মনে হয় যেন তোমার সাথে আমার হাজার বছরের পরিচয়।
সেই আংগুল ধরে হাঁটা বয়স থেকে এই বার্ধ্যক্যেও যেন আজও  
কত মুখোমুখি, মাখামাখি, মানামানি আর মাতামাতি। আজও  
পথ চেয়ে বসে থাকা, আজও মেঘ পেড়ে এনে বৃষ্টি ধরব বলে
মেঘের আকাশ খোঁজা, আজও ফুল পাখিদের ডেকে বসন্তের
বাতাস গায়ে মাখব বলে শীতের কুয়াসায় রঙধনুর কাঁপন
মাখা, আজও জোস্‌না মাখা রাতে হারিয়ে যাওয়া। আজও  
কত মান-অভিমান, ছলা-কলা, লুকো-চুরি, দ্বীধা-দ্বন্দ,
হাসি-কান্না আবার হার না মানা তর্ক-বিতর্কে মেতে থাকা।  
  
তবে বরাবরের মত সব কিছু ভুলে গিয়ে তোমার মুখের
কথায় মন গলে যেত একটু পরেই। কেন এমন হয়?যখন
তুমি কথা বল তখন মনে হয় তোমার সকল কথাই কেমন
নৈসর্গীক কবিতা যেন, তোমার সকল কথা অসীম থেকে
পাওয়া বুঁদ হওয়া সুরের গান যেন, অথবা কখনও কখনও
মনে হয় তোমার সকল কথা কোন মর্ম থেকে উচ্চারিত
আরাধনার শব্দ যেন। তাই তোমার দিকে একবার তাকালে
আর আমি ফিরিয়ে নিতে পারি না আমার সে অপলক দৃষ্টি
চোখের অন্ধকারে ধ্যান মগ্নতায় তোমাকে হারানোর ভয়ে।  


তুমি যখন কথা বল তোমার উভয় ঠোঁটের সঞ্চালনে কেমন
হাজারো চুম্বন যেন ছড়িয়ে পড়ে উন্মুক্ত প্রকৃতির কোনায়
কোনায়, বাঁকে বাঁকে, অনন্ত মাঠ প্রান্তরে। সেই চুম্বনের পরশে
শুষ্ক মরুর বুকে এক পশলা বৃষ্টির পর শিশির ভেজা শীত আসে,  
ফুল ফুটে, বসন্ত বাতাস বয় ‘লু হাওয়া উপেক্ষা করে, সেই
চুম্বনের পরশ পেতে অমাবশ্যার রাতও বুকে চেপে ধরতে চায়  
পূর্ণিমার চাঁদকে। আমারও কখনও কখনও ইচ্ছে হয় ঘামঝরা
প্রশান্তিতে সেই চুম্বনের দাগ ছেয়ে থাক আমার সারা বক্ষ জুড়ে।  
আর আমি তাতে হোয়ে যাই আমৃত্যু জীবন্ত এক এপিটাফ!