কবি বন্ধুরা, বড় হলেও একবারে প্রকাশ করা এবং একবারে অনুরাগী পাঠক দ্বারা পড়ানোর অনুভূতিটা আলাদা। আজকাল সময়টাও একটা ফ্যাকটর বৈকি। তাই কষ্ট হলেও সে কথা সরণে রেখে কয়েকটা পর্বেই প্রকাশ করছি “ আখরে আঁকা গ্রামের বাড়ি”।  সাহিত্য গবেষকগন ছোট গল্পকেও আজকাল আধুনিক গদ্য কবিতা বলতে চাইছেন। আমার লেখা হয়ত কোনটাতেই পড়বে কি না জানি না। তবে পড়লে ভাল লাগবে এ আবেদনটুকু রাখতে পারি নির্দ্বিধায়। আজ ১ম পর্ব...
..........................................................................................


তোমাকে আমি আমার নাড়ি পুঁতা বিনোদিত গ্রাম
এবং আমার গ্রামের বাড়ির গল্প শুনাব আজ।
গ্রামের নাম হিলি। কেমন পর্বতময় মনে হয়। অথচ
সেখানে কোন পাহাড় নেই, পর্বতও নেই। তবুও কেন
এর নাম হয়েছিলো হিলি সে ব্যাখ্যায় আজ আর যাব
না। তবে কল্পনায় পর্বতের চূড়ায় বসে উঁচু দৃষ্টির
আলোয় দূর থেকে কোন গ্রামকে দেখলে যেমন
মনে হয়, ঠিক তার মতই সুন্দর আমার গ্রাম।
দিনের আলোয় মনে হয় তপ্ত লক লকে জিহ্বায়
ঝিল মিল আলোরা খেলা করছে গ্রামের শরীর ছুঁয়ে ,
পূর্ণিমা রাতের আকাশে মনে হয় যেন গ্রামের ছাদ
জুড়ে নামছে জ্যোস্না বৃষ্টি, বর্ষায় নতুন ভাসা পানির
স্নানে টলটলে, শীতের কুয়াশায় কেমন ধোঁয়া ধোঁয়া
মায়াবী অবগুণ্ঠন আর মরমী  লজ্জা।

সেই গ্রামের দক্ষিন পাড়ায় দক্ষিন দুয়ারী আমার বাড়ি।
সে বাড়ির মহাল মাটির জরায়ুতে প্রোবিষ্ট আমার নাড়ি,
আর  এক মাঙ্গলিক মাতৃক জরায়ুর নির্জাস থেকে
প্রতিক্ষিত সুখ আর স্বপ্ন নিয়ে জন্ম হয়েছিল যার। সে
বাড়ির ঢাউস আঙ্গিনা ঘেঁষে শান বাঁধা ঘাটের পদ্ম পুকুর।
পুকুর পাড়ে তাল আর নারিকেল গাছেরা কেমন হেলান
দিয়ে থাকে পুকুরের জলে। ওদের নিত্য দিনের ভালোবাসা
দেখতে পাতা ছাড়িয়ে পদ্মরা মাথা উঁচু করে তাকিয়ে থাকে
ওদের দিকে আর মুচকি মুচকি হাসে। কখনও শান বাঁধা
শিঁড়ি ভেঙ্গে উপরে এসে ভালোবাসায় জড়াতে চায়।
আর জলের গভীরে পরম আনন্দে মাছেরা, হাঁসেরা পদ্ম
ডাঁটার সাথে গা ঘঁষা ঘুঁষি করে জল কেলিতে মেতে থাকে।
(চলবে)