কত কী যে পড়ছে মনে এক্কাদোক্কা লাট্টুখেলা
লেখাপড়ার চাপ ছিল না অঢেল সময় রোজ দুবেলা।
বই-খড়ি-শ্লেট বগলদাবায় চাটা একটা ঝুলত হাতে
শিশুশ্রেণির এটাই চলন যেত না কেউ তখন  সাথে।


সুর করে সব বলতে হতো এক-এ চন্দ্র দুই-এ পক্ষ
কেউ আস্তে কেউ বা জোরে উঠত কেঁপে শ্রেণিকক্ষ।
অল্প একটু বৃষ্টি হলে আটকাত  জল কচুপাতা
বাবা-মা তো ব্যস্ত মাঠে আনবে কেবা বাঁশের ছাতা।


কানামাছি খেলার সময় জুটত পাড়ার ছেলেমেয়ে
এদিক-ওদিক ছোটাছুটি কাটত মজায় সঙ্গী পেয়ে।
তেল মেখে স্নান দুপুরবেলা ঘাটের কাছে সাঁতার দেওয়া
ডাকলে দিদি 'যাচ্ছি' বলে একটুখানি সময় নেওয়া।


ঘুমোবে কে দুপুরবেলা সুযোগ পেলেই কেটে পড়া
মা তো তখন গভীর ঘুমে চলত দিদির পুতুল গড়া।
রোদ গড়লে আর কে ধরে সুতোর ফুলি চৌকো ঘুড়ি
পাশের বাড়ির পদ্মলোচন, ও-ই আমার খেলার জুড়ি।


সূর্যডোবার আগেই ফেরা হাত-পা ধুয়ে পড়তে বসা
দুচোখ তখন ঢুলুঢুলু এক্কেবারে কাহিল দশা।
মায়ের চোখকে ফাঁকি দেওয়া, ঘুম পেয়েছে বুঝতে পারে
ডাকবে তখন 'ভাত খাবি আয়' উঠছে যে হাই বারেবারে।


এখনও  তো স্বপ্ন দেখি 'ও-ভাই তুই কোথায় যাবি?'
আদর করে ডাকছে দিদি 'আমরুল চাঁট কখন খাবি'।
স্মৃতির পাতায় আজও অটুট রংবাহারি সেসব ছবি
যেথায় খুশি সেথায় যাওয়া একে একে ভাসছে সবই।