রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 'বীরপুরুষ' রচনা করেছিলেন ১৩১০ সালে। ১১৩ বছর অতিক্রান্ত। তাঁর উদ্দেশে আমার বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।


মায়ের সাথে যাচ্ছি দিদি-বাড়ি
মেঠো-পথ চলে না কোনও গাড়ি।
গ্রীষ্মকাল- রোদের সে কী তাপ!
হাঁটছি দুজন একদম চুপচাপ
মা বলল, ‘থাম-না একটু বাপ
হাঁপিয়ে গেছি মাইলদুয়েক হেঁটে,
জল দে বাবা ভিজাই একটু গলা।’
‘ওঠো, সময়-  বসেই গেল কেটে।’


পা চালিয়ে হাঁটছি জোরে জোরে
মাঝে মাঝে মায়ের হাতটি ধরে।
‘দুইটা ছাতা ব্যাগের মধ্যে ঢোকা
আলের ধারে ডাকছে ঝিঁঝিপোকা।’
‘ভাবছো কেন পিছেই আছে খোকা’।
এগিয়ে আসে শীর্ণ একটি লোক
‘গয়না টাকা যা আছে সব দে ’
বলি আমি, বাড়িয়ো না ভাই শোক।


শ্রাদ্ধ-বাড়ি যাচ্ছি মা ও ছেলে
পড়লে ধরা যেতেও হবে জেলে।
তার চে’ বরং রসগোল্লা খাও
আবার দেবো আর কি তুমি চাও?
মিষ্টি খেয়ে চাইলো একটু জল।
সারাটা দিন জোটেনি ভাত মাগো
এবার বুকে পেলাম একটু বল।’


প্রণাম করে লোকটি মাকে বলে
‘ভয় পেয়ো না, এগিয়ে যাও চলে।’
‘কাঁপছো তুমি’, মায়ের হাতটি ছুঁই
‘বেঁচে গেলাম, সামনে ছিলি তুই
দেরি দেখে-  ভাবছে কত জুঁই।’
দাঁড়িয়ে আছে ওই তো দিদি পথে
বৃথা চিন্তা করছো কেন মা গো
ও-তো জানে যাচ্ছি চরণ-রথে।


মাসিও হাজির কামারপুকুর থেকে
নতুন দেখে কুকুর যাচ্ছে ডেকে।
মাকে পেয়ে সবাই দারুণ খুশি
ঝাঁপিয়ে পড়ে মাসির মেয়ে টুসি
পিছনে ওর লেজ নাড়ছে পুষি,
‘কী ঝুমাদি, তোমরা কখন এলে?
কাল বিকেলে চড়কমেলায় যাবো
ছুটিটা বেশ কাটবে হেসেখেলে।’