হে মমতাময়ী মানবী,
সারি সারি গোলাপ, নদীর রুপালি বাক, উত্তুঙ্গ ঢেউ,
তুমি দেখনি কিছুই,
তুমি দেখনি
দিঘীর কাকচক্ষু জল, কলকল ঝর্ণাধারা বা মধুবনে মৌ।


হে মমতাময়ী মানবী,
শরতের কাশফুল, বসন্তের শিমুল, জলাসক্ত মাকড় জাল,
তুমি দেখনি কিছুই,
তুমি দেখনি
ঘাসফুলে জলের ছায়া, শিশিরের দীপ্তি বা হেমন্ত বিকাল।


হে মমতাময়ী মানবী,
গ্রীষ্মের গনগনে দুপুর, তপ্ত সূর্যের জলন্ত সৌন্দর্য, সোদামাটির গন্ধ,
তুমি দেখনি কিছুই,
তুমি দেখনি
রুপালি চাঁদের নীলাভ প্রভা, শেষ বিকেলের লালচে আভা বা বর্ষার ছন্দ।


হে মমতাময়ী মানবী,
তুমি মূককীটের মতই সুপ্ত ছিলে
পারোনি শুককীট ছাড়িয়ে কোন রঙ্গিন তিতলি হতে
পারোনি নিতে কোন প্রস্ফুটিত গোলাপের স্বাদ
পারোনি দেখতে পার্থিব পৃথিবীর অপার্থিব সৌন্দর্য।


হে মমতাময়ী মানবী,
তুমি দেখনি কিছুই,
চিলের সাথে ফিঙ্গের লড়াইয়ে তুমি হেরেছো
অভিমানে অস্তগামী সূর্যের সাথে লুকিয়েছো
দিগন্তের ওপারে।


হে ঈশ্বরী,
কেউ এভাবে হারায়, এভাবে...
তুমি জানো না
চোখের আড়ালে লুকোনো যায়, স্মৃতির আড়ালে নয়
দিগন্তের ওপাশে হারানো যায়, হৃদয় থেকে নয়।


হে ঈশ্বরী,
সুতো ছেঁড়া ঘুড়ির মত আমি উড়েছি
পাড়ি দিয়েছি ফেনিল সমুদ্র, জিতেছি দুর্দম মরুঝড়,
বারবার হারিয়েছি হারানো পথ।
তবু, তবু যেতে চেয়েছি অবিরাম তোমার দিগন্তে।
অবশেষে হায়, শেষবেলায় শেষবিকেলে কোন এক মহানিমের সুউচ্চ ডালে
বাঁধা পড়েছে শেষ সুতোটি।


হে ঈশ্বরী,
এখানে, নীলাকাশে গলাছিলা শকুনের কালো বিন্দু,
আঁধার রাতে বৃদ্ধ পেঁচার ক্রুব্ধ জ্বলজ্বলে চোখ,
আমি অপেক্ষায় আছি, অপেক্ষায়....


অপেক্ষা, সুতোর শেষ বন্ধন ছেঁড়ার।