আমি যাযাবর নই, কালচে রঙা কাঠের ইজি-চেয়ার,
আরাম-কেদারাও বলতো কেউ কেউ, এখন অবসর।
বাগান, বারান্দায় নয়, আপাতত ঠিকানা, ভাড়ার ঘর,
সোফা-কৌচেরা থাকে ড্রয়িং রুমে, আমি এখন পর !
ক্যানভাসটা এখনও ছেঁড়েনি এতটুকু, হয়েছে মলিন,
আশায় থাকে,ভাবে, আসবে কি আর কখনও সুদিন !
মালিকের দাদুর পুরোপুরি দখল ছিল আমার ওপর,
গভীর রাত ছাড়া, ফাঁকা থাকার জো ছিলনা আমার,
ফাঁকতালে চলতো হুটোপুটি, বাবুর নাতি-নাতনিদের,
খেলার সামগ্ৰী যেন, বড় তীক্ষ্ম ছিল যে ওদের নজর।
খবরের কাগজ হোক, কিংবা মোটাসোটা কোনো বই,
ঘুম পেলে, চশমার সাথে হাতলে থাকতো আরামেই।
রেকর্ডপ্লেয়ারে কখনও, বড়ে‌‌ গুলাম আলীর খেয়াল,
কখনও রবীন্দ্রসঙ্গীত, আধুনিক বা কাজী নজরুল  !
মাঝে মাঝে চোখ বুজে উনি সেই সব গান শুনতেন,
বুকে সমুদ্রের ঢেউ, একা তিনি যাত্রী কোনো নৌকার,
চোখের জল গাল গড়িয়ে এসে পড়তো বুকে আমার !
বুঝিনি, বাবু মনে মনে কার কথা এত করে ভাবতেন !
জানি,আমি তো আমার চেষ্টা করে গিয়েছি অনুক্ষণ ।
পেরেছি কি? চেয়েছি তো সদা আরাম দিতেই তাঁকে,
আমার আশ্রয় নিতেন তিনি, তাঁর সকল দুঃখ শোকে।