বিগত কাল মে দিবস ছিল। ঐ দিনটি শ্রমজীবী মানুষের জাগরণের স্মারক। সর্বহারার সর্বজয়ী হওয়ার দুর্দান্ত সংকল্পের উদ্বোধনকারী দিন এই মে দিবস। শৃঙ্খল ছাড়া যাদের হারানোর কিছু নেই, অথচ জয় করার জন্য আছে সমস্ত জগৎ, তাদেরই শক্তির উজ্জ্বল প্রকাশে ভাস্বর এ দিন। এদিন প্রমাণ করে যে ওরা রক্তবীজ, ওদের রক্ত ঝরিয়ে শোকের সাগর তৈরি করতে চায় যারা, তারাই ভেসে যায় সে সাগরের স্রোতে, আর সে সাগরে ফুটে ওঠে আর্তমানবতার উৎসবের রক্তকমল।


নতুন বছরের পূণ্য মে দিবসের অরুণ প্রভাতে ভরে উঠুক শ্রমিক, কৃষক আর মেহনতী মানুষের জীবন। ভরে উঠুক হৃদয় পাখিদের আনন্দ কলতানে । আসুক এবার নতুন সকাল, কিছু কথা কিছু গান। কিছু সুন্দর স্বপ্ন, একমুঠো সাদা মেঘ, কিছু মিষ্টি অনুভূতি। আসুক স্বপ্নময় সৃষ্টি। এবার নতুন বছরে মে দিবসের আলোকে রঙিন হোক খেটে খাওয়া মানুষদের আগামী দিনগুলো, সফল হোক তাদের খেয়ে পরে বেঁচে থাকার স্বপ্ন। মে দিবস জিন্দাবাদ।


আসুন, আজ আমরা লাঞ্ছিত, বঞ্চিত, সেই সব শ্রমিক, কৃষক আর মেহনতী মানুষ যাদের চোখের জলের দাম কেউ দিতে পারে না, তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সবাই একসাথে সম্মিলিতভাবে সংগ্রাম করি। তাদের দিই মানবিক মর্যাদা। অথবা দুবেলা দুমুঠো খেতে না পাওয়া অনাহারী মানুষগুলোর পাশে এসে সহানুভূতির পরশ দিয়ে তাদের বাঁচার ঠিকানা বলে দিই। সকলে সুস্থ থাকুন, রোগমুক্ত স্বাভাবিক জীবনযাপন করুন এই প্রত্যাশা রাখি। জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!


মে দিবসের গান (প্রতিবাদের কবিতা)
কলমে- কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


কান্না ঘাম আর রক্তের ফসলে
বিপ্লবের অভিযান,
কল কারখানায় ঘুরিছে যে চাকা
গাহে বিপ্লবের গান।


এসো হে কৃষক এসো হে শ্রমিক
এসো হে মজুর কুলি,
বাঁচার লড়াই শুরু করি এসো
বিদ্রোহের সুর তুলি।


কৃষকের গৃহে অন্ন নাহি আজি
শ্রমিক পায় না ছুটি,
অর্থের বিনিময়ে শ্রম দেয় যারা
কে দেবে ওদের রুটি।


কৃষকের ধান চুরি করে যারা
দেশেতে দুর্ভিক্ষ আনে,
দেশদ্রোহী ওরা জাতিদ্রোহী ওরা
ওরাই আঘাত হানে।


রক্তিম নিশান হাতে লয়ে যারা
লড়েছিল একদিন,
আজিকে তারাই ক্ষুধায় কাতর
হয়ে গেছে বহু ঋণ।


লালে লাল হয়ে উঠিল অরুণ
মে দিবসের প্রভাতে,
বিদ্রোহী আমি বিপ্লবের কবি
আমিও তোমার সাথে।


মে দিবসের অরুণ প্রভাতে
তুলে ধর রক্তনিশান,
বিপ্লবী কবির কণ্ঠে আজিকে
বিদ্রোহের জয়গান।


কান্না ঘাম আর রক্তের দাগ
ফুটে উঠে কবিতায়,
কাব্যের কাণ্ডারী লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
বিপ্লবের গান গায়।