ঘরে ফেরা গাঁয়ের মেঠো পথ ধরে যেতে যেতে শুকনো
ধূলোয় তোমার পায়ের যে চিহ্ন এঁকে যেতে আঁকা বাঁকা,  
সে পথের ধূলো  এখন পাকা সড়ক হোয়ে মিশে যায়
বিটুমিনের পোড়া লালায়। আর আমাকে উপহাস করে আর
শেখায়,পথের মধ্যে কি ভাবে চেনা পথ হোয়ে যায় অচেনা।


ইচ্ছে করলেও তোমার বুকে ওড়না তখনও মানাতো না।
তাই হেঁয়ালি ওড়না খেয়ালী পথের ধূলোয় খেত লুটোপুটি।
আর হাওয়ায় হাওয়ায় ধূলোরা উড়ত যেন তোমার
ভালোবাসার গন্ধ মেখে মেখে। যে গন্ধে আমার মনের ধূলোরা
হত নিষ্পাপ সন্ধ্যা আকাশের বেনারসি রঙ যেন।


তোমাকে নিয়ে তখন আমি কি ভাবতাম এখন ঠিক মনে
পড়ে না। আমার বয়সও বা কত ছিল- তখনও বোধহয়
পরনে লুঙ্গি ওঠেনি। ইলাস্টিকের হাফ প্যান্ট, গায়ে হাফহাতা
হোসিয়ারি গেঞ্জি, উদোম পা। সেই পায়েই তোমার পায়ের
চিহ্নের পদধূলি মেখে হেঁটে যেতে চাইতাম তোমার কাছে।


কথাগুলো কখনও বলা হয়নি তোমাকে। আজও
না লিখলে হয়ত কোনদিন কেউ আর জানতই না।
তবে একদিন এক মধ্যদুপুর এসে দাঁড়িয়েছিল
আমার সামনে। আমাকে নিয়ে জিরুনোর জন্য
সরাইখানার জল এগিয়ে দিয়ে আমার পাশে বসেছিল
বাঁশের মাচায় কিছুটা সময়। কেবল সেই সরাইখানা আর বিরহী
মধ্যদুপুর হয়ত জানত আমার না বলা মনের কথগুলো।


তাই আমি আজও মধ্যদুপুর দেখলে এখনও উদাস হোই
নির্জন পথের মাঝখানে সরাইখানা দেখলে উদাস হোই
শুকনো ধূলো মাখা মেঠো পথ দেখলে উদাস হোই
ধূলো উড়া নিষ্পাপ সন্ধ্যা আকাশ দেখলে উদাস হোই
আর উদাস হোই- দূর গ্রামে মিলিয়ে যাওয়া কখনও কোন
মানব শূণ্য পিচঢালা পথের মাঝখানে যখন এসে দাঁড়াই একা।