কার্তিকের শীত নামা বৃষ্টিতে শিশির জলের রাস্না বিলাপ
ছড়িয়ে পড়ে আসন্ন অগ্রাহায়নের কাঁচা পাকা সোনালী
ধানক্ষেতে। ধানের শীষে ঝুলে শিশিরের জল নির্ঘুম আদর  
মাখছিল, নবান্নে নতুন ভাতের গন্ধ পেতে মগ্ন ছিল। সকালের
সোনালী রোদও এমন করে নগ্ন কষ্ট দেয়নি আবার ফিরে
আসবে বলে। অথচ বাধ সেধেছে তাতে হঠাৎ শীত নামা বৃষ্টি।


ধানের চাতাল নিয়ে ব্যস্ত কৃষানী অলস সময় কাটা হালের  
বলদের সাথে পরম আদরে কথা বলে। ওর পায়ের ক্ষুরের দিকে
বার বার আড় চোখে তাকায়। এইত আর ক’টা দিন- ঐ ক্ষুরের
আঘাতেই ঝরবে সোনালী ধান, আলো ছড়াবে সোনালী স্বপ্ন।
তারপর সেদ্ধ চুলার আঁচ মেখে চাতাল পেরিয়ে ঢেকির পাড়,
নতুন ভাত, পাটালী গুড়ের ক্ষীর, পিঠা, পুলি আরও কত কি!


শীত নামা বৃষ্টিতে শিশির জলের কষ্ট থাকলেও সে কষ্ট কৃষানীর
চোখে আনন্দের ঝিলিক হয়ে উছলায়। নাঙ্গা পায়ের আলতা রঙ্গে
রাঙ্গা হয় চাতালের চৌহদ্দি। শীতের পড়ন্ত বিকেলে কুয়াসা উষ্ণতায়
ঝিম ধরে রাতের শিশির কৃষানীর মধুরিমা কামনার জল হয়ে
ঝরতে ধানের শীষে। তখন সকলেই ভুলে যায় কার্তিকের শীত
নামা বৃষ্টিতে বিগত বিলাপ আলাপন।