দেবী বিসর্জনের পৌরাণিক কাহিনী
তথ্যসংগ্রহ ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


দুর্গাপূজা শেষ। বিজয়া-দশমীর দিনটি বাঙালির কাছে অত্যন্ত দুঃখের দিন। এ বছরের মতো শেষ দুর্গাপূজা। আবার এক বছরের প্রতীক্ষা। আবার নতুন করে মূর্তি গড়া, আবার প্যাণ্ডেল বানানো, আলোর কাজ। আগামী বছর আবার সব কিছু নতুন করে।


দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার কারণ কী? যদি এমন করা যেত, প্রতিমা একবার বানানো হত, তারপরে সেই প্রতিমাই বছরের পর বছর পুজো হত। বাড়িতেও অনেকে মাটির মূর্তি পূজা করেন। তাঁরাও তো বিসর্জন করেন না। তাঁরাও তো বছরের পর বছর একই মূর্তি পুজো করেন। এক্ষেত্রে তেমন হয় না কেন?


শাস্ত্র বলছে, এর পিছনে রয়েছে এক নিয়ম। পুজোর সঙ্গে বিজয়া দশমী অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত। এবং সেদিন মাতৃ প্রতিমা বিসর্জন দেওয়াই কাজ। এর পিছনে থেকে থাকা কারণটি লুকিয়ে রয়েছে পৌরাণিক কাহিনিতেই।


পুরাণ মতে, এই সময়ে দেবী নিজের বাপের বাড়িতে আসেন। এবং তার পরে দশমীর দিন তিনি আবার স্বামীর কাছে ফিরে যান। দেবী যখন বাপের বাড়ি আসেন, তখনই তাঁর পুজো করা হয়। মর্ত্যলোকে দেবীর আরাধনার জন্য মূর্তি গড়া হয়। এর পরে মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়। দেবী তাতে অধিষ্ঠিতা হন। কিন্তু দশমীর দিন এই মাটির দেহ ত্যাগ করেই তিনি ফিরে যান স্বামীর কাছে। তখন মাটির দেহটি প্রাণহীন হয়ে পড়ে।


বাংলা কবিতা আসরের সকলকে জানাই বিজয়া-দশমীর আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
সাথে থাকুন, পাশে রাখুন।
জয়গুরু!



দেবী বিসর্জন (ধর্মীয় কবিতা)
কলমে- কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


বিসর্জনের বাজনা উঠিল বাজিয়া,
ঢাকীরা বাজায় ঢাক হস্তে কাঠি নিয়া।
দশমীর দিবসেতে দেবী বিসর্জন,
মর্ত্য হতে দেবী করে কৈলাসে গমন।


শঙ্খ ঘন্টা কাঁসি বাজে মহা কোলাহল,
সিঁদুর খেলায় মাতে রমণী সকল।
হাসি খুশি আর গানে সারাদিন কাটে,
সবে উপনীত হয় অজয়ের ঘাটে।


আবার আসিও মাগো সকলেই কয়,
দেবী বিসর্জন কালে অশ্রুধারা বয়।
দেবীরে প্রণাম করে সবে পুনর্বার,
একটি বছর তরে প্রতীক্ষা আবার।


সপ্তমী অষ্টমী আর নবমীতে পূজা,
দশমীতে বিসর্জন দেবী দশভূজা।
দুর্গাপূজা শ্রেষ্ঠ পূজা কহে সর্বজন,
কবিতা লিখিল কবি শ্রীমান লক্ষ্মণ।