বুঝতে পারছো ,
তুমি ধীরে ধীরে এগুচ্ছো কবরের দিকে ।
বুঝতে পারছো ? মরছো ই তুমি হে !!
তুমি বেড়াতে যাও না
আড্ডা মারো না
চায়ের দোকানের বেঞ্চি চেনোনা
অতএব বুঝতে পারছো ? মরছো ই তুমি হে !!
তুমি বই ও পড় না
খবর শোন না
রাস্তার মোড়ে কেন চিৎকার
মাইক যে বাজছে -- কেন তা জানো না
তুমি তো আসলে নিজে কী যে চাও
সেটা ই জানো না ।
অতএব বুঝতে পারছো ? মরছো ই তুমি হে !!
' সোহম্ '-এর মানে কখনো ভেবেছো ?
কেবল নিজের পিঠ চাপড়েছ ।
হাত সে যখন বাড়িয়ে দিয়েছে
টেনে তুলে নিতে কুঁয়োর থেকে
তুমি তো তখন হাত ধরনিকো--
এখন তোমায় বাঁচাবে কে ?
ধীরে ধীরে তুমি ডুবছো হে !!
অতএব বুঝতে পারছো ? মরছো ই তুমি ,মরছ ই তুমি হে !!
তোমার অভ্যেসের তুমি ক্রীতদাস
নিজের ই তুমি খানসামা খাস
একটাই গলি চিনেছ কেবলি
সে পথেই তুমি হাঁটো ।
সকলের গায়ে ঢিলেঢালা জামা
তোমারটা আঁটোসাঁটো ।
তোমার চলাটা রুটিনেই বাঁধা
খাওয়া দাওয়া ডাল রুটি
বাঁধা তরকারি
-- বলা ঝকমারি !
পরিধান মোটামুটি ;
তুমি তো কখনো রঙিন পর নি
কাউকে ডেকে ' হ্যালো ' ও বল নি
যাকে তুমি চেনোনাকো ।
তুমি চিরকাল - গুটির ভিতর শুঁয়োপোকা রয়ে গেলে
অতএব তুমি , হে রেশম কীট
বাইরে না এলে পরে
প্রজাপতি হবে ভেবেছ কিন্তু,
আসলে ঐ যে গুটির ভিতর
শ্বাসরোধে মরছো হে !!
ভেবে ভয় পাও ' কামোচ্ছ্বাসের '
' ভালোবাসা ' রাখ দূরে
আবেগের ঝড় তোলে সে যখন
তুমি মর ভয়ে ত্রাশে !!
চোখ কারো যদি হয় উজ্জ্বল
প্রাণখোলা হাসি হাসে
হৃদয় বাদ্যে তাল দ্রুত্ হয়ে তেহাই যদি না পড়ে
প্রেম যদি নেয় বানপ্রস্থ অথবা সন্ন্যাসে
তবে তো তোমার সেইখানে শেষ !!
যা লোক যা হোক কহে
আমি তো বলব , তুমি ধীরে ধীরে
নিশ্চিত মরছো হে !!
" যা হবে --তা হবে
-- সে দেখা যাবে --"
ঝুঁকি যদি নাই নিলে
স্বপ্ন যদি না রাখতে পারলে
আকাশের ওড়া চিলে ;
গণ্ডির রেখা একদিন তুমি পার হ'য়ে গিয়ে দেখো ,
একদিন তুমি আকাশেতে ওড়ো --
দৌড়তে তুমি শেখো !
একদিন তুমি দৌড়ে পালাও ! দৌড়োও দৌড়োও !!
শেকলটা কাটো পায়ের তোমার
কঠিন ধারালো ঠোঁটে
কাজটা যতটা ভাবছো কঠিন
কঠিন নয় তা মোটে !
তারপর ছোটো !! ছুট্টে পালাও --দিগন্তে চলে যাও।
চক্রবালের রেখাটিতে তুমি হাতের স্পর্শ দাও ।।
( পাবলো নেরুদা র একটি কবিতার ছায়া অবলম্বনে )