পথের শিশু
               পূরব ব্যানার্জী
আমি এক ঠিকানা হীন ভবঘুরে,
আমি এক বেহায়া শিশু নাম গোত্রহীন।
তোমাদের সুসজ্জিত বর্ণাঢ্যময় সমাজের,
স্ট্যাটাসের প্রতিযোগিতায় নাই কোনো স্থান,
মোর মতো পরিবার হীন পথের শিশুর।।
নাই মোর শৈশবের স্মৃতি কল্পনায় -
জন্মের পর থেকে আমি যে কিশোর,
অভ্যস্ত হয়েছি তোমাদের ঘৃণা সহিবারে,
জন্ম হতে লাঞ্চিত হয়ে বার বার।
নরকীট আমি সমাজের আস্তাঁকুড়ে,
কখনো অজান্তে,অভুক্ত পেটে, মোর কল্পনায়,
তোমাদের কতজনে জনকজননী রুপে,
দেখেছি বিনিদ্র ফুটপাতে আপন স্বপনে,
আপ্লুত হয়েছি ক্ষনিকের স্নেহ মমতায় -
অসহ্য ক্ষুদার জ্বালায় সম্বিত ফিরেছে মোর,
চমকিয়া নিঃসঙ্গ আমি ছুটেছি একায় পথভীরে,
দুহাতে মুছিয়া মোর মুল্যহীব অশ্রুনীর।।
উত্তপ্ত গ্রীষ্মের দুপুরে ঘর্মাক্ত শরিরে -
কতবার আমারই মতোন কত দেবশিশু দেখে,
নিজেকে মেলেছি কত শীর্ষ সিংহাসনে,
দিবাস্বপ্নে গেছি ভেসে স্বর্গসুখ পরে,
আপন মনে দোষিয়াছি কাঁদিয়া হাহাকারে,
মোর কল্পনার মমতাময়ী জননীরে,
কোন নিষ্ঠুর বিধানে,কোন নির্দয়ী সমাজের নৃশংসতায়,
বাধ্য হয়ে রেখেছিলে গোত্রহীন করে।।
ক্রোধ আজ মোর ধমনীর দূরন্ত প্রবাহে-
উলঙ্গ করিব আজি মেকি ভদ্র সমাজেরে,
যাদের ঘৃনায় মোরে করেছে কঠোর বাঁচিবারে,
আগাছার মতো রুপ পাল্টেছি প্রতিদিনে,
দয়া দাক্ষিণ্য পেয়ে দিয়েছি দেবতার রুপ -
সেই জনে,যার মাঝে কারো অবহেলায় মোর,
বিনা অপরাধে পরিচয় হারিয়েছে নিষ্পাপ শৈশব।।
নিরবে থেকেছি চেয়ে কতবার -
জনস্রোতে ভরা ওই মন্ত্রচ্চারিত মন্দির প্রাঙ্গনে,
অবুঝ মনে করেছি দরবার সন্তর্পনে,
বিশ্বজননীর কাছে কৈফিয়তি চেয়ে দিয়েছি ধিক্কার,
জনলোক লুকায়ে আঘাত হেনেছি মস্তকে বার বার,
কোন দোষে করেছো বঞ্চিত মোরে আর শিশু হতে,
কেন আজ আমি ঘৃনিত এই তোমার সৃষ্ট ধরনীর,
জীবশ্রেষ্ঠ মানুষের বংশকুলে।।