আজ শুধু বৃষ্টি আর বৃষ্টি, একটুও বাতাস নেই, ঝড় তো
দূরের কথা। বিশ্ব কাপের ভিন দেশের পতাকার সাথে
দেশের জাতীয় পতাকা বৃষ্টিতে ভিজে কেমন গা জড়াজড়ি
করে  নেতিয়ে আছে খুঁটির সাথে। এ যেন জড়াজড়ি  
ভালবাসার, এ যেন জড়াজড়ি বিশ্ব মানবতার সাথে
মানসিকতার। যথার্থই- যেন হার-জিত বড় কথা নয়,
অংশ গ্রহণই বড় কথা।


আমি ঐ পতাকায় চোখ রেখে সমর্থক হয়ে ভেসে বেড়াই
ব্রাজিল, পুর্তগাল, আর্জেন্টিনা, নেদারল্যান্ড, ক্রোয়েসিয়া,
জার্মান, ইরান, বসনিয়া-হারজেগোবিনা, আলজেরিয়া,  
কোরিয়া, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ক্যামেরুন, ঘানা, বেলজিয়াম,
যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, ফ্রান্স, মেক্সিকো, ইকুয়েডোর,
কস্টারিকা, উরুগুয়ে এমন অনেক দেশের রঙ্গিন পতাকাকে
ম্যাজিক কার্পেট বানিয়ে।


খেলায় বিনোদনের সাথে তবুও তো একটা পক্ষ নিয়ে
মাতামাতি করি। এই মাতামাতি কখনও কোন দেশকে
ভালবেসে, কখনও নামী খেলোয়াড়কে, কখনও ধর্মকে,
কখনও কালোকে, কখনও সাদাকে আবার কখনও নিজের
মহাদেশকে ভালবেসে করি পক্ষপাতিত্বের মাতামাতি।  
করি আহাজারি, করি উল্লাস। জাগি রাত, সাথে জেগে
থাকে আগামী এক সুখের সকাল।


মনে পড়ে, যেদিন ক্যামেরুন খেলছিল ম্যাক্সিকোর বিপক্ষে  
সেদিন নাটাল স্টেডিয়ামে আজকের মতই ছিল বৃষ্টি আর বৃষ্টি।
সেই একই সময় বৃষ্টিতে ভিজছিল স্বদেশ এমন ভাবে যেন
স্বশরীরেই আমি উপস্থিত ছিলাম সেই বৃষ্টি ভেজা ম্যাচে। আমিও  
যেন ভিজছিলাম বিনোদন বৃষ্টিতে আমার ভাললাগা দল
ক্যামেরুনকে ভালবেসে। ক্যামেরুনকে কেন ভালবাসলাম?
হয়ত কখনও কালোর দেশে ছিলাম তাই।


ভাবি, কখন নিজের দেশের জন্য এমন উন্মাদনায় ভাসব?  
কখনও কষ্টে, কখনও আনন্দে, চোখের জলে ভিজিয়ে দেব  
গর্বের স্বদেশ মাটি। তখন রাতকে রাত মনে হবে না, দিনকে
দিন মনে হবে না, বত্রিশটি দেশের সাথে নিজ দেশ মিলে
তেত্রিশ হয়ে শিস্ দেবে রেফারী, সেন্টার থেকে বল কাটিয়ে
নিয়ে প্রতিপক্ষের জালে জড়াবে বল, তারপর লম্বা বাঁশি।
সেই ম্যাচে প্রতিপক্ষ কে থাকলে ভাল লাগবে? সেটা সব
সময়ই তোমার বিপক্ষে, না হলে খেলাটা জমে না !