আজ বড়ো আক্ষেপের সুরে বলতে ইচ্ছা হচ্ছে,
আমার মাতৃভাষা বাংলা বিশ্বের অন্য ভাষাদের
সাথে দৌড় প্রতিযোগিতায় এখনো হতে পারেনি
সেরা। আজও এই দৌড় প্রতিযোগিতায় বাংলা
হচ্ছে গোহারা।
ভাবছি, এই দৌড় প্রতিযোগিতায় কবে উঠবে
তার মাথায় শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা? এসময় এসব
ভেবে বোবাকান্না করে কি হবে? কেঁদে কে, কবে
সাগর পেরতে পেরেছে এই ভবে?
জানতে ইচ্ছা করছে, স্নেহের বশে শিশুদেরকে
কোলে তোয়ালে দিয়ে জড়িয়ে রাখলে তারা কি
হাঁটা শিখতে পারে?
ভাবিনা স্নেহ পরবশে এই ভাষাকে আজও যেন
কপালে কাজলের টিপ পরিয়ে আমাদের স্নেহের
শিশুসন্তানের মতো আগলে রেখেছি কোলে।
তার প্রতি এমন স্নেহান্ধ হয়ে আছি সস্নেহে রোজ
চুমু খাই তার দু’গালে।
গলা ফুলিয়ে বলতে পারি সে আমার মাতৃভাষা
বাংলা, বড়োই মিষ্ট এই ভাষা বিশ্বের জনগণের
মাতৃভাষার নিরিখে আজও প্রথম সারিতে।
বলতে হয়, তার প্রতি এমন স্নেহান্ধ হয়েছি তার
জন্য জীবন উৎসর্গ করতেও রাজি। আজ মাথা
চুলকাতে হবে না খুঁজতে এমন নজির। টাইম
মেশিনে চেপে পিছনে যেতে হবেনা বহুদূর।
ইতিহাসের পাতা অল্পবিস্তর ঘাঁটাঘাঁটি করলে
যে কেউ দেখতে পাবে মাতৃভাষা আন্দোলনে
আছে এমন ভুঁড়ি-ভুঁড়ি নজির।
এখন এই প্রতিযোগিতার দৌড়ে সাফল্য পেতে
হলে অর্জুনের লক্ষ্যভেদের মতো আগে দেখতে
হবে কোথায় আছে মীন? কোন দিকে ছুঁড়তে
হবে তীর।
নয়তো আজ বুকের ক্ষতে যতই করুক চিনচিন
সারবে না মোটেই।
ভাষার অগ্রগতির জন্য ভাবতে হবে নাকি তার
ব্যবহারিক দিক? বাংলা ভাষাভাষীরা সেই দিকে
এযাবৎ কতটা দিয়েছে নজর?
যে যতই বলুক এই বিশ্বায়নের যুগে বাংলাভাষা
নিয়ে যাবেনা বেশি ভাবা-ভাবি, তাদের বলতে
ইচ্ছা করে, এটি হতে পারে অজুহাত মাত্র।
এই ভাবে সারবে না বুকের গভীরের ক্ষত।
এই বিশ্বে চিনা, জাপানিজ, রাশিয়ান, ফ্রান্স,
ল্যাটিন সহ যে ভাষাগুলো এই দৌড়ে এগিয়ে
গেছে তারা কি ভেবেছে তাদের মাতৃভাষাকে
অন্য ভাষাভাষীরা কতটা গুরুত্ব দেবে?
সম্ভবত: তারা সেই দিকে তাকায়নি ফিরে।
তারা নজর দিয়েছে নাকি তাদের মাতৃভাষার
ব্যবহারিক দিকে?
সরকারী কাজে দেয়নি কি মাতৃভাষায় বিশেষ
গুরুত্ব? নিজেরা লেখেনি মাতৃভাষায় উচ্চশিক্ষার
বই। উচ্চশিক্ষায় সমৃদ্ধ বিদেশী সব বিষয়ের
বইগুলো অনুবাদ করেনি নিজেদের ভাষায়?
গবেষণার কাজে মাতৃভাষাকে দেয়নি বিশেষ
গুরুত্ব?
এসব বিষয়ে গুরুত্ব না-দিলে মনে হয় মোটেও
সারবে না এই ক্ষত।

(এই কবিতাটি আসরে ২১-২-২০২৪ তাং 'একুশ আমার জন্ম পরিচয়!' এর রচয়িতা
কবি বুলু বিশ্বাস মহাশয়কে উৎসর্গ করা হলো।)