চৈত্রের শেষ দু'দিন, বৈশাখের প্রথম সকাল -
আকাশে ঝুলে থাকে রামধনুর এক টুকরো,
যা স্পর্শ করলে হাতে লাগে শাল গাছের গন্ধ।
পাহাড়ের চূড়ায় ষাঁড়ের ডাক, নদীর বুকে ভাসে
কুমারী মেয়েদের হাসি।
চাকমা গৃহিনীরা রান্নাঘরে খুঁজে পেলেন
আকাশের এক টুকরো নীল রং,
তা দিয়ে রান্না করেন পাঁচন –
পঁচিশ ধরণের সবজি মিশে তৈরি অমৃত।


ত্রিপুরা বাড়ির আঙিনায় ফুটে আছে সোনালি ফুল,
যারা রাতে গান গায় হারি বৈসু'র সুরে।
ফুলেরা ঝরে পড়ে ঢেঁকির ঝোপের নিচে,
সেখানে তখন মারমা যুবকেরা ধনুকের কাঁড়িতে
বাঁধে প্রেমের স্বপ্ন।
নদীর কিনারে ভাসে সাদা হাঁস,
ঠোঁটে ধরে রাখে ময়মনসিংহের কবির শব্দ।


পানিতে ভেজা মাটির ঘরগুলোয় জ্বলে ওঠে অদৃশ্য আলো,
সেই আলোয় নাচনে মেয়েরা – গায় গান বৈসুমা'র।
আকাশ ছেদে নেমে আসে হাতির দল,
তাদের পিঠে বসে ঋষিরা ছড়িয়ে দেন
সারা পাহাড় জুড়ে আশীর্বাদের বীজ।


বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু – তিনটি শব্দ মিশে গিয়ে
বানিয়ে ফেলে রঙিন এক স্বপ্ন।
এই স্বপ্নে বৃষ্টি হয় রঙিন কাগজের টুকরো দিয়ে,
ঢাকঢোলের তালে তালে নাচে গাছের পাতা।


এই বৈসাবির স্বপ্নের মাঝে, কোনো এক গোপন জায়গায়
লুকিয়ে থাকে সত্যি জীবন।
কিন্তু কেউ তাকে খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করে না,
কারণ স্বপ্নের রঙই তো আসল সত্যি।