মাঝেমাঝে আবারো ভালোছাত্র হতে ইচ্ছে করে,
ইচ্ছে করে মেধাবী হতে।
যেভাবে এক কালে মুখস্ত করতাম কেমিস্ট্রি সেকেন্ড পেপারের
জটিল সব সমীকরণ অথবা হাইড্রা, তেলাপোকা,ব্যাঙ
আর মানুষের দেহতত্ব
মাঝেমাঝে আবারো না বুঝে মুখস্ত করতে ইচ্ছে হয় সবকিছু।
তারপর পরীক্ষার খাতায় বমি করে রাশিরাশি নাম্বার পেয়ে
পিতামাতার নাম উজ্জ্বল করে পত্রিকার পাতায় টাকা খরচ করে
বিজ্ঞাপন দিতে ইচ্ছে হয়।
"মেধাবী মুখ অমুখ তমুখ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইত্যাদি ইত্যাদি ডিগ্রী অর্জন করেছে"
জানি পত্রিকায় একটি ক্রিয়েটিভ লেখা ছাপার চেয়ে
টাকা দিয়ে নিজের চেহারা ছাপানোর আপেক্ষিক গুরত্ববেশি
সমাজ ও অভিভাবক মহলের কাছে।
ইদানিং পরীক্ষার শাদা খাতা দেখলে আমার
শরতের মেঘমুক্ত আকাশের কথা মনে পড়ে,
সেই কবে দুরন্ত শৈশবে কাচা জাম্বুরা দিয়ে ফুটবল খেলে
শৌলজালিয়ার খালে গোসল করা
কিংবা বিষখালির চড়ে কাঁদা ছোঁড়াছুঁড়ি করে বিচিত্র সেসব খেলার কথা মনে পড়ে।
পরীক্ষার শাদা খাতাকে মনে হয় প্রেমিকার আঁচল,
যেখানে আমি ইচ্ছে মতো লিখবো
ভালোবাসা আর বিরহের কবিতা।
কিন্তু আমার অক্ষমতা আমি মনের কথা লিখতে পারি না,
আমাকে মেধাবী না হোক অনন্ত পাশ তো করতে হবে,
একটা মিনিমাম সি জি পি এ না পেলে আমিতো ভালো গোলাম হতে পারবো না,
এই পুঁজিবাদী সমাজে একটা মেয়েও জুটবে না প্রজাতি রক্ষার জন্যে ইন্টারকোর্সে অংশ নিতে,
আমাকে তো মনুষ্য প্রজাতি রক্ষা করতে হবে,
শুক্রাণু আর ডিম্বানুর মিলন ঘটিয়ে ট্রিলিয়ন কোষের মানুষ বানাতে হবে আবার।
এবং তাঁকেও তৈরি করতে হবে এই সমাজের জন্য উপুযক্ত করে।
না হলে "সারভাইবাল ফর দ্যা ফিটেস্ট" অমান্য করে,
সেও বিলুপ্ত হবে, যেভাবে বিলুপ্ত হয়েছে ডো ডো পাখি, ক্যারোলিনা প্যারাকিট
আর রাবিন্দ্রীক প্রেম।
অতএব আমাকে মেধাবী হতে হবে। আমি তাই মেধাবী হবার প্রচেষ্টায়
ধ্বংস করি ঈশ্বর প্রদত্ত প্রতিভাগুলো।