ক্লান্ত বরষার সাথেও আজকাল অনেক কথা বলছি, প্রথম বৃষ্টিতে  
ভিজতে মন চাইলেও শেষ বৃষ্টিতে ঘিনঘিনে কাদাজল মাড়িয়েও
আশ্রয় নিতে চেয়েছি সুযোগ করে আঁটসাঁট তোমার বৃষ্টি আড়াল করা
ছাতার নীচে। বরষার কি অভিমান হয়েছে তাতে, নাকি ন্যাকামো হিংসা-
তোমাকে আমার পাশে ঝুম বৃষ্টি উপেক্ষায়। আজকাল নিজের সাথে
এমন অনেক কথা বলছি, আসলেই কি আমি বেশী কথা বলছি ইদানিং ?


তোমাকে নিয়ে কবিতা লিখতে গিয়ে কত প্রেম, ভালোবাসা,
ভাললাগা আর সুখের শব্দরা এসে ভিড় করে এখনও। ওদের নিয়ে
ভাষা আর পরিভাষায় প্রেমের অনুভূতি জানাতে চাইলে মান
অভিমানের শব্দরা এসে ভিড় করে আগে। তাই সম্প্রতি অফিসে
বসের সামনে অজান্তেই সহজ কথার উত্তর- কবিতার মত পেঁচিয়ে  
হয় দীর্ঘ। আজকাল বসের সাথেও অযথাই অনেক কথা বলছি,
আসলেই কি- আমি বেশী কথা বলছি ইদানিং ?


বাসায় ফিরে গিয়ে দেখি টেলিভিশনের রিমোট দখল হোয়ে বসে আছে।
আমি খেলা, খবর দেখতে চাইলে তোমার বিদ্রোহ বাড়ে ‘তারা’ আর
‘জি-বাংলা’র এলোমেলো পরিবারের সাথে একত্রে আমার বিরুদ্ধে।
আমি এবার পারিবারিক কথা বলতে চাই মেয়ের সাথে। মেয়ের মন তখন
পড়ে থাকে ‘আই’ ফোনের পর্দায়। পুনরায় কথা বলতে চাইলে বিরুক্তির সুর-
আমি নাকি বেশী কথা বলছি। তবুও বলি কি করছিস তুই ? এবার
উত্তর আসে- ‘ইয়ে আপন কি মামলা হ্যায়’।


আমি ভেতরে ভেতরে দুমড়ে মুচড়ে থমকে যাই। ভবিষ্যতের বাংগালিপনা
শংকায় একা একাই অনুচ্চ বকবক করতে থাকি। আর ভাবি কেবলই ভাবি
প্রথম বৃষ্টি যদি এত ভাল লাগার হয় তাহলে শেষ বৃষ্টির প্রতি কেন এত
বিরুক্তি, বৃষ্টি তো বৃষ্টিই। কবিতাকে ভালোবাসি বলে বসের কেন এত
অন্তরজ্বালা, টেলিভিশনের কেন রিমোট একটাই, মেয়ের মুখে কেন আজ
হিন্দি বুলি, বাঙ্গালিপনা আজ কোন পথে ? আজকাল নিজের সাথে
এমন অনেক কথা বলছি, আসলেই কি আমি বেশী কথা বলছি ইদানিং ?