসে <br />চোখের পাতায় শিক্ত চুমের কবিতা। </p>
<br /><p>বাঁচতে যদি ইচ্ছে হয় অনেক শত হাজার বছর <br />সকল পাওয়া উজাড় করে,<br />বুঝে নিও সেথায় তোমার আসল প্রেমের মানে <br />আছে সকল হৃদয় জুড়ে। </p>
<br /><p>১ সেপ্টেম্বর, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/nodi-o-narir-golpo/নদী ও নারীর গল্প2020-08-31T11:00:22-04:002023-06-25T18:51:33-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>আজ একটা কুমারী নারীর কথা বলব,<br />আজ একটা কুমারী নদীর কথা বলব।</p>
<br /><p>একটা কুমারী নদী চিনি যখন দেখি তার বুকে<br />যৌবনের আদুরী ঢেউ ছলাত ছলাত করে, ভরা বর্ষার<br />পানিতে উন্মত্ত প্রবল স্রোতে পাড় ভাংগে, উজাড় করে শস্য ক্ষেত,<br />গাছ-গুছালী। গ্রাস করে পাড়ে সাজানো সংসার, সখের<br />নারিকেল আম পেয়ার কাঁঠাল গাছ আর বসত ভিটা।</p>
<br /><p>তবুও ভালো লাগে তাকে, ভালো লাগে তার বুকে<br />পাল তোলা নৌকা, ভালো লাগে ওপারে সকালের সূর্য ওঠা<br />আর এপারে ডুবে যাওয়া সূর্যের আলোয়<br />আশা হতাশায় যে রঙ দোল খায় তাতে চোখ মেলে দিয়ে<br />ভাবতে। আমি ভাবি তখন কোন এক কুমারী নারীর কথা।</p>
<br /><p>আজ একটা কুমারী নারীর কথা বলব,<br />আজ একটা কুমারী নদীর কথা বলব।</p>
<br /><p>কুমারী নদীর পাড় ভাঙা উচ্ছ্বলতায়<br />সর্বস্ব হারিয়েও কুমারী নারী আজীবন ভালোবাসে নদীকে।<br />অথচ যদিও সে জানে<br />তার যৌবন হারিয়ে গেলে আর তাকে কেউ<br />ভালোবাসবে না নদীর মত, কাছে আসবে না<br />ভালোবাসার গল্প শোনাতে। ভালোবাসার মানুষেরা<br />দূর থেকে শুধু শুন্য দৃষ্টি দিয়ে তাকাবে আর<br />হাওয়ায় ভাসাবে দীর্ঘশ্বাস।</p>
<br /><p>কিন্তু এই যে এত হিংস্রতা, এত উন্মত্ততার ভাঙন,<br />কুমারী নারী ভাবে তবুও সে এত ভালোবাসে কেন নদীকে?<br />কুমারী নারী অস্ত আকাশে চোখ রেখে ভাবে, তার যৌবন এমনই এক পানিতে গড়া বাঁধন যা ভেঙে গেলে,<br />হারিয়ে গেলে আর ফিরে আসে না। কিন্তু অনেক হারানোর<br />কান্না আর কানাকানিতেও নদীর কিছুই হারায় না, যায়ও আসে না।<br />বরং পাড়ে শস্য ক্ষেত আবার হয় সবুজ, আবার দোল খায় পাড়ের হাওয়ায় নব জীবনের<br /> উত্থান,<br />ফি-বর্ষায় আবার হয়ে উঠে সে ভরা যৌবনা।</p>
<br /><p>আজ একটা কুমারী নারীর কথা বলব,<br />আজ একটা কুমারী নদীর কথা বলব।</p>
<br /><p>কুমারী নদী তাই চিরকাল কুমারীই থেকে যায়,<br />তার যৌবন হারিয়েও কখনও হারায় না। আর এক<br />কুমারী নারী তার যৌবন হারিয়ে নদীর পানে চেয়ে<br />বলেঃ বিধাতা আমাকে নারী না বানিয়ে, যৌবনের ভাষা<br />না শিখিয়ে নদী বানালে না কেন?</p>
<br /><p>৩১ আগষ্ট, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/premey-aral-kora-golpo/প্রেমে আড়াল করা গল্প2020-08-24T07:41:43-04:002023-06-25T18:59:10-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>একটা প্রেম কি থেমে যায়? <br />হাঁ কখনও কখনও তো থেমে যায়। <br />তারপর সেখানে অবশিষ্ট যা থাকে <br />তা ভালোবাসা, নয়ত ঘৃণা!</p>
<br /><p>তখন কথারা থেমে যায়, <br />গল্প থেমে যায়, শিহরণ থেমে যায়,<br />শুধু জন্ম নেয় অবিশ্বাস, জন্ম নেয় বিরহের ভাষা <br />আর মৃত্যুর কাছে দেনা।</p>
<br /><p>তাইত বলি- ভেবো না যেন প্রেম করে <br />তুমি আজীবন গিয়েছ জিতে,<br />এমনও হতে পারে কিছুই পেলে না তুমি <br />এমন কি- যে সম্মানটুকু পায় মৃতে।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/ghumer-saltamami/ঘুমের সালতামামি 2020-08-23T07:52:59-04:002023-06-25T18:50:46-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>ঘুম আসবে কি করে বল, অথচ ঘুমটাও ভীষণ প্রয়োজন।<br />আশেপাশে কত কি ঘটছে। সিনহা হত্যা আর সিনাই পাহাড়ে <br />বরফ গলা অথবা ছিন্ন পাতায় আলগা বাতাসের শিহরণ আর <br />শিপ্রা বয়সীদের বালখিল্যতা নাকি সমাজে হাওয়া বদলের <br />ডিজিটাল জীবন চিত্র! এ সব ভাবতে ভাবতে ঘুম আসছে না।<br />নাকি আমিই ঘুমাচ্ছি না? </p>
<br /><p>সেটাই যে ঠিক তা বলি কি করে। আসলে নিজের জীবনেও তো <br />কত কি হত্যা করছি প্রতিনিয়ত। অথবা হত্যা হতে দেখছি।<br />এই যে আজ বয়সটা বেড়ে গেল দেখে উদোম মাঠে চিত হয়ে<br />শুয়ে থেকে রাতের আকাশে চাঁদ তারাদের সাথে কথা বলব;<br />সেটা হচ্ছে না। তাই ইচ্ছেটাকে হত্যা করতে হল। </p>
<br /><p>প্রান খুলে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেব, একটা প্রজাপতির সাথে <br />উড়তে উড়তে গাছের সাথে, ফুলের সাথে, কাঁটার সাথে, বাকলের<br />সাথে কথা বলব; বলা হচ্ছে না। মাথায় কতগুলো অসম্পূর্ণ<br />অথবা অঘটনের সালতামামি এমন হারামী যন্ত্রনায় দগ্ধ করছে<br />আর প্রতিনিয়ত হত্যা করছে মনের ইচ্ছা আর স্বপ্নগুলোকে। <br />তাতে ঘুমাব কি করে? </p>
<br /><p>এই ধরঃ<br />-বউটা বাতের ব্যাথায় কোঁকাচ্ছে, হাত-পা আড়ষ্ঠতায়<br />বিছানাগত প্রায়। ফলে বাসার জানালায় দেয়ালে ঝুল<br />পড়েছে, টয়লেটের টাইলসে আইরন পানির রঙ ধরেছে,<br />-বড় মেয়েটার চাকুরী থেকেও নেই, ঘটা করে বিয়েও<br />দিয়েছিলাম একটা, জামাই ভাল না তাই ছাড়াছাড়ি।<br />এখনকার ছেলেমেয়েদের বিয়ের সম্পর্ক নিয়ে এই এক<br />কেমন যেন চারিদিকে হত্যার হোলি খেলা চলছে। <br />মাঝে পিষ্ট হচ্ছে বাবাদের প্রয়োজনীয় ঘুম!<br />-ছোট মেয়েটার পড়া শেষ হতে চায় না। তাতেই আবার <br />বাধ সেধেসেছে মহামারী করোনা। ডিজিটাল স্ক্রীনে <br />পড়াশোনায় বসে সমাজের অসংগতিতে নিজের প্রকৃত <br />সত্তার আর নৈতিকতার হত্যা হচ্ছে কতটূকু প্রতিদিন <br />কে জানে। দেখি তো কত অসভ্য তথ্য আর ছবি ভেসে<br />বেড়ায় ডিজিটাল জীবনে।<br />-আর ছোট ছেলেটা কবি হতে চায়। মা বলে মরার কপাল!<br />এক কবি নিয়ে জীবন জ্বলেপুড়ে ছারখার হল, ছেলে<br />বলে কি? তুমি ডাক্তার হবে। বাবা হয়ে মনের চাওয়াটা<br />হত্যা করে বলিঃ তুই ইঞ্জিনীয়ার হবি। অথচ মন তো<br />বলে ছেলে কবি হোক, বাবার মত কবিতা লেখুক! <br />-শুভাকাংখি হয়ে কোন বন্ধু কথা বলতে চায় না। আমার<br />মত মুখফুটে না বললেও তার ঘরেও যে কোন না কোন<br />হত্যার ঘটনা ঘটেই চলেছে। ঘুম তারও নেই। কিন্তু সত্যটা<br />বলে না। আসলে বলতে চায় না। বলে কি লাভ। সব ভুল<br />ব্যাখ্যায় ভরা। একটা মেয়ে সমব্যথী হয়ে মেশে বন্ধুর মত।<br />অথচ বলা হল সে পরকীয়া করে। এই শব্দ ছাড়া প্লেটনিক<br />ভালোবাসায় কি মরমিয়া বন্ধু থাকতে পারে না? </p>
<br /><p>তাই আর ইচ্ছে করে না জানতে প্রদীপ গংয়েরা আজ কতগূলো নীরিহ<br />প্রান হত্যা করল ক্রস ফায়ারের ধোঁয়া তুলে, ইচ্ছে করে না পড়তে কতগুলো<br />নারী আজ ধর্ষিত হল, শুনতে ইচ্ছে করে না আজ কোভিড-১৯ এর <br />করোনা ভাইরাস হত্যা করল কতগুলো নারী-পুরুষ, জানতেও চাই না কতগুলো <br />মামলা আজ নিরপেক্ষতার জন্য ন্যায়বিচারের অভাবে খুন হল, কতগুলো চোখ<br />কষ্টের কান্নায় ভেসে নদী হল? কারন নিজেই যে প্রতিনিয়ত খুন হয়ে <br />যাচ্ছি, আর হত্যা করছি অনেক সাধ, আহ্লাদ, স্বপ্ন আর চাওয়া। তাই<br />ঘুম নেই চোখে। </p>
<br /><p> <br />২৩ আগষ্ট, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/jeno-ek-vinno-prithibir-manush/যেন এক ভিন্ন পৃথিবীর মানুষ 2020-08-11T10:48:40-04:002023-06-25T18:50:59-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>জুতো খুলে স্পঞ্জের স্যান্ডেল পরি। অফিসের লেবাস খুলে <br />ভাবি মাগরিবের ওয়াক্ত, এই মাত্র মাইকে আযান হল, নামাজ <br />পড়তে হবে। মাস্ক খুলতে খুলতে ভাবি আমি এখন যেন ভিন্ন <br />এক পৃথিবীর মানুষ। আরাম নয়, তবুও নামাজটাই কেন জানি <br />আজকাল ভালো লাগছে, আবার ভালোও লাগছে না! </p>
<br /><p>ওজুর পানি গড়িয়ে যায়, ট্যাপের পানি ঝরে যায়, আযান শেষ<br />হয়ে নামাজের ওয়াক্ত যায় যায় প্রায়। দেখি জানালায় সন্ধ্যা আলো<br />কেমন ম্লান হয়ে আছে। জানালার কপাট খোলা। কি জানি<br />কতগুলো মশা আজ সহজেই অবস্থান নিল সন্ধ্যা ঘরে। </p>
<br /><p>আমি তো এখন এক ভিন্ন পৃথিবীর মানুষ। আমাকে এখন হয়ত <br />প্রতিদিনের সকাল চোখ মেলে দেখে, দুপুর চোখ মেলে দেখে,<br />এখন সন্ধ্যা দেখছে। সান্ধ্য চড়ুুই আর বুলবুলিটাও উঁকি দিয়ে <br />গেছে। কি ভাবে ওরা আমাকে নিয়ে ইদানিং? ওরা কি মনে <br />রেখেছে আমার আরাধনার শহর, বিগত প্রাত্যহিক জীবন? </p>
<br /><p>সেদিন দেখি একটা সকাল, একটা দুপুর কেমন থমকে দাঁড়িয়ে <br />আছে। আজ যেমন সন্ধ্যাটা। সন্ধ্যার নামাজ আদায় হয়। রাতেরটাও। <br />কিন্তু সকালের নামাজ কাজা হয়। দুপুরের নামাজে কেমন চার <br />রাকায়াত সুন্নত কম পড়ি। আমাকে কেউ ক্ষমা করবে না। তবে<br />বিশ্বাস সৃষ্টিকর্তা ক্ষমা করবেনই। আর আসর? সে তো মনে আছর <br />করেই থাকে সময়ের আলিংগনে ভিন্ন পৃথিবীর সত্তাতেও। </p>
<br /><p>আজকাল এই ভিন্ন পৃথিবীতেও একটা পরিচিত সংগীত বেজেই চলে। <br />সে সংগীতের কথা দুঃখ নয় প্রেম নির্ভর, সে সংগীতের লয় খেমটা নয় <br />মিষ্টি ঢীমা, সে সংগীত উগ্র নয় শান্ত। কোথায় যেন একটা টানাটানি<br />কানাকানি চলে মন আর মননে। অদৃশ্য কেউ পাহারায় রাখে প্রতিদিন। <br />আমি তো এখন এক ভিন্ন পৃথিবীর মানুষ, মাস্ক কি আমায় ফিরিয়ে <br />দিবে বিগত জানাশোনা, প্রেম আর প্রনোদনা? </p>
<br /><p>১১ আগষ্ট, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/bewarish-shopner-prem/বেওয়ারিশ স্বপ্নের প্রেম2020-08-10T13:07:54-04:002023-06-25T18:50:21-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>তোমার দু’চোখের পাতায় দেখি যে কুয়াসা মেঘ <br />তাতে জেগে থাকে মেঘনাদবোধ কাব্যের দেবত্ব, <br />চোখ মেললেই যে রোদ্দুর ঢোকে তাতে হুড়মুড়িয়ে<br />সে আলোয় আমার জন্য থাকে কি প্রেমের মহত্ব? </p>
<br /><p>আমি জল পেতে ছুটে গেছি তাংগন নদীটির কাছে<br />যার বালু চরে চাঁদ হেঁটেছিল একদিন আমাদের সাথে,<br />মোহনায় ঊঁকি দিয়েছিল কিনা সেদিন আর্দ্র অমাবশ্যা<br />শুধু মনে আছে চখাচখির মত ছিলে এ উন্মুক্ত কাঁধে। </p>
<br /><p>রাতেরও একটা অব্যাক্ত কষ্ট থাকে অন্ধকারের বুকে <br />সে কষ্টের সুর কি তোলে ঝিঁঝিঁ পোকা আহত কন্ঠে, <br />পেঁচা ডানার ঝাপটানো বাতাস মলয়া সংগীতে বসে<br />তোমার প্রার্থনায় উপেক্ষিত স্বর্গীয় প্রেম কি ভূলুন্ঠে?</p>
<br /><p>এখন কুয়াসা চাই না সুদূর পথ চাওয়া অনাহারী চোখে<br />বরষা হোয়ে ঝরুক সাগর কান্না বেঢপ চাতাল বক্ষে,<br />যেখানে কত বেওয়ারিশ স্বপ্নরা চিতকাত হোয়ে থাকত<br />একদিন পথ এসে মিলবে বলে বহু লক্ষ্যে অলক্ষ্যে।</p>
<br /><p>১০ আগষ্ট, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/bondho-prithibi/বন্ধ পৃথিবী 2020-07-22T07:00:51-04:002023-06-25T18:50:27-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>ঘর, মদের বার বন্ধ। পতিতালয়, পান্থশালার বন্ধু আড্ডা বন্ধ। <br />আমার পুরো পৃথিবীটাই আজ বন্ধ, সব কিছুই নিষিদ্ধ। </p>
<br /><p>থমকে গেছে সুখের ভাবনা, জীবনের গতি।<br />আমার কষ্ট কান্না দেখে অলক্ষ্যে কাঁদে বনলতাসেন, কাঁদে পার্বতী।</p>
<br /><p>বন্ধ ঘর, বন্ধ ট্যারেস। ঝোলা বারান্দা, খোলা জানালায় বন্ধ দিনের আলো।<br />আমার পৃথিবীটাই আজ বন্ধ, সব কিছুই এলোমেলো।</p>
<br /><p>পর্দ্দা সরিয়ে দেখি প্রকৃতিও বড্ড ব্যাকুল।<br />আমার বিষন্ন কবিতা মন দেখে নিভৃতে উদ্বিগ্ন <br />রবীন্দ্রনাথ, কাজী নজরুল।</p>
<br /><p>২৯ মার্চ, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/je-poth-meshey-tomar-pothey/যে পথ মেশে তোমার পথে2020-07-20T11:32:55-04:002023-06-25T18:50:54-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>তোমার আংগিনায় বৃষ্টি হয়ে ঝরব বলেই <br />মেঘ হয়েছিলাম আমি তোমার আকাশে, <br />চাইনি কাঞ্চঞ্জংঘার বিগড়ানো আলগা ঢল<br />তোমার সাজানো ঘর ভাংগুক ধেয়ে এসে।</p>
<br /><p>তোমার সাগরের ঊর্মিমালায় মিলব বলেই<br />ঝর্ণার জল হয়ে মিশেছি তোমার নদীতে,<br />চাইনি দু’কূল ভাসিয়ে বিরান হোক ফসল <br />ক্ষত বিক্ষত উঠোনে, যা ছিল না আদিতে।</p>
<br /><p>তোমার আকাশে জোছনা হয়ে ঝরব বলেই <br />পূর্নিমা হয়ে দেখা দিয়েছিলাম শুক্লা পক্ষে,<br />চাইনি অমাবশ্যায় ডুবে থাকুক তোমার স্বপ্ন<br />হারিয়ে যাক ভালোবাসা সকল সুখ অলক্ষ্যে।</p>
<br /><p>তোমার চলার পথে বিশ্বস্ত সাথী হব বলেই<br />কত পথ ঘাট পেরিয়ে এসেছি তোমার দ্বারে,<br />চাইনি দু’জনার পথ দুটি দিকে যাক বেঁকে<br />চলা শেষে চরন যেন তোমার কাছেই ফিরে। <br /> <br /> ২০ জুলাই, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/endur-chana/ইঁদুর ছানা2020-07-12T10:45:41-04:002023-06-25T18:50:43-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>ইঁদুর ছানা, ও দুষ্টু ইঁদুর ছানা <br />লুকাও কেন ঐ মুখ খানা <br />এত লজ্জা কেন তুমি পাও?<br />বিড়াল মামা আদর করে<br />তোমায় এবার দিল ছেড়ে<br />তুমি যেন দুষ্টুমিটা কমাও। </p>
<br /><p>বই কেটেছ, ব্যাগ কেটেছ<br />মিনি পুতুলের জামা নিয়েছ<br />তবুও আমি ধৈর্য ধরে আছি,<br />বিড়াল মামা তোমায় পেয়ে<br />ভেবেছিল নেবে খেয়ে<br />ছেড়ে দিতে আমিই বলেছি।</p>
<br /><p>পটিয়েছি তাকে আমি এই বলে <br />ভিজবে কেন এত বৃষ্টির জলে<br />ইঁদুর ছানা ধরবে মাথায় ছাতা,<br />হাত-পা টিপবে কোমর টিপবে<br />ডিউটি করবে যেই বাতি নিববে <br />আরও টিপবে হলে মাথা ব্যাথা।</p>
<br /><p>শুনেই আয়েশী বিড়াল মামা <br />ধরে আছে অলসের ধামা <br />ভুলেই গেছে তোমায় বসে খাবে,<br />আমিও চাই না মরার আগে <br />মিনি পুতুলের জামার ভাগে<br />ভাগ বসিয়ে শীতে গরম নেবে। </p>
<br /><p>ইঁদুর ছানা, ও দুষ্টু ইঁদুর ছানা<br />ভুলেছি জামা তা ভেবো না<br />মিনিপুতুল কাঁদছে সেটার জন্য,<br />বিড়াল মামা ঘুমিয়ে গেলে<br />দৌড়ে যাবে খাটের তলে<br />লাল জামাটাই খুঁজবে তন্নতন্ন।</p>
<br /><p>এবার যদি দুষ্টুমিতে দাও ফাঁকি<br />বিড়াল মামাকে আনব ডাকি<br />তোমায় যেন দেয় কঠিন সাজা,<br />নষ্ট করছ জিনিষ কত কেটে <br />রাখবে বেঁধে লেজে গেরো এঁটে<br />বুঝবে তখন কেমন লাগে মজা।</p>
<br /><p>১২ জুলাই, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/shoro-ritur-bangladesh/ষড়ঋতুর বাংলাদেশ2020-07-09T14:35:19-04:002023-06-25T18:59:25-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>কেন গ্রীষ্মকালে পাতার ফাঁকে<br />গাছে ধরে গাব,<br />থাকে কেন কালবৈশাখীর<br />ঝড়ের আবির্ভাব। </p>
<br /><p>কেন বর্ষাকালেই কোলা ব্যাং<br />করে ঘ্যাঁ- ঘুঁ, <br />বসন্ত ছাড়া কোকিল কেন <br />গায় না কুহু কুহু।</p>
<br /><p>কেন শরতকালে বালুচরে<br />ফোটে সাদা কাশ,<br />সাদা মেঘের ভেলায় ভেলায়<br />ভরে নীলাআকাশ</p>
<br /><p>কেন খেজুর গাছে রস হয়<br />শীত কালটা এলে,<br />উষ্ণ হাওয়ায় তাল পেকে যায়<br />ঘোর হেমন্তকালে।</p>
<br /><p>না্না বর্ণের ফুল ফোটে কেন <br />বসন্তকাল এলে <br />পৃথিবীটা কেন ঢলে পড়ে<br />সূর্য্যি মামার কোলে। <br /> <br />মাথায় কত প্রশ্ন ঘোরে<br />পাচ্ছি না তার হেতু,<br />এমন স্বভাব গুনেই মোদের <br />বাংলাদেশের ঋতু। </p>
<br /><p>০৯ জুলাই, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/baba-vhalo-theko-opare/বাবা ভালো থেকো ওপারে2020-07-08T08:05:46-04:002023-06-25T18:50:20-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>বাবারা কেন যে চলে যায়, <br />কেন যে আর দেখা দেয় না। <br />আচ্ছা চলে যাবে যাক। বাবা ডাকটাও কি <br />সাথে করে নিয়ে চলে যেতে হবে। <br />তাহলে কাকে ডাকব বাবা বলে, <br />আব্বা অথবা আব্বু বলে! আব্বা আব্বা, <br />আব্বু আব্বু ও বাবা, বাবা! </p>
<br /><p>কিন্তু চোখের চশমাটা ঠিক রেখে গেছে <br />অথচ চোখ জোড়া রেখে যায়নি। <br />যে চোখের দিকে তাকালে বিশ্বাসের গভীরতায় <br />হারিয়ে যেতাম পরম নির্ভরতায়, <br />লাঠি রেখে গেছে অথচ হাত রেখে যায়নি। <br />যে হাতের মুঠোয় জমা থাকত <br />আমার আগামী সোনালী সকাল। <br />আংটিটা রেখে গেছে অথচ তামাটে <br />সুডৌল আংগুল গুলো রেখে যায়নি। <br />যে আংগুল ধরে আস্থায় নিশ্চিন্তে <br />প্রথম ধাপ ফেলেছিলাম কোমল মাটির বুকে <br />সম্মুখে নতুন পৃথিবী দেখব বলে। <br />খড়ম জোড়া রেখে গেছে অথচ পা রেখে যায়নি। <br />যে বলিষ্ঠ পদক্ষেপে পা বাড়িয়েছি <br />জীবনের অস্তিত্বকে খুঁজে দেখব বলে। </p>
<br /><p>কেন চলে যায় বাবারা এমন করে। <br />চলে যাবে যাক। সাথে করে <br />সব কেন নিয়ে যায় বাবারা! <br />এই যে বাবা বলে , আব্বা বলে, <br />আব্বু বলে ডাকব <br />সে ডাকটাও তুমি নিয়ে চলে গেছো!<br />কি হবে এই বাবাহীন তাঁর চোখের চশমা, <br />হাতের লাঠি, আংগুলের আংটি আর <br />পায়ের খড়ম দিয়ে। এগুলো যে কেবলই <br />গভীর রাতে দীর্ঘ শ্বাস ছড়ায় <br />আর স্মৃতিকে করে অশ্রু শিক্ত।<br />তবুও বাবারা পরম শান্তিতে <br />ভালো থাকুক ওপারে।</p>
<br /><p>২৩ জুন, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/moynar-baper-bari/ময়নার বাপের বাড়ি2020-07-06T08:58:55-04:002023-06-25T18:51:27-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>সড়ক পরিবহনের চৌড়া রাস্তার শেষ <br />মাথায় উঁকি দেয়া পাথার পরিবেশ <br />এখন বরষার জলে টঁইটম্বুর, <br />ময়নার বাপের বাড়ি অনেক দূর <br />কিছুটা পথ নৌকায় যাওয়া যায় আর <br />বাকিটা পথ কাঁচা পাকা অসহনীয় ভংগুর। </p>
<br /><p>খগেন মাঝির আশ্বাস পেয়ে উচাটন ময়না <br />বাড়তি পটলা বাঁধে যাবে বন্যার ওপারে, <br />হোকনা নৌকা কিংবা ভংগুর পথ,খাবে থেকনা <br />তবুও তো কাছে পাবে ভাই বোন মা আর বাবারে। </p>
<br /><p>বিয়ের আগে একটুও বুঝেনি আহ্লাদী ময়না <br />কষ্টের হোক তবু কেন বাপের বাড়ির এত কদর, <br />শ্বশুর শ্বাশুড়ি তো ‘মা’ ছাড়া কথাই কয় না <br />তবুও কেন ভেতরে ভেতরে অভাব হয় মায়ের আদর। </p>
<br /><p>মনে পড়ে ছেলেবেলায় একত্রে বেড়ে উঠা <br />খেলার সাথিদের কথা রাত্রির কোন অবসরে, <br />স্মৃতির ক্যানভাসে ফুটে গ্রামীন সুখের টেরেকোটা <br />এক্কা-দোক্কা, কানামাছি, গোল্লাছুট কাছে আসে সরে। </p>
<br /><p>শৈশবে পুতুল নিয়ে পুতুলের বিয়ে ভেঙ্গে গেলে পর <br />অচেনা অবুঝ কান্নায় ভাসত ময়নার চোখের কোন্ , <br />নিজের বিয়েতে বাপের বাড়ি ছেড়ে আজ কতটা বছর <br />বাবা মা’র জন্য কান্নায় তার ভাসছিল কি অবুঝ মন? </p>
<br /><p>বন্যায় তড়পানো জলের মতই দুই চোখের ভাসা জলে <br />ডুবে গেছে বুকের নম্র আলগা অনুভূতির জমিন, <br />এবারে বন্যার উতলা জল যখন বাড়ির পায়ের তলে <br />তখন স্বপ্ন যেন হোয়ে উঠেছে আরও গন্ড গ্রামীন। </p>
<br /><p>কি এক উত্তেজনায় সারা রাত চোখে ছিল না তার ঘুম <br />বাঁধা টোপলা সে খুলেছে আবার বেঁধেছে যে কতবার, <br />সারা শরীর ও মনে লেগেছিল যেন আনন্দের অথৈ ধুম <br />জানালায় চেয়ে থেকেছে অপলক কখন কাটছে আঁধার। </p>
<br /><p>“কই গো ময়না- বেলা ফরসা হল” বলে খগেন মাঝি <br />আঙ্গিনায় দাঁড়িয়ে ডাক দিয়েছে যেই নিচু স্বরে একবার, <br />অমনি ময়না গুছানো টপলা বুকে চেপে মরি কি বাঁচি <br />উর্ধশ্বাসে আটপৌরে ঘোমটা মাথায়- হয়েছে ঘরের বার। </p>
<br /><p>দুয়ারে লাগা পানশি নৌকার গলুই মাড়িয়ে খলপার ছৈ <br />এর ভেতরে বসতে বসতে ভুলেই গেছে সে জানে না সাঁতার, <br />ভুলে গেছে সকালে বিদায় জানাবে সুয়ামি আর একমাত্র সই <br />যার কাছে জেনেছে কেন ভাল লাগে সুয়ামি আর রাত্রির আঁধার। </p>
<br /><p>কে জানত মনের কোনে উঁকি দেয়া সর্বনেশে ভাবনা <br />বন্যার উথাল পানির মধ্য পাথারে ঘটাবে এমন বিপদ <br />জলে ডুবে মুহুর্তে লাশ হোয়ে ফিরবে আদুরে ময়না <br />আজীবন বন্ধ হোয়ে যাবে বাপের বাড়ির বহুদূর পথ। </p>
<br /><p>একদিন হয়ত এ পাথার চিরে মিলবে বহুদূরে ময়নার বাড়ি <br />নির্মানাধীন সড়ক পরিবহনের চৌড়া রাস্তার বাকী কাজ, <br />পিচঢালা পথে ছুটবে কত পরিবহনের রঙ্গিন ছোট-বড় গাড়ি <br />তার চাকার ঘর্ষণে ভাসবে ময়নার আহাজারি আওয়াজ। </p>
<br /><p>হায় বাপের বাড়ির বহুদূর পথ কেন যে তাতে এত উত্তেজনা <br />কেন যে বাঁধ সাধে না কোন বাধা কোন দুঃসহ যন্ত্রনার প্রহর, <br />তাই বলে ভুলবে কেন-নিজে সাঁতার জানে না সোহাগী ময়না <br />এ যেন জীবন দিয়ে বলা কথা- সব উত্তেজনাই বড্ড হানিকর।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/vhalobasay-hoy-na-kono-maf/ভালোবাসায় হয় না কোন মাফ 2020-07-05T10:32:09-04:002023-06-25T18:59:45-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>শত শহস্র দয়া দাক্ষিন্যের ভালোবাসার চেয়ে <br />তবুও ভালো যদি নিমিষেই ভেসে যাই তোমার <br />অবজ্ঞার ভাবনায়- নিজেকে বঞ্চনায় মুড়ে,<br />তবুও সেই ভালোবাসা চাই না, যেখানে কেবল <br />মনে হয় ভালোবাসায় প্রতিক্ষিত কাব্য শরীর <br />কংক্রিটে তৈরী- ঝলসায় না আগুনে পুড়ে।</p>
<br /><p>চোখে জল অথচ অভিমানের মনটায় খিল <br />অবাঞ্চিত কোন বাস্তবতার দেনা পাওনায়<br />আবেগ যদি থমকে থাকে আকাশসম স্বপ্নে, <br />তবে চাই না প্রেম, যেখানে অভিমান নেই, <br />ভুল বুঝাবুঝির পরে সমঝোতার ভীত নেই, <br />কাছাকাছি আসা প্রতিক্ষিত অভিসার লগ্নে।</p>
<br /><p>কাছে এসেও যদি দূরে থাকার মত মনে হয়, <br />মনে হয় প্রতিক্ষিত এ ভালোবাসায় ভবিষ্যত <br />বলে আছে শুধু বিস্তর শুন্যতা আর উপেক্ষা, <br />তাহলে একে কি বলা যায় প্রেম ভালোবাসা?<br />এর চেয়ে ঘৃণাটা অলক্ষ্যে অজান্তে না পেয়ে <br />সরাসরি পেলে, মনে হবেনা এ অজানা ভিক্ষা।</p>
<br /><p>এমন অনেক অবজ্ঞা দুঃখ আর বেদনা নিয়ে<br />আমি না হয় দূর থেকেই তোমাকে আজীবন<br />ভালোবেসে যাব, তবুও দেবো না বিন্দু অভিশাপ,<br />হয়ত কোনদিন চোখের আড়াল হব, যতই বল<br />কখনও হব না মনের আড়াল, বঞ্চনার মৃত্যু সুধায় <br />এতোটুকু জেনো ভালোবাসায় হয় না কোন মাফ। <br /> <br />০৫ জুলাই, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/onuccharito-prem/অনুচ্চারিত প্রেম2020-07-04T03:42:25-04:002023-06-25T18:51:44-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>আজ একটা প্লট মনে পড়তেই ভাবছি আর ভাবছি। <br />আসলে প্লট ছাড়া যেমন ইমারত নির্মান হয় না, <br />তেমনই প্লট ছাড়া সাহিত্যও সৃষ্টি হয় না। এমনই <br />এক পুরাতন অথচ অত্যন্ত সংবেদনশীল  প্লট<br /> 'ভালোবাসা' নিয়ে সারাটা বিকেল কেটে গেল। <br />'ভালোবাসি' তামাম পৃথিবীর সর্বাধিক উচ্চারিত শব্দ। <br />এ শব্দটাও কাউকে ভালোবেসে বার বার উচ্চারণ করলে <br />এক সময় সেটাও যেন আর শুনতে ভালো লাগে না।</p>
<br /><p>তাইত স্রস্টার ধ্যনের বাণীও কখনও সরব কখনও<br /> নীরব এবং নিভৃত। আর বলতে গেলে নিভৃতের<br /> প্রেমই বরং বেশী গভীর এবং শব্দদুষণহীন অলক্ষ্যে <br />একাগ্র দ্যোতনার। তাইত আশেকী মানবকূল নির্জনের <br />ধ্যানে নীরব অশ্রু ফেলে ভালোবাসার, <br />কষ্টের কিংবা কামনার।</p>
<br /><p>যেমন শিশির নীরবে ঝরতেই যেন সে রাতকেই <br />নেয় বেছে, শিউলিও কোমল ভালোবাসায় নিজেকে <br />উজাড় করবে বলেই রাতের নীরবতাকেই সে বেশী <br />ভালোবাসে এবং নিঃশব্দে ঝরে পড়ে। ঝরে পড়তে <br />পড়তে সে বলে যায় এ এক নিভৃত অনুভবের <br />বিহবলতা তার। কারন কিছু কিছু শব্দ আর সম্পর্ককে <br />বার বার বলা থেকে বরং অনুভবে বুঝে নিয়েই <br />গোপনে ভালোবাসতে হয় যত্ন করে।</p>
<br /><p>পক্ষান্তরে আষাঢ়ীয় বৃষ্টি ধারা বর্ষিত হয় সরবেই। <br />ফোটে কদম ফুল। সহসা ঝরেও পড়ে না সে। <br />কিন্তু তার ভালোবাসা কি কোমল? তার উলের শরীর <br />বলে দেয় কেমন গা ঝম ঝম করা করোনাসম! <br />দিন রাত কিছুই মানে না সে। আদর করা বৃষ্টির <br />গান যায় থেমে। অভিমান আর ভালোবাসায় <br />না ভেংগে খান খান হতে চায় হিংস্রতায়, <br />আর তার আবেগ হয় বজ্রসম আঘাত!</p>
<br /><p>তাই ভালোবাসার শব্দ অনুক্ষন উচ্চারিত না হয়ে <br />বরং নিভৃতের অনুভবেই উচ্চারিত শব্দ হয়ত <br />বেশী আপন করে রাখে সম্পর্ককে আজীবন। <br />যেখানে নিরাকার প্রেমিক স্রস্টাও থাকেন <br />স্বস্তিতে ভালোবাসার নির্ভারতায়। </p>
<br /><p>০৩ জুলাই, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/choley-zabo-bohu-durey/চলে যাব বহু দূরে2020-07-01T06:28:57-04:002023-06-25T18:50:33-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>অমাবশ্যায় চাঁদ হারিয়ে গেলেও শুক্লাপক্ষে <br />আবার এক চিলতে চাঁদ হাসে পিশ্চিমে,<br />সাগরের ছন্দায়িত ঢেউ দূরে সরে গেলেও <br />আবার তা কূলে ফিরে হোক সে ছন্দ ঢিমে। </p>
<br /><p>শীত কালে ঘন কালো মেঘ যায়না দেখা<br />ঊর্ধাকাশের কুয়াসা মেঘ হয় তখন শিশির,<br />বর্ষায় বাহারী কদম ফুটুক আর না ফুটুক <br />বৃষ্টি ঝরবেই হয় ঝর ঝর নয় ঝির ঝির।</p>
<br /><p>দিনের আলোয় সব তারা হারিয়ে গেলেও<br />রাতের আকাশে নিয়ম করেই হয় উদয়,<br />যে তারা খসে পড়ে আকাশের বোঁটা থেকে<br />সে হারিয়ে গেলেও তৈরি করে না সংশয়। </p>
<br /><p>আমি এবার হারিয়ে গেলে ফেরার জন্য নয়<br />হয়ত এমন ভাবনাই আমাকে নিচ্ছে বহুদূর,<br />এলাকা কিংবা দেশ ছাড়ার দূরত্ব এটা নয়<br />এ যে চলে যাওয়া নাফেরার দেশ অচিনপুর।</p>
<br /><p>তাইত এলাকায় থাকি অথবা আপন পাড়ায়<br />থাকনা আত্মীয়স্বজন অভিমান ভালোবাসা,<br />মনের দূরুত্বের চেয়ে এ দূরুত্ব নস্টালজিয়ার<br />বাড়ি গাড়ি যা-ই থাক ফিরে পাওয়া দুরাশা।</p>
<br /><p>তাইত এবার সব ছেড়ে যদি চলে যাই বহুদূর<br />তাহলে খসে পড়া তারার মতই হবে এ যাত্রা,<br />তখন আর কোনদিন পাবে না ফিরে আমায়<br />হৃদয়ে যতই বাড়ুক প্রেম ভালোবাসার মাত্রা। </p>
<br /><p>২৮ জুন, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/koronay-kodom/করোনায় কদম2020-06-18T15:19:39-04:002023-06-25T18:51:13-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>করোনা ভাইরাস দেখতে <br />যেন লাগে কদম ফুল,<br />আষাঢ় মাসে কদম ভেবে<br />করো না তাকে ভুল!</p>
<br /><p>আশা এবার জাগছে মনে<br />এলো যখন আষাঢ়, <br />এবার নিশ্চই কদম ছোঁয়ায়<br />করোনা হবে অসাড়। </p>
<br /><p>করো না এবার আষাঢ় জলে<br />খাবে হাবুডুব, <br />কদম ফুলের আঁচড় খেয়ে<br />হবেই এবার কাবু।</p>
<br /><p>কদম ডালের হাওয়ায় এবার<br />বাজবে কালার বাঁশি,<br />লক্ষ কদম কদম নেবে পিছু <br />মরবে এবার করোনা সর্বনাশী! </p>
<br /><p>তাইত বলি ভুল করো না <br />করোনাকে ফুল ভেবে,<br />আর ক'টা দিন নিয়ম মেনে<br />ধ্যানে সবুর করো সবে।<br /> <br />১৫ জুন, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/prem-noy-ondho-kuup/প্রেম নয় অন্ধকূপ2020-06-06T08:10:46-04:002023-06-25T18:59:06-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>শান্ত বিকেল আজ কেমন বড্ড অশান্ত ছিল<br />ঘন কালো জ্যৈষ্ঠ মেঘেদের ছিল না উড়াউড়ি,<br />সান্ধ্য পাখিদের নিড়ে ফেরা আর সূর্য ডোবা <br />দেখতে ভালো লাগলেও ছিল না আজ ঘুরাঘুরি।</p>
<br /><p>বিষন্নতার কথা বলতেও ভালো লাগে না এখন<br />ভালো লাগে না কাছে আছি নাকি অনেক দূরে,<br />কি হবে সেই একই অভিমান, একই অভিযোগ<br />খুঁজি না তাই কি অপেক্ষায় আছে অচিনপুরে।<br />  <br />চলে যেতে চাইলেও টেনে ধরে পেছন সময়<br />কত স্মৃতি, কত গান, ছিল কত মুগ্ধ কবিতা,<br />এখনও মননের গুহায় এক চিলতে রোদশব্দ<br />উঁকিঝুঁকি মারে- বলে যায় সংস্কৃত শুদ্ধ কথা।<br />  <br />প্রকৃত ভালোবাসা কি এতই শিশাসম ঠুনকো<br />অথবা মেঘ গুড়গুড় অশ্রুশুণ্য চোখের রুপ,<br />চাইলেই কি উধাও হওয়া যায় অস্তিত্ব থেকে<br />জীবন যুদ্ধ প্রেমেই গড়া নয়ত কেবল অন্ধকূপ।</p>
<br /><p>তবুও প্রেম স্বাধীনতায় হারাতে চায় ইচ্ছেমত   <br />জানালা গলে সান্ধ্য পাখীদের সাথে চায় উড়তে,<br />প্রেম কি আঁচলে বেঁধে রাখা নিয়ন্ত্রিত গুচ্ছ চাবি<br />ইচ্ছে মত দ্বার খুলবে বা বন্ধ হবে ঘুরতে ঘুরতে!<br /> <br />০৫ জুন, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/bidhan/বিধান2020-06-02T07:14:44-04:002023-06-25T18:50:23-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>আমাকে থমকিয়ে দিতে পারোনি বলে <br />গোটা পৃথিবীটাই তুমি দিলে থমকে,<br />বিদ্যুতের বাজে চমকানো যায়নি বলে<br />কাছে না এসেও দূর থেকে দিলে চমকে! </p>
<br /><p>প্রকৃতির নগ্ন শরীরে ঠোঁট রেখে দগ্ধ হতে<br />এত বাতাস তবু নাক ঢেকেছ নেকাবে,<br />কাছে এলে যে উষ্ণতায় ভাসত এ হৃদয়<br />তাকে দূরে রেখে কতটুকু প্রেম শেখাবে।</p>
<br /><p>এ ভাবে প্রেম তো হবেই দ্রোহের নগ্ন রুপ<br />ভালোবাসব বলে যদি না যায় কথা রাখা,<br />প্রতিক্ষার চেয়ে তখন মৃত্যুকেই লাগে বন্ধু<br />দেহলী পোক্ত আদর দূরুত্বে থাকে অদেখা।</p>
<br /><p>আমাকে সাবধান করতে পারোনি বলে <br />গোটা মানব জাতিকে রাখলে সাবধানে,<br />যে প্রেম জানে সে যে জানে নিষ্ঠুরতাও<br />যুগে যুগে সে কথা জানিয়েছিলে বিধানে।</p>
<br /><p>০১ জুন, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/gontobbo/গন্তব্য2020-05-20T06:44:57-04:002023-06-25T18:50:48-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>এ এক অনিশ্চিত জীবনের পথে হেঁটে চলা।<br />কবে ফিরে আসবে সেই ফেলে আসা চেনা জানা সময়,<br />ঘুরে বেড়ানো আর ঘরে ফেরা পথ। </p>
<br /><p>পথের ঠিকানা নেই তা কি আর মন মানে? আজকাল <br />সব পথেরই ঠিকানা থাকে। কিন্তু এখন যে অনিশ্চিত পথে<br />হাঁটছি হোক সে পথ শংকুল কিংবা বন্ধুর এখন তার হেঁটে <br />যাওয়া পথ আছে বটে কিন্তু ঠিকানাটাই কেবল অজানা। </p>
<br /><p>তাইত অজানা শংকায় এ জীবন অস্থির <br />বড্ড অস্থির আজ। কেননা চোখের সামনে দেখি এক<br />জোড়া বাবুই পাখি, রাস্তার কুকুর অথবা প্রতিদিন সন্ধ্যা<br />হলে যে মেনু বিড়ালটা পাঁচীলের কার্নিশ ধরে হাঁটতে<br />হাঁটতে টয়লেটের ছাদ ধরে উপর উঠে আসে স্বিকারের <br />আশায় তারও একটা ঠিকানা আছে।</p>
<br /><p>অথচ নিজের বাসায় আছি তবুও ঠিকানা নাই,<br />নিজের অফিসে বসে অফিস করছি তবুও ঠিকানা নাই, <br />নিজের পাড়ায় পথ চিনে ঢুকছি তবু ঠিকানা নাই,<br />ভালোবাসার মানুষ কাছে আছে তবু ঠিকানা নাই,<br />সকাল হয়ে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত্রি হোচ্ছে তবু ঠিকানা নাই<br />ঘুম ভেংগে নিজেকে খুঁজে পেয়েও দেখি ঠিকানা নাই।</p>
<br /><p>আর কি ফিরে পাব সেই ফেলে আসা দিন। সেই বৈকালী <br />আড্ডা, গানের ভূবন, কবিতার আসর, তিন’শ ফিটের <br />বউ বাজারে ছোলা-মুড়ি মাখা প্লেট, সাকিবের চার ছক্কার <br />ক্রিকেট স্টেডিয়াম, চীন-মৈত্রির আবাসন মেলা। যেখানে <br />গন্তব্য নেই, ঠিকানা নেই সেখানে আবাসন যে অবসান <br />বয়ে আনছে জীবনের। এ কেমন অনিশ্চিত জীবনের <br />পথে হেঁটে চলা প্রতিদিন! ঠিকানাটা কি আর পাব ফিরে?</p>
<br /><p>২০ মে, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/korobona-ar-reen/করব না আর ঋণ2020-05-10T06:41:29-04:002023-06-25T18:51:13-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>ও করোনা তুমি আর কত কষ্ট দিতে চাও, <br />এবার ক্ষমা করো হে মহামারী বিপদ, <br />আমায় যেতে দাও আমার প্রিয়ার বুকে<br />খরায় আজ শুন্য যে তার প্রেমের নদ।<br /> <br />কি করে বুঝাই বল কষ্ট কত জমল বুকে <br />ভুল বুঝার অবসরে থাকতে গিয়ে একা,<br />এবার একটু দ্বিধা করো দাও ফিরিয়ে প্রেম<br />মুক্তো করো দূরত্বের এই ভ্রান্ত ধোকা!</p>
<br /><p>নির্জনতায় কাঁদছে শহর কাঁদছে চারিপাশ <br />প্রেমের কান্না, ক্ষুধার কান্না, কান্না জানাজায়,<br />এতো কান্না তবু কেন তোমার বিরাম নাই<br />বাঁচাও শহর, বাঁচাও নগর, বাঁচাও অসহায়। <br /> <br />ও করোনা হল তো এবার অনেক থাকা<br />নাও বিদায় আসুক ফিরে মুক্ত সুখের দিন,<br />এবার যদি মৃত্যু জয়ে প্রানে বেঁচে যাই <br />সত্যি বলছি ঋণী হতে করব না আর ঋণ।</p>
<br /><p>০৩ মে, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/hridoy-janey/হৃদয় জানে2020-04-23T19:57:29-04:002023-06-25T18:50:52-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>একটা মন স্পর্শ করে আছে বসন্ত ভূমিকে<br />সেখানে প্রকৃতির সাথে কিছু কাক ছিল, <br />ছিল কোকিল।<br />একটা আকাশ এখনও দেখি দু'চোখ গিলে<br />সেখানে বৃষ্টির সাথে মেঘের গন্ধ ছিল,<br />ছিল বিরহী চিল।<br />একটা সকাল এখনও হয় আগের মতই<br />সেখানে রাত্রির হেঁটে যাওয়া শব্দরা আজ<br /> বড্ড বাজে কানে।<br />একটা জীবন চলতে ছলতে থেমে যাবেই<br />সেখানে যতই থাকুক পাওয়া না পাওয়া<br />হিসাবটা হৃদয় জানে।</p>
<br /><p>২৩ এপ্রিল, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/korona-chokre-valobasar-kobita/করোনা চক্রে ভালোবাসার কবিতা2020-03-23T10:55:58-04:002023-06-25T18:51:13-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>করোনা আজ অনাকাংখিত মৃত্যুকেই শুধু উসকে দেয়নি। <br />সে তো অন্তরালে আবডালে বিশ্বাসও নিয়েছে কেড়ে। <br />তাইত তুমি আজকাল আমার বুকে মুখ গুঁজে ভালোবাসার <br />কথা বলা তো দূরে থাক আমাকে তুমি ছুঁয়েও দেখতে চাইছ না। <br />কারন তুমি আমাকে বিশ্বাস করতে পারছ না। আমিও কি <br />তোমাকে বিশ্বাস করতে পারছি? </p>
<br /><p>আমার হাত তোমার হাতে না নিতে পারলে, আমার আংগুল <br />তোমার আঙ্গুলে খেলা না করলে, আমার চোখ, চোখের ভাষা, <br />আমার ঠোঁট, ঠোঁটের কাঁপন, আমার নাক, নাকের ঘাম ছিল <br />তোমার বড্ড আদরের। তাকে ছুঁয়ে না দিতে পারলে, <br />তাকে আদর করে দিতে না পারলে তুমি বড্ড কাতর হতে। <br />অথচ কেমন ইতস্তঃতায় থাকছ দূরে! </p>
<br /><p>আমিও কি পারছি? কেমন অস্বস্থিতে থাকতে হচ্ছে তোমার সামনে। <br />মনে হচ্ছে অনেক অচেনা। তোমাকে কোনকালে ছুঁয়ে দেখেছিলাম <br />বলে মনে পড়লেও শরীরে আড়ষ্ঠতা, ভয়ংকর জড়তা। করোনা কেমন <br />পর করে দিয়েছে ভালোবাসার মানুষগুলোকে। আমি যে <br />কোয়ারেন্টাইনের আগেই আমার হাত, পা, শরীর, চোখ, নাক আর <br />ঠোঁটের কাছে আইসোলেশনে একাকিত্বের জীবন কাটাতে শুরু করেছি।</p>
<br /><p>অথচ বসন্ত এখনও তার আবেগী গন্ধ রুপ ছড়িয়ে ডাকছে প্রতিদিন <br />সদ্য সবুজ কচিপাতার বাগানে। দু’দন্ড বসে তোমায় নিয়ে খুসুঁটিতে <br />মাতামাতি করতে, তোমার চুলে ফুল গুঁজে দিতে। বসন্তের কোকিল <br />এখনও পাতার ফাঁকে বসে উঁকি দিচ্ছে কন্ঠে সুর তুলতে। <br />কিন্তু আমার সাথে মিশবে কি মিশবে না, আমাকে ছুঁয়ে দেখবে কি <br />দেখবে না সে বিশ্বাস আজ হোঁচট খাচ্ছে। তাতে দ্বীধা থাকলেও মনে <br />প্রশান্তি জাগছে ছুঁতে হল না বলে।</p>
<br /><p>এমন বিশ্বাসহীনতায় কি আর ভালোবাসার কবিতা লিখা যায়? <br />তাইত করোনার থেকে মুক্তি পেতে চাই। মুক্তি পেতে চাই অবিশ্বাসের <br />অস্বস্তি থেকে। মুক্তি পেতে চাই তোমাকে ছুঁয়ে না দেখার কষ্ট থেকে। <br />মুক্তি পেতে চাই ভালবাসার কবিতা না লিখতে পারার যন্ত্রনা থেকে। </p>
<br /><p>২৩ মার্চ, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/koronay-oshohay-niboma/করোনায় অসহায় আজ নি-বোমা 2020-03-22T11:25:37-04:002023-06-25T18:51:14-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>এই যে এতো ঝনঝনানি, চোখ রাংগানি<br />নিত্য নতুন সমরাস্ত্রের প্রতিযোগীতা,<br />কার হাতে আছে দূর পাল্লার, নিউক্লিয়ার<br />পাওয়ার আছে, হতে বড় বিশ্ব নেতা।</p>
<br /><p>প্রতি দিনই থাকতাম ভয়ে, আসছে ধেয়ে<br />তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়ংকর দিন,<br />কোন দেশ যাবে কার দিকে, থাকতে টিকে<br />প্রয়োজনে একাই লড়বে লড়াকু চীন।</p>
<br /><p>আমেরিকা নাকি ইউরোপ, কার কি টোপ<br />গিলবে কখন বাঁচাতে নিজের জীবন,<br />ওয়ারশো নিয়ে রাশিয়া ভাবে, দেখা যাবে<br />সময় হলে দেখা যাবে রাখছি গোপন। </p>
<br /><p>দুনিয়াটার মোড়লগিরি, রাখতে তড়িঘড়ি<br />ভাঙ্গল রুশ আমেরিকার ন্যাটো,<br />ভেবেছিল মধ্যপ্রাচ্যের তেলে, কুট খেলা খেলে<br />মোড়লগিরির নাগাম করবে খাটো। </p>
<br /><p>মধ্যপ্রাচ্যকে মাটির সাথে, গুঁড়িয়ে দিতে<br />কত সমরাস্ত্রের গর্জন গেল শোনা,<br />ইসরাইল কেবল নিভৃতে বসে, মুচকি হাসে- <br />দেখে ভারতও বাড়ায় হাত দু’খানা।</p>
<br /><p>রোহিংগাদের কষ্টের দিনে, এ বুকে টেনে <br />বাঁচতে চায় একত্রে সোনার বাংলাদেশ,<br />ন্যাটো, খাটো ওয়ারশো, আমেরিকা রুশও<br />এ নিয়ে হৃদয়ে ছিল না কোনই ক্লেশ। </p>
<br /><p>এমন সময় করোনা এসে, অজানা বেশে<br />দেশ থেকে দেশান্তরে দিল হানা,<br />স্রস্টা তাঁর ক্ষমতার পাত্র থেকে বিন্দু মাত্র<br />অদৃশ্য ভাইরাসে দিচ্ছে একটু যাতনা।</p>
<br /><p>প্রযুক্তি কত হাতের মুঠোয়, অনেক ছুতোয়<br />নব্য জেনারেশন ভাবে আহামরি,<br />এলিয়নদের করবে বশ, আর কিছুটা বরষ- <br />অপেক্ষাতেই গ্যালাক্সিতে হবে বাড়ি।</p>
<br /><p>স্রস্টা এবার মুচকি মুচকি হাসে, আরশে বসে<br />বলে হায়রে অকৃতজ্ঞ মানবজাতি,<br />আমাকে ভুলে আমার বিশ্বে, নি-বোমার বিষে <br />ধবংস করবি মুহাম্মদের জ্ঞাতি!</p>
<br /><p>দাগা এবার কামান দাগা, ভর সব নলের আগা<br />দেখ দেখি আসে কি না কোন কাজে,<br />একত্রে কর নি-বোমা, প্রয়োজনে আরও জমা<br />ঊর্দ্ধ্যাকাশে কান পেতে শোন কি নাম বাজে।</p>
<br /><p>তারই কাছে ফিরতে হবে, সময় শেষ হবে যবে<br />এত বড়াই করো না কেউ ক্ষমতার দম্ভে,<br />ফিরে এসো মানবতার পথে, সুন্দরের ঐক্য মতে<br />তবেই কেবল করোনার কষ্ট যাতনা কমবে। </p>
<br /><p>২২ মার্চ, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/korona-theke-mukti/করোনা থেকে মুক্তি2020-03-20T06:51:38-04:002023-06-25T18:51:13-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>ভালোবাসা হৃদয়ে থাক যতই<br />চোখে মুখে লাগে তার প্রকাশ,<br />মোমে আলো থাকলেই কি হয়?<br />আগুন যদি না করে তা ফাশ।</p>
<br /><p>বরফ খুঁজো না করোনা ঠেকাতে<br />হীমশীতলেই নাকি তার বসবাস,<br />এসো করুণা মাগি স্রষ্টার কাছে<br />আগুনই যেন হয় তার সর্বনাশ। </p>
<br /><p>পিপাসা লাগলে পরে নদীর কাছে <br />তাকে যেতে হয় যে হয় পিপাসার্ত,<br />পানি আসে না পিপাসা মেটাতে<br />যতই ভাবুক এ চাওয়াটা নিঃস্বার্থ। </p>
<br /><p>স্রস্টা খুঁজো না শুধু পড়লে বিপদে<br />সব খানেই আছেন তিনিই রহমান, <br />করোনা ভয় নিয়ে এই যে মহামারি<br />ঠেকাতে সঠিক পথে করো আহ্বান।</p>
<br /><p>এ গজব যে মানুষের দ্বারাই সৃষ্ট<br />পাপাচারের উদ্গিরণে এই যাতনা, <br />করোনা থেকে বাঁচতে এসো মাগি<br />প্রতিষেধকের সাথে স্রস্টার করুণা। </p>
<br /><p>২০ মার্চ, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/tumi-ar-turag-nodi/তুমি আর তুরাগ নদী2020-03-16T06:51:51-04:002023-06-26T00:42:25-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>বসন্তের শরীর বলে কথা, তাই তো সব কিছুতেই কেমন মেদহীন দেখি।<br />দেখি পাতা ঝরা মেদহীন প্রকৃতি, মেদহীন আকাশ, বাতাস। এমন কি<br />প্রতিদিন শহরতলিতে আসা যাওয়ার পথে দেখি তুরাগ নদীর শরীরও <br />কেমন মেদহীন হয়ে পড়ে আছে ঠিক তোমার শরীরের মত। অথচ বর্ষায় <br />এর কোন পাড়ই খুঁজে পাওয়া যায় না। নদী, বিল, ধান ক্ষেত সব এক <br />হয়ে যায় দীগন্ত খোলা আকাশের সাথে । </p>
<br /><p>আজ বড্ড ইচ্ছে হোচ্ছিল নদীর পাড়ে গিয়ে কিছুক্ষন দাঁড়াই। ওর সাথে <br />খোলামেলা কিছু কথা বলি, ছুঁয়ে দেখি ঝিমুনি ওর শীতল জল । তাহলে <br />অনেকদিন পরে তোমাকে ছুঁয়ে দেখার মতই হয়ত এ মনে মিশ্র দরবারি <br />জলসার সুখ খেলে যেতো। যা অনেকদিন মনের চোরা গলিতে বৃদ্ধ হোয়ে <br />বসে আছে।</p>
<br /><p>তুরাগকে দূর থেকে দেখে অনেক ভাবনায় কথা হলেও কাছে যাওয়া হয়না। <br />আসলে যাইনা। ভাবি তোমাকে ছুঁয়ে দেখার অনুভূতিটাই না হয় মনের <br />ভেতরে বাসা বেঁধে থাকুক। নদীকে ছুঁয়ে দেখতে গিয়ে যদি কখনও ভুলে যাই<br />তোমারঃ<br />- মেদহীন কলমি ফুলের উতলা শরীর <br />- নদীর শীর্ণ উচ্ছল জলের ধারার চেয়েও তোমার সুর্যমূখি হাসি <br />- আয়নাসম নদীর জলে মুখ না দেখে লজ্জার রংগীন আভায় <br />দেখা তোমার মুখ<br />- পাড়ে বাঁধা একলা ছোট্ট নৌকার মত তোমার কাজল কালো চোখ,<br />- আর বসন্ত বাতাসে নদীর জলে ছন্দায়িত ঢেউ না দেখে শিল্পির <br />তুলিতে আঁকা তোমার শরীরের কাব্যিক ঢেউ।</p>
<br /><p>তাই ইচ্ছে হলেও আবার ইচ্ছে করেই তুরাগ নদীকে আর ছুঁয়ে দেখা হয় না।<br />দূর দিগন্তে চেয়ে ভাবি এ বসন্তে না হলেও কোন এক বসন্তে তুমি নিশ্চই<br />ফিরে এসে বলবে আমাকে ছাড়া কেমন ছিল তোমার বসন্তহীন দিন। কেমন<br />করে মেনে নিয়েছ গ্রীষ্মের তাপদাহ, ভিজেছিলে কিনা বর্ষার প্রথম বৃষ্টিতে,<br />শরত-হেমন্তের কাশ বনে শুভ্রতার আভায় ভাসতে ভাসতে শীতের কাঁপনে <br />ঝরে পড়েছিলে কিনা বসন্তকে পাওয়ার জন্য মেদহীন বসন্ত ভালবাসি বলে!</p>
<br /><p>এ ভাবেই দিন মাস বছর চলে যায়। সময়কে কি কেউ আটকাতে পারে বল?<br />হাঁ বেঁচে থাকলে সময়ের পরিক্রমায় চুল পাকবে, দাঁত পড়বে, শরীরের ত্বক<br />ঢিলা হয়ে আসবে, ন্যুব্জ হবে দেহ কাঠামো। তাই বলে কি ভালোবাসা কমে<br />যাবে? যতই বুড়ো হোই না কেন তুরাগের বুকে যেমন জল বয়ে যায় বলেই<br />নদী ভেবে তার কাছে যেতে খুব ইচ্ছে হয়, ঠিক তেমনি তোমার কাছেও।</p>
<br /><p>১৬ মার্চ, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/jodio-prem-veeshon-ardro/যদিও প্রেম ভীষণ আর্দ্র! 2020-03-04T09:22:24-05:002023-06-25T18:51:03-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>যেমন কাপড়-<br />পল্টে পল্টে তেলে ভিজে সলতে হয়<br />জ্বালাতে নগ্ন প্রদীপ,<br />যেমন বেনুনী-<br />পেঁচে পেঁচে মাথার পিছে খোঁপা হয় <br />আটকিয়ে শক্ত ক্লিপ,<br />যেমন গাছের বাকল-<br />খসে খসে মাটির রসে বড় কান্ড হয়<br />হোক তা সমতল কিবা দ্বীপ, <br />যেমন সোনা-<br />পুড়ে পুড়ে আগুনের জ্বরে খাঁটি হয়<br />মূল্য বেড়ে হয় অর্থকূপ।</p>
<br /><p>তেমনি বিন্দু ছাড়া-<br />তল ঘুরে ঘুরে হয় না গোলাকার বৃত্ত <br />যদিও বিন্দু ক্ষুদ্র,<br />তেমনি আঁধার ছাড়া-<br />আকাশে যায় না দেখা তারার মেলা<br />যদিও সংখ্যায় তা সমুদ্র,<br />তেমনি উত্তাপ ছাড়া-<br />হয় কি বীজে প্রানের অংকুরোদগম<br />যদিও ভরপুর রৌদ্র,<br />তেমনি তুমি ছাড়া-<br />এ জীবনে বেঁচে থাকার হয় কি মানে <br />যদিও প্রেম ভীষণ আর্দ্র! </p>
<br /><p>০৪ মার্চ, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/prem-jeno-ek-mohamaree-pleg/প্রেম যেন এক মহামারী প্লেগ2020-02-23T11:18:35-05:002023-06-25T18:59:06-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>সিঁড়ি বাওয়া আছে নেই সে পদক্ষেপ কাংখিত পথে <br />মিলিয়েছে কতদূর কোথায় সে পথ কে জানে?<br />তবুও প্রান থকতে, স্বপ্ন থাকতে, দু’চোখে দৃষ্টি থাকতে<br />হোক না যতই অজানা তবু প্রেম যে কাছে টানে। </p>
<br /><p>বাবলার ছায়ায় কে না খুঁজে কাঁটা নম্র পায়ের তলায়<br />তবু তেষ্টা মেটানো ছায়ায় খুঁজে ফেরে অবসাদ,<br />প্রেমিকের মন খুঁজে আশ্রয়, কেউ কি ভয়ে পালায়? <br />তা না হলে পথই যে নিজের সাথে করবে সংঘাত। </p>
<br /><p>সব কিছুতেই পথের সন্ধান লাগে স্বপ্নের কাছে যেতে<br />আর প্রেম? সেতো নাগামহীন রসনার আবেগ,<br />কখনও বাধাহীন, পথহীন, কখনও অচেনা সুরে মেতে<br />নিজের ভেতর নিজেই হারায় যেন মহামারী প্লেগ। </p>
<br /><p>আমিও খুঁজছি যে পথে পৌঁছানো যায় তোমার কাছে<br />তবে সেখানে ভালোবাসাটা যে চাই ষোল আনা,<br />তাইত এত করেও পথের মাঝেই পথ হারাই বারে বার<br />তবু মিলছে না আজও তোমার পথের ঠিকানা। </p>
<br /><p>২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২০।</p>@ 2024 - পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/mozid-chacha-ebong-amar-chelebela/মজিদ চাচা এবং আমার ছেলেবেলা 2020-01-27T05:47:39-05:002023-06-25T18:51:27-04:00পলক রহমানhttps://www.bangla-kobita.com/palok/<p>হিলি ইস্কুলের করিডোরে প্রকাণ্ড বট গাছের <br />তলায় এসে বসতেন মজিদ চাচা। <br />সাথে কিশমিশ লাগানো লাল এবং দুধ সাদা <br />রঙের আইসক্রিমের শীতল বাক্স। ঐ বাক্সের ভেতরে <br />আটকে থাকত আমার প্রান। কখন স্কুল <br />ছুটি হবে,কখন বাজবে ছুটির ঘণ্টা! এলেবেলে চিন্তা <br />তখন থমকে দাঁড়াত বাড়ির পথ চেয়ে।</p>
<br /><p>আচ্ছা মজিদ চাচা কি এখনও বেঁচে আছেন, <br />উনার বয়স কত হল। ছেলে অথবা মেয়ের ঘরের <br />নাতি নাতনিরা এসে ওর দাড়ি নিয়ে কি খেলা করে? <br />আর বেঁচে থাকলেও বয়সের ভারে সে হয়ত এখন <br />বিছনাগত। ফাঁকি দেয়ার অপেক্ষায় তার নিজেরিই প্রান <br />এখন হয়ত বন্দি পড়ে আছে দেহের বাক্সে।</p>
<br /><p>এখনও ঐ বট গাছটার কাছে এসে পথ হারাই, <br />একাকী দাঁড়িয়ে থাকি, আবার কখনও তার তলায় <br />গিয়ে বসি। ক্লান্ত দুপুরে মজিদ চাচাকে খুঁজে বেড়াই। <br />শতায়ু বট গাছকে প্রমিত চিত্তে জিজ্ঞেস করি <br />মজিদ চাচার কথা, জিজ্ঞেস করি কেমন ছিল <br />আমার ছেলে বেলা, কোন আইসক্রিমটার জন্য <br />কি ভাবে বায়না ধরতাম মজিদ চাচার কাছে? </p>
<br /><p>আবার কখনও মনে হয়, স্কুলে যাওয়ার জন্য <br />কি বর্ণের পোষাক পরতাম? পায়ে কি জুতো থাকত, <br />কেরলিন শার্টের সাথে টাই ঝুলত কিনা। পেন্সিলের <br />শার্পনার হারিয়ে কাঁদতাম কিনা, বড় বুবু কি বলে <br />শান্তনা দিতেন, মজিদ চাচা সেই শান্তনার সুরে <br />সুর মেলাতেন কিনা। কোন উত্তর মেলে না। তবুও <br />বোবা বট গাছের সাথে বিড় বিড় করে কথা বলি বহুক্ষণ। </p>
<br /><p>এখন জিন্স প্যান্ট আর পোলো শার্টের হাল ফ্যাশনে <br />নিজেকে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। শিততাপ নিয়ন্ত্রিত শহরের <br />নামি দামী ফাস্ট ফুডের দোকানে বন্ধুদের সাথে আড্ডায় <br />এসে বসি। বার্গার, সমুচা কিংবা শরমা খেতে খেতে <br />কোকের গ্লাসে চুমুক দিই। কিন্তু মন ভরে না। <br />হায় ছেলেবেলা এত ছোট কেন তোমার বয়স ! <br />কি হত আর একটু বড় হলে?</p>
<br /><p>মজিদ চাচার চোখেও স্বপ্ন ছিল। আমার মত <br />তার একটা ছেলে থাকবে, বই হাতে স্কুলে পড়তে যাবে, <br />আইসক্রিমের জন্য বায়না ধরবে। স্কুলের অদুরে <br />সরকারী দাতব্য চিকিৎসালয়ে বসা ডাক্তার বাবুর <br />মত ডাক্তার হবে। জ্বর হলে কতদিন ডাক্তার বাবুর <br />কাছে গিয়ে বড়ি এনেছে। তার ছেলেরা কি মানুষ <br />হয়েছে, তাকে কি হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যায় !</p>
<br /><p>ইউনিভারসিটির ক্যাম্পাসে বিশাল সামিয়ানার ছায়ার <br />নীচে এসে দাঁড়াই। স্কুলের করিডোরে দাঁড়ানো প্রকাণ্ড <br />বট গাছের কথা মনে পড়ে যায়, মনে পড়ে যায় <br />মজিদ চাচার কথা। কোলাহল থেকে নিজেকে <br />আড়াল করি।আমি খোলা আকাশের দিকে তাকাই, <br />কনভোকেশনের ঝুঁটি আলা টুপি ছুঁড়ে দিই শুন্য আকাশে। <br />কিন্তু ছুঁড়ে ফেলা যায় না স্কুলের করিডোরে দাঁড়ানো <br />প্রকাণ্ড বট গাছ, মজিদ চাচার আইসক্রিমের বাক্স <br />আর আমার হারিয়ে যাওয়া ছেলে বেলা।</p>
<br /><p>০৯ জানুয়ারি, ২০১৭।</p>@ 2024 - পলক রহমান