উত্তর থেকে ঠান্ডা বাতাসে বেশ টের পাচ্ছি শীত আবার
কড়া নাড়ছে দরজায়। অথচ  এ হৃদয়ের দরজা খুলে
বসে আছি সেই কবে থেকে। কড়া নাড়ানোর আগেই তো
আমি ভেতর থেকে বাইরে তোমার পথ চেয়ে আগমনের
প্রতিক্ষায়। কত গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরত, হেমন্ত গেল। বসন্ত
আসার আগে তোমার ছায়াও হারিয়ে যেতে বসেছে মনের
পর্দায়- অথচ তুমি এলে না। এবারও শীতটা বুঝি কাটবে
সেই অচেনা অসহ্য বিরহে।  


গ্রীষ্মে তালের পাখা যতনে রেখেছিলাম উষ্ম উলঙ্গ সিথানে,
গরম তোমার সহ্য হয় না বলে। বর্ষায় কাঁঠালের বিচি
পুড়িয়ে রেখেছিলা্ম,‌ তুমি সর্ষে তেলে ঝাল-মুড়ি পছন্দ  
কর বলে। কত শরত-হেমন্তে শিউলি ফুলের মালায়
সেজেছি, তুমি শিউলি ফুলের কমলা বোঁটা পছন্দ কর বলে।
বসন্তের পছন্দটা তুমি বরাবরই আমার উপর ছেড়ে দিতে,
তবুও বুঝতাম তুমি খোঁপায় গোঁজা গাঁদা ফুল ভালবাসতে।  


এবার নকশী কাঁথার ভাঁজ খুলে রাখতে চেয়েও খুলিনি,
ভাদ্রের উষ্ম রোদ যেন হারিয়ে না যায়। কেননা এবারের
শীতে তুমি আসবে বলে শীতের আঁচে পোড়া আমার মন বলেছে।
তাইত মন রেখেছি  আলগা কড়া মুক্ত। গুঁড়া চিংড়ি দিয়ে শীতে একত্রে
পালং শাকের স্বাদ নেবো বলে এখনও চেখেও দেখিনি। অথচ
কেমন করে যেন উত্তর থেকে ফেরা ঠান্ডা বাতাসের গা
চেটে ফেললাম, দেখি তাতে অশ্রু জলের নোনতা স্বাদ!