বলবো কী কাল-কেউটের কথা শুনলে
শিহরে উঠতে হয়।
এইতো সেদিন এক মরা আমড়া গাছের
নিচে মিললো এ হিংস্র সরীসৃপের হদিস।
বেড়ি পাকিয়ে পথের পাশে বসে দিচ্ছিল
শিস।
বিষে বিষ-গ্রন্থি ফুলে টইটম্বুর। কাউকে
নাগালে পেলেই এ সরীসৃপ যেন আহ্লাদে
আটখানা।বিনা নোটিশে দূর থেকে ছুটে
এসেই মারে ছোবল।
তার কবল থেকে কারো মুক্তি পাওয়া
দুষ্কর।
ঘোর দুর্দিন। এই তো সেদিন আকাশ
যখন ঢাকলো মেঘে, চারদিকও ছেয়ে
গেল অন্ধকারে, কাল-কেউটে সেসময়
বেড়ি পাকিয়ে বসলো গিয়ে একেবারে
পথের ধারে।
দুর্যোগের সময়, সুবর্ণ সুযোগ। সেটি
ছোবল মারলো একজন ঘোমটা পরা
রমণীকে।
বিষাক্ত রক্ত নিমেষেই ক্ষতস্থান থেকে
ফিনকি দিয়ে বেরিয়ে ছড়িয়ে পড়লো
চারদিকে।
জনশ্রুতি, কেউটে এমন ঘটনা ঘটাচ্ছে
নিয়ত! জনগণ তার ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত।
সতর্ক থেকেও রক্ষা পাচ্ছে কৈ। ইয়ত্তা
নেই, তার ছোবলে মরলো কত।
দেখেছি রমণীকে চলার শক্তিহারা। বিষ
ছড়ালো তার সারা শরীরে। ধীরে ধীরে
সেই স্থান থেকে সরে পড়বে সে সাধ্যও
ছিল না।
বিনা দোষেই এ দংশন। অযাচিত ঘটনা
মনে হলেও এ কেউটের কী যায় আসে?
সে একটু অনুশোচনা করবে? সে ভাবনা
মিছে।
দিশেহারা রমণী অগত্যা সে গাছের নিচে
বসে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করলো।
চারদিকে ছড়ালো রক্তের দাগ। রমণীকে
দেখেই বুঝতেও বাকি থাকলো না তার
শিয়রে সংকট।
ভেবেছি তখন কতদূর গড়াবে আর তার
জীবন রথ!
তার কান্না শুনে কে আর চুপ করে থাকতে
পারে? কাছে গিয়ে শ্রদ্ধাবনত হয়ে জিজ্ঞেস
করেছি, ‘কে তুমি?’
জেনেছি, সে রমণী অন্য আর কেউ নয়,
আমাদের এ ‘ধরণী!’ দেখেছি, কেউটের
ছোবল খেয়ে নিস্তেজ হয়ে পড়ছে ঢলে।
কালের স্রোতে কত কী যে ঘটে! ভেবেছি
তখন সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকাও এখন কী
দুষ্কর।
এসব ভাবলেও কম্প দিয়ে আসে জ্বর।
ঠক ঠক করে কাঁপে সারা শরীর।
ভয়ডর দাঁত খিঁচিয়ে কামড়ে ধরে। মনে
হয় ঘনিয়ে এলো কী এখনি দুঃসময়!