ছোটো কাঠের সিঙ্গি আমার ছিল ছেলেবেলায়,
সেটা নিয়ে গর্ব ছিল বীরপুরুষি খেলায়।
          গলায় বাঁধা রাঙা ফিতের দড়ি,
চিনেমাটির ব্যাঙ বেড়াত পিঠের উপর চড়ি।
ব্যাঙটা যখন পড়ে যেত ধম্‌কে দিতেম কষে,
          কাঠের সিঙ্গি ভয়ে পড়ত বসে।
গাঁ গাঁ করে উঠছে বুঝি, যেমনি হত মনে,
"চুপ করো" যেই ধম্‌কানো আর চম্‌কাত সেইখনে।
আমার রাজ্যে আর যা থাকুক সিংহভয়ের কোনো
          সম্ভাবনা ছিল না কখ্‌খোনো।
মাংস ব'লে মাটির ঢেলা দিতেম ভাঁড়ের 'পরে,
          আপত্তি ও করত না তার তরে।
   বুঝিয়ে দিতেম, গোপাল যেমন সুবোধ সবার চেয়ে
   তেমনি সুবোধ হওয়া তো চাই যা দেব তাই খেয়ে।
   ইতিহাসে এমন শাসন করে নি কেউ পাঠ,
   দিবানিশি কাঠের সিঙ্গি ভয়েই ছিল কাঠ।
   খুদি কইত মিছিমিছি, "ভয় করছে, দাদা।"
   আমি বলতেম, "আমি আছি, থামাও তোমার কাঁদা--
   যদি তোমায় খেয়েই ফেলে এমনি দেব মার
          দু চক্ষে ও দেখবে অন্ধকার।"
   মেজ্‌দিদি আর ছোড়্‌দিদিদের খেলা পুতুল নিয়ে,
          কথায় কথায় দিচ্ছে তাদের বিয়ে
   নেমন্তন্ন করত যখন যেতুম বটে খেতে,
   কিন্তু তাদের খেলার পানে চাইনি কটাক্ষেতে।
   পুরুষ আমি, সিঙ্গিমামা নত পায়ের কাছে,
   এমন খেলার সাহস বলো ক'জন মেয়ের আছে।