‘দেশে দেশে পাহাড়প্রমান আর্থিক বৈষম্য।
দারিদ্র ? সে ও চরমে। ভাবছো কেন?
খনি থেকে খনিজ তেলের মতো এসব
তুলে এনে নাক সিটকানোর মতো করছো
কেন?
ভাবছো না কেন, এটি ‘তরল সোনা’
আর এর মধ্যে লুকিয়ে আছে কত কী?
ভাবো, এ না-হলে বাবুরা বনবন করে
ছড়ি ঘোরাবে কি করে?
চারদিকে যা ঘটছে, সে নিয়ে ভাবছো?
ভুলে গেছো, ‘গীতায় শ্রী কৃষ্ণের কথা?’
ভেবে নাও, ‘এ সবই করাচ্ছেন বিধাতা’!
ভাবছো, এর পরিণামে বৈষম্যের বলী?
দেখবে নাকি? তাকিয়ে দেখো, তাহলে বলি
দারিদ্রের চাপে কুঁজো হয়ে থাকা লোকগুলি
তাদের স্ত্রী-পুত্রকন্যাদের মুখে জোটাবে অন্ন?
কষ্ট-কল্প! বটেই তো!
ফলত তাদের বুকে বিঁধছে দুঃখের বান।
জীবন হচ্ছে খানখান।
অগতির গতি? আছে বৈকি!
তারা বাবুদের দাবা খেলার ক্রীড়নক হবে কি?
তাদের যেতে হবে যুদ্ধক্ষেত্রে।
বক-রাক্ষসের খাবার? সেও হতে হবে, বৈকি!
জেনে-বুঝে হতে হবে মৃত্যুর মুখোমুখি।
খোলা আছে যমালয়ের দক্ষিণ দুয়ার!
হায় রে, এ কী ঘটছে এ বিশ্বসংসার।
তাকিয়ে দেখো যমালয়ের ভেতর
দেখছ কি পড়ে আছে অগণিত হাড়গোড়?
ভাবো, বক-রাক্ষস কতজনকে করলো সাবাড়!
যমের কাছে রেখে গেল দারিদ্রের উপহার?
-মৃত্যু! নাম লেখা হলো শহীদদের তালিকায়।
যে যাই বলো না কেন
বরাত জোরে পরিজনদের জুটবে দু’মুঠো অন্ন।
ভেবো না, এ সব খুবই জঘন্য ব্যাপার।
ভাবো, দেশে দেশে জনগণের চরম আর্থিক
বৈষম্য ও অন্নক্লিষ্টদের খাবারের হাহাকার
না-থাকলে এসব হতো নাকি?
বাবুদের দাবা খেলার বোড়ে, সেও জুটতো কি?
দেশাত্মবোধের কথা ভেবে ক’জন যুদ্ধক্ষেত্রে
যেতো।
ভাবতো, দেশে দেশে ধনীদের ঘরের আদরের
দুলালদের ক’জন নিজেদের রক্তক্ষত করতে
চাইতো?
পাটীগণিতের সে অঙ্ক কঠিন, সমাধান দুষ্কর।
যাক গে, তাকিয়ে দেখো যা দাঁড়ালো
ফুলে ফুলে কী সুন্দরভাবে মঞ্চ সাজানো হলো!
বাবুমশাইরা মঞ্চের শোভা বাড়াবে, বলা ভালো
অর্থ ও পদক দেবে শহীদদের পরিজনদের হাতে।
পরিজনরা সেসব নেবে মাথা পেতে।
ওই দেখো এলেন তারা, সাথে দেহরক্ষীরাও।
যে যেখানে আছো, সবাই পথ ছেড়ে সরে দাঁড়াও।
এ কী অবাক কাণ্ড! পথে পড়ে রয়েছে এখনো
যুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্রে অর্ধ দগ্ধ ঝলসানো
বীর শহীদদের খণ্ড-বিখণ্ডিত বহু শব দেহ।
যাক গে, থাকে থাকুক। ডোমরা সরাবে আর কত?
বাবুদের আসার আর বিকল্প পথও আছে নাকি?
নেই তো, তাহলে তারা আর করবে কী?
একটু কষ্ট করে এ পথেই মঞ্চে আসতে হবে।