বাংলা কবিতার আসরের সকল কবিগণ ও সহৃদয় পাঠক-পাঠিকাগণকে জানাই কোজাগরী লক্ষ্মীপূজার শুভেচ্ছা।
সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। জয়গুরু!!!


মা লক্ষ্মীদেবীর আরাধনায় কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা
এসো মা লক্ষ্মী আমার ঘরে ( মা লক্ষ্মীর পাঁচালি)
কলমে- কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


শুন সবে বিশ্ববাসী, শুন দিয়া মন,
লক্ষ্মীর পাঁচালি কাব্য করিব বর্ণন।
একদিন বৈকুণ্ঠেতে লক্ষ্মী নারায়ণ,
দুইজনে একসাথে করে আলাপন।


সহসা নারদ আসি উপনীত হয়,
লক্ষ্মী নারায়ণ প্রতি করযোড়ে কয়।
ধরাধামে মর্ত্যবাসী না করে বিচার,
ঘরে কারো অন্ন নাই থাকে অনাহার।


ধরাধামে বিপ্রগণ দেব পূজা ছাড়ি,
সুরাসক্ত হয়ে নিত্য করে মারামারি।
সতীনারী নাহি করে পতিরে সম্মান,
পতির অগ্রেতে খায় নাহি করে স্নান।


সর্বদা কলহ করে দিবস শর্বরী,
উলঙ্গ হইয়া ভূমে দেয় গড়াগড়ি।
মর্ত্যবাসী জীবকুল পাপ কর্মে রত,
সতীত্ব হারায়ে বালা কাঁদে অবিরত।


লক্ষ্মীসম অবলারে করিছে ধর্ষণ,
কি প্রকারে পাপকর্ম হবে নিবারণ?
নারদের বাক্য শুনি নারায়ণ কয়,
আপন দোষেতে জীব পাপে লিপ্ত হয়।


ইহা শুনি নারায়ণ লক্ষ্মী প্রতি কয়,
রক্ষা কর জীবকূলে হও মা সদয়।
মর্তবাসী জীব যদি তব পূজা করে,
ঐশ্বর্য বৈভব আদি পাবে তব বরে।


মর্ত্যধামে গিয়া কর পূজার প্রচার,
অন্যথা না হবে কভু বচন আমার।
এত শুনি লক্ষ্মীদেবী করিল গমন,
নারদের সাথে আসি দিলা দরশন।


ধরাধামে আসি দেবী বিপ্র ঘরে যায়,
বিপ্র সম পাপী আর না আছে ধরায়।
ত্রিলোচন নামে এক আছিল ব্রাহ্মণ,
দেব-দেবী পূজা নাহি করে কদাচন।


গায়ত্রী নামেতে আছে তাহার গৃহিণী,
পতিব্রতা সতী সাধ্বী সুশীলা রমণী।
প্রতি গুরুবারে নিত্য লক্ষ্মীপূজা করে,
ধন রত্ন বাড়ে তার মা লক্ষ্মীর বরে।


একদা ব্রাহ্মণ আসি মহা ত্রুদ্ধ মন,
মম গৃহে লক্ষ্মীপূজা কর কি কারণ?
গৃহে মম লক্ষ্মীপূজা কভু নাহি হবে,
পদাঘাত করি বিপ্র ঘট ভাঙে তবে।


ইহা দেখি বিপ্রজায়া চৈতন্য হারায়,
মহাদেবী মহালক্ষ্মী দেখিবারে পায়।
মহালক্ষ্মী নিজ রূপ প্রকাশ করিল,
ব্রাহ্মণ ব্রাহ্মণী কাছে দরশন দিল।


কমলা আমার নাম বৈকুণ্ঠেতে থাকি,
আসিয়াছি ধরাধামে জীবক্লেশ দেখি।
ব্রাহ্মণ বলেন, মাগো করিয়াছি পাপ,
ক্ষমা কর মোরে দেবী করি অনুতাপ।


ব্রাহ্মণ ব্রাহ্মণী দোঁহে করযোড়ে কয়,
থাকো মাগো মম গৃহে হও মা সদয়।
মহালক্ষ্মী ব্রত-কথা হল সমাপন,
পাঁচালির ছন্দে কাব্য লিখিল লক্ষ্মণ।