অপরাহ্ণ। সূর্য হেলে পড়েছে পশ্চিমে।
দেখেছি ছিন্নবসনা দেশমাতা চালাঘরের
দাওয়ায় বিষন্ন মুখে বসে তাঁর শাড়ির
আঁচলে মুখ ঢেকে কাঁদছে অঝোরে।
বেদনাহত জননীকে এই অবস্থায় দেখে
বুঝতে বাকি থাকেনি তাঁর মরমে এখন
জন্মেছে গভীর ক্ষত।
স্বাধীনতার পরে বিগত বছরগুলোতে তাঁর
ক’জন সন্তান জননীর দুগ্ধ-পান করে পুষ্ট
হয়ে স্বদেশের বহু সম্পদ লুট করে নিয়ে
চলে গেছে ভিন দেশে আর সেখানে গিয়ে
এখন কাটাচ্ছে মজলিশে।
এদিকে জন্মদাত্রী তাঁর কোলের কোটি
কোটি সন্তানদের বুকে নিয়ে খাদ্যাভাবে
অপুষ্টিতে ভুগছে।
যে সন্তানেরা ভিন দেশে আস্তানা গড়েছে
তারা জননীর এমন দুরবস্থা দেখেও মুখ
ফিরিয়ে নিয়েছে। তাদের ভাবখানা জননী
এই অবর্ণনীয় দুর্দশায় কাটালেও তাদের
কী যায় আসে?
হায়রে, স্বার্থের দুনিয়ায় কত কী ঘটে!
দেশমাতার যে সম্পদ স্বদেশের কাজে
লাগানো যেতো সে আর হলো কৈ?
সুযোগ বুঝে নেপো মেরেছে দই।
জন্মদাত্রীর প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা তারা
স্বচ্ছন্দে এড়িয়ে গেছে।
ভাবছে জননী, সন্তান লালনপালন করে
হয়েছে তাদের বঞ্চনার শিকার ভাগ্যের
পরিহাসে। দেশ স্বাধীনতা লাভ করলেও
এই দেশে এখনো দূষিত রক্তবীজ রয়েছে।