পুত্র কেন, কন্যা কী না পারে
হেলাফেলা যায় না করা তাঁরে।
মায়ের ব্যথা বুঝবে কেবা আর
কন্যাদেরও বুদ্ধি ক্ষুরধার,
এসব কথা অজানা আর কার
ঘটছে তবু কুকাজ কত রোজ।
ফেলছে ছুঁড়ে দূরে আস্তাকুঁড়ে,
অশ্রু ঝরে কেউ না রাখে খোঁজ।


মেয়েরা যে মায়েরই মন পায়
স্নেহের টানে তাঁরাই ছুটে যায়,
ঝক্কি পোহায় সানন্দে মন দিয়ে
খবর নেবে দূরভাষে বা গিয়ে,
কত গল্প চলে মায়ে-ঝিয়ে
একটুখানি স্বস্তি ফিরে মনে।
‘পারিস যদি আসিস মা তুই রোজ’
ভেসে ওঠে ও'মুখ ক্ষণে ক্ষণে।


মায়ের চোখে পড়েছে বেশ ছানি
করলে দেরি হবে চোখের হানি।
এলো না কেউ এগিয়ে তাঁর কাছে
নেত্রালয়ে নিয়ে যেতে হয় পাছে,
যদিও তাঁর অনেক রত্ন আছে
ছাই ফেলতে ফেলনা ছিল মেয়ে!
‘চিন্তা কেন করছো তুমি মা গো’
বলেই একা এগিয়ে গেল ধেয়ে।


অশীতিপর বৃদ্ধা যে কমলা-মা
ছুটছে গাড়ি মাঝে মাঝেই থামা।
জল-বিস্কুট খাইয়ে দিল মা কে
সর্বদা সে পাশে পাশেই থাকে,
‘রক্ষা করো পড়ি না যেন পাকে’
হঠাৎ মায়ের বুক করে ধড়ফড়।
সান্ত্বনা দেয় মা কে সাহস দিয়ে
আপন মনে শিবকে করে গড়।


ঘেমে নেয়ে মা যে একাকার
কন্যাটি যে সাহসী খুব তাঁর।
শুইয়ে দেয় ঘাসে চাদর পেতে
দুপুর রোদে সব গিয়েছে তেঁতে,
দেখছে ঠাকুর সবই মন্দিরেতে
জল-ঝাপটা দিচ্ছে চোখে মুখে।
আঁচল দিয়ে মুছিয়ে দিল জল
বিপদকে আজ মেয়েই দিল রুখে।


‘সাহসিনী জন্ম থেকেই জানি
চুমা দেয় মা হবি রে রাজরানি।
রাজার মতো নাই বা রইলো ঘর
স্বর্গ থেকে দেবেন তিনি বর,
মেয়ে আমার পায় না কভু ডর
সারাজীবন থাকবি রে তুই সুখে।
হৃদয়দুয়ার রাখবি সদাই খোলা
প্রাণটা যেন কাঁদে দুঃখীর দুঃখে।’