ঠাম্মা দিদার ঝুলির ভিতর কত গল্প আছে
লালকমল আর নীলকমলকে দেখে দৈত্য নাচে।
নাতিনাতনির মন ভরাতে নেইকো ওদের জুড়ি
যতই বলে ফুরায় নাকো বেরোয় ঝুড়িঝুড়ি।


নাপিতভায়ার অভাব ভীষণ বড়ই কষ্টে চলে
ঝগড়াঝাঁটি লেগেই থাকে যা ইচ্ছে বউ বলে।
মুখঝামটা খেয়ে বউয়ের বেরোয় প্রভাত হ’তে
সারাটাদিন হাঁটছে কেবল আঁধার নামে পথে।


ক্লান্তদেহে গাছের তলায় বসল নাপিতভায়া
চোখের পাতা জড়িয়ে আসে সামনে এ কার ছায়া!
ভূত ছাড়া আর কেই বা আছে নিরালা এই বনে
‘মাথাটা তোর চিবিয়ে খাব, ইচ্ছা জাগে মনে।’


নরসুন্দর চালাক অতি আরশিটা বের করে
‘বদমায়েসি করিস যদি রাখব ঝোলায় ধ'রে।
কয়েকটাকে ধরেছি আজ বাদ দেব না তোকে
এবার নাপিত বুঝতে পার নুন পড়েছে জোঁকে।’


নিজের ছবি দেখতে পেয়ে বুকটা দুরুদুরু
বিপদ বুঝি ঘনিয়ে আসে কান্না হল শুরু।
‘যা চাও তুমি দেবো সবই এবারটি দাও ছেড়ে
ভুল করেছি ঘাট হয়েছে নিয়ো না প্রাণ কেড়ে।’


‘আন তাহলে একশো মোহর রেহাই পাবি তবে’
‘একটুখানি সবুর কর ইচ্ছাপূরণ হবে।’
ক্ষণেক পরেই হাজির হলো একশো মোহর নিয়ে
থলির ভিতর আছে সবই দাঁড়িয়ে থাকে দিয়ে।


আর কী কিছু করতে হবে', বলেই চেয়ে থাকে
নাপিতভায়া বড়ই খুশি শাবাশ জানায় তাকে।
এক গোলা ধান পাঠাও তবে বানাও বাড়ি গ্রামে
বউয়ের কাছে ফিরব ভোরে, বলেই নাপিত থামে।


ঠিক আছে ভাই দিচ্ছি করে সাতমহলা বাড়ি
উড়কি ধানের মুড়কি করে পাঠাচ্ছি একগাড়ি।
সকাল হতেই ফিরল বাড়ি তাঁর পলাতক স্বামী
নতুন ঘরে দাঁড়িয়ে আছে, গায়ে পোশাক দামি।


নাপিতবউয়ের মন ভরেছে উপচে পড়ে হাসি
‘তুমি আমার কতই আপন তোমায় ভালোবাসি।
সোহাগটুকু বুঝলে না গো পালিয়ে গেলে বনে
নিজেরে দোষ দিচ্ছি আমি রাত্রে ক্ষণে ক্ষণে।’