বন্ধুরা, গত ১৯/২০ তারিখে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেল। সংগে সংগে কবিবন্ধু সামার  অনুরোধে এডমিনকে নীচের অংশটুকু লেখতে পেরেছিলামঃ
“আপনারা মানুষ, ভূত, না রোবট। এত বড় সর্বনাশ হয়ে যাচ্ছে, এত বড় একটা কেলেংকারী, কালকে থেকে আপনাদেরকে জানানো হচ্ছে তার পরো এর বিরুদ্ধে  ব্যাবস্থা নিতে এত দেরী হচ্ছে কেন!!!??? আপনারা কি ঘুমিয়ে আছেন, নাকি জেগে  জেগে ঘুমাচ্ছেন, তাহলে এডমিনের জন্য অভিযোগের পাতা রেখে লাভ কি! মনির হসাইন নামে আপনার এক বিকৃত মস্তিসকের অসভ্য পাগল কি ভাবে এ আসরের মুখে কালি লেপে দিতে ধর্ষন করেছে, দয়া করে এর বিহিত করার জন্য একটু দেখুন...”
তার পর আমার ভেতরে খুব রিএকশন হয়েছে। কবিতা লিখতে পারিনি, এমন কি তোমাদের কবিতাও পড়তে কষ্ট হয়েছে। বার বার মনে হয়েছে সামা কি ভাবে এ ‘ট্রমা’ কে কাটিয়ে উঠতে পারবে! ও বড্ড শক্ত মেয়ে। আজ পাতায় ওর লিখা পড়লাম। অবলীলায় লেখেছে, যেন বিগত দিনে কিছুই হয়নি। সাব্বাস! ধন্যি মেয়ে।


তা ছাড়াও আসরের সকল কবি বন্ধুদেরকে জানাই আন্তরিক কৃতজ্ঞতা এ কারনে যে, তোমরা সকলেই স্বাভাবিক ভাবে কবিতাকে ভালবেসে একে অপরের কাছে আছো। খুব ভাল লাগল। বরং আমার ঘৃনা এবং এ থেকে যে বমির ভাব এসেছিল তা আজকের কবিতার অবতারনা- ‘বমি’, কেমন লাগল জানাবে...
.......................................................................................    


প্রকৃতিও আজ কেমন থমকে আছে মৌসুমী উদাসীনতায়,
মেঘের কাশির শব্দে বমিও করতে যেন ভুলে গেছে। যে
বমির উর্বর জলে পঁচা জঞ্জাল আর বিশ্রী গন্ধদের গড়ানী
ধাক্কায় দূরে ঠেলতে ঠেলতে পেছনে শুষ্ক বিরান ভূমি হয়
সবুজ, ফুলে ফুলে ফুলের গন্ধে ভরে সোহাগী বাতাস। সুজলা  
সুফলা হয় উত্তপ্ত ধরনী, সুন্দর মন আর শরীর নিয়ে প্রকৃতির
সাথে বেঁচে থাকে জীব, জন্তু আর বিবেকপুষ্ট মানুষ।


অথচ সদ্য প্রকৃতির মত আজ আমার বুকের জমিনও মরুর
খরায় জর্জরিত অদেখা, অনাকাঙ্ক্ষিত এক মুখের কথা ভেবে
ভেবে। মুখো মুখি কখনও দেখা হয়নি তার সাথে, কেবল তার  
ভাষা পড়েছি। কলমের কি দোষ! যে মন আর হাত ঐ অকথ্য,
অসভ্য শব্দ, ভাষা আর দুর্গন্ধের অনুভূতি প্রকাশ করতে প্রেরণা
দিয়েছে- দোষ দেব কি সেই হাত অথবা মনকে? নাকি দোষ দেব
সেই অসুন্দর মানুষটির পূর্ব পুরুষদের, নাকি বর্তমান নিজ রক্তের
মানুষদের অথবা দোষ দেব না কাউকেই!


জানি না কি অদ্ভূত শিক্ষায় কোন বদ্ধ মন গুমোট অন্ধকারের
দুর্গন্ধময় রসে ভিজে ভিজে পচন ধরেছে ঐ অচেনা অবুঝ মনে!
যে পচনের গন্ধে আমার বমি আসছিলো ভেতর থেকে, মাথা
ঘুরছিল ঝিম ধরা লাটিমের মত, আমি অবচেতন ছিলাম সকল
অনুভূতিকে আগল দিয়ে মনের ঘরে। এ ভাবেও আমি একটু
বমি করতে চেয়েছিলাম ঐ দুর্গন্ধময় অদেখা মানুষের বিবেকের
ছায়ার উপর, বমি করতে চেয়েছিলাম ঐ সকল অকথ্য,
অসভ্য, অসুস্থ ভাষার উপর। অথচ আমার ভেতরে তাজা
বমিটুকুও ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে আমাকে অবচেতন করতে।


অথবা এমনও হতে পারে প্রকৃতের বমিতে উর্বরতা, সজিবতা,
সুফলা, সশ্য শ্যামলার অপার আনন্দ আর সম্ভার থাকলেও
আমার বমিতে হয়ত অনুর্বরতায় ধ্বংস হত সভ্য সমাজের বন্ধন,
সৌন্দর্য হারাত বন্ধুত্বের প্রেম ভালবাসা, বন্ধা হত কবিতার উর্বশী  
মাঠ, পরাজিত হত প্রকৃতির সকল সুন্দর আর সভ্যতা। হয়ত
ফিরেও আসা হত না এমন করে সকলের অন্তর উষ্ম ভালবাসার
জগতে। তাই বোধ করি আমার ভেতর বমি বিলীন হয়ে সেখানে
এখন জন্ম নিয়েছে সভ্যতার শক্ত ভীত্‌।