আমার চোখের জল যখন তোমার হাসির কারণ,
তখন এই পৃথিবীতে ভালোবাসা একেবারে বারণ;
আমার দুঃখ দেখে যখন হয় তোমার ভীষণ সুখ,
তখন এই পৃথিবী বিভৎস হয় দেখে তোমার মুখ।

যখন এই মায়াপুরিতে কেবল তুমিই আমার সব,
তখন তুমি মায়ার জাল ছিঁড়তে কর শত কলরব;
যখন জানলে আমি তোমার ভালোবাসার কাঙাল,
তখন তুমি উদ্বিগ্ন হলে ছেড়ে দিতে সম্পর্ক-হাল‌।

আমার সাধনায় খুঁজি যখন কেবল তব হাতছানি,
তখনই আমায় ভুলে ধরলে যেন কার হাতখানি;
আমার বেদনার্ত পোস্টে যখন তুমি পাও আনন্দ,
তখন বৃথা হয়ে যায় যেন আমার সব কাব্য-ছন্দ।

তোমায় নিয়ে লেখা আমার যত কবিতার পঙক্তি,
তুমি করে পঠন যেন কর লালন ততটাই বিরক্তি;
তোমায় নিয়ে লেখা আমার যতটা গানের লিরিক,
তুমি শুনে-শুনে যেন ভাবো মনে সবটাই অলিক।

‘আমার ঘুমহারা রাতের কারণ তুমি’ যখন জানলে,
তখন আমার কষ্ট না বুঝে নিজ তারিফেই ভাসলে;
‘আমার দু নয়ন ভাসে তোমার মায়ায়’ যখন বুঝলে,
তখন আমার মায়া না দেখে শুধু অহংবোধ খুঁজলে।

আমার হৃদয় মাজারে যখন কেবল তোমারই বাস,
তখন তুমি অন্য হৃদয়ে করছ মন মাতিয়ে উল্লাস;
আমার অন্তর পোড়ে যখন তোমারই প্রদত্ত দহনে,
তখন তুমি অন্য কাউকে স্বপ্ন দেখাও সাতকাহনে।

আমার অঝোরে ঝরা অশ্রু যখন তোমার উপহার,
তখন এই পৃথিবীটা কেবলমাত্র অর্থহীন উপসংহার;
আমার দেহে তোমার জন্য যখন দুষ্কর জীবনধারণ,
তখন এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে ভালোবাসা একেবারে বারণ।


রচিত: ২৯ জুন, ২০২৩ ইং; পিতৃভবন, কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ।