বকরী ঘরে বকরী নেই, পুরনো গেরো আলা দড়ির সাথে
কিছু শুকনো বকরীর নাদি আজও গুমোট গন্ধের সাথে
বাস করে, হাঁসের ঘরটায় ডিমের কিছু খোসা এখনও চিহ্ন
বহন করে হাঁসা-হাঁসির স্বপ্নময় সংসারের গৃহ পালিত গল্প।
মোরগ-মুরগির সাথে প্রায় প্রতি রাতে দাঁড়াশ সাপ আর
বুনো খাটাসের ধস্তা ধস্তিতে অস্থির থাকত রাতের ঝিমানো
কাঁঠাল গাছের ঝাঁকড়া ডাল। ওদের ঘর থাকলেও কেন জানি
না; গেছো অভ্যেস ছিল ঘর ছাড়া ঘুঘু পাখিদের মত। ঘরের  
উপরে মাটির তলায় গাদাগাদি কবুতরের নৈশকালীন ছন্দায়িত
গুম গুম শব্দে যেমন ঘুম আসত তেমনই বাক্‌  বাকুম শব্দে
ভাঙত ঘুম। কখনও হুলো বিড়ালের ওঁত পাতা ফাঁদের কৌশলে
কবুতরের কন্ঠ হত রুদ্ধ!

আমি বাড়ির সংলগ্ন খেলার মাঠের দিকে পা বাড়াই।
দেখি প্রকৃতি এখনও অকৃপণ। চোরা কাঁটায় উন্মত্ত যৌবনা
সবুজ মাঠ কেমন ঝরা গোলাপের রঙ ধরে মৃদু হাওয়ায় দুলছে।
ইচ্ছে করেই পাজামায় গেঁথে নিতে থাকি চোরা কাঁটার সঁচোলো
মিষ্টি আঘাত। একবার ইচ্ছে হয় ছোট বেলার মত ডিগবাজি
দিয়ে শরীরের পোষাকেও মাখি চোরা কাঁটা।  এক সময় ওদের
প্রতি বিরক্ত থাকলেও আজ কেমন যেন গায়ে পড়েই ওদের
ভালবাসতে ইচ্ছে হচ্ছিল। মাঠের এক পাশে গোল পোষ্ট আর
নেই, আর এক পাশে ভাঙ্গা গোল পোষ্টের খুঁটি তবুও স্বাক্ষী
বহন করছে বিগত অনেক কৈশর আর যৌবনের গল্প। দাড়িয়া
বাঁধা, গল্লা ছুট, ডাঙগুলি, হা ডু ডু, সাত চাড়া, কানামাছি, হকি,
ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, রঙ্গিন ঘুড়ির হাওয়া... কি না ছিল ঐ
মাঠের সাথে ঘর বাঁধার উতল প্রেমের সংসারে।
(চলবে)