বললো কাকাতুয়া, দেখেছে সে কোনও
এক দেশের বান্দা প্রজাদের রাণী-মা,
ভাব-ভঙ্গিমায় ঠিক যেন একেবারে-ই
বিড়াল তপস্বী।
সেদিনও নাকি সে তার কোষাগার সমৃদ্ধ
করতেই নিঃসাড়ে প্রজাদের করলো বহু
ক্ষতি।
বোঝা দুষ্কর তার মতিগতি। তবে তারই
নির্দেশে মকর সংক্রান্তিতে রাজবাড়িতে
শুরু হলো সংকীর্তন।
সে ও অষ্টপ্রহর করছে কীর্তন। কে জানে,
মোক্ষ লাভের বাসনা জেগেছে কিনা তার
মনে?
মস্ত বড়ো সাধিকার মতো প্রায়শ সমাধিস্থ
হচ্ছে বান্দাদের সামনে।
যে বাছাধনগুলো খেয়েছে সে বাড়ির নুন,
ক্ষণে ক্ষণে রাণী-মার এ ছলাকলা দেখে
রেগে হলেও তপ্ত কড়াই-এ তেলে বেগুন,
নিমক হারাম হতে যেহেতু তাদের বিবেকে
বাঁধে, বললো কাকাতুয়া, তাদের কত কী
করতে হচ্ছে দায় কাঁধে!
রাণী-মার গুণকীর্তন, -সেও!
ভগ্নদশা হলেও নিজেদের গেহ।
দুর্দশাগ্রস্ত জীবন। শুক্লপক্ষে এক ফালি
দ্বিতীয়ার চাঁদের মতো সুখ নিয়ে বেঁচে
থাকা বহু বান্দা তাদের দুঃখ কষ্ট ভুলে
করে রাণী-মার গুণকীর্তন, নেচে গেয়ে
দেয় করতালি।
বললো কাকাতুয়া, দেখেছে রাণী-মাকে
দিনভর ভাবে গদগদ, পোশাক আসকে
সন্ন্যাসিনী, হাতে কমণ্ডলু।
কী জানি, মোক্ষ লাভের উদ্দেশ্যে যাবে কি
গয়া কাশী?