আমার দিদা কোনোদিন তাঁর চুল রঙ করেন নি,
কিন্তু তাঁর এক বান্ধবী ছিলেন, বড়ই অভিমানিনী।
নাতনিদের দিয়ে পাকা চুল বেছে তুলে ফেলতেন,
অবাক হয়ে ভেবেছি, এভাবে তো শেষমেশ একদিন,
টাক পড়ে যাবে ! অবশ্য কথাটা ভেবেছি মনে মনেই ,
আগ বাড়িয়ে কি আর আমি এসব কথা বলতে যাই !


অনেকেই অহঙ্কার করে বলেন এই কথা, আমি জানি,
" চুল গুলো তো আর আমার বাতাসে পাকেনি ! "
তাঁর মানে ম্যাচিওরিটি এসেছে তাঁর জীবনে, বুঝেছি।
আর কবে আমার ঐ  ম্যাচিওরিটি আসবে, ভেবেছি!
উল্টো খোপড়ি বলেই বোধহয় তরুণ বয়েসেও আমি,
কিছু চুল সাদা হোক চেয়েছিলাম, জানেন অন্তর্যামী।


সাদা রঙের হেয়ার ডাই পাওয়া যায় কি না, খুঁজেছি।
হতাশ হয়ে, ব্লিচ ক্রিমকেই চুলে লাগাতে গিয়েছি,
কচু পোড়া! চুল সাদা করার ক্ষমতা ব্লিচ ক্রিমের নেই,
বড় জোর পারে কালোকে সোনালী রঙ করতেই,
কালো যে! কি হবে অধিকারী হয়ে সোনালী চুলের !
একে একে দিন গুনতে গুনতে কত বছর হলো পার।


ছোটোবেলায় "পাকা বুড়ি" ডাক শুনে খুশি হয়েছি!
"পাকা মাথায় সিঁদুর পরা"এ তো বাগধারায় পড়েছি।
সত্যিই এমন কাউকে চোখে পড়লে চেয়ে থেকেছি ।
সময়কে টা টা করে, ইশারায় আজ বার্ধক্যকে ডাকি,
সিনিয়র সিটিজেন হওয়াটা এখনও রয়ে গেছে বাকি।
শুনে বান্ধবীরা অবাক, এ আবার কেউ চায় নাকি !


তার পরেও যত দিন বাঁচতে হবে, যেন সুস্থ থাকি,
আজীবন আপনজনদের যেন আপন করেই রাখি।
বাঁচলে সবাইকেই যে খুশী মনে বেঁচে থাকতে হবে,
যেন সত্যিকারের শান্তি দেখে যেতে পারি এই ভবে।
বার্ধক্য আসবে বলে মনে ভয় থাকলেও, দুঃখ নেই,
আমি সত্যি সত্যিই বুড়ি হতে চেয়েছি ছোটো থেকেই।