সংশয়
                 পূরব ব্যানার্জী
হে ধরিত্রী তব কাছে মোর বড় প্রশ্ন কৌতুহল !
শত সহস্র বছর ধরে ক্রম আবর্তনে,
নহে ক্লান্ত তুমি, কোন মনোবলে ?
আদিমতা হতে তুমি সহিছো আঘাত কত,
আপন গর্ভজাত হতে -
শক,হুন,পাঠান যত করেছে নিরন্তর ক্ষত,
আপন ভ্রাতৃত্বের, শোনিতধারায় করেছে
অঞ্চল তব রক্তাক্ত,
তবু তুমি রহেছো নির্লীপ্ত, অবিচল।।
কোন মহাশক্তির দিব্য আশীষের পরশ পেয়ে,
এত সহ্যশক্তি তুমি ধরো গো জঠরে -
ইতিহাস পার করে, কত ঘটনার সাক্ষী তুমি,
কত রহস্য রয়ে গেছে হৃদয়ে গাঁথা তব ;
তবু তুমি অবিকার, রয়েছো কর্তব্যরত -
মায়াবীনি কর্মে তব বিশ্ববিধাতাও বিস্মিত বিহ্বল।।
তুমি বিশ্বজননী মাতে, তব নিঃস্বার্থ স্নেহেই -
বুঝি মাতৃঋন শোধ নহে সম্ভব, এ যেন অসাধ্য সাধন।
কত আগ্নেয়গিরির জ্বলন্ত লাভার তাপ,
কত মহাপ্রলয় এর দূরন্ত উৎপাত তুমি নিরবে সহেছো,
তবু আজ সংশয় জাগে মোর মনে !
আধুনিক পৃথিবীর চতুর কপটতা, নিষ্ঠুর নির্মমতার দহন,
মেকী সততার মুখোশে স্বার্থপর তৃষ্ণা পূরণের,
কদর্য প্রয়াস ; পবিত্র হৃদয় তব বিদীর্ণ করিছে যেই ভাবে,
পারিবে কি সহিতে তুমি সেই বিষজ্বালা,
অন্তর্যামি তুমি, কলংকিত অপত্যের শঠতায় -
রয়ে যাবে সেই নির্বিকার।
নাকি তব বেদনার ক্ষোভে বিস্ফারণ হবে,
খন্ড খন্ড করে তুমি, মুছে দেবে জগতের পাপ,
পবিত্র করিবে বিশ্ববিধাতার সংসার।।