আক্ষেপ
                     পূরব ব্যানার্জী
আমি শোষিত অবহেলিত নিপীড়িত মানুষের,
পাশে গিয়ে করিলাম দরবার !
তাদের প্রতি উৎপিড়নের প্রতিবাদে দিলাম হুংকার,
দীপ্ত কন্ঠে দিয়ে অভয় আমি কহিলাম,
এসো অত্যাচারিত, দূর্বল যত, এসো ত্যাজি করুনা, ভিক্ষা আজি,
বলো উগ্রকণ্ঠ লয়ে মোর সাথে চাই সাম্যের অধিকার।।
তারা কিছুদূর দিয়ে সাথ মোরে শেষে ধরিল যে পিছুটান।
কহে, "নাহি চাই বাবু অধিকার মোদের, যাহা পাই থাক তাই।
মোরা করিয়া অতিষ্ঠ মালিকেরে আজ লড়িলে তোমার সনে,
হারাবো করুণা মালিকের মোরা, হারাবো কৃপার দান "।।
যেদিন পাশের পাড়ার যতিন -
ইভটিজিং এর প্রতিবাদ করে অকালে হইল নিধন।
উর্দ্ধশ্বাসে ছুটিয়া সেদিন গিয়েছিনু তার ঘরে,
অসহায় তার পিতার বিলাপে, বুকফাটা হাহাকারে,
ধমনী ফাটিয়া ক্রোধে সেইদিন বিক্ষোভে খেপে আমি,
চেয়েছিলাম দিতে পিষে পাতকেরে,  ভাঙিয়া শাষকের প্রশ্যয়ের ওই বেড়ী।
তার জননির করুন কান্নায় সেদিন জমায়েত ছিল ভালো,
পাড়া প্রতিবেশীর অগ্নি চোখে ঘৃণা দেখে পেলাম আশার আলো।।
হটাৎ শুনিলাম যতিনের ভাই অনুদানে পাবে কাজ কোনো সরকারী।
তাই চুপচাপ, নাই আলোরন, নিভে গেছে ক্রোধ সব।
যতিনের প্রান, তার প্রতিবাদ, আজ বিক্রীত চড়া দামে।।
একাকী আমি হয়ে নিশ্চুপ হতাশায় আসি ফিরে -
নিরবে আমার প্রতিবাদ ক্ষোভ ধুয়ে ফেলি অশ্রুনীরে।।
একদিন কাক ভোরে, চায়ের দোকানে চয়ের চুমুকে উড়ে এসে ছাই পড়ে !
শুনিলাম নাকি ওপাড়ার নেতা কাল রাতে নেশা ঘোরে,
ধর্ষন করে, পুড়িয়ে মেরেছে, এক অস্টাদশী কিশোরীরে।
বন্ধু সাথী লয়ে সাথে আমি ধেয়ে যাই সেই পথে।
অগনীত চোখ, অসহায় মুখ, সেদিন ক্রোধ নিয়ে ছিল সাথে।।
চিতার আগুনে অকাল বিদায় দিতে সবে ফোটা সেই ফুলে -
কান্না পায়নি, লজ্জা ঘৃনায়, আমি শপথ নিলাম, নিরব চোখের জলে।
করজোড়ে আমি তার স্বজনেরে করিলাম অনুরোধ।
দাও মোরে সাথ, আজ জ্বলিবে আগুন, দেব মুছে এ জঘন্য অপরাধ।।
হায় রে বিধাতা, হায় রে সমাজ, হায় রে আদম কুল।
সামান্য টাকা আর চোখ রাঙানিতে মাফ করে দিল সেই ভুল।।
প্রয়োজন নেই, উন্নত যুগে, মানুষ আজ সচেতন।
চাই শুধু তারা বাঁচার রসদ, নাই কোনো বিবেক নাই রে চেতন।।
শিক্ষার আজ বদল চাই রে, চাই সমাজের জাগরন।।  
মানুষ আজকে মানবতা ভুলে, শুধু নিজের চাহিদা বোঝে -
যাক নিপাত সমাজ, শতো অন্যায় সহে, কেবল আপন স্বার্থ খোঁজে।।