রাত্রির কাছে আমি ঋণী ।
সে আমাকে ফিরিয়ে দেয় বাল্যকাল -
শীতের টুপটাপ খসে পড়া পাতার মত স্মৃতি ।
জমাট অন্ধকার ভেদ করে কোন এক গভীর
থেকে জেগে ওঠে কুণ্ডলী পাকানো ধোঁয়া , আর ,
দলবদ্ধ জঙ্গলমুখিতা যৌবন । অবশেষে ওঠে সূর্য ;
দুচোখ কচলে দেখি মৃত দিনের স্বপ্নরা ধূসর কোষের
ভাঙা অলিন্দে দিব্যি রয়েছে সংসার বেঁধে ।
একটা ট্যাক্সোনা পাখির পালক কুড়িয়েছিলাম
হেমন্তের বনভোজনের বিকেলে ,তোমায় দেব বলে;
অপার হুল্লোড়ের মাঝে ভেবেছিলাম এবার সেই
সন্ধিক্ষণ । তখন , শীতের আমেজ , চড়ুইভাতির
উনোনের আগুনের তাপ ক্রমে পড়েছিল শরীরে -
নদীর জলে দিনান্তের শেষ সূর্যটা তখন স্নান
করছিল আর ঝাউ গাছের দীর্ঘ ছায়াগুলি ঢুকে
পড়ছিল স্রোতের অভ্যন্তরে । ফিরতি বাহনের
তীব্র হর্ণ । চড়ুইভাতির উষ্ণ আগুনের বুকে সশব্দ
আর্তনাদ --- গোল হয়ে পাক খেতে থাকে কোন
এক শীতের বনভোজন । এক পলক তাকিয়ে
ছুটলে নিজের আসনে ।
পাখির পালকের সৌন্দর্য ক্ষতবিক্ষত হয়ে আমি
বাড়ি ফিরে ছিলাম উত্তীর্ণ সন্ধ্যায় । সেই থেকে
সন্ধ্যা ও পাখির সাথে আমার নিবিড় সখ্যতা ।
হয়তো এখনো যৌবনের অন্তিম লগ্নে বারবার
আসে শীত । আসর জমে ওঠে ভেঙে পড়া বনে ,
নদী পাড়ে । বাতাসে মাতাল করে শহুরে জীবনের
উদ্দামতা । শতরঞ্জির পাশে স্তূপীকৃত হয় কমলার
খোসা । কিন্তু থেকে যায় আমার মত অনেকের না
বলা তুচ্ছ কথা ।
আজও আগের মত নদীর তরঙ্গে মিশে যায় দিনের উষ্ণতা ।
আর মাছগুলো জলের ভিতর মাটিতে পিঠ ঘষে
শেষ করে এক এক করে দিন ।
সেই ফেলে আসা মাতাল করা বনে ,গরম ভাতে
সৌন্দর্যের করাতে ভেঙে ভেঙে আমার যুবক মন
কখন মিশে গেছিল বৈকালিক নদীটির মমতায় ।
সেই দিন থেকেই আমি আর নদী সমান্তরাল ॥