এই ধানসিঁড়ি নদী,
তাল-সুপারির বন ছেড়ে-
একদিন যেতে হবে তারাদের দেশে।
সেখানে আঁধার খুব,
নাকি ঝলমলে?
ফিসফাস কিছু কথা,
নাকি চুপচাপ?
সেসব কিছুই নেই জানা;
তবু যেতে হবে।
সেখানে ভোরের পাখি শোনাবে কি গান?
সেখানে মায়ের স্নেহ-
সন্তানের মুখে,
দিবানিশি দিয়ে যাবে
অভয় চুম্বন?
গোবরে নিকান এই মাটির উঠোন,
এই নদী, এই জল, এই যে আকাশ,
কোমল মায়ায় ভরা মাটির পৃথিবী;
সব কিছু ছেড়ে হায় চলে যেতে হবে,
অজানা অলীক দেশে।
যখন এসেছি হায়,
বুঝিনি তো কিছু,
চলে যেতে এত ব্যথা
কেন লাগে প্রাণে?


একদিন সব ছেড়ে চলে যেতে হবে
সেই যে কুমারী মেয়ে,
যাকে ভালবেসে-
কত রাত চুপিসারে কেঁদেছে হৃদয়।
ওই যে পুকুর-বাড়ি, গোলা ভরা ধান
নরম জোছনামাখা মাটির পৃথিবী,
হিজল গাছের ওই সুশীতল ছায়া,
সবকিছু ছেড়ে হায়,
চলে যেতে হবে-
অজানা আঁধারে ভরা
অসূর্যের দেশে।
চলে যদি যেতে হবে,
তবে কেন আসা?
কেন এত মাখামাখি,
কেন ভালবাসা?
ওই যে ভোরের পাখি সুরে গায় গান,
ওই যে মায়ায়মাখা সন্তানের মুখ,
একদিন সব ছেড়ে চলে যেতে হবে।