এক টুকরো খড়েরও অনেক মূল্য আছে, তাইত
ওম জ্বরে কাতর পক্ষিণী সে খড়কে নিদ্রাহীন
ঠোঁটে কুড়িয়ে নেয়, তৈরি করে বুনন স্বপ্নের বাসা,
সে বাসায় কসমিক আবহাওয়াতেও ছন্দে দোল খায়
অনুক্ষন তার ভবিষ্যৎ মা হওয়ার শিহরণ।  
তখন পক্ষিও তার কাছে হারায় বিগত উত্তেজনা,
খোলামেলা বসবাস আর নিড়ে ফেরার অঙ্গিকার।
পক্ষী তবুও বার বার ফিরে আসে। ভালবাসার
পাহারায় থাকে সে বাসা, খড়কুটা, স্বপ্ন আর ভবিষ্যৎ।
ভুলে যায় তখন দিন না রাত্রি, ভোর না সন্ধ্যা,
হারিয়ে যায় দু চোখের সমুদ্রে কত অশনি সংকেত,
ভয় আর শিকারির প্রানঘাতি শানিত তীর।


কিন্তু আমি এক টুকরো খড়ের চেয়েও তুচ্ছ হয়ে
গেলাম তোমার কাছে কেবল তোমার অনুভূতির
পাহাড় চুড়ায় রঙিন স্বপ্নের যে নিশানা দোল খায়,
তাকে ভেত করতে পারিনি বলে। অথচ তোমার
ভালবাসা পেতে গ্রীষ্মের মধ্য দুপুরে গালফের ধু ধু মরু
ভূমির মত কত পথ ধরে আমি হেঁটে ফিরেছি তোমার কাছে,
তুমি উত্তেজিত ছিলে আমার ভালবাসায়।  
প্রচণ্ড শীতে সাইবেরিয়ার জমাট বাঁধা পথের মত কত
বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে ফিরেছি তোমার বুকে,
তুমি প্রশংসায় ভাসিয়েছিলে আমার ভালবাসাকে।  
আমি অচেনা সাত সমুদ্র পাড়ি দিতে আকাশের
তারার সাথে নাবিক হয়ে যখন ফিরেছি তোমার কাছে,
তুমি অহংকারী হয়েছ আমার ভালবাসার সিম্ফোনিতে।        


ভালোবাসার বৃষ্টিতে ভেজা তোমার উষ্ম ভালবাসাকে
তাই বার বার ফিরে পেতে আমি উত্তেজিত ছিলাম আমার নেশায়।  
তাই আরও উন্মাদ হতে আমি বৈশাখীর মাতাল হাওয়ায়
হয়েছি রুদ্র ঝড়, আরও শীতল হতে আমি তাই দক্ষিন মেরুর
তুষার বৃষ্টির সাথে হয়েছি ফল্গু ধারা, আমি সীমাহীন  
তোমার মাঝে হারিয়ে যেতে সমুদ্রের পাড় ভেঙ্গে হয়েছি তাই  
জলোচ্ছ্বাস। আমার অজান্তে এ স্পর্ধাটুকু ছিল তোমারই দেয়া
আমার ভালবাসার প্রতিদান। তখন আমি ভুলেই গিয়েছিলাম
এত অসাধ্য সাধনের পরেও আমি যে এখনও ব্যর্থ কেবল
তোমার অনুভূতির পাহাড় চুড়ায় স্বপ্নের যে নিশানা দোল খায়,
তাকে ভেত করতে পারিনি বলে। তাইত আমি আজও
এক টুকরো খড়ের চেয়েও তুচ্ছ রয়ে গেলাম তোমার কাছে,  
এ আমার অবনত মূর্খতা, তোমার ভালবাসাকে বুঝতে না পারা।