আচ্ছা তোর মনে আছে আমাদের পাড়ার
নির্জন সীমানার বাদাড়ে একটা সৌড়া গাছ
ছিল, আর ঠিক তার পাশেই ছিল একটা
কালি মূর্তির মঠ। গা ছম ছম করা
ঐ বাদাড়ের ভেতর ছিল লাল কালো রংগের
কুঁচফলের গাছ। সৌড়া গাছের পেত্নির কথা
বললে তুই সব সময় কেমন ভয় ভয়ে এসে  
আমার হাতটা পেতে চাইতিস শক্ত করে
ধরে থাকতে। তখন কালির সন্ধ্যারঙ তোর
কিশোরী মুখ ছেয়ে থাকত রাত্রি হতে।  


তুই প্রায় বলতিস তোর নানির কথা, কুঁচের
মালা পড়লে নাকি সোনা বউ হওয়া যায়,
কুঁচফলের রংগে সাজানো কালি দেবীর মত।    
কুঁচফলের সাথে সোনারুদের গহনার ওজন
নিক্তিতে মেপে কেমন স্বপ্নের আস্থায় ভাসায়
বলে কুঁচফল ধন আর সম্পদের প্রতীক।
তাই কুঁচফলের বাহারি রংগের সাথে স্বপ্নের
রঙ মিশিয়ে তোর জন্য একদিন ঐ কালি  
মঠের নির্জন জংগলে ভর সন্ধ্যায় গিয়েছিলাম
কুঁচফল আনতে।


আজ জানি না তুই কবে নিভৃতে কার সোনা
বউ হয়ে কখন কোন জনপদে হারিয়ে গেলি।
অথচ সেদিন তুই ভর না করলেও কালি এসে
ঠিকই ভর করেছিল ভর সন্ধ্যায় আমার উপর।
আমি মুর্চ্ছা গিয়ে কতক্ষন পড়েছিলাম জংগলে
জানি না। নিজেকে যখন জোড় হাত করে ক্ষমা
চাওয়ার ভংগিমায় কালির সামনে দাঁড়ানো
তখন দেখি পাশে আমার গয়া কাকা হরি নাম
যপঃরত, আর একটু অদূরেই সংগে তুই!