পান্ডুলিপি ছিঁড়ে আকাশে ছুঁড়ে মারলেই কি মনের পাতা থেকে
মুছে ফেলা যায় ভালোবাসা অথবা ঘৃনার নাম। ভুলে থাকা যায় কি
সেই মুখ যে মুখের রোদ ঝলমলে উচ্ছলতাকে অযথাই অবহেলায়
কষ্ট দিয়েছ কালো মেঘে ঢেকে। ভোলা যায় কি সেই চোখ
যে চোখের পাতায় তোমার উপেক্ষার রুদ্রতায় জলভরা মেঘ
ঝুলে ছিল বৃষ্টি হওয়ার অপেক্ষায়।


মনের পাতার রঙ কি, লেখা হয় যে বর্ণমালায় তার রঙ কি।
কোন্‌ কালি আর কলমে লেখা হয় সে পাতার মসৃণ অথবা
গিরি-খাদ দেহে। কেন যে একে ছিঁড়ে ফেলা যায় না, পুড়ানো
যায় না। মুছা যায় না এর দেহ থেকে কোন বর্ণ, শব্দ, নাম,
পরিনাম, সুখ,  দুঃখ, হাসি কান্না, প্রেম, অবহেলা, ঘৃণা অথবা
অনুভূতি আদর। ঘুণে পোকাও খায়না এর দেহ।


তোমার কাছ থেকে এত যন্ত্রনা, উপেক্ষা আর তাচ্ছিল্যে তপ্ত ঘৃণাগুলি
সহ্য করতে করতে এক সময় আমারও মনে হয়েছিল মনের
পান্ডুলিপিগুলি ছিঁড়ে কুটি কুটি করে তোমার মত ছুঁড়ে মারি বৈশাখি
আকাশে, পাগলা হাওয়ায় তা ভেসে ভেসে হারিয়ে যাক না ফেরা
দীগন্তে। কিন্তু পান্ডুলিপির খাতার পাতা ছেঁড়া গেলেও মনের পাতা
ছেঁড়া যায় না, পুড়ানো যায় না, এমন কি অযত্ন অবহেলায় খায় না
ঘুণে পোকাতেও।


তাইত মনের পান্ডুলিপিতে গুচ্ছিত ভালবাসায় সুখের, আনন্দের,
আদরের, হাসির অথবা প্রাপ্তির দোলায় যেমন দুলি, তেমনি দুঃখের,
বেদনার, অবহেলার, কান্নার অথবা বঞ্চনার আঘাতে আঘাতে পাথর
হয়ে যাই। সে পাথর ভাঙ্গে না মুগুরে, গড়িয়ে যায় না ভূ-কম্পনে,
কাটা যায় না করাতের দাঁতে। অথচ গলে গলে যেতে চায়
সামান্য ভালবাসায়। হোকনা সেখানে আকাশ ছোঁয়া তোমার
অবহেলা অথবা বঞ্চনার আঘাত।